Written by Baban
১
এই যে খোকাবাবু….. খিলোনা লিবে নাকি?
হঠাৎ পেছন থেকে এরকম একটা বিশ্রী আওয়াজ শুনে চমকে উঠলো অর্ক. পেছনে ফিরে দেখলো একজন রোগা কালো করে লোক বোধহয় মূর্তি বিক্রেতা কারণ মাটিতে অনেক মূর্তি রাখা, হাসি মুখে ওর দিকেই তাকিয়ে. যেমন বিশ্রী গলার স্বর তেমনি দেখতে তাকে.
আমায় কিছু বললেন কাকু? জিজ্ঞেস করলো অর্ক.
লোকটা হেসে ওকে হাতের ইশারায় কাছে আসতে বললো. অর্ক এদিক ওদিক তাকিয়ে এগিয়ে গেলো লোকটার কাছে. এদিকটায় এইসময় লোক থাকেনা তেমন. বাবারে কেমন যেন দেখতে লোকটাকে. বিশেষ করে লোকটার চাহুনি. একটু ভয় হচ্ছিলো অর্কর তাও এগিয়ে এসেছে. লোকটা হেসে বললো : খিলোনা লিবে নাকি? ভালো ভালো খিলোনা আছে হামার কাছে.
অর্ক হেসে বললো : খেলনা কথায় কাকু? ওগুলোতো মাটির মূর্তি.
লোকটা জিভ কেটে বললো : সহি সহি…. মূর্তি… তবে খিলোনাও বলা যায় হি.. হি.. হি
বাবারে… কেমন করে হাসে রে বাবা.
অর্ক রোজ এই রাস্তা দিয়েই স্কুল থেকে বাড়ি ফেরে. এই সেদিন পর্যন্ত ওর মা ওকে স্কুলে দিয়ে আর নিয়ে আসতো. কিছুদিন হলো ও ওর বন্ধু রোহিতের সাথে বাড়ি ফিরছে. বেশি দূরে বাড়ি নয় ওদের. স্কুলের কাছেই বাড়ি. যদিও অর্কর মা বলেছিলো কি দরকার একা ফেরার… ছোট মানুষ. হারিয়ে যায় যদি. কিন্তু অর্কর বাবা বলেছিলেন – না…. এখন থেকেই ওকে নিজের কাজ নিজে করতে দাও. তাহলে ওর মধ্যে confidence তৈরী হবে. তাই অর্কর মা ওকে একলা ফিরতে অনুমতি দিয়েছেন.
স্কুল থেকে বেরিয়ে হাঁটতে হাঁটতে গল্প করতে অর্ক আর রোহিত বাড়ি ফেরে. তারপরে রোহিত একটা গলি ধরে অন্যদিকে চলে যায় আর বাকি পথটা অর্ক একাই হেঁটে ফেরে. আজ শনিবার. হাফ ছুটি. রোজকার মতো আজও অর্ক একাই ফিরছিলো তখনি এই ডাক পেছন থেকে.
অর্ক ভেবেছিলো লোকটাকে এড়িয়ে চলে যাবে কারণ মা বারবার বলে দিয়েছে অচেনা অজানা লোকের সাথে একদম কথা বলবিনা. কেউ কিছু দিলে খাবিনা, নিবিনা. তাই অর্ক ভেবেছিলো লোকটাকে কিছু নেবোনা কাকু…. বলে চলে আসবে. কিন্তু লোকটার ওই মূর্তিগুলোর দিকে তাকিয়ে চোখ আটকে গেলো ওর. কি অসাধারণ হাতের কাজ. সব মূর্তি মানুষের আর পশুপাখির. যেন জীবন্ত. এতটাই নিখুঁত কাজ. সত্যি এবারে লোভ হচ্ছে একটা নিতে.
লোকটা অর্কর মনের ভাব বুঝতে পেরে আবার ওই বিশ্রী গলায় হেসে বললো : পসন্দ আয়া তুমকো… হয়না?
অর্ক মুচকি হেসে মাথায় নারে.
লোকটা : তাহলে লিয়ে যাও একঠো……. বাড়িতে সাজিয়ে রাখবে
অর্ক গোমড়া মুখ করে বললো : নিতে ইচ্ছে করছে কাকু…. কিন্তু আমার কাছে তো টাকা নেই. মা আমায় টাকা দেয়না. আসলে আমি ছোট বলে মা আমায় এখনও সাথে টাকা রাখতে দেয়না.
লোকটা আবার খ্যাক খ্যাক করে হেসে বললো : টাকা নেই তো কি হয়েছে খোকা? টাকা আমার পরে পেলেও চলেগা…… না পেলেও চলেগা….. তুমি বরং একঠো মুরাত নিয়ে যাও.
অর্ক আনন্দে : সত্যি !! সত্যি তুমি আমায় এমনি এমনি দিয়ে দেবে কাকু?
লোকটা : দিবো তো জারুর দিবো… তবে আগে একঠো বাত বলো তো… তোমার বাড়িতে কে কে আছে?
অর্ক : কেন বাবা, মা, দাদু, ঠাম্মি আর আমি… ব্যাস.
লোকটা : বাহ… ভরপুর পরিবার….. বহুত আচ্ছা…. তা তোমার বাবা তোমাদের সাথেই থাকেন তো?…. .. নাকি কাম কে খাতির বাইরে বাইরে থাকতে হয়?
অর্ক মনে মনে ভাবলো : যা বাবা…. মূর্তি কেনার সাথে বাড়িতে কে থাকে, বাবা সাথে থাকে কিনা জানার কি যোগাযোগ বুঝলাম না.
তবু অর্ক বললো : না না.. বাবা আমাদের সাথেই থাকে. রোজ অফিসে যান আর ছটার মধ্যে ফিরে আসেন কিন্তু কেন কাকু? এটা জিজ্ঞেস করলেন কেন?
লোকটা হেসে : নাহি নাহি…. আইসেহি……. ঠিক আছে বাবু… তুমি……. তুমি এই এইটা সাথে লিয়ে যাও.
এই বলে লোকটা একটা মূর্তি ঝোলা থেকে বার করে হাতে নিয়ে অর্কর দিকে বাড়িয়ে দিলো. অর্ক দেখলো একটা মেয়ে মানুষের মূর্তি. অর্ক হাতে নিলো সেটা. দারুন জিনিসটা. একটা মহিলা, খুবই সুন্দরী, দাঁড়িয়ে রয়েছে. একহাত দিয়ে নিজের নগ্ন শরীরের নগ্নতা লুকোচ্ছে আর অন্য হাতটা ঠোঁটের কাছে রাখা. তার দুই বক্ষ চুলে ঢাকা. খুবই কামনাময় রূপ. কিন্তু অর্কর ওসব বোঝার বয়স হয়নি, সে মূর্তিটা দেখছে. মহিলার চুল অনেক লম্বা. এত সুন্দর আর নিখুঁত কাজ যেন মনে হচ্ছে সত্যি একটা ছোট আকারের মহিলা সেটা. কিন্তু যে ব্যাপারগুলি তাকে মানুষের চেহারা থেকে আলাদা করে তা হলো এর দুটি ডানা রয়েছে , তবে পাখির ডানা নয়, বাদুড়ের ডানার মতো. আর একটা লেজও আছে. ও বাবা… আবার মাথায় দুটো ছোট শিং ও রয়েছে. কিন্তু তার থেকেও অদ্ভুত হলো মহিলার পা দুটো. এত মানুষের পা নয়, এত অনেকটা ছাগলের পায়ের মতো. আর মহিলা কিসের ওপর পা রেখে দাঁড়িয়ে ? যেন অনেক গুলি ছোট ছোট মাথার খুলি সেগুলি. তার ওপর পা রেখে দাঁড়িয়ে সেই মূর্তি.
লোকটা বললো : লিয়ে যাও খোকা….. এইসব জিনিস তুমি অন্যকোথাও পাবে না….. এসব জিনিস সবাই বানাতে পারেনা. সবার যোগ্যতা নেই এই সব বানানোর. আমার নিজের হাতের বানানো. লিয়ে যাও.. বাড়িতে সাজিয়ে রেখো. দেখবে খুব ভালো লাগবে… কিছুদিনের মধ্যেই তোমাদের পরিবারের একজন হয়ে যাবে এটি.
অর্ক ভাবলো এইভাবেই বিনা টাকা দিয়ে সে বিনামূল্যে কিছু নেবে না. তাই সে বললো – না কাকু…. এটা বানাতে তোমার অনেক কষ্ট হয়েছে, এইভাবে ফ্রি তে আমায় দিলে তোমার তো অনেক ক্ষতি হবে… তুমি এটা কাউকে বেচে দিও.
লোকটা আবার হেসে বললো : না খোকাবাবু…. ওটা তুমি রাখো. আমি বলছি….. ওটা তোমার জন্যই. হামার টাকা লাগবেনা. আমি নানা জায়গায় ঘুরে ঘুরে এসব বেচি….. কিন্তু ওই মূর্তিটা আমি কাউকে বেচিনা….. ওটা আমার সবথেকে সেরা কাজ. কিন্তু আভি ওটা আমার আর সাথে রাখতে আর ইচ্ছে করছেনা. ওটা আর হামার সাথে রাখবোনা. তাই ওটা বিনামূল্যে তোমায় দিলুম. সাথে লিয়ে যাও. আচ্ছা খোকাবাবু অভি তুম যাও.
অর্ক কি আর করবে. হাসিমুখে লোকটাকে থ্যাংক উ বলে মূর্তিটাকে ব্যাগে পুরে নিয়ে চলে আসতে লাগলো. কিছুদূর যাবার পরে কি ভেবে আরেকবার পেছন ফিরে তাকালো লোকটাকে দেখবে বলে….. কিন্তু কই? যেখানে লোকটা একটু আগেও বসেছিল এখন ওখানে কিছুই নেই.. ফাঁকা.
বাড়ি ফিরতে ফিরতে অর্ক ভাবছিলো মা কি বলবে এটা দেখে? অচেনা লোকের থেকে জিনিস নিয়েছি শুনলে মা ভয়ানক বকবে ওকে. অর্ক মাকে খুব ভালোবাসে কিন্তু মায়ের রাগকে ভয়ও পায়. এইদিক থেকে বাবা অনেক বেশি সাপোর্ট করে. তাই অর্ক ভাবলো মাকে জানতে দেবেনা যে এটা ও এনেছে. গিয়েই লুকিয়ে রাখবে এটা নইলে মায়ের হাত থেকে নিস্তার নেই.
অর্কর দাদু আর ঠাম্মি একতলায় থাকে আর দোতলায় ওরা. ও গেটের কাছে এসে বেল বাজালো. ওপরের বারান্দায় একবার অর্কর মাকে দেখা গেলো. তারপরে মায়ের মুখ অদৃশ্য হলো. একটু পরেই নীচে নেমে এলো মা আর চাবি দিয়ে শাটার খুলে ছেলেকে জিজ্ঞেস করলো : কিরে বাবু? একটু দেরি হলো আজ?
অর্ক : মা ওই বন্ধুদের সাথে হাঁটতে হাঁটতে আসছিলাম তাই…
মা : আচ্ছা যা…. ওপরে গিয়ে জামা প্যান্ট খোল…. আমি আসছি. একবার বাবার কাছে যাই. তোর দাদুর একটু সর্দি সর্দি হয়েছে. দেখে আসছি.
যাক…. এই তো একটু সময় পাওয়া গেছে. এই সময়টাকে কাজে লাগাতে হবে. ও সঙ্গে সঙ্গে ওপরে উঠে গেলো. আগে ঘরে গিয়েই ও ব্যাগের চেন খুলে মূর্তিটা বার করে এদিক ওদিক দেখতে লাগলো. তারপরে বিছানার নীচে লুকিয়ে ফেললো. তারপরে জামা প্যান্ট খুলে বাথরুম গেলো কাপড় পাল্টাতে. ফিরে দেখলো মা ওপরে চলে এসেছে. মা টেবিলে খাবার দিচ্ছে. ও আর মা দুপুরে খাওয়া খেতে লাগলো. মায়ের কাছ থেকে ও কিছু কখনো লুকোয় না তাই ওর খাড়াপ লাগছে যে ও মায়ের থেকে মূর্তিটা লুকিয়েছে. ইচ্ছে করছে মাকে এক্ষুনি সব বলে দিক তারপরে যা হবে হোক কিন্তু মূর্তিটা এত সুন্দর, মা হয়তো সব জেনে মূর্তিটা বাইরে ফেলে দেবে তাই আর কিছু বল্লোনা ও মাকে. বিকেলে বাবা ফিরুক. বাবাকে দিয়েই মাকে বলবে. বাবা বললে মা আর ওটা ফেলবে না.
