এক কর্তব্যপরায়ণ বধু [২]

Written by fer.prog

বাড়ির বধু হিসাবে আমার প্রথম কর্তব্যঃ

আমাদের বিয়ের ১১ মাস পরের কথা, একদিন বিকালে জেরিন মুখ কালো করে আমার কাছে এসে জানালো সেই ভীষণ কঠিন দুঃসংবাদ, যেটা শুনে আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। যেই ভয়টা লাস্ট দুই মাস ধরে আমাকে ভোগাচ্ছিলো, আজ সেটাই সত্যি হয়ে গেলো। জেরিন প্রেগন্যান্ট ২মাস ধরে, আর ওর প্রেমিক জয় সিং ওকে বিয়ে করতে পারবে না বলে মানা করে দিয়েছে ওকে। আমি ধপ করে মাটিতে বসে পড়লাম এই কথা শুনে। কাঁদতে কাঁদতে জেরিন বললো, জয় সিং ওকে বলেছে বাচ্চা নষ্ট করে ফেলতে। কি করবো, সুমনকে এইসব কথা কিভাবে জানাবো, ভেবে পেলাম না, আমার শ্বশুর শাশুড়ি জানতে পারলে উনারা তো আমাকে ও দোষী করবেন, বলবেন যে, আমি এসব জেনে ও কেন এতদিন উনাদের জানাই নি। জানালে হয়ত জেরিনের অবস্থা এমন হতো না। কিন্তু ভবিষ্যৎ কি আসলেই আমার কখন ও বদলাতে পারি, আমার বিশ্বাস হয় না, অনেক লোকে এমন বলে যে, চেষ্টা করলে ভাগ্য পরিবর্তন হয়। কিন্তু এই কথার উপরে আমার বিশ্বাস খুব কম, কারন আমরা চেষ্টা করলে ভাগ্য কিন্তু বদলায় না, হয়ত একই ঘটনা একটু অন্যভাবেই ঘটবে। যেমন এই জয় সিং এর সাথে আমার সম্পর্ক, আমি যতই চেষ্টা করতাম ঘটতোই। আমি নিজে হার মেনে নেয়ায় যেভাবে ঘটেছে, হয়তো সেভাবে না ঘটে অন্যভাবে ঘটতো। কিন্তু জয় সিং লোকটার শরীরের নিচে আমার নিজের শরীর বিছিয়ে দেয়া ছাড়া আর কোন পথ খোলা ছিলো না, আর এটাই আমার ভাগ্য।
এটা আমার বিয়ের পরের ১১তম মাসের ঘটনা। এই বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে আমাদের বিয়ে হয়েছে, আর এটা ২০০৫ এর জানুয়ারি মাস। আর মাত্র কয়েক সপ্তাহ পরেই আমাদের প্রথম বিবাহ বার্ষিকী। আমি একটু কঠোর হলাম জেরিন এর সাথে, ওকে বললাম, যে “ওই লোক যদি বলে তোর বাচ্চা নষ্ট করে দিতে, তাহলে তোর তাই করা উচিত, আর ওই লোকের সাথে সব রকম সম্পর্ক ত্যাগ করা উচিত, কারণ এটা তোদের অবৈধ মিলনের সন্তান। সমাজে তোর এই বাচ্চার কোন স্থান নেই। তুই চল আমার সাথে, তোকে এবোরশন করিয়ে আনি”। কিন্তু জেরিন কিছুতেই ওর পেটের বাচ্চা নষ্ট করতে রাজি না। সমাজ ওকে স্বীকৃতি দিক বা না দিক, জেরিন কিছুতেই ওর পেটের বাচ্চা নষ্ট করবে না। এটা ওর প্রেমের ফসল। জয় সিং ওকে মেনে নিক বা না নিক, সে এই সন্তান কিছুতেই ত্যাগ করবে না। দুজনে বেশ ঝগড়া ও হলো আমার আর জেরিনের। সামনেই আমাদের প্রথম বিবাহ বার্ষিকী, আর ঠিক এর আগেই এমন একটা উটকো বিপদ ঘাড়ে পড়তে আমার মন ও বিষিয়ে উঠলো জেরিনের প্রতি। একটা পুরো দিন আমি জেরিনের সাথে কথা বললাম না, যেটা আমাদের দুজনের সম্পর্কে খুবই অস্বাভাবিক। কিন্তু জেরিনকে কিছুতেই টলাতে না পেরে আমি ওকে বললাম যে, “তাহলে এখন কি করতে চাস তুই, পোড়ামুখি?”