তাই ও কথাটা চেপে মায়ের সাথে খেতে লাগলো. দুপুরে মা ওকে নিয়ে কিছুক্ষন ঘুমিয়ে নিলো. অর্ক এখনও মাকে জড়িয়ে ঘুমায়. মা ওকে ঘুম পাড়াতে পাড়াতে নিজেও ঘুমিয়ে পড়লো.
২
দুপুরে মায়ের সাথে শুয়ে মায়ের আদর খেতে খেতে কখন অর্ক ঘুমিয়ে পড়েছে খেয়াল নেই. কিন্তু ঘুমের মধ্যে কিনা ও জানেনা একটা হাসির শব্দ ওর কানে এলো. কেউ যেন হাসছে. কে হাসে? মা? কিন্তু আওয়াজ টা যেন নিচের থেকে আসছে. যেন ওর খাটের নীচে কেউ হাসছে. ঘুমের কারণে এমন হচ্ছে নাকি অন্য কিছুর কারণে সেটা অর্ক বুঝলোনা. শুধু স্বপ্ন দেখলো খালি রাস্তা দিয়ে ও বাড়ি ফিরছে. কোথাও কেউ নেই রাস্তায়. শুধু ওই বাইরে, বাকি জগৎ যেন দুপুরে ভাতঘুম দিচ্ছে. অর্কর বার বার মনে হচ্ছে ওর পেছন পেছন কেউ আসছে. একদৌড়ে ও বাড়ি ফিরে এলো ভয়. বাড়ি ফিরতে মা গেট খুললো ঠিকই কিন্তু ওর ঢোকার আগেই ওকে ধাক্কা দিয়ে কালো ছায়া মতো কিছু একটা বাড়ির ভেতর ঢুকে গেলো. আর সেই সময় আবার কানে এলো সেই অদ্ভুত নারী কণ্ঠে হাসি.
ঘুম ভাঙলো মায়ের নড়াচড়ায়. মা খাট থেকে নামছে. মানে বাবা ফিরে এসেছে. অর্ক শুয়ে রইলো. কিছুক্ষন পরেই মা আর বাবার গলার আওয়াজ পেলো ও. আর ঘুমোলোনা অর্ক. উঠে বসে রইলো. বাবা ঘরে ঢুকে ছেলেকে দেখে হেসে পাশে বসে জামা প্যান্ট খুলতে লাগলো. অর্ক ভেবেছিলো তখনি বাবাকে বলবে কিন্তু পরে ভাবলো বাবা এইমাত্র ফিরেছে. থাক…. পরে বলবে. বাবা স্নানে চলে গেলো. বাবা ফিরে এলে মা আর শোয়না, তার আগেই যতটুকু ঘুমানোর ঘুমিয়ে নেয়. অর্কও সোফায় গিয়ে বসলো আর টিভিটা চালিয়ে দেখতে লাগলো.
উফফফফফ… মানে ঘুম থেকে উঠতে না উঠতেই টিভি দেখতে বসে যাবে ছেলেটা.
মায়ের সেই বকুনি. তবে এটাকে ওতো পরোয়া করেনা অর্ক. মা এরকম রোজই বলে. ও টিভি দেখতে লাগলো. একটু পরে বাবা এসে পাশে বসলো.
এই চা নিয়ে এসো – বাবা মাকে বললো
মা : হ্যা এই যাচ্ছি….. বলে মা নীচে রান্নাঘরে চলে গেলো.
এই সুযোগ… বাবাকে নিজের দলে টানার. মা নীচে. অর্ক তাকালো বাবার দিকে. সোফায় হেলান দিয়ে চোখ বুজে রেস্ট নিচ্ছে. অর্ক উঠে বাবার কাছে গিয়ে ঘনিষ্ট হয়ে বসে আদুরে গলায় বাবাকে ডাকলো : বাবা..
বাবা চোখ খুলে ছেলেকে জড়িয়ে বললো : কি হয়েছে বাবু? আজ মাকে ছেড়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরলে? ব্যাপার কি?
অর্ক ভয় ভয় গলায় বললো : বাবা আজকে না……… কি হয়েছে জানো… একটা লোক……
বাবাকে সব খুলে বললো অর্ক. ও বললো যে ও নিতে চায়নি কিন্তু লোকটা প্রায় জোর করেই ওকে মূর্তিটা দিয়ে দিয়েছেন. সব শুনে বাবা একটু সিরিয়াস ভাবেই বললো…
বাবা : উহু….কাজটা তুমি ঠিক করোনি অর্ক…. যাকে তুমি চেনোনা জানোনা তার থেকে তুমি জিনিস নেবে কেন? মা কতবার বারণ করেছে না তোমায়?
অর্ক : আমি তো ফেরত দিয়ে দিতেই চেয়েছিলাম বাবা… কিন্তু
বাবা পুরোটা না শুনেই বললেন : না…… তোমার আগে এসেই মাকে বলা উচিত ছিল.
অর্ক : মাকে বললে মা হয়তো ওটা বাইরে ফেলে দিতো, আসলে মূর্তিটা এত সুন্দর দেখতে…
বাবা : সে যাই হোক…. সে তোমায় দেবে বললো আর তুমি নিয়ে নিলে? সে কে? তোমার পরিচিত? নয়তো? তাহলে গেলে কেন তার কাছে? আবার সে তোমায় মূর্তি দিলো? তাও এমনি এমনি? ব্যাপারটা কেমন যেন লাগছে….. কই দেখি কোথায় সেটা?
অর্ক বাবার কাছ থেকে উঠে খাটের তোলা থেকে মূর্তিটা বার করে বাবার হাতে দিলো. বাবা সেটা হাতে নিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখতে লাগলো. বাবা এতক্ষন চিন্তিত মুখে ছিলেন কিন্তু অর্ক দেখলো এবারে বাবা শান্ত মুখে মূর্তিটা দেখছে. তাহলে কি বাবারও মূর্তিটা ভালো লাগলো?
এর উত্তর অর্ক সঙ্গে সঙ্গে পেলো.
বাবা : বাহ্…. দারুন জিনিস তো. যে বানিয়েছে তার হাতের কাজ বেশ নিখুঁত. দারুন নিখুঁত কাজ. এটা কিসের মূর্তি? মেয়ে সেতো বোঝাই যাচ্ছে কিন্তু তাহলে আবার দুটো ডানা কেন? পরীর মূর্তি নাকি?
-কিসের মূর্তি?
কথাটা এলো পেছন থেকে. অর্ক দেখলো মা চা নিয়ে এসেছে বাবার জন্য. ও বুঝলো এবারে আর নিস্তার নেই. বাবাও বাঁচাতে পারবেনা এই যাত্রায়. মায়ের বকুনি খেতেই হবে.
মা এগিয়ে এসে চায়ের কাপটা সামনের টেবিলে রাখতেই বাবার হাতে ওই মূর্তিটা দেখতে পেলো.
মা বললো : এই? এটা কি? কোথা থেকে পেলে?
অর্ক বুঝলো ব্যাস….. হয়ে গেলো. তৈরী হও বকুনি খেতে. হয়তো দু একটা থাপ্পড় খেতেও হতে পারে. মা এমনিতে শান্ত কিন্তু রেগে গেলে… বাবারে.
কিন্তু অর্ককে অবাক করে দিয়ে ওর বাবা অতনু বাবু বললেন : আজ ফেরার পথে কিনলাম এটা. ওই অনেকদিন কোনো সাজানোর জিনিস কেনা হয়নি, তাই ভাবলাম কিছু কিনি. এটা পছন্দ হলো তাই আরকি.
অর্ক অবাক. সাথে খুশি প্রচন্ড. উফফফ এই যাত্রায় তাহলে বাবা বাঁচিয়ে দিলো.
শ্রীপর্ণা অর্থাৎ অর্কর মা বললেন : বুঝলাম… উঠলো বাই তো কটক যাই….. কথাও কিছু নেই উনি কিনে আনলেন ঘর সাজানোর মূর্তি. তাও যদি কোনো বিখ্যাত মানুষের মূর্তি হতো. এটা কি? কিসের মূর্তি এটা? বাবা.. . আবার দুটো ডানাও আছে. কি এটা?
বাবাও মায়ের কথায় ঘাবড়ে গিয়ে বললেন : ওই….. ঐতো…. ওই.. পরী… হ্যা.. পরী.
মা : পরী? পরীদের আবার লেজ থাকে নাকি? এর তো লেজ রয়েছে দেখছি… কি জানি বাবা… এ আবার কেমন পরী?
বাবা : আহা…. যে পরী হোক…. মূর্তিটা দেখো… কি নিখুঁত কাজ. জিনিসটা ভালো করে দেখো. আর্ট টা দেখো. উফফফ দারুন. এসব জিনিস ঘরে রাখলে ঘরের শোভা আরও বারে বুঝলে?
মা : হুম…. তা কত নিলো?
এই সেরেছে রে….. বাবা কি জবাব দেবে এর?
বাবা হেসে বললো : বেশি না…. যা ভেবেছি তার অনেক কমেই পেয়েছি. খুবই কম দাম…. ওতো ভেবোনা তো. আমাদের কি টাকার কি ওতো অভাব পড়েছে নাকি যে গুনে গুনে টাকা খরচ করতে হবে?
মা : সেটা করাই উচিত. যাকগে… দাও শোকেসে রেখে দি.
বাবা : শোকেসে না….. আমাদের ওই টেবিলে রাখো. চোখে পড়বে.
মা ওটা নিয়ে ঘরের একটা টেবিলে রেখে দিলো. ওখানে বেশ মানিয়েছে জিনিসটা.
মা : আমি নীচে গেলাম…. বাবার সর্দিটা একটু বেড়েছে মনে হয়. আবার জ্বর না আসে. যাই আদা দিয়ে চা করে দি বাবাকে.
বাবা : বাবার জন্য কি জ্বরের ওষুধ কিনতে হবে নাকি?
মা : না…. তোমার মা বললো অতটাও কিছু নয় তবু বয়স হচ্ছে তো….. যাই ওদের চা দিয়ে আসি.
মা আবার নীচে চলে গেলো. অর্ক ছুটে গিয়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরলো. অতনু বাবুও ছেলেকে আদর করতে লাগলেন. তবে অর্ক কথা দিলো এরকম ভুল আর করবেনা.
কিন্তু ওই একটা ভুলই যথেষ্ট ছিল.
অর্ক দাদুর ঘরে. দাদুর একটু শরীরটা খাড়াপ. তবে তেমন কিছু নয়. সন্ধেবেলায় বাবা বেরিয়ে তাও দাদুর জন্য জ্বরের ওষুধ কিনে এনেছে. ঠাম্মা আর মা রান্নাঘরে রাতের রান্না করছে. আর অতনু বাবু দোতলায় টিভি দেখছেন. আজ শনিবার আর কাল রবিবার. এইদুটো দিন অর্ককে ওর মা কিছুতেই পড়াতে বসাতেই পারেনা. তাই আজও ও সারা বাড়িতে ঘুরে বেড়াচ্ছে. কখনো মায়ের কাছে যাচ্ছে, কখন দাদুর ঘরে, কখনো নিচের বারান্দায় দাঁড়িয়ে বাইরে দেখছে.
-উফফফ বাবু এমন ঘোরাঘুরি না করে ওপরে গিয়ে একটু পড় না….. মায়ের হালকা বকুনি খেয়ে অর্ক দোতলায় চলে এলো. ড্রয়িং রুমে এসে দেখলো বাবা সোফায় বসে. সামনে টিভি চলছে. কিন্তু বাবার দৃষ্টি টিভিতে নেই. বাবার দৃষ্টি হাতে ধরে থাকা ওই মূর্তিটার ওপর. ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখছে ওটাকে ওর বাবা.
– কি দেখছো ওটা বাবা?
বাবা যেন কোনো খেলে ডুবে গেছিলো তাই মনেহয় অর্কর কথা কানেই যায়নি ওনার. উনি দেখছেন মূর্তিটা.
অর্ক বাবার গায়ে হাত রেখে বলল: বাবা? কি দেখছো ওটা?
এবারে ওর বাবা বললেন : হ্যা? কি? ওহ না. কিছুনা… এই মূর্তিটা…. মানে… মানে……… কি সুন্দর দেখতে…… অপূর্ব মুখটা মেয়েটার.
আবার কি ভাবতে লাগলো বাবা. অর্ক আর বাবার দিকে না তাকাই রিমোট নিয়ে চ্যানেল পাল্টিয়ে ডোরেমন দেখতে ব্যাস্ত হয়ে পড়লো.
রাতে খাওয়ার পরে ওরা দোতলায় উঠে এলো. এখন অর্কর দাদুর শরীরটা কিছুটা ঠিক. উনি ঘরে শুতে চলে গেলেন. শাশুড়ির সাথে বাকি কাজ সেরে অর্কর মাও ওপরে চলে এলো.
রাতে একবার করে স্নান করার অভ্যেস অতনু বাবুর. তিনি ঘুমোনোর আগে স্নান করতে ঢুকে গেলেন. বাইরের ঘরে অর্ক বসে টিভি দেখছে. একটু পরে মা উঠে এসে ছেলেকে টিভির সামনে হা করে বসে থাকতে দেখে একটু রেগেই বললেন..
মা : যতটা ধ্যান টিভিতে দিচ্ছ অতটা যদি অংকে দিতে তাহলে আর আমার চিন্তা থাকতোনা. মনে আছে আগের বারে পরীক্ষায় কত গুলো ভুল করেছিলি তুই বাবাই ?
অর্ক : মা…. প্লিস… সারাদিন তো পড়ি. এই শনিবার আর রবিবারটা ছাড়ো আমাকে প্লিস… মা সোনা মা…. আমি আবার সোমবার থেকে তোমার সব কোথা শুনবো.
মা হেসে : হ্যা… শুনে তো একেবারে উল্টে যাচ্ছ তুমি.
শ্রীপর্ণা ছেলের সাথে কথা বলছিলো এমন সময় ওদের বাথরুমের থেকে ওনার স্বামী হঠাৎ ডাকলো – হ্যা বলো
শ্রীপর্ণা বাথরুমের কাছে গিয়ে বললেন : কি হলো?
অর্কর বাবা : ডাকলে কেন?
অর্কর মা : আমি? আমি আবার তোমায় কখন ডাকলাম?
বাবা : যা বাবা…. এই একটু আগেই দরজায় টোকা দিলেনা?
মা : কি? আমি? আমিতো ছেলের সাথে কথা বলছিলাম. কি বলছো কি?
বাবা : ওমা…… সেকি……. আমি স্নান করছিলাম….. মনে হলো দরজায় টোকা দিলো কেউ. একবার না…… দুদুবার. আমি বললাম কে? কোনো জবাব নেই. তাইতো আমি দরজা খুলে তোমায় ডাকলাম.
মা : ও তুমি ভুল কিছু শুনেছ… ছাড়ো… স্নান করা হয়নি এখনও?
বাবা : হ্যা.. এই বেরোচ্ছে…. কিন্তু শ্রীপর্ণা… সত্যি বলছি… স্পষ্ট শুনলাম কেউ….
অর্কর মা ওনাকে থামিয়ে বললেন : আরে কে ডাকবে? আমি আর তোমার ছেলে তো টিভির ঘরে. ও তুমি ভুল শুনেছ. ছাড়ো… তাড়াতাড়ি করো.
৩
রাতে শুতে শুতে ওদের সাড়ে বারোটা হয়ে গেলো. কাল ছুটি. নিশ্চিন্তে টিভি দেখে ওরা ঘুমোয়. অর্ক এই সুযোগে অনেক্ষন টিভি দেখার সুযোগ পায় নইলে অন্য দিন ওর মা আগে অনেক আগেই ঘুম পাড়িয়ে দেন. আজ ভালো একটা ফিল্ম পুরোটা দেখে ওরা শুতে শুতে ওই দেরি হয়ে গেলো. যদিও আজকের সময় ওটা ওতো দেরিও নয়.
ঘরে ঢুকে যখন ঘরের দরজা ভিজিয়ে শ্রীপর্ণা বিছানায় আসছে তখন হটাত কি দেখে অবাক হয়ে গেলেন উনি.
শ্রীপর্ণা : একি? এটা এখানে এলো কিকরে? তুই এনেছিস?
অর্ক দেখলো মা ওই আজকের নিয়ে আসা মূর্তিটার দিকে তাকিয়ে বলছে.
অর্ক : না তো… আমি আনিনি মা.
মা : তাহলে তুমি এনেছো?
বাবা একটু কিন্তু কিন্তু করে : হ্যা…. মানে….. ভাবলাম এমন একটা জিনিস বসার ঘরে রাখাটা… মানে…
মা : এমন মানে? কেমন জিনিস?
অতনু বাবু ওনার স্ত্রীকে ইশারায় আরেকবার মূর্তিটা দেখতে বললেন. শ্রীপর্ণা আবার তাকিয়ে বুঝলো ওনার স্বামী কি বলতে চাইছেন. মূর্তির শরীরে কোনো আবরণ নেই.
মা একটু রাগী ভাব করে : অতই যদি চিন্তা তবে এরম জিনিস কিনলে কেন?
বাবা : ওই….. ওয়ার্ক অফ আর্ট বলে একটা কথা আছে জানোতো… সত্যি মানে যে বানিয়েছে…
মা : হয়েছে হয়েছে… আর ওতো তারিফ না করে শুয়ে পড়ো. বাবা ঘুম পাচ্ছে খুব.
শ্রীপর্ণা অর্ককে পাশে ফিরিয়ে ঘুম পাড়াতে লাগলেন. অর্ক মাকে জড়িয়ে চোখ বুজলো.
অতনু বাবুও লাইট নিভিয়ে নাইট লাইট জ্বালিয়ে শুয়ে পড়লেন. কিছুক্ষন পরেই ঘুমিয়ে পড়লেন. কখন যেন স্বপ্ন দেখতে শুরু করলেন তিনি. স্বপ্ন দেখা সাধারণ ব্যাপার. কিন্তু আজকের স্বপ্ন যেন অন্যান্য দিনের তুলনায় আলাদা. সাধারণ নয়. আজ এক অদ্ভুত স্বপ্ন দেখলেন উনি.
তিনি দেখলেন তিনি নিজের ঘরেই শুয়ে আছেন. পাশে কেউ নেই. শুধু তিনি একা শুয়ে. ঘরময় একটা দারুন গন্ধ. এই গন্ধ আগে কখনো পাননি তিনি. উনি এদিক ওদিক তাকালেন. তার পাশে স্ত্রী সন্তান নেই ঠিকই কিন্তু না……. তিনি একা নন. ওনার ঠিক ডান পাশে কেউ বসে আছে. বাইরের জানলা দিয়ে আসা প্রকৃতির আলোয় তিনি দেখলেন যে বসে আছে সে এক মহিলা. মুখটা স্পষ্ট নয় কিন্তু সে যে মহিলা তাতে কোনো সন্দেহ নেই.
ধড়মড় করে উঠে বসলেন ভয়. খিলখিল করে হাসির শব্দ এলো ওনার কানে.
– ভয় পেলে? আমাকে ভয় পেওনা.
বললো মেয়েটি. কি আকর্ষণ লুকিয়ে ওই আওয়াজে. গলার স্বর প্রচন্ড কামনায় ভরা.
অতনু বাবু তাও ভয় পাচ্ছেন. তিনি ঘাবড়ে গিয়ে বললেন – কে? কে আপনি?
আবার হাসির শব্দ. একটু পর মেয়েটি বললো – আমি? কি নাম বলি বলোতো? আমার যে অনেক নাম. কোনটা শুনতে চাও?
অতনু বাবু : ম…. ম… মানে? ক.. ক… কি বলছেন আপনি? আপনি কিকরে এলেন এখানে?
অন্ধকার থেকে আওয়াজ এলো – তুমিই তো আমায় এখানে নিয়ে এসেছো. এখন দেখো.. কেমন ভয় পাচ্ছ.
আবার সেই হাসি.
অতনু বাবু : আমি? কি বলছেন কি…. আপনি কে? সত্যি করে বলুন কি চাই আপনার?
মেয়েটি- তোমাকে.
অতনু : কি সব যাতা বলছেন…..কে আপনি? নিজের মুখ দেখান.
মেয়ে : আমার মুখ দেখবে? সামলাতে পারবে তো আমার রূপ? অনেকেই কিন্তু পারেনা আমায় সামলাতে…
আবার খিলখিল করে হাসি.
অতনু : আমি বলছি দেখান নিজেকে….. কে আপনি?
মহিলা এবারে অতনু বাবুর সামনে এগিয়ে এলো. বাইরের আলোয় এবারে ওই মহিলার মুখ স্পষ্ট হলো. অতনু বাবু অবাক হয়ে গেলেন.
এ কে? এমন রূপ… এমন সৌন্দর্যের অধিকারিণীও পৃথিবীতে আছে? কি রূপ… কি সৌন্দর্য… কি কামনাময় দেহ. দীর্ঘাঙ্গী সুন্দরী হাসিমুখে তাকিয়ে ওনার দিকে.
অতনু বাবু চেয়েই রইলেন. সামনে বসে থাকা অপরূপ সুন্দরীর দিকে. নীল চোখ দুটো যেন টানছে ওনাকে, ওই হাসি ওই রূপ উফফফ একবার তাকিয়ে মন ভোরবেনা একে দেখে.
মেয়েটি- কি?…… কেমন দেখতে আমায়?
অতনু বাবুর মুখ দিয়ে নিজের থেকেই বেরিয়ে এলো – অপূর্ব.
সুন্দরী আবার খিলখিল করে হেসে সেই কামুক চাহুনি দিয়ে বললো : তাই?
অতনু বাবু : কিন্তু…. কিন্তু কে আপনি?
মেয়ে : তুমি আমায় যা ইচ্ছে বলে ডাকতে পারো. আমি তোমার মুখে নিজের নাম শুনতে চাই…. তুমি বলো আমার নাম.
অতনু : আমি…?
মেয়ে : হ্যা…… তুমি বলো আমি কে?
অতনু বাবু ওই রূপে এতটাই হারিয়ে গেছিলেন যে উনি সব যেন ভুলে গেছিলেন. ভুলে গেছিলেন উনি বিবাহিত, উনি কারোর পিতা. এখন যেন তিনি শুধুই যেন পুরুষ. শুধুই একজন পুরুষ.
কিন্তু তখনি একটা আজব ব্যাপার হলো. ওই মেয়েটি এতক্ষন কামুক চাহুনিতে অতনু বাবুর দিকেই তাকিয়ে ছিল. কিন্তু এবারে হঠাৎ সে অতনু বাবুর থেকে চোখ সরিয়ে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে বিছানার মাঝের শুন্য জায়গাটাতে তাকালো.
অতনু বাবু : কি….. কি দেখছেন ওখানে?
মেয়েটি হঠাৎ বললো : আজ… আজ আমি যাই হ্যা…. আবার কাল আসবো…. আজ আমায় যেতে হবে.
এই বলে আবার অন্ধকারে মিলিয়ে গেলো রূপসী.
সামনে থেকে এমন অসাধারণ রূপসী চলে যেতেই তাকে ফিরে পেতে মনটা ছটফট করে উঠলো অতনু বাবুর. কোথায় গেলো সে? কেন চলে গেলো?
কোথায় আপনি? কোথায় চলেছে গেলেন?
ঘুমটা ভেঙে গেলো অতনু বাবুর. কই? কথাও কেউ নেই.
উফফফফফ…. এসব তাহলে স্বপ্ন. কিন্তু… কিন্তু ওই মুখটা…. কি অসাধারণ রূপ তার. হঠাৎ এমন একটা রূপের মেয়েকে উনি দেখলেন কেন? কিন্তু মুখটা যেন চেনা চান লাগছে এখন. যেন মুখটা কোথাও দেখেছেন উনি. কোথায়? সেটা বুঝে উঠতে পারলেন না তিনি.
যাকগে…. একটা স্বপ্ন নিয়ে ওতো ভাবার কি আছে? ঘুমোই আবার. উনি শুয়ে পড়লেন আবার.
পরের দিন সকালে অতনু বাবু উঠে ফ্রেশ হয়ে এসে আয়নার সামনে শেভিং করছেন. ছেলে ঘুমিয়ে. শ্রীপর্ণা স্বামীর জন্য চা এনে টেবিলে রেখে ছেলেকে ডাকতে লাগলেন.
এই বাবাই?…. ওঠ বাবু…… ওঠ সকাল হয়ে গেছে সোনা… ওঠ
আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসলো অর্ক. একটা হাই তুললো সে.
মা : যা ব্রাশ করেনে. খেতে দেবো. উফফ রবিবার বলে পড়ে পড়ে ঘুমোচ্ছে.
অর্ক উঠে বাইরে এলো মায়ের সাথে. বাইরে এসে বাবাকে সেভিং করতে দেখে ওর মনে পড়ে গেলো কাল রাতের ব্যাপারটা. একবার ভাবলো মাকে আর বাবাকে বলবে ব্যাপারটা কিন্তু মা হয়তো বকবে বলে আর কিছু বল্লোনা.
সত্যি বড্ড আজব দৃশ্য দেখেছিলো ও কাল রাতে. ঘুমটা কেন যেন হঠাৎ ভেঙে গেলো. ঘর একটা বিদঘুটে গন্ধে ভর্তি. এই গন্ধ আগে কখনোই পায়নি ও. এই গন্ধ ওর কাছে অজানা. কোথা থেকে আসছে? অনেকটা যেন পোড়া কিছু কোনো জিনিস রয়েছে ঘরে. এদিক ওদিক তাকাতে তাকাতে ওর নিজের ডান দিকে তাকাল. বাবা ঘুমিয়ে. কিন্তু একি ! বাবার পাশে ওটা কে?