“তুমি একবার জয় সিং এর সাথে কথা বোলো, ওকে বুঝাও, তাহলে ও হয়তো মেনে নিবো..”-জেরিন আমার চোখে দিকে তাকিয়ে বললো।
“কি বলছিস তুই? আমি কথা বললেই ওই হিন্দু ব্যাটা রাজি হয়ে যাবে। ওই লোকটা একটা ভিন্ন ধর্মের, তোর চেয়ে ১০ বছরের বড়, তোদের দুজনের মধ্যে অনেক সমস্যা, তুই বুঝতে পারছিস না, ওই লোক কেন তোকে বিয়ে করতে রাজি না, ওই লোকের ও তো পরিবার আছে, তাকে ও ওর মা বাবার, নিজের আত্মীয় স্বজনের কাছে জবাব দিহি করতে হবে। আমার কাছে কি জাদু আছে, আমি বললেই ওই লোক সব বাঁধা অতিক্রম করে তোকে বিয়ে করতে রাজি হয়ে যাবে…”–আমি হতাশ কণ্ঠে বললো।
“তুমি একবার ওর সাথে দেখা করে চেষ্টা তো করো ভাবি?…তুমি ছাড়া আর কাকে আমি বলবো, আমাকে সাহায্য করার জন্যে, বলো তুমি? আমার পেটের এই সন্তানের জন্যে তুমি এটা করতে পারবে না ভাবি?”-জেরিন এর কথা শুনে আমি আরো বেশি হতাশ হয়ে গেলাম, এই পাগলী এখন ও আশা ছাড়তে এতটুকু ও রাজি না, আর আমাকে আবেগ মুলক কথা বলে রাজি করাতে চেষ্টা করলো। আমি রাজি হলাম জয় সিং এর সাথে দেখা করে কথা বলতে। যদি ও এটা বেশ ছোট শহর, পরিচিত মানুষের চোখ এড়িয়ে বেশিদূর গিয়ে কারো সাথে কথা বলা সম্ভব না, তাই শহরের একটা হোটেলে যেখানে নির্জনে কথা বলা যাবে জয় সিং এর সাথে, সেখানে দেখা করতে গেলাম জেরিনকে সাথে নিয়ে।
“নমস্তে ভাবি”-এই বলে হাত জোর করে জয় সিং হোটেল রুমে ঢুকলো, আমি আর জেরিন সেখানে আগেই বসে ছিলাম। আমি উঠে দাড়িয়ে ওর সালামের জবাবে হাত উঠালাম শুধু। জেরিন মোটেই মিথ্যে বলে নি আমাকে, আসলেই জয় সিং এক সত্যিকারের সুপুরুষ। লম্বায় আমার চেয়ে ও প্রায় ৩/৪ ইঞ্চি বড় হবেন তিনি, লম্বা, কালো, চওড়া ফিগার, পেশিবহুল শরীর আর শক্তিশালী দেহের অবয়ব দেখেই মুগ্ধ হয়ে যেতে হয়। সুমন যেখানে আমার চেয়ে ও ২ ইঞ্চি লম্বায় ছোট, বিয়ের সময় সবাই আমাদের দুজনকে এক সাথে দাঁড়াতে দেখে বলাবলি করছিলো, যে কামিনির জন্যে এর থেকে ভালো বর বুঝি খুঁজে পেলো না, কোনভাবেই মানায় না ওদের দুজনকে। সেখানে জয় সিংকে দেখে যে কোন মেয়েই পটে যেতে বাধ্য হবে, আমাদের জেরিন আর কোন ছাড়।
জয় সিংহ হাত বাড়িয়ে দিলো আমার দিকে হাত মিলানোর জন্যে, যদি ও বাইরের কোন পর পুরুষের সাথে হাত মিলানোর জন্যে আমি মোটেই প্রস্তুত ছিলাম না, কিন্তু জয় সিং যেন অপমানিত বোধ না করে, সেই জন্যে আমি জেরিনের মুখের দিকে চেয়ে হাত বাড়িয়ে দিলাম। জয় সিংহ সেই হাত ধরলেন, তবে ছাড়লেন না। হাত ধরেই আমার পাশে বসলেন, আর অন্য হাত দিয়ে আমার হাতের কব্জি থেকে কনুই পর্যন্ত অংশটাকে আলতো করে ছুঁয়ে দেখলেন। আমি উনার এই অভদ্র আচরনে রেগে গেলাম, কিন্তু যেহেতু আমি এখানে উনার কাছে অনুনয় করবো বলেই এসেছি, সেই জন্যে জেরিনের মুখের দিকে তাকিয়ে আমি চুপ করে রইলাম। বেশ কয়েকবার আমি নিজের হাত টেনে নিতে চেষ্টা করলাম কিন্তু জয় সিং কিছুতেই আমার হাত ছাড়লেন না। উনি ইঙ্গিতে জেরিনকে রুমের বাইরের যেতে বললেন। জেরিন বাধ্য ছাত্রীর মত রুমে বাইরে চলে গেলো। আমি জানি না কেন লোকটা জেরিনকে রুমের বাইরে চলে যেতে বললো, ওর যা কথা সেটা তো সে জেরিনের সামনেই বলতে পারতো।
“আপনি ওকে বিয়ে করছেন না কেন?”-আমি অন্য কোনদিকে কথা না ঘুরিয়ে সোজা বললাম।
“দেখ ভাবী, আমি ও চাই ওকে বিয়ে করতে, কিন্তু তুমি তো বুঝো যে, ওর আর আমার ধর্ম এক না, আর তাছাড়া আমি এক জমিদার পরিবারের সন্তান, আমার বাবার দাদা ছিলেন রাজপুত জমিদার। আমি তো শুনেছি তুমি ও নাকি জমিদার পরিবারের সন্তান, তারপর ও জেরিনের ভাইকে বিয়ে করেছো, কিন্তু আমার পক্ষে আমার পরিবারকে মানিয়ে নেয়া বেশ কঠিন, আর তাছাড়া জেরিন এখন প্রেগন্যান্ট, এটা শুনলে আমার পরিবার আরও বেশি খেপে যাবে, মোটেই রাজি করানো সম্ভব হবে না।”-জয় সিং ও সোজাসুজি ওর অপারগতার কথা স্বীকার করলো, ওর মুখটা একটু দুঃখী দুঃখী করে, আমার চোখের দিকে তাকিয়ে। যদি ও ওর এই দুঃখ দুঃখ ভাবটা যে মেকি, সেটা আমার বুঝতে বাকি রইলো না।
আমার রাগ হলো, আর একটু রেগে গিয়ে বললাম, “কিন্তু আপনার আর ওর ধর্ম তো আপনাদের দুজনের মিলনের জন্যে কোন বাঁধা হয় নাই, তাই না? ওকে গর্ভবতী করে, এখন আপনি ধর্ম, জাত পাত এসবকে সামনে আনছেন, ওর সাথে ওসব করার সময় আপনার মনে ছিলো না এসব কথা?”
আমার রাগী গলা শুনে জয় সিং হাসলো, “আমি তো শুনেছি যে, তুমি নিজে ও উচু জাতের হয়ে নিচ জাতের এক লোকের সাথে বিয়ে করে ওকে নিয়ে ঘুমাচ্ছ ভাবী, এটা কি তোমার মত উচু জাতের মেয়েদের শোভা পায়, বলো?”- জয় সিং উল্টো আমাকে ও দোষী করে জবাব দিলো। ওর মুখে একটা শয়তানি হাসি।
“কিন্তু আমি তো বিয়ে করেছি, জেরিনকে বিয়ে করতে আপনার এতো আপত্তি কেন?”-আমি জবাব দিলাম।
“সে তো তোমার দুর্ভাগ্য…আমি তো এমন দুর্ভাগ্যের সঙ্গী হতে চাই না। আর তুমি দেখ ভাবী, আমার পাশে কি তোমার ওই ননদকে মানায়, বলো? জেরিন আমার মত লোককে ভালবেসে, তার যা প্রতিদান আমার কাছ থেকে পেতে পারে, আমি সেটার যোগ্য সম্মানই তো করেছি ওর সাথে, ওকে ডেকে জিজ্ঞেস করতে পারো তুমি?”-জয় সিংহ এর ক্রুর জবাব শুনে আমি দিশেহারা হয়ে গেলাম, এই লোকটার বিন্দুমাত্র সৌজন্যবোধ নেই, জেরিনের ভাবী হিসাবে আমার সাথে কেমন আচরন করা উচিত, সেই জ্ঞান নেই, আমার তো মনে হচ্ছে, এই লোকের জেরিনের প্রতি বিন্দুমাত্র কেয়ার ও নেই, জেরিন প্রেগন্যান্ট না কি, তাতে জয় সিং এর কিছু আসে যায় না।