বাবার পাশে বসে ঝুঁকে বাবাকে দেখছে. ছ্যাৎ করে উঠলো ওর বুকটা. মুখ দিয়ে হালকা আওয়াজ বেরিয়ে এলো আর তখনি ওর দিকে তাকালো সেই ছায়া. কালো ছায়া কিন্তু দুটো নীল চোখ জ্বল জ্বল করছে. ঠিক তখনি সেই ছায়া বাবার কাছ থেকে সরে অন্ধকারে মিশে গেলো. ও একবার উঠে দেখার চেষ্টা করলো কিন্তু তখনি বাবাও নড়ে উঠলো দেখে ও আবার শুয়ে পড়েছিল. সত্যি হঠাৎ এমন কেন দেখলো বোঝেনি অর্ক কিন্তু ভুল কিছু দেখেছে ভেবে এড়িয়ে গেলো তখনকার মতো.
সকালের রুটি তরকারি খেয়ে হাতে বাজারের ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে গেলেন অর্কর বাবা. রবিবারটা প্রায়ই মাংস খাওয়া হয়. অর্ক নিচের বারান্দার বাইরে দালানে বল নিয়ে খেলছে. মা ওর পাশেই দাঁড়িয়ে বাগানের গাছে জল দিচ্ছে.
এমন সময় ওদের ঠিক বিপরীত দিকের বাড়ির সুজাতা মাসিমা বাইরে থেকে বেরিয়ে অর্কর বাড়ির দিকে এগিয়ে এলেন. বয়স্ক মহিলা. স্বামীর সাথে থাকেন. মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে. দুজনেই থাকেন. অর্কদের বাড়ির সাথে খুবই ভালো সম্পর্ক. শ্রীপর্ণাকে মেয়ের মতোই দেখেন.
কি মা? কেমন আছিস? বললেন সুজাতা মাসিমা.
ওনাকে দেখে হাসিমুখে অর্কর মা ওনার কাছে এগিয়ে গেলেন. গেট খুলে বাইরে গিয়ে বললেন : আসুন না… ভেতরে.
মাসিমা : না মা…. আর আসবোনা. কিছু কাজ সারতে হবে. তা তোমার শশুর কেমন আছেন? তোমার শাশুড়ি কাল বলছিলো ওনার একটু জ্বর মতো হয়েছিল.
অর্কর মা : না…. এখন বেশ ভালো. আসলে জ্বর সেইভাবে আসার আগেই ওষুধ নিয়ে নিয়েছিলেন.
মাসিমা : বর কি বাজারে?
অর্কর মা : হ্যা…. জানেনতো আমার ওই ছেলে আবার মাংস ভক্ত. রবিবার হলে মাংস খেতেই হবে. তাই ওর বাবাকে বাজারে পাঠালাম.
মাসিমা হেসে : সে তো ছেলের আবদার রাখতেই হবে.
তারপরেই তিনি একটা অদ্ভুত কথা বললেন –
মাসিমা : তা মা….. কাল ওতো রাতে তুমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলে কেন? ঘুম আসছিলোনা?
অর্কর মা অবাক হয়ে : আমি? কখন?
মাসিমা : তা… ভালোই রাত…. আমি তখন বাথরুম করতে উঠেছি. জানোই তো আমার আবার সমস্যা আছে. তা ফিরে আসছি তখনি ওই জানলা দিয়ে বাইরে তোমাদের বাড়ির দিকে চোখ পড়লো. দেখলাম তুমি বারান্দায় চুপ করে দাঁড়িয়ে আছো.
অর্কর মা হেসে বললো : না মাসিমা…. আপনি বোধহয় ভুল দেখেছেন. আমি তো রাতে উঠিই নি. এক ঘুমে সকাল.
মাসিমা অবাক হয়ে : ওমা সেকি গো? স্পষ্ট দেখলাম বাইরে বারান্দায় দাঁড়িয়ে কেউ. একদম স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে. ভাবলাম একবার যাবো বারান্দায় আর গিয়ে কথা বলবো তোমার সাথে কিন্তু ব্যাপারটা ঠিক হবেনা ভেবে আর গেলাম না. আর তুমি বলছো তুমি ওঠোই নি রাতে?
অর্কর মা : না মাসিমা…. আপনি হয়তো কোনো কিছুর ছায়া দেখে থাকবেন.
মাসিমা : এতটা ভুল দেখলাম মা? পুরো মনে হলো……
তারপরে নিজেই আবার বললেন : অবশ্য চশমাটা ছিলোনা চোখে. তাই হয়তো….. ভুলই দেখে থাকবো. হ্যা ভুলই হবে. তোমার বাড়িতে তো আর চোর ঢুকে বারান্দায় চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকবেনা. হা… হা…. যাই হোক.. যাই মা…. উনি একা…. এলাম.
অর্কর মা : হ্যা…. আসুন. পরে আসবেন.
উনি নিজের ঘরে চলে গেলেন. অর্কর মা নিচ থেকে নিজেও একবার ওপরে বারান্দায় তাকালো. আর ভাবলো বয়স্কা মহিলা…. কি দেখতে কি দেখেছে. ভুল তো হতেই পারে.
দুপুরে আয়েশ করে খাওয়া দাওয়া হলো. মটন টা দারুন রাধে শ্রীপর্ণা. বাড়ির লোক তো চেটেপুটে খায়. তবে খাবার পরে উচ্ছিষ্ট আর মাংসের হাড় গুলো ফেলা হয়না. ভোলার জন্য রেখে দেওয়া হয়. ভোলা হলো ওদের পাড়ার পরিচিত কুকুর. রোজই দুবেলা করে আসবেই ওদের বাড়ির কাছে. অর্ক খুব আদর করে ভোলাকে. অর্কর দাদু আর অর্ক দুজনে মিলে খেতে দেয় ভোলাকে.
সেদিনও খাবার শেষে অর্কর দাদু আর অর্ক খাবার গুলো নিয়ে বাইরে গিয়ে গেট খুলে ভোলাকে কয়েকবার ডাকতেই ভোলা দৌড়ে চলে এলো. রোজই সে চলে আসে ডাকলে. কাছেই থাকে ও. কিন্তু অন্যদিনের সাথে আজকে একটা তফাৎ ঘটলো. আজ ভোলা দৌড়ে এলো ঠিকই কিন্তু ওদের বাড়ির কাছে আর এলোনা. ওপারে দাঁড়িয়ে লেজ নাড়তে লাগলো. অর্কর দাদু খাবার গুলো একটা থার্মোকলের থালায় এনেছিলেন. সেগুলো বাড়ির বাইরে রেখে ভোলাকে ডাকলেন. কিন্তু আশ্চর্য….. ভোলা খাবার দেখেও এগলোনা. দূর থেকেই কেউ কেউ করতে লাগলো. দাদু নাতি অবাক.
দাদু : কিরে? খাবিনা ভোলা? আয়.. আয়.. মাংস দেখ আয়
কিন্তু ভোলা এক পাও ওই বাড়ির দিকে বাড়ালোনা. শেষমেষ অনেক চেষ্টার পর অর্কর দাদু ওপারে গিয়ে একটা জায়গা দেখে থালাটা রাখতেই ভোলা হামলে পড়লো খাবারে. খুবই ক্ষুদার্ত সে. অর্কর দাদু তো অবাক. গপাগপ গিলছে ভাত মাংস ভোলা. এতোই যখন খিদে তাহলে বাড়ির সামনে এগোচ্ছিলোনা কেন কুকুরটা?
বিকেলের দিকে দাদুর সাথে হাঁটতে বেরোয় অর্ক. মাঠে যায় ওরা. খুব দূরে নয়. কাছেই একটা বড়ো মাঠ আছে. ওখানে কিছুক্ষন নাতির সাথে ঘোরাঘুরি করেন. এতে হাটাহাটিও হয় আর বয়স্ক চেনা পরিচিতদের সাথে আড্ডাও হয়. ঠিক সাড়ে ছটার মধ্যেই ফিরে আসেন তারা. ফিরে আসলে অর্কর মা ছেলেকে পড়তে বসান কিন্তু রবিবারটা ছেলেকে কিছুতেই পারেন না পড়াতে বসাতে. ওর বাবাও বলেছেন – আহা…. আমাদের ছেলেটাকে এই একটা দিন না হয় ছাড় দিলে. বাকি ৫ দিন তো পড়েই ও.
শ্রীপর্ণাও জানে এই একটা দিন বেচারা বাচ্চাটাকে আনন্দ করতে দেবাই ঠিক. এখনই তো খেলে বেড়ানোর বয়স. তাই বাইরে রাগ দেখালেও নিজেই ছেলের সাথে খেলা গল্প করা সব করে.
আজকেও ছটা মতো বাজতেই অর্কর দাদু নাতিকে নিয়ে ফিরতে প্রস্তুতি নিলেন. গলির মুখেই ভোলার সাথে দেখা. অর্ক ডাকলো ভোলাকে. ভোলা রাস্তার পাশে বসে গা চুলকোচ্ছিলো. অর্কর ডাক শুনে লেজ নাড়তে নাড়তে ওর কাছে চলে এলো. অর্ক ওকে আদর করতে করতে এগিয়ে চললো.
ওরা একসময় বাড়ির সামনে পৌঁছে গেলো. কিন্তু বাড়ির গেটের কাছে পৌঁছেই ভোলা আবার কেউ কেউ করে পিছিয়ে গেলো. ব্যাপারটা লক্ষ করলেন অর্কর দাদু. অর্ক কত ডাকলো আয় ভোলা… বিস্কুট দেবো আয়…. কিন্তু ভোলা আর এক পাও এগোলো না. দূরে দাঁড়িয়ে লেজ নাড়তে লাগলো.
আশ্চর্য… যে কুকুরটা বাড়ির ভেতরে ঢুকে বসে থাকে আজ সে ভেতরে ঢোকা তো দূরের কথা বাড়ির গেটের কাছেও আসছেনা.
৪
রাতের খাবার পরে ভোলার জন্য খাবার রেখে দেওয়া হয়েছিল কিন্তু রাতে দেখাই পাওয়া গেলোনা কুকুরটার. যাকগে… এতটা খাবার ফেলে দেওয়া ঠিক হবেনা ভেবে বাইরেই খাবারের থালাটা রেখে দেওয়া হলো. পরেরদিন স্কুল বলে অর্কর মা আর আজ বেশি রাত অব্দি ছেলেকে টিভি দেখতে দিলো না. শুতে যেতে বললো. কি আর করা? মায়ের কথার অবাধ্য হওয়া যাবেনা বলে অর্ক শুয়ে পড়লো. কিন্তু অতনু বাবু টিভিতে একটা মুভি দেখতে বসেছিলেন. বেশ ভালো লাগছিলো মুভিটা ওনার. তাই ভাবলেন ফিল্মটা শেষ করেই শুতে যাবেন. শ্রীপর্ণা বলেছিলো একসাথে ঘুমাতে যেতে কিন্তু স্বামীর ফিল্মের প্রতি নেশার কোথা উনি জানেন. তাই আর আটকালেন না.
হয়েগেলে শুতে আসবে কিন্তু… আর বেশি রাত করবেনা বলে ছেলেকে নিয়ে শুতে চলে গেছিলেন অর্কর মা.
ওরা চলে গেলে লাইট নিভিয়ে টিভি দেখতে লাগলেন অতনু বাবু. ফিল্মটার মধ্যে ঢুকে গেছিলেন এতোই ভালো গল্পটা. কিন্তু কেন জানেন না ওনার মনে হচ্ছিলো পেছন থেকে কেউ ওনাকে দেখছে. উনি তো একবার ভেবেছিলেন শ্রীপর্ণা দেখতে এসেছে. তাই উনি পেছন ফিরে দেখেও ছিলেন. কই? কেউ নেইতো. তাহলে বোধহয় চোখের ভুল. আবার ফিল্ম দেখতে লাগলেন তিনি.
ফিল্ম শেষ হতে হতে হয়ে গেলো বেশ রাত. চোখে ঘুম এসে গেছে অতনু বাবুর. ফিল্ম শেষ হবার পরেও তিনি এদিক ওদিক চ্যানেল দেখতে লাগলেন. দেখতে দেখতে ঢুলছিলেন তিনি. তাও টিভি দেখছিলেন. এটা পুরুষদের একটা বড্ডো খারাপ দোষ.
একসময় কখন যে সোফাতেই বসে ঘুমিয়ে পড়েছেন বুঝতেও পারেননি তিনি.