আমার রাগটা জয় সিং বেশ ভালোভাবে বুঝতে পারছিলো, তাই সে আবার বললো, “দেখ ভাবী, জেরিনের সাথে আমার সম্পর্কের শুরুটা হয়েছে পরীক্ষামুলকভাবে, জেরিন জানে যে আমি ওকে ছাড়া ও আরও একাধিক নারীর সাথে সেক্স করি, নিয়মিতই করি, এতে ওর আপত্তি ছিলো না, আর আমি ওকে বিয়ে করতে হবে, এটা কোনদিন ভাবি নাই…তাছাড়া আমি সব সময় ওর বিপদজনক দিনগুলিতে কনডম ব্যবহার করতাম, এখন কোনদিন কিভাবে ওর পেটে বাচ্চা চলে এলো, সেটার দায় আমি একা কেন নিবো, বলো? আমার উপরে তো তুমি এভাবে জুলম করতে পারো না…”-বেশ শান্ত গলায় যুক্তি দিয়ে জয় সিং ওর নিজের সিদ্ধান্তের সাফাই গাইলো।
আমি ওর যুক্তি বুঝতে পারলাম, কিন্তু জেরিনের যে তাহলে গলায় দড়ি দেয়া ছাড়া আর পথ নেই, তাই বললাম, “প্লিজ, আমি আপনাকে অনুরোধ করছি, আপনি আপনার পরিবারের সাথে কথা বলেন, জেরিনকে বিয়ে করুন, ওর জীবনটা এভাবে নষ্ট করবেন না, ওর পেটে আপনার বাচ্চা, আর ২ মাসের মধ্যে সেটা সবার চোখে ধরা পরে যাবে, তখন তো ওর দিক থেকে আত্মহত্যা ছাড় আর পথ থাকবে না, নিজের সন্তানের প্রতি এভাবে আপনি অন্যায় করতে পারেন না…”-আমি কিছুটা নম্র গলায় অনুরোধ করলাম।
জয় সিং আমার মুখ থেকে নিচের দিকে তাকালো, আর আমার যেই হাতটা ওর হাতে ধরা ছিলো, সেটাকে মুঠো করে, আমার হাতের তালুকে বাঁকিয়ে গোল করলও, যেন আমার হাতের তালুটা একটা পাইপের মত, আর এর পরে ধীরে ধীরে সে নিজের বড় বড় মোটা মোটা দুটি আঙ্গুলকে সেই পাইপের ফাঁকে ঢুকিয়ে দিলো। কিছু একটা জয় সিং আমাকে বুঝানোর চেষ্টা করছে, কিন্তু আমি ওই মুহূর্তে সেটা ধরতে পারলাম না। “আমি আমার পরিবারকে বুঝানোর চেষ্টা করবো, যেহেতু আমিই বড় ছেলে, তাই আমি অন্য ধর্মে বিয়ে করি, সেটা কেউ চাইবে না। আর আমার বাবা নিজে ও একজন বড় রাজনৈতিক লোক, উনি ও চাইবেন না উনার রাজনৈতিক কেরিয়ার এর ক্ষতি হোক, এমন কিছু যেন আমি না করি…যেহেতু তুমি আমাকে অনুরোধ করছো, তাই আমি এটাকে নিয়ে চিন্তা করবো, আর আমার পরিবারের সাথে কথা বলবো, যদি ও এটা শুধু মাত্র তোমার প্রতি দয়া করেই, অন্য কোন কারণে না, এটা মনে রেখো…”-জয় সিং আমাকে করুনা করছে, আমাকে দয়া করছে, আমার আকুতি ভরা মিনতির পরিবর্তে যদি কিছু ভিক্ষা দেয়া যায়, সেই চিন্তা করছে। অপমানে আমার মুখ লাল হয়ে গেলো।
আমি আবার নিচের দিকে তাকালাম, জয় সিং ওর দুটি আঙ্গুলকে ঠেলে আমার হাতের মুঠোর ভিতরে ঢুকাতে চেষ্টা করছে, যেমন, গুদের ফাঁকের ভিতরে বাড়া ঢুকে ঠেলে ঠেলে, ঠিক তেমনিভাবে, এইবার আমার মাথায় ক্লিক করলো, যে কি অশ্লীল ইঙ্গিত দিচ্ছে জয় সিং। আমি ঝট করে ওর মুখের দিকে তাকালাম, জয় সিং ও বুজতে পেরেছে ওর অশ্লীল ইঙ্গিত যে আমি বুঝতে পেরেছি এই মাত্র, সেটা। এর আগে কোনদিন কোন পর পুরুষের সাথে সেক্সের কথা আমার মনে আসে নাই, তবে ওই মুহূর্তেই আমার মনে পরে গেলো, যেটা জেরিন কিছুদিন আগেই আমাকে বলেছিলো, জয় সিং এর বাড়ার সাইজ আর ও চোদার ক্ষমতার ব্যাপারে, আমার মনে পরে গেলো, যে আমার স্বামী সুমন হয়তো যৌনতার দিক থেকে এই জয় সিং লোকটার ধারে কাছে ও নেই, আমি যেমন রেগে যাচ্ছিলাম, তেমনি, আমার হাঁটু ও যেন দুর্বল হয়ে যাচ্ছিলো, এসব ভাবনা পর প্র আমার মাথায় ক্লিক করে যাওয়াতে।।