সময় কতক্ষন পার হয়েছে জানেননা তিনি কিন্তু চোখটা খুলে গেলো ওনার. কেউ যেন গায়ে ঠেলা দিচ্ছে. চোখ খুলে দেখলেন অন্ধকার ড্রয়িং রুমের সোফায় তিনি সেই আগের মতোই বসে আছেন,টিভি চলছে কিন্তু আগের থেকে কিছু পরিবর্তন ঘটেছে এই ঘরে. এখন আর তিনি একা নন. ওনার পাশে একজন বসে ওনাকেই দেখছেন. সে একটি মেয়ে.
চমকে উঠলেন অর্কর বাবা. এযে….. এযে সেই মেয়ে, সেই মুখ যাকে কাল রাতে দেখেছিলেন. স্বপ্নে. কিন্তু এ এখানে এলো কিকরে? মেয়েটি যতই সুন্দরী হোক একজন যদি হঠাৎ করে দেখে এক অচেনা মহিলা তার পাশে তাহলে যে কেউ চমকে যাবে.
অতনু বাবু: আ… আ.. আপনি? এ.. এ.. এখানে কি করে?
মেয়েটি হেসে উঠলো অতনু বাবুর অবস্থা দেখে. কি মোহময়ী সেই হাসি. মেয়েটি এরপর ওনার দিকে তাকিয়ে বললো: চিনতে পারছো আমায়?
অতনু বাবু: হ্যা… কাল… কাল রাতে আপনাকে স্বপ্নে দেখলাম তো
মেয়েটি আরেকটু এগিয়ে আসলো ওনার কাছে. তারপরে চোখে চোখ রেখে বললো: তাই? স্বপ্নে?
অতনু: হ্যা….. স্বপ্নই তো….
মেয়েটি আবার হেসে উঠলো.
অতনু বাবুর এবারে নজর পড়লো মেয়েটার শরীরের দিকে আর চমকে উঠলেন তিনি. এতক্ষন তিনি ওই মেয়েটির মুখের দিকেই দেখছিলেন. আড় চোখে যতটা বোঝা যাচ্ছিলো তাতে মনে হচ্ছিলো মেয়েটি হয়তো কালো রঙের কোনো বস্ত্র পড়ে আছে কিন্তু এখন ভালোভাবে সেই দিকে তাকাতেই তিনি বুঝলেন তিনি কতটা ভুল.
মেয়েটির গায়ে যেটা কাপড় ভেবেছিলেন সেটি মেয়েটির মাথার চুল. এত লম্বা আর এত ঘন যে সারা শরীর সেই চুলের অন্তরালে. কিন্ত মেয়েটির পা সম্পূর্ণ দেখা যাচ্ছে. সেখানে কোনো কাপড় নেই. মানে নিম্নাঙ্গে কোনো বস্ত্রই নেই. এমনকি মেয়েটির দেহে ওর মাথার ঘন চুল ছাড়াও আর কোনো বস্ত্রের চিহ্ন পেলেন না অতনু বাবু. তার মানে কি ও?
-কি দেখছো অমন করে?
মেয়েটি কামুক স্বরে জিজ্ঞেস করলো অতনু বাবুকে.
উনি ঘাবড়ে গিয়ে বললেন: আ.. আ… আপনি মানে আপনার গায়ে কোনো…. কোনো…..
মেয়েটি মুচকি হেসে বললো: না….. নেই….
অতনু বাবু: কিন্তু…. কেন?
মেয়েটি আরও এগিয়ে এলো অর্কর বাবার কাছে. নীল চোখের মণি দুটো অর্কর বাবাকে দেখছে. একেবারে শরীরের সাথে শরীর স্পর্শ করে বসে মেয়েটি বললো – যাতে সময় নষ্ট না হয় তোমার.
অতনু বাবু ঘাবড়ে গিয়ে: ম….. ম…. মানে?
অতনু বাবুর ঘাবড়ে গিয়ে তোতলানো দেখে আবার হেসে ফেললো রূপসী. সে কি হাসি… বুকটা হঠাৎ ধুক করে উঠলো অতনু বাবুর. এমন সুন্দরী নারীর কেমন বীভৎস হাসি. কিন্তু এটা কি সত্যি নাকি স্বপ্ন? নিশ্চই স্বপ্ন… নইলে একটা মেয়ে কিকরে আসবে ওনার ঘরে?
মেয়েটি এবারেও বুঝে ফেললো অতনু বাবুর মনের কথা. সে অতনু বাবুকে বললো: কি?….. ভাবছো এটা স্বপ্ন?
অতনু বাবু: তা…… তা নয়তো ক… ক.. কি? একি সত্যি নাকি?
মেয়েটি এবারে অতনু বাবুর দিকে একটা হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললো: নাও.. ধরো আমার হাত….
অতনু বাবুর ভয় ভয় লাগছে তবু তিনি নিজের ডান হাত বাড়িয়ে দিলেন মহিলার দিকে. আঙুলের সাথে আঙ্গুল স্পর্শ হলো. মেয়েটি অতনু বাবুর আঙুলের ফাঁকে আঙ্গুল দিয়ে চেপে ধরলেন ওনার হাত.
মেয়ে: কি? এখনও মনে হচ্ছে আমি স্বপ্ন?
অতনু বাবু যেন বাস্তব অবাস্তব সত্যি মিথ্যের ফারাক হারিয়ে ফেলেছেন. তিনি বুঝতেই পারছেন না এটা সত্যি নাকি স্বপ্ন…. তিনি শুধু দেখছেন এক অসাধারণ রূপসী তার হাত ধরে তার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে.
মেয়েটি: কি হলো? আমার থেকে তো চোখই ফেরাতে পারছোনা……. বলেছিলাম না…. আমার রূপ অনেকেই সহ্য করতে পারেনা…… তুমিও হেরে গেলে তাহলে?
অতনু বাবু: কিন্তু…… কিন্তু কে আপনি? আপনার নাম কি? এখানে কিকরে?
মেয়েটি অভিমানী সুরে: এখনও আপনি আপনি করছো? এমন করলেন কিন্তু চলে যাবো আমি…… আর কথা বলবোনা.
অতনু: না… না… যাবেন না…
মেয়েটি অতনু বাবুর আরও ঘনিষ্ট হয়ে বসে চোখে চোখ রেখে বললো: তাহলে আমায় তুমি করে বলো.
অতনু বাবু অনুভব করলেন ওনার বুক থেকে ভয় টা কমে যাচ্ছে বরং তার পরিবর্তে জেগে উঠছে খিদে.
না….পেটের খিদে নয়….. শরীরের খিদে যেটা হয়তো পেটের খিদের থেকেও প্রবল.
চোখের সামনে অসাধারণ এক সুন্দরী বসে. যে কিনা নগ্ন. তার এক হাত অর্কর বাবার বুকে. তাকিয়ে রয়েছে ওনারই দিকে.
এবারে অতনু বাবুর একটা হাত ধরে মেয়েটি নিজের গালে রাখলো. নরম গালের স্পর্শ পেলেন অতনু বাবু. মেয়েটি অতনু বাবুর হাত ধরে সেই হাত এবারে নিজের ঠোঁটে ঠেকালো. লাল ঠোঁট দুটোর ওপর ঘষা খেলো অতনু বাবুর আঙ্গুল. এবারে মেয়েটি অতনু বাবুর হাত নিয়ে গেলো গলার কাছে. মেয়েটির গলায় এখন অতনু বাবুর হাত.
মেয়েটি এবারে নিজের হাত সরিয়ে নিলো. কিন্তু অতনু বাবুর হাত মেয়েটির গলায়. ওনার হাত কাঁপছে. কিন্তু উনি হাত সরাচ্ছেন না. কেন? উত্তর জানেননা অতনু বাবু.
অতনু বাবু এবারে নিজেই হাতটা নিচের দিকে নামাতে লাগলেন. গলা থেকে বুক. উফফফফ…. স্তনের খাঁজে ওনার হাতটা স্পর্শ হলো. হাতটা নেমে গেলো আরও নীচে. মেয়েটির ফর্সা পায়ে. ফর্সা থাইয়ে হাত বোলাচ্ছেন অর্কর বাবা.
মেয়েটি দুই পা ফাঁক করে দিলো. অতনু বাবু ঘামছেন. অনেক কষ্টে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে ছিলেন তিনি… কিন্তু ওই ফাঁক হয়ে থাকা পা দুটোর মাঝের অংশে হাত দেবার ইচ্ছেটা এবারে প্রবল. খুব লোভ হচ্ছে এখন.
তিনি জানতে চান না এটা বাস্তব নাকি কল্পনা নাকি স্বপ্ন… তিনি এখন এই মুহূর্তটাকে উপভোগ করতে চান. এই মুহূর্তটাকে যদি তিনি পরিত্যাগ করেন তবে তিনি কিসের পুরুষ?
অর্কর বাবা নিজের হাত নিয়ে গেলেন অচেনা মেয়েটির দুই পায়ের মাঝে. মেয়েটি আরও ফাঁক করে দিলো পা. টিভির আলোয় পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে কেশহীন যোনি. পা ফাঁক হয়ে থাকার জন্য ভিতরের গোলাপি অংশটা দেখতে পাচ্ছেন অতনু বাবু.
ঘরে পাখা চলছে…. তাছাড়া এমনিতেও ঠান্ডা আবহাওয়া কিন্তু অর্কর বাবা ঘামছেন একটু. হয়তো আগ্রহ, উত্তজেনা আর নতুন কিছুর লোভে. লোভ বড়ো সাংঘাতিক জিনিস যে.
এই যে অচেনা সুন্দরীর উন্মুক্ত যোনি….. অতনু বাবুর সামনে…. সেটা দেখে অতনু বাবু ভুলেই গেলেন যে পাশের ঘরেই ওনার বিবাহিত স্ত্রী ওনার সন্তান ঘুমিয়ে. এখন ওরা যেন কোনো তুচ্ছ. সামনে বসে থাকা এই অপরূপা যেন সব থেকে আকর্ষণীয়া.
আর নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ রইলোনা অর্কর বাবার. পুরুষত্বের লোভের কাছে সততা হার মানলো. দুই আঙ্গুল দিয়ে জোরে জোরে যোনিটা ঘষতে লাগলেন অতনু বাবু. আঙুলের ঘষা খেয়ে কেঁপে উঠলো মেয়েটা. হালকা আওয়াজ বেরিয়ে এলো মেয়েটির মুখ দিয়ে আহহহহহ্হঃ
সোফায় হেলান দিয়ে শুয়ে পড়লো মেয়েটি. পা দুটো ভাঁজ করে ওপরে হাওয়ায় তুলে দিলো. অতনু বাবু আরও এগিয়ে এসে মেয়েটার যোনির ওপর আঙ্গুল সঞ্চালন করতে লাগলেন.
মেয়েটি খামচে ধরলো অর্কর বাবার জামা. কেঁপে কেঁপে উঠছে মেয়েটা. মেয়েটাকে অমন তড়পাতে দেখে অতনু বাবুর ভেতরে পুরুষটা আরও ক্ষেপে উঠলো. পুচুৎ করে একটা আঙ্গুল ঢুকিয়ে দিলো ওই যোনি গহ্বরে. আহহহহহ্হঃ করে হালকা শিৎকার বেরিয়ে এলো মেয়েটির মুখ দিয়ে.
অতনু বাবু আর নিজের মধ্যে নেই. ওনার প্যান্টের ভেতরে সিংহ নিজের আসল রূপ ধারণ করে ফুঁসছে. অতনু বাবু প্রতি মুহূর্তে ক্ষেপে উঠছেন. মেয়েটাকে তড়পাতে দেখে অতনু বাবু আরও জোরে জোরে যোনিতে আঙ্গুল ভিতর বাহির করতে লাগলেন.
মেয়েটির দাঁত খিঁচিয়ে ক্ষিপ্ত নাগিনীর মতো তাকিয়ে আছে অর্কর বাবার দিকে. অতনু বাবুও ক্ষিপ্ত নাগিনীর দিকে তাকিয়ে. সুন্দরী নারী যখন কামের আগুনে ক্ষেপে ওঠে তখন আরও অসাধারণ লাগে তাকে.
মেয়েটি অতনু বাবুর হাত ছিটকে সরিয়ে দিয়ে অতনু বাবুর ওপর উঠে দুদিকে পা রেখে কোলে বসে পড়লো. টেনে খুলে সে ফেললো অতনু বাবুর গেঞ্জিটা. অতনু বাবুর কাঁধ খামচি দিয়ে ধরে নিজের ঠোঁট চেপে ধরলো অর্কর বাবার ঠোঁটে.
অতনু বাবু মেয়েটির নগ্ন পিঠে হাত বোলাতে লাগলেন. দুই ঠোঁট চুষে খাচ্ছে একে অপরকে.
বেশ কিছুক্ষন চুম্বনের পর মেয়েটি মুখ তুলে হাপাতে লাগলো. অতনু বাবুও হাপাচ্ছে.
উনি জিজ্ঞেস করলো: কে তুমি…… কে?
মেয়েটি বললো: তুমি বলো…. তুমি আমায় যা বলে ডাকবে…সেটাই আমার নাম
অতনু বাবু তাকিয়ে রইলেন ওর দিকে. অসাধারণ রূপ, টকটকে ফর্সা গায়ের রঙ, নীল চোখ, কামনাময় শরীর… সব মিলিয়ে মোহময়ী নারী.
অতনু বাবুর মুখ দিয়ে বেরিয়ে এলো…. মোহিনী.
মোহিনী হেসে বললো: বাহ্……. খুব সুন্দর নাম দিয়েছো আমার. তাহলে অপেক্ষা কিসের? নিজের মোহিনীকে গ্রহণ করো.
অতনু বাবু নিজের কোলে অপূর্ব সুন্দরী দেখে আর সামলাতে পারছিলেন না নিজেকে তবু শেষবারের মতো তার মুখ দিয়ে বেরিয়ে এলো: আমি….. আমি বিবাহিত…. আমার স্ত্রী আছে. আমি কি করে…… আমি… আমি…
মোহিনী হেসে বললো: কিন্তু…. সে কি আমার মতো সুন্দরী?
অতনু বাবু বললেন: না……. একটুও নয়….. তোমার মতো সুন্দরী কেউ নয়…. কেউ নয়
মোহিনী নিজের মুখ অর্কর বাবার কাছে এনে ফিসফিস করে বললো: আজ থেকে এই সুন্দরী তোমার…. শুধু তোমার. আমাকে নিজের করে নাও….. আমাকে সুখ দাও. আমি তোমার.
অতনু বাবু আর নিজেকে আটকে রাখতে পারলেন না. তার ভেতরের পৌরুষ তাকে বলছে: কিসের অপেক্ষা করছিস? তোর সামনে অপরূপা নারী তোর জন্য অপেক্ষা করছে আর তুই ওই বৌটার কথা ভাবছিস? আরে তোর বৌয়ের থেকে একশো গুন রূপসী এই নারী…. একে গ্রহণ কর…. ওকে সুখ দে…. বুঝিয়ে দে পুরুষ মানুষ কি জিনিস.
অতনু বাবু মোহিনীর রেশমি চুল ওর শরীরের ওপর থেকে সরিয়ে দিলেন. বেরিয়ে পড়লো মোহিনীর বৃহৎ স্তন জোড়া. উফফফফফ…… কি অসাধারণ দুটো স্তন. মুখে জল এসে গেলো অর্কর বাবার. ক্ষেপে উঠলেন উনি. মোহিনীর গলা টিপে ধরলেন আর টেনে আনলেন নিজের কাছে. চুষতে লাগলেন নিচের ওই নরম ফোলা ঠোঁটটা.
এদিকে মেয়েটাও থেমে নেই. নিজের নিতম্ব দিয়ে অনবরত অর্কর বাবার যৌনাঙ্গ টা প্যান্টের ওপর দিয়েই উপভোগ করছে সে. দুই হাত অর্কর বাবার লোমশ বুকে রেখে চুম্বনে লিপ্ত সে. টিভিতে কি হচ্ছে সেটা কারোর দেখার সময় নেই. এখন শুধু শরীরী খেলা খেলবে দুজনে.
আর একটুও ভয় করছেনা অতনু বাবুর মোহিনীকে. বরং প্রতি মুহূর্তে খিদে বেড়ে চলেছে. এই সুন্দরীকে কিছুতেই ছাড়া পুরুষত্বের কাজ হবেনা. আজ আশ মিটিয়ে নিজের খিদে মেটাবেন অতনু বাবু. মোহিনীর ঠোঁট ছেড়ে খাবলে ধরলেন ওর একটা স্তন. এক হাতে আটলোনা সেটা… এতটাই বড়ো স্তন মোহিনীর. মোহিনীকে তুলে ধরলেন ওপরের দিকে. আর ওর বিশাল স্তন দুটো চলে এলো অর্কর বাবার মুখের সামনে. মুখে জল এসে গেছে ওনার. অভদ্রের মতো একটা স্তনের বৃন্ত মুখে পুরে নিলেন. চুষতে লাগলেন গোলাপি নিপল টা. পাশের স্তনটা অপেক্ষা করছে পুরুষ স্পর্শের. অতনু বাবুর চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে মোহিনী আর দেখছে তার স্তন কেমন করে চুষছে তার নতুন শিকার.
পুরুষ মানুষ কে উত্তেজিত করে তার সাথে খেলা করার মজাই আলাদা ভেবে হাসি পেলো মোহিনীর. ওদিকে অতনু বাবু পাশের স্তনটা জোরে জোরে টিপতে লাগলেন. জিভ দিয়ে ওই গোলাপি বৃন্তটা চাটছেন উনি. কি করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না. মাথার মধ্যে প্রচন্ড নোংরা নোংরা চিন্তা আসছে.
নিজের এই ভয়ঙ্কর রূপ দেখে নিজেই অবাক হয়ে গেলেন অতনু বাবু. সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে তিনি. তার বাবা মা স্ত্রী সন্তান নিয়ে তার জীবন. স্ত্রীকে তিনি খুবই ভালোবাসেন. তাকে ঠকানোর কথা কোনোদিন মাথাতেও আসেনি. তবে আজ একি হলো তার? এটা কি তিনি? নাকি অন্য কেউ?
ভাবার আর সময় পেলেন না. মোহিনী ঘাড়ে গলায় চুমু খেতে শুরু করেছে. গলা থেকে বুক, বুক থেকে পেট, পেট থেকে তলপেট…. নীচে নামছে… আরও নীচে নামছে মোহিনীর ঠোঁট. সোফার থেকে নেমে অতনু বাবুর দুই পায়ের ফাঁকে মেঝেতে হাঁটু মুড়ে বসে অর্কর বাবার হাফ প্যান্টটা এক ঝটকায় নামিয়ে দিলো মোহিনী আর বন্ধন মুক্ত হতেই লাফিয়ে বেরিয়ে এলো অতনু বাবুর লৌহ দণ্ড. সেটা সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে. লিঙ্গ মুন্ডির চামড়াটা কিছুটা নীচে নামানো. তার থেকে কিছুটা যৌন রস বেরিয়ে লেপ্টে রয়েছে চারপাশে.
লোভী হায়নার মতো তাকিয়ে রয়েছে মোহিনী অতনু বাবুর ওই লিঙ্গের দিকে. কি ভয়ানক সেই দৃষ্টি. অতনু বাবুর বুকটা হটাত ছ্যাৎ করে উঠলো সামনে বসে থাকা ওই মেয়েটির নীল চোখ দেখে. যেন বহুদিনের ক্ষুদার্থ হায়না আজ সামনে মাংস দেখতে পেয়েছে.
নিজের ঠোঁটে দু বার জিভ বুলিয়ে একবার হিংস্র কামুক দৃষ্টিতে সে তাকালো অতনু বাবুর দিকে. তারপরেই ঝাঁপিয়ে পড়লো ওই যৌনাঙ্গের ওপর. অর্কর বাবার যৌন দণ্ডের চামড়া নামিয়ে লাল মুন্ডিটা পুরো মুখে নিয়ে নির্লজ্জের মতো চুষতে লাগলো মোহিনী.
সারা শরীর কাঁপছে অতনু বাবুর. এই প্রথম কেউ লেহন করছে তার যৌনাঙ্গ. ইচ্ছা থাকলেও কোনোদিন সাহস পাননি অর্কর মাকে দিয়ে এসব করানোর. সে একটু রাগী মহিলা. কি ভাববেন আবার. কিন্তু আজ অর্কর জন্মের এত বছর পর তার বাবা যে এই লেহনের সুখ পাবেন তা কোনোদিন ভাবতেও পারেননি তিনি.
ইশ কি করছে মেয়েটা তার যৌনাঙ্গ নিয়ে. জিভ দিয়ে পুরো লিঙ্গ চামড়া চাটছে আবার কখনো জিভের ডগা দিয়ে মূত্র গহ্বর লেহন করছে. অতনু বাবু বসে থাকতে পারলেন না আর. দাঁড়িয়ে পড়লেন. আর দাঁড়িয়ে দেখতে লাগলেন অপরূপা মোহিনী তার যৌনাঙ্গ নিয়ে অসভ্যতামি করে চলেছে. এর মধ্যে মোহিনী একবারও অর্কর বাবার চোখ থেকে চোখ সরায়নি. দুজন দুজনকে দেখছে.
অতনু বাবুকে অবাক করে দিয়ে মোহিনী তার যৌনাঙ্গ পুরোটা মুখে ঢুকিয়ে জিভ দিয়ে মুখগহ্বরের মধ্যেই লেহন করতে লাগলো. অতনু বাবু অবাক. তার যৌনাঙ্গ বিশাল কিছু না হলেও বেশ ভালোই আকৃতির. অর্কর মায়ের আগে কষ্ট হতো. কিন্তু এই মেয়ে যে নিজের মুখে পুরোটা নিয়ে নিলো. মোহিনীর গলার নলির ভেতর সেটা ঢুকে গেছে অনুভব করে গায়ে কাঁটা দিলো অতনু বাবুর.
মুখ থেকে বার করলো যখন মোহিনী ওই যৌনাঙ্গটা তখন অতনু বাবু দেখলেন লালায় মাখামাখি সেটা. উফফফফ… লালার সাথে লিঙ্গের মুন্ডির চামড়া ঘষা লেগে শির শির করে উঠলো শরীরটা. নিজের লিঙ্গের ওই অবস্থা দেখে চরম উত্তেজনায় মাথায় গরম হয়ে গেলো অর্কর বাবার. ধীরে ধীরে মনুষত্ব হারিয়ে গিয়ে একটা ঘৃণ্য জানোয়ার জন্ম নিচ্ছে ওনার ভেতরে. এত পরিমান উত্তেজনা জীবনে কোনোদিন অনুভব করেন নি তিনি.
মোহিনীর চুলের মুঠি ধরে আবার মুখে ঢুকিয়ে দিলেন নিজের লিঙ্গটা. চেপে ধরলেন মুখে পুরোটা. আহহহহহ্হঃ এত সুখ পাওয়া যায় মুখ চোদনে? এই জন্য বিদেশীরা মিলনের থেকেও লিঙ্গ লেহনে বেশি আগ্রহ দেখান. ওনার অফিসের বন্ধু একবার ফোনে ওনাকে একটা ক্লিপ দেখিয়ে ছিল. একটা লোক একটা মেয়েকে দিয়ে খুবই অশ্লীল ভাবে চোষাচ্ছে নিজের লিঙ্গটা. এত জোরে জোরে মুখে ঢোকাচ্ছে ওটা যেন মুখ নয়.. ওটা মেয়েটার যোনি.
অর্কর বাবার মাথায় দৃশ্যটা ভেসে উঠতেই ওনারও ইচ্ছে হলো সেই একি কাজ তিনি করবেন. দু হাতে মোহিনীর মাথায় ধরে নিজের কোমর নাড়তে শুরু করলেন অতনু বাবু.
ক্লক.. ক্লোক্ক… অককক অককককক আওয়াজ বেরিয়ে আসতে লাগলো মেয়েটির মুখ দিয়ে. অতনু বাবু জানেনা এটা কি হচ্ছে তার সাথে, এটা সত্যি নাকি মিথ্যে. যদি এটা মিথ্যেও হয় তবু এই মিথ্যেটা তিনি উপভোগ করবেন শেষ অব্দি.
অতনু বাবু চোখ বুজে অনুভব করছেন গরম রসালো কিছুর ভেতরে লিঙ্গটা ঢুকে যাচ্ছে আবার বেরিয়ে যাচ্ছে, আবার ঢুকছে… উফফফফফ… কি ভয়ানক সুখ!!
জীবনে প্রথমবার মুখ চোদনের সুখে গা শির শির করে উঠছে. ওনার লিঙ্গও প্রথমবার তীব্র সুখ পেয়ে ফুলে ঠাটিয়ে উঠেছে. এত শক্ত হয়ে গেছে যেন আর কোনোদিন নরম হবেনা.
না….. এইভাবে চলতে থাকলে অর্কর বাবা পাগল হয়ে যাবেন. উগরে দেবেন সব এক্ষুনি. আর কিছুই বাকি থাকবেনা তার পরে. তাই মুখ থেকে নিজের ওইটা বার করে মেয়েটাকে তুলে দাঁড় করালেন. তারপরে হাত ধরে টেনে নিয়ে গেলেন সোফায়. সোফায় গিয়ে বসলো সেই রূপসী অচেনা নারী. ওর চোখে তীব্র চাহিদা. বাঘিনীর মতো দাঁত খিঁচিয়ে হিংস্র চোখে তাকিয়ে অতনু বাবুর দিকে.