আমি শুঁকনো গলায় একটা ঢোঁক গিলে সোজা জিজ্ঞেস করলাম জয় সিং কে, “আপনি কি প্রস্তাব দিচ্ছেন, সরাসরি বলেন…”
আমার রাগী ভাব দেখে জয় সিং আবার ও হাসলো, আর বেশ শান্ত গলায় বললো, “ভাবী, তোমার কথামতো আমার আর জেরিনের সম্পর্ককে বিয়েতে নিয়ে গেলে, তোমার তো লাভ হবে কিন্তু আমার ও তো লাভ চাইই…”-এই বলে সে নিজের অন্য হাতটা এনে আমার উরুতে রাখলো, উরুর নরম মাংসকে সে নিজের হাতের মুঠোতে চেপে ধরলো। জয় সিং কি চায়, সেটা আমি স্পষ্ট বুঝে গেছি এখন। ঝট করে আমি সোজা হয়ে দাড়িয়ে গেলাম, আর নিজের হাত টেনে সরিয়ে নিলাম জয় সিং এর কাছ থেকে আর জেরিনকে ডাক দিলাম, জেরিন আসার পরে বললাম, “চল, আমাদের কথা শেষ”।
জয় সিং ও উঠে দাঁড়ালো, আর আমার কাছে এসে জেরিনের সামনেই নিজের বাম হাতের তর্জনী আর মধ্যমা আঙ্গুলকে বাঁকিয়ে মেয়েদের গুদের মত ফাঁক করে, আর ডান হাতের একটি আঙ্গুলকে সেই ফাকে ঢুকিয়ে আমাকে দেখিয়ে জেরিনের সামনেই আবার বললো, “ভাবী, আমি যা বললাম, সেটা ভেবে দেখো, নাহলে তোমার ননদের জীবন যে শেষ, সেটা ও বুঝে নিয়ো।” আমি রাগে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেললাম, সাথে সাথে ঘুরে জয় সিং এর গালে একটা চড় মেড়ে বসলাম, যদি ও সেটা তেমন জোরের চড় ছিলো না, কিন্তু জয় সিং আর জেরিন দুজনেই হতবাক হয়ে গেলো।

জেরিন জোরে অবাক গলায় বলে উঠলো, “ভাবি, এ কি করলে? তুমি উনাকে মারলে?”
আমি জেরিনের দিকে ও রাগী চোখে তাকিয়ে বললাম, “চল এখান থেকে…”-এই বলে জেরিনকে এক রকম টেনে হিঁচড়েই নিয়ে হাত ধরে বেরিয়ে গেলাম ওই হোটেলের রুম থেকে।
রিকশায় বসে জেরিন বার বার আমাকে বললো, “ভাবি, এ কি করলে তুমি? তুমি উনাকে আমার সামনে চড় মারলে? উনার অবস্থান কোথায় চিন্তা করেছো?” আমি চুপ করে থাকলাম, যেন জেরিন আর কিছু বলার অবকাশ না পায় রিকশায়। ও যদি জানতো যে, জয় সিং আমার সাথে কি সওদা করতে চেয়েছেন, জেরিনকে বিয়ে করার বিনিময়ে, তাহলে নিশ্চয় সে আমাকে ভুল বুঝবে না। আমার নিজের সতীত্ব বিলিয়ে দিয়ে আমি আমার ননদের জীবনকে সহজ রাস্তায় আনতে পারবো না। নিজের শ্বশুর বাড়ির সম্মান রক্ষা করতে, এতো বড় মুল্য দেয়ার জন্যে আমি তৈরি নই মোটেই।
বাড়ি ফিরে আমি জেরিনকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করলাম, আর ঠাণ্ডা মাথায় ভাবতে লাগলাম, কি হতে কি হয়ে গেলো। গেলাম জেরিনের প্রেমিককে বুঝিয়ে ওকে বিয়ে করতে রাজি করাতে, সেখানে গিয়ে আমার নিজের সতীত্ব নিয়েই প্রশ্ন উঠে গেলো। নিজের স্বামীর সঙ্গে প্রতারনা করা সম্ভব না আমার পক্ষে, তাও আবার আমার ননদের জন্যে, সেই ননদ আমার যতই প্রিয় হোক না কেন। জেরিন সুযোগ খুজতে লাগলো আমার সাথে কথা বলতে, কিন্তু আমি ওকে এড়িয়ে চলতে লাগলাম। আমার শ্বশুর শাশুড়ি আর চাচা শ্বশুরের সেবার কাজে নিজেকে ব্যাস্ত রেখে মাথা থেকে রাগটাকে ঝাড়তে চেষ্টা করলাম।

পরদিন দুপুরের পরে আমি আমার রুমে বিশ্রাম নিচ্ছি, তখন জেরিন এসে ঢুকলো আমার রুমে, আর দরজা বন্ধ করে বিছানায় আমার পাশে এসে বসলো। আমি নিজেকে যুদ্ধের জন্যে তৈরি করলাম। “ভাবি, জয় সিং কে নিয়ে তোমার আর আমার বোঝাপড়া হওয়া জরুরী…তুমি কেন উনাকে অপমান করলে, আমাকে বলো…”-জেরিন আমার চোখে চোখ রেখে জিজ্ঞেস করলো।
“তোর প্রেমিক আমাকে খারাপ নোংরা ইঙ্গিত করেছে…”-আমি খুব ভদ্র ভাবে জেরিনকে বললাম।
“কি ইঙ্গিত করেছে?”-জেরিন জানার দাবী করলো।
“সে আমাকে তার শয্যা সঙ্গিনী হতে বলেছে, তাহলে সে তোকে বিয়ের ব্যাপারে চিন্তা করবে…এখন বল, এমন নোংরা প্রস্তাব শুনে কোন মেয়ে না রেগে যাবে?”-আমি একটু রাগী গলায় বললাম।
“ব্যাস, এটুকুই? এই জন্যে তুমি রেগে গেলে?”-জেরিন অবাক হয়ে বললো, আমার দিকে সে এমনভাবে তাকিয়ে আছে যেন, আমি নিজেই কোন এক গর্হিত অপরাধ করে ফেলেছি।
আমি ওর কথার উত্তরে কি বলবো, খুঁজে পাচ্ছিলাম না, জেরিন এর প্রেমিক আমার সাথে শুতে চায়, সেটা শুনে জেরিন বলছে, “ব্যাস এটুকুই?” ও আমার আচরনে অবাক হচ্ছে, আমি বুঝতে পারলাম না, যে কি বলবো। “তোর কাছে উনার এমন নোংরা প্রস্তাবটা শুনে রাগ হলো না?”-আমি আমতা আমতা করে জানতে চাইলাম।
“না…মোটেই রাগ হলো না…”-জেরিন ছোট করে বললো।
“কেন?”-আমি জানতে চাইলাম।
“কি কেন?”-জেরিন বললো।
“তোর প্রেমিক আমাকে নিয়ে বিছানায় যেতে চায়, এটা শুনে তোর কেন রাগ হলো না, সেটাই জানতে চাইছি…কোন ভালো লোক, ভদ্র লোক, এমন কুৎসিত প্রস্তাব দিতে পারে কোন বিবাহিত ভদ্র মহিলা কে?”-আমি জেরিনের আচরনে খুবই বিরক্ত হচ্ছিলাম ভিতরে ভিতরে।
“ভাবী…ভাবী…কিভাবে বুঝাবো তোমাকে?”-এই বলে জেরিন আমার দুই হাতকে নিজের দুই হাতে ধরলো, আর একটা গলা খাঁকারি দিয়ে বললো, “ভাবি, তুমি জয় সিংকে বুঝতে পারো নাই…উনি হচ্ছেন সিংহ, বনের রাজা…পুরুষকুলের শিরোমণি…তোমার মত কোন সুন্দরী রমণীকে দেখলেই, তার সঙ্গে মিলন আকাঙ্খা করা, উনার মত লোকেরই সাজে…উনি হচ্ছেন Alfa Male…এর মানে কি বুঝো তুমি? শক্তিশালী বীর্যবান, সত্যিকারের পুরুষ…এই ধরনের মানুষ কখন ও এক নারীতে পরিতৃপ্ত হয় না…আর পৃথিবীর সকল নারীই চায়, এমন পুরুষের সাথে সঙ্গম করতে, চাই সে তোমার মত বিবাহিত হোক, বা আমার মতো অবিবাহিতই হোক…তুমি নিজে কি তোমার মুল্য বুঝো? আমি নিশ্চিত যে বুঝো না, আর যদি বুঝতে তুমি আমার ভাইকে বিয়ে করতে না কোনদিন? তুমি কি কোনদিন ভেবে দেখেছো যে, আমার ভাই তোমার যোগ্য কি না?”