অতনু বাবু এবারে নীচে বসে মোহিনীর দুই পা একদম ওপরে হাওয়ায় তুলে ফাঁক করে ধরলেন. একদম মুখের সামনে মেয়েটার গোলাপি যোনি. অতনু বাবু নিজেই নিজেকে বললেন – এর থেকে সুস্বাদু আর কিছু নেই কোথাও. এর স্বাদ নিতেই হবে.
এবারে অর্কর বাবা ঝাঁপিয়ে পড়লো সিংহের মতো নরম মাংস চেখে দেখতে. জিভ দিয়ে অনবরত ওই ক্লিট টা চাটতে লাগলেন তিনি. মেয়েটা ডাঙায় তোলা মাছের মতো তড়পাচ্ছে. ঐভাবে তড়পাতে দেখে অতনু বাবুর আনন্দ হচ্ছে.
আশ্চর্য….. এমন তো তিনি নন. এইসব চিন্তাধারা ওনার মাথায় কখনো আসেনি…. তিনি তার স্ত্রী শ্রীপর্ণাকে নিয়ে এতগুলো বছর সংসার করেছেন, তাদের যৌন মিলনও বেশ ভালো কিন্তু কখনোই এত হিংস্র তিনি কোনোদিন হয়ে ওঠেন নি…. আজ কি হলো তার?
আজকের অতনু আর আগের অতনুর মধ্যে আকাশ পাতাল তফাৎ!
কিন্তু এই অতনুকে থামানো মুশকিল. মেয়ে মানুষটাকে এখন আর ছাড়বেন না তিনি…… শরীরের প্রত্যেকটা অঙ্গ উপভোগ করবেন এখন. আজ ওনার ভেতরের আসল পুরুষটা পুরো ঘুম থেকে জেগে উঠেছে. এমন অসাধারণ রূপসীকে ভোগ করার সুযোগ কোন পুরুষ ছাড়বে? যে ছাড়বে সে হয়তো পুরুষই নয়.
অর্কর বাবার মাথার চুল খামচে ধরলো মোহনী. নিজের কোমরটা অর্কর বাবার মুখে জোরে জোরে নাড়তে লাগলো. অতনু বাবুও জিভ দিয়ে যোনি লেহন করে চলেছেন. হাত বাড়িয়ে টিপতে শুরু করলেন মোহিনীর অসাধারণ স্তন জোড়া.
ওদিকে টিভিতে দেখাচ্ছে জঙ্গলের রাজা কিভাবে নিজের সঙ্গিনীর সাথে মিলন করে…. সঙ্গিনীর ওপর উঠে তার ঘাড় কামড়ে ধরে কোমর নাড়াতে থাকে জঙ্গলের রাজা. কিন্তু সেইদিকে একবারও তাকাননি অর্কর বাবা. দেখার প্রয়োজন নেই তার. কারণ তিনিই এখন রাজা আর এই অসাধারণ রূপসী তার রানী. পশুর সঙ্গে মানুষের অন্যান্য তফাতের মধ্যে আরেকটি হলো…. পশু মানুষের মতো নানা কায়দায় মিলন করতে সক্ষম নয়….. কিন্তু মানুষ যে ভাবে পারে সেইভাবে নোংরামি করে.
অতনু বাবু এবারে উঠে দাঁড়ালেন. ওনার যৌনাঙ্গ ভয়ানক কঠিন রূপ ধারণ করেছে. বাঘিনী হিংস্র দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখছে অতনু বাবুকে. এবারে মোহিনী উঠে দাঁড়িয়ে গলা টিপে ধরলো অর্কর বাবার. অতনু বাবুর গলা টিপে ধরেই তাকে সোফার সামনে নিয়ে গিয়ে ধাক্কা দিয়ে সোফায় বসিয়ে দিলো মোহিনী.
অতনু বাবু পড়ে গেলেন সোফার ওপর. কিছু ভাবার আগেই সেই সুন্দরীও অতনু বাবুর ওপর উঠে দুদিকে পা ছড়িয়ে একহাতে অতনু বাবুর পুরুষাঙ্গটা ধরে নিজের কোমর তুলে ঠিক ওই যৌনাঙ্গের ওপর নিয়ে এলো মোহিনী. তারপরে আস্তে আস্তে বসতে শুরু করলো অতনু বাবুর যৌনাঙ্গের ওপর.
অতনু বাবু অবাক হয়ে দেখছেন সম্পূর্ণ অজানা অচেনা মহিলার যোনিতে একটু একটু করে হারিয়ে যাচ্ছে ওনার লিঙ্গটা. মোহিনী ব্যাথায় বা আনন্দে হালকা চিৎকার দিয়ে উঠলো. তারপর অতনু বাবুর দিকে তাকিয়ে হেসে উঠলো মোহিনী. উফফফফ কি ভয়ানক হাসি.
মিলন রত অবস্থাতেও ভয় বুকটা কেঁপে উঠলো অতনু বাবুর. তার পুরুষাঙ্গের ওপর বসে মিলনরত মহিলাটি বড়ো বড়ো চোখ করে তাকালো অতনু বাবুর দিকে. ভয় হচ্ছে এখন অতনু বাবুর. সুন্দরী মোহিনীর মুখে কেমন হিংস্রতা ফুটে উঠেছে. অতনু বাবুর দুই কাঁধ খামচে ধরে লাফাতে শুরু করলো মোহিনী ওই পুরুষাঙ্গের ওপর.
আহহহহহ্হঃ কি সুখ!! পুরো লিঙ্গটা গরম যোনির ভেতরে হারিয়ে যাচ্ছে আবার বেরিয়ে আসছে. একটু পরেই মোহিনী নিজের গতি ভয়ানক বাড়িয়ে দিলো. পুরো সোফা থেকে ক্যাচ ক্যাচ আওয়াজ বেরোচ্ছে. কোনো মেয়ে যে একজন পুরুষের যৌনাঙ্গ এত ভয়ানক গতিতে নিতে পারে জানতেন না অতনু বাবু.
তারপরে সারারাত যা হলো তা বর্ণনা করা যায়না. সারারাত পৈশাচিক মিলন ঘটেছিলো. অতনু বাবুকে যেন একটি ক্ষুদার্থ বাঘিনীর খাঁচায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল.
ভোরে উঠে ছাদে গিয়ে হাটাহাটি করা অর্কর দাদুর অনেকদিনের অভ্যেস. শুধু জ্বরের কারণে দুই দিন ছাদে যাওয়া হয়নি. আজ সকালে আগের থেকেই অনেকটা ভালো অনুভব হতে তিনি ভাবলেন ছাদে গিয়ে হাঁটবেন. তাই তিনি বিছানায় থেকে উঠে বাথরুমের কাজ সেরে ছাদের দিকে পা বাড়ালেন.
ছাদের কাছে পৌঁছে ছাদে ঢোকার দরজাটা খুলেই থমকে দাঁড়িয়ে পড়লেন ওখানেই. সামান্য চমকেও গেলেন. ছাদে অন্তত ৩৫ থেকে ৪০টা কাক বসে রয়েছে.
এর আগেও সকালে হাঁটতে এসে অর্কর দাদু ছাদে বা আশেপাশের গাছের কাক দেখেছেন তবে সেটা তিন চারটের বেশি নয় কিন্তু আজ তিনি যা দেখছেন সেটা তাকে অবাক করে দিলো. এত কাক কেন তার ছাদে?
৫
কি গো? সারারাত এখানেই ঘুমিয়ে ছিলে?
শ্রীপর্ণার ডাকে ঘুমটা ভেঙে গেলো অতনু বাবুর. পেছনে ফিরে চাইলেন অর্কর মা রাগী চোখে তার দিকে তাকিয়ে.
এই জন্য বলেছিলাম হয়ে গেলে টিভি নিভিয়ে শুতে চলে এসো কিন্তু কে শোনে কার কথা? এই তুমি আর তোমার ছেলে দুজনেই হয়েছো একরিকম. উফফফ… যেমন ছেলে তার তেমন বাবা.
রাগে গজ গজ করতে করতে বলছিলো শ্রীপর্ণা. কিন্তু অতনু বাবুর কানে যেন সেসব কিছুই ঢুকছিলনা. বার বার রাতের দৃশ্য গুলো চোখের সামনে ভেসে উঠছে. সেই ভয়ানক পৈশাচিক দৃশ্য গুলো. ভাবতেই কেমন শিহরণ খেলে গেলো শরীরে. তাহলে….. সবই স্বপ্ন ছিল? কিন্তু এত বাস্তবিক লাগছিলো সব….. ওনাকে কি স্বপ্নদোষ রোগে ধরলো নাকি?
উঠে দাঁড়ালেন আর দাঁড়িয়েই বুঝলেন নিম্নাঙ্গের কাছটা ভেজা ভেজা. মানে বুঝতে অসুবিধা হলোনা ওনার. স্বপ্নদোষের কারণে প্যান্টেই ওনার কামরস…….. ইশ…. ছি ছি.
ওদিকে অর্কর মা টিভিটা রিমোট দিয়ে অফ করে বললেন: টিভিটাও নেভাইনি লোকটা… মানে কি বলবো… সারারাত চললো টিভিটা… মানে তোমার কি কোনো খেয়াল থাকেনা নাকি? ওতো কি রাত জেগে ফিল্ম দেখা…. ছেলেটা কি শিখবে তোমার থেকে?
মাথাটা হঠাৎ গরম হয়ে গেলো অতনু বাবুর. রাগের মাথায় বলেই ফেললেন: আহঃ…. কি তখন থেকে এত ঘ্যানর ঘ্যানর করছো…কাজ নেই নাকি আর কিছু? যত্তসব…
অবাক হয়ে গেলো শ্রীপর্ণা স্বামীর মুখে এটা শুনে. অতনু বাবু নিজেও নিজের প্রতিক্রিয়াতে অবাক হয়ে গেলেন. সামান্য কথায় এরকম হঠাৎ রেগে গেলেন কেন সেটা নিজেই বুঝলেন না. কোনোদিন নিজের স্ত্রীয়ের সাথে এরকম ভাবে কথা বলেননি তিনি. এর আগেও কতবার বৌয়ের বকুনি খেয়েছেন তবে সেটা ভালোবাসার বকুনি সেটাও তিনি জানেন. তবে আজ হঠাৎ মাথাটা কেন গরম হয়ে গেলো?
যাইহোক… পরিস্থিতি সামলানোর জন্যই নকল হাসি হেসে বললেন: ইয়ে… একটু ইয়ার্কি করলাম.. কিছু মনে কোরোনা. শ্রীপর্ণাও স্বামীর ইয়ার্কি ভেবে রাগী হাসি হেসে চলে গেলো ছেলেকে ডাকতে. অতনু বাবুও গেলেন বাথরুমে.
সকালে খুব তাড়াহুড়ো থাকে শ্রীপর্ণার. ছেলেকে ওঠানো, জল খাবার বানানো, ছেলেকে রেডি করা, স্বামীর আর ছেলের জল খাবার রেডি করা. শশুর শাশুড়িকে খেতে চা জলখাবার দেওয়া আর স্বামী অফিসে চলে যাবার পরে ছেলেকে স্কুলে ছেড়ে আসা. এইসব কারণে সারা সকালটা ব্যাস্ততার মধ্যে কাটে.
সেদিনও অর্ক রেডি হচ্ছে. ওর মা ওকে জামা পরিয়ে দিচ্ছে. এমন সময় স্নান সেরে অর্কর বাবা ঘরে এলো. আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে রেডি হতে লাগলো. ঠিক তখনি অর্কর মায়ের চোখ পড়লো ওর স্বামীর পিঠে.
– একি! এতটা চিড়ে গেলো কি করে!
প্রশ্ন করলো অর্কর মা. ওর প্রশ্ন শুনে অর্কর বাবা ঘুরে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো: কি? কি চিড়ে গেছে গো? কোথায়? অর্কর নাকি?
শ্রীপর্ণা: না না তোমার….. ঘাড়ের কাছটা এমন লম্বা দাগ… দেখেতো নখের আঁচড় লেগেছে মনে হচ্ছে.
স্ত্রীয়ের কথা শুনে সঙ্গে সঙ্গে আয়নায় নিজের কাঁধের পেছন দিকটা দেখলেন উনি. সত্যি আঁচড়ের দাগ. লম্বা লম্বা. একটা নয়, তিন চারটে. এবারে লক্ষ করলেন শুধু কাঁধে নয়, বুকের কাছেও একটা আঁচড়ের দাগ.