জেরিন হয়ত আরও কিছু বলতো, কিন্তু আমি ওকে থামিয়ে দিলাম, “জেরিন, মুখ সামলে কথা বল, উনি তোর বড় ভাই, আমার স্বামী, তুই যেমন তোর প্রেমিকের কোন খারপ আচরনকে খারাপ মনে করিস না, আমি ও তেমনি আমার স্বামীর পূজা করি, উনার চেয়ে বড় আমার কাছে কিছু নেই, তোর ভাইকে অপমান করে তুই কথা বলতে পারিস না…”-আমি ও বেশ রেগে গেলাম।
“ভাবী…ভাবী…আমি মোটেই অপমান করছি না ভাইয়াকে, আমি তোমাকে বুঝাতে চাইছি, তোমার অবসথান কোথায়? তোমার জন্যে আমার ভাইয়া মোটেই যোগ্য পুরুষ না?”-আবার ও জেরিনকে থামিয়ে দিয়ে আমি বললাম, “যোগ্য অযোগ্য, যাই হোক না কেন, তিনিই আমার স্বামী…তুই কিভাবে ওই বদ লোকটার পক্ষ নিয়ে আমার সাথে তর্ক করছিস, জেরিন? তুই কি সেই জেরিন, যে আমার বান্ধবী ছিলি? তোর কথা শুনে আমার তোকে অচেনা মানুষ মনে হচ্ছে…”
“ভাবী…আমাকে ভুল বুঝো না তুমি…আমি তোমার সেই আগের জেরিনই আছি, কিন্তু যেই মন মানসিকতা নিয়ে তুমি আমার সাথে এখন তর্ক করছো, সেটার প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন…তুমি কখন ও তোমার নিজের দিকে তাকাও নাই…তুমি একবার আয়নার সামনে দাড়িয়ে নিজেকে দেখে জিজ্ঞেস করো, তোমার এই অসাধারণ সৌন্দর্যের সঠিক সঙ্গী কি তুমি পেয়েছো? এই যে তুমি আমাদের সংসারের বৌ সেজে আছো, এটা কি তোমাকে সাজে? আমার ভাইয়া কি তোমার এই রুপ যৌবনের মালিক হওয়ার মতো যোগ্য লোক…আমি জানি, আমিই তোমাকে এই বিয়ে করতে উৎসাহিত করেছি, কিন্তু ভাবী, তুমি এটুকু প্রথমে স্বীকার করো যে, তোমার স্থান কখনোই আমার ভাইয়ের মত পাত্রের স্থানের সাথে মিলতে পারে না…কোন বংশের রক্ত শরীরে নিয়ে, কেমন পরিবার থেকে তুমি এসেছো, এটা তোমার ভিতরের মহানুভবতা যে তুমি আমার ভাইয়াকে বিয়ে করেছো, আমাদের পরিবারে এসেছো, কিন্তু এটা তোমার জায়গা না…এটুকু আগে তো মেনে নাও…”-জেরিন আমাকে জোর গলায় বুঝাতে লাগলো।
“ছিঃ জেরিন…তুই ওই বদ লোকটার পাল্লায় পরে, তোর বিচার বুদ্ধি সব গেছে…তুই পাগল হয়ে গেছিস…”-আমি আবার ও ওকে থামাতে চেষ্টা করলাম, কিন্তু জেরিনের কথায় আমার গলার স্বর যেন কিছুটা জোর হারিয়ে ফেলেছে ইতিমধ্যেই।
“ভাবী, আমার কথা আচরন, তোমাকে আমি যুক্তি দিয়ে বুঝাবো…আমি জানি, তুমি যুক্তির খাতিরে হলে ও আমার কথার শুনবে ধৈর্য ধরে…তুমি হচ্ছ, রানী, আমার ভাইয়া হচ্ছে তোমার রাজ্যের সাধারন প্রজা, এটুকু তো আগে মেনে নাও, তারপর বলছি…”-জেরিন বললো। আমার হাতে ধরে ঝাঁকি দিয়ে দিয়ে সে যেন ওর কথাকে মানানোর চেষ্টা করতে লাগলো।

“আচ্ছা, হলাম আমি রানী, তোর ভাইয়া প্রজা, তাতে কি আসে যায়, বল। আমি তো তার স্ত্রী, জয় সিং এর মত লোকের সাথে আমার তো কোন সম্পর্ক নেই…”-আমি বুঝার চেষ্টা করতে চাইলাম অনিচ্ছা সত্ত্বেও।
“ভাবী, এই যুগে স্বামী, সতীত্ব এই সব একটা ঠুনকো জিনিষ, মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্কই আসল জিনিষ…জয় সিং হচ্ছে তোমার মত রানীর রাজা হওয়ার যোগ্য লোক…আমার ভাইয়া না…সেই হচ্ছে পরম পরাক্রমশালী বীর্যবান পুরুষ, যার সাথে মিলনের জন্যে যে কোন নারীই কামনা করে, যার সন্তান ধারন করতে চায় প্রতিটা রানী…যাকে নিজের শয্যাসঙ্গি হিসাবে পেতে চায় যে কোন নারী…সেই রকম একটা পুরুষ যদি তোমার রুপে মুগ্ধ হয়ে তোমাকে কামনা করে, একবার তোমার সাথে শুতে চায়, তাতে আমি কোন অপরাধ দেখি না, তোমার ও উচিত তোমার নিজের জন্যে হলে ও, তোমার নিজের প্রতি সুবিচার করার জন্যে হলে ও একবার ওর সাথে সঙ্গম করা, তাও যদি তুমি করতে না চাও, তাহলে আমার জন্যে হলে ও তোমার করা উচিত, তুমি আমাকে ভালোবাসো, আমি ও তোমাকে ভালবাসি, তোমার একটা ছোট কাজে, যদি আমার ঘর বসে, আমি একজন সুযোগ্য স্বামী পাই, আমার পেটের সন্তান, সে যদি তার সতিকারের পিতাকে পিতার আসনে দেখতে পারে, তোমার কল্যানে, তাহলে ও তো তোমার তাই করা উচিত। আজ যদি আমার পেটের এই সন্তানের কথা জানাজানি হয়ে যায়, তাহলে আমি নিশ্চিত যে, ভাইয়া ও চাইবে যে তুমি ছোট এই কাজটা করে আমার ঘর বসাতে সাহায্য করো…এখন তুমি করবে কি না, সেটা তোমার সিদ্ধান্ত, একান্তই তোমার সিদ্ধান্ত…কিন্তু কেন করবে, এ জন্যে যুক্তির অভাব নেই আমার কাছে…”-জেরিন এক নাগারে এসব বলে থামলো।
“এই তোর যুক্তি…জেরিন, প্রেমে পড়ে, তুই যে অন্ধ হয়ে গেছিস, সেটা বুঝতে পারছি…তোর জন্যে আমি আমার স্বামীর সাথে প্রতারনা করি, আর তুই নিশ্চিত যে তোর ভাইয়া ও এটা সমর্থন করবে…কি যে তোর মাথায় ঢুকেছে, বুঝতে পারছি না আমি জেরিন…”-আমি জেরিনের কথা শুনে হাসতে লাগলাম।
“ভাবী, তুমি প্রথম থেকেই একপেশে ভাবে ভাবছো, তাই কোন কিছুই তোমার মাথায় সঠিকভাবে পৌঁছাচ্ছে না…তুমি তোমার, নিজের অবস্থান, জয় সিং এর অবসথান, ভাইয়ার অবস্থান কোন কিছুকেই মেনে নিতে পারছো না, একটা চরম সত্যি কথাকে তুমি মানতেই পারছ না…”-জেরিন হাল না ছেড়ে তর্ক চালিয়ে যেতে লাগলো আমার সাথে।
“আমার আর তোর ভাইয়ার অবস্থানের কথা বাদ দে, তুই কিভাবে এটা মেনে নিতে পারিস, যে, তোর স্বামী, যাকে আকে তুই ভালবাসিস, যার জন্যে তুই এতক্ষন ধরে আমার সাথে যুদ্ধ করছিস, সেই লোক, অন্য মেয়ে লোকের সাথে সেক্স করছে, সঙ্গম করছে? এটা কেমন ভালোবাসা তোর? তুই এটাই আমাকে বুঝা…”-আমি ওকে পাল্টা আক্রমন করলাম।
“আমি তো তোমাকে আগেই বললাম যে, জয় সিং একজন Alfa Male. উনার সাথে যে কোন মেয়েই সঙ্গম করতে চাইবে, আমি ও উনার তেমনই একজন কৃপাপ্রার্থী…অন্যদের সাথে আমার পার্থক্য এই যে, আমি জয়কে অন্যদের চেয়ে আরও বেশি ভালবাসি, আর তুমি যেমন আমার ভাইয়াকে বিয়ে করে তোমার নিজের অবস্থানকে নিচু করেছো, আমি ঠিক তার উল্টোটা করতে চাই, আমি জয় সিং বা উনার পরিবারের বৌ হবার জন্যে মোটেই উপযুক্ত নই, তাই তিনি যদি তোমার সাথে সেক্সের বিনিময়ে ও হলে ও আমাকে নিজের স্ত্রী হিসাবে গ্রহণ করেন, তাহলে এটা উনার মত ব্যাক্তির জন্যে খুব ছোট চাওয়া। সেই চাওয়া পূরণ করতে আমি কেন দ্বিধা করবো?”-জেরিন বললো।
“এটা কেমন ভালোবাসা জেরিন? মেয়েরা স্বামীর ভাগ কাউকে দিতে পারে না, তুই তোর ভালবাসার মানুষকে অন্য লোকের সাথে সঙ্গম করতে দিতে চাস, এটা কেমন ভালোবাসা…?”-আমি হাল ছেড়ে দিয়ে নিরাশ গলায় বললাম।
“সেই অন্য লোকটা যদি তুমি হও, আমার কোন আপত্তি নেই…”-জেরিন আবার ও বললো।
“কিন্তু আমার আপত্তি আছে…”-আমি কড়া গলায় বললাম।
“প্লিজ, ভাবী, আমার জন্যে হলে ও তুমি এটা মেনে নাও…আমার মুখের দিকে চেয়ে মেনে নাও প্লিজ, তুমি মানা করলে, জয় সিং হয়ত আমাকে আর বিয়েই করবে না, সেক্ষেত্রে আমার সাথে সাথে তোমাদের সংসারে ও আগুন জ্বলবে, আমার পেটে যে জয় সিং এর বাচ্চা আছে, সেটাকে ভুলে যেও না…তার প্রতি ও তোমার কর্তব্য আছে, সেটাও ভুলে যেয়ো না তুমি…আর জয় সিং এর কথা কি বলবো, তোমাকে, উনি হচ্ছে এমন পুরুষ, দীর্ঘ ৪ বছর ধরে আমি উনার সাথে সঙ্গম করছি, কিন্তু এখন ও উনাকে দেখলেই আমি মনে