কি করে এলো এসব? ভাবতেই হটাত ওনার চোখের সামনে ভেসে উঠলো দুটো হাত. যৌন উত্তেজনায় খামচে ধরে অতনু বাবুর কাঁধ. আর তারপরেই কি এই দাগ? কিন্তু…… কিন্তু সে কি করে সম্ভব? ওটাতো স্বপ্ন ছিল.
কি গো? কি হলো বলো? কিকরে লাগলো এমন আঁচড়?
স্ত্রীয়ের প্রশ্নে আবার হুশ ফিরলো অর্কর বাবার. তিনি পরিস্থিতি সামলানোর জন্য বললেন: আর বলোনা….. যা মশা ছিল কাল উফফফ… যেখানেই পারছে কামড়ে দিচ্ছিলো…. তাই চুলকোতে চুলকোতে মনে হয় আমারই নখের আঁচড় লেগেছে. তখন জ্বালা জ্বালা করছিলো… ওতো আর খেয়াল করিনি.
উফফফফফ… তুমি না…. ওতো মশা ছিল যখন গুড নাইট টা জ্বালাও নি কেন? মানে একবার টিভির সামনে বসলে আর উঠতে ইচ্ছে করেনা না? অলস লোক একটা. কিরে এখনও জুতো বাধিসনি? তাড়াতাড়ি কর… দেরি হয়ে যাবে.
এই শেষ কথাগুলো ছিল অর্কর জন্য. শ্রীপর্ণা আবার ছেলের কাছে চলে গেলো. অতনু বাবুও দ্রুত নিজের জামাটা পড়ে নিলেন.
স্বামী অফিসে চলে গেছে, অর্ককেও একটু আগেই স্কুলে ছেড়ে দিয়ে ফিরে এসেছে শ্রীপর্ণা. তাই ও শাড়ী পাল্টে বাড়ির ম্যাক্সি পড়ে নীচে রান্না করতে চলে গেলো. রান্নায় ওর শাশুড়ি ওকে সাহায্য করে. যদিও শ্রীপর্ণা শাশুড়িকে বেশি কিচ্ছু করতে দেয় না… সব নিজেই করে.. তবু বাড়ির দুই মহিলা রান্না ঘরে গল্পটা করে. কখন সময় পার হয়ে যায় জানতেও পারেনা ওরা.
রান্না সেরে শ্রীপর্ণা তিন কাপ চা করে নিয়ে গেলো শশুরের ঘরে. দুই বয়স্ক মানুষ বসে টিভি দেখছে. অর্কর দাদু কুন্তল বাবু খবরটা দেখার জন্য বার বার স্ত্রীকে রিমোট দিতে বলছে কিন্তু এখন শাশুড়ির সিরিয়াল দেখার সময়. কিছুতেই রিমোট দেবেন না.
চা নিয়ে ঘরে ঢুকলো ওনাদের বউমা. শশুর শাশুড়ি কে চা দিয়ে নিজেও শাশুড়ির পাশে বসে সিরিয়াল দেখতে লাগলো. কুন্তল বাবু আর কি করবেন… খবরের কাগজ টা একবার পড়া হয়ে গেছে… আবার পড়তে শুরু করলেন.
কা.. কা.. শব্দে এবারে বাইরের দিকে তাকালেন. বাইরের বট গাছটার ডালে অনেক গুলো কাকে বসে কা কা করে চলেছে. সকালের কথাটা মনে পড়ে গেলো.
উনি স্ত্রী বৌমাকে উদ্দেশ্য করে বললেন: জানো কি হয়েছে আজ?
শ্রীপর্ণা: কি বাবা?
শশুর মশাই: আর বলোনা বৌমা…… সকালে শরীরটা একটু ভালো লাগছিলো….. তাই ভাবলাম যাই….. ছাদ থেকে হেঁটে আসি. দুদিন ছাদে যেতে পারিনি. তাই গেলাম ছাদে. ওমা…. গিয়ে তো আমি অবাক. দেখি অন্তত ৪0 টা কাক আমাদের ছাদে বসে. ওতো সকালে এত কাক দেখেছি তো আমি অবাক. কিন্তু আরও অবাক হলাম এই দেখে…. হুর হুর যা যা বলে তাড়িয়ে দিচ্ছি…. ওমা দেখি একটু দূরে গিয়ে আবার ফিরে আসছে, নইলে সরে গিয়ে বসছে. কিন্তু উড়ে পালিয়ে যাচ্ছেনা. কাকের যে এত সাহস আছে জানতাম না. শেষে আর ওদের মাঝে থাকাটা ঠিক হবেনা ভেবে ফিরে এলাম. কি কান্ড বলোতো বৌমা!
এই সব শুনে তো শাশুড়ি মায়ের ভয় চোখ বড়ো হয়ে গেলো. উনি আবার কিছু জিনিস খুব মেনে চলেন. সব শুনে তিনি ঘাবড়ে গিয়ে স্বামীকে বললেন: এসব কি বলছো কি গো? এত কাক আমাদের ছাদে বসেছিল! এত শুভ লক্ষণ নয় গো! এত খুব খারাপ ব্যাপার.
অর্কর দাদু মাথা চাপড়ে বৌমাকে বললেন: ব্যাস….. শুরু হয়ে গেলো তোমার শাশুড়ি মায়ের কুসংস্কার মার্কা কথাবার্তা. আরে ছাদে কাকে বসে থাকলেই বা কি? এর আগে কতবার ছাদে কাক দেখেছি আমি….. কই কিছু হয়েছে?
শাশুড়ি মা ভয় ভয় বললেন: সেতো আমিও দেখেছি…. কিন্তু একসাথে এত কাকে কখনো দেখেছো? আবার বলছো ওরা উড়েও যাচ্ছিলোনা…. ওখানেই বসে ছিল. আমি বলছি বৌমা…. কিছু একটা……
নিজের স্ত্রীকে থামিয়ে দিয়ে অর্কর দাদু হেসে পুত্রবধূকে বললেন: দেখলে মা… তোমার শাশুড়ি মায়ের কান্ড….. এইজন্যই এতক্ষন বলতে চায়নি… আরে কাক তো একরকম পাখি নাকি? ওরা আসলেই খারাপ আর ময়না, টিয়া, শালিক আসলে কোনো ক্ষতি নেই তাইতো? সব দোষ ওই কাকেদের?
শাশুড়ি বললেন: হ্যা…. আমার কথা আর তুমি শুনবে কেন? আমি বলছি বৌমা…. এসব ভালো কথা নয়….. কাক পাখিটার সাথে অনেক খারাপ ব্যাপার জড়িয়ে থাকে… আমার মা বলতো বাড়িতে কাক বসলে…..
আবার থামিয়ে দিয়ে অর্কর দাদু বললেন: নিজের মাথায় তো তোমার এইসব কুসংস্কারে ভর্তি….. অন্তত মেয়েটার মাথায় এসব ঢুকিও না….. সত্যি মানে কি বলব. চা খাও.. মেয়েটা চা করে এনেছে খাও তো আর সিরিয়াল দেখো.
যদিও শ্রীপর্ণা বেশি কিছু বলেনি তখন আর ও যে এসব ব্যাপারে খুব একটা পাত্তা দেয় তাও নয় কিন্তু শাশুড়ি অমন থমকে যাওয়া মুখ দেখে ওরও কেমন কেমন লাগলো.
ঘরে এসে ও একটু বিছানায় গা এলিয়ে দিলো. একটা ম্যাগাজিন পড়তে লাগলো. একটু পরে স্নান করতে গেলো ও. স্নান সেরে আবার নিচের তলায় গেলো পুজো দিতে. অতনুকে অনেকবার বলেছে ও একটা ছোট মন্দির কিনে আনতে যাতে ওপরের ঘরেও ঠাকুরের বাসস্থান হয় কিন্তু সে আজ আনবো, কাল আনবো করে আর আনেই নি এখনও.
দুপুরের দিকটাতে একবার ছাদে গেলো ভেজা কাপড় নিয়ে. ছাদে গিয়ে দেখলো কোথাও কোনো কাক এখন নেই. হ্যা দূরে একটা দুটো দেখা যাচ্ছে কিন্তু এখানে কিছু নেই. কাপড় গুলো দড়িতে টাঙিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় পায়ে পা লেগে হঠাৎ পড়ে যাচ্ছিলো তৎক্ষণাৎ রেলিংটা ধরতে পারলো বলে কোনো বিপদ ঘটলোনা. ঠিক করে দাঁড়িয়ে একবার পেছনে ফিরে তাকালো. কেন জানেনা ওর মনে হলো ও নিজের থেকে পড়ে যাচ্ছিলোনা….. যেন পেছন থেকে কারোর পায়ে পা লেগেছে গেছিলো.
অফিসে কাজের ফাঁকে নিজের কেবিনে বসে অতনু বাবু চিন্তা করছেন কি হলো এটা তার সাথে? কেন এতগুলো নখের আঁচড় তার শরীরে? রাতে স্বপ্ন দেখতে দেখতে কি তিনিই unconscious mind এ নিজেই নিজের সাথে এরকম করেছেন? কিন্তু হঠাৎ এরকম কেন হবে? এর আগে তো কোনোদিন এমন হয়নি. রাতের ওই স্বপ্নটা মনে পড়ে গেলো আবার.
কি ভয়ানক সেই স্বপ্ন! কিন্তু কি প্রচন্ড উত্তেজক ছিল সেটি. পুনরায় মনে পড়তেই নিম্নাঙ্গে কেমন হতে লাগলো আবার. কিন্তু মুখটা…. ওই মুখটা চেনা চেনা লাগছে খুব. যেন কিছুদিন আগেই ওই মুখটা উনি কোথাও দেখেছেন. নীল চোখ, অসাধারণ রূপ কিন্তু ঠিক কথায় দেখেছেন মনে পড়ছেনা ওনার.
দুপুরে অর্ক ফিরে এলো. ওর মা ওকে খেতে দিয়ে কিছু কাজে নীচে গেলো. অর্ক একা বসে খাচ্ছে. একটু পরে ওর মনে হলো কেউ পেছনে এসে দাঁড়িয়েছে. মা ছাড়া আর কে হবে তাই সেটা ভেবে ও বললো..
অর্ক: মা…. একটু নুন কম হয়েছে… নুন দেবে?
কিছু ওর প্রশ্নের পরিবর্তে কোনো উত্তর না পেয়ে ও পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখলো কই? কেউ কোথাও নেই. একটু পরে মা ফিরে এলো আর খাওয়া হয়ে গেলে অর্ককে নিয়ে ঘুমোতে গেলো.
অর্কর দাদু বিকেলে রোজ বেরোন. মাঠে যান নিজের পরিচিত প্রৌঢ় বন্ধুদের সাথে কিছুক্ষন সময় কাটান. শনিবার রবিবার নাতিও সাথে আসে কিন্তু অন্যদিন গুলো আর ওর সেরকম বেরোনো হয়না. আজকেও অর্কর দাদু বেরিয়েছিলেন বাইরে. বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে দিতে একটু সন্ধ্যা হয়ে গেলো. ফিরে আসলেন উনি. কিন্তু গলির মুখে ঢুকে ভোলাকে আর সাথে আরও দু তিনটে কুকুরকে ওদেরই বাইর গেটের কাছে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলেন. কুকুরের গুলো কান খাড়া করে এক দৃষ্টিতে ওনাদের বাড়ির দিকেই তাকিয়ে.
এই ভোলা….. চেঁচিয়ে ডাকলেন অর্কর দাদু. ভোলা রক নজর ওনার দিকে তাকিয়ে লেজ নেড়ে আবার সামনে তাকিয়ে রইলো.
আশ্চর্য? কি দেখছে কুকুরের গুলো? এগিয়ে গেলেন উনি বাড়ির দিকে. কুকুর গুলো চেনা…. তাই ওদের সামনে যেতে ভয় পেলেন না উনি. এবারে নিজেও তাকালেন বাড়ির দিকে.
কই? কিছু নেই তো. নিচের তলায় আলো জ্বলছে. আর দোতলায় অন্ধকারে বৌমা দাঁড়িয়ে আছে বারান্দায়. দূর থেকে তো তাই লাগছে. এতে আবার কুকুর গুলোর অমন তাকিয়ে থাকার কি হলো? কুকুর গুলো দোতলায় বৌমাকে দেখছে?
গেট খুলে ভেতরে গেলেন তিনি. আবার গেট লাগিয়ে দরজার কাছে গিয়ে বেল বাজালেন উনি. কয়েক সেকেন্ড পরেই তিনি শুনতে পাচ্ছেন দরজা খুলতে কেউ এগিয়ে আসছে.
কিন্তু দরজা খুলতেই অর্কর দাদু অবাক হয়ে গেলেন. কারণ দরজা যে খুলেছে সে অন্য কেউ নয় ওনারই বৌমা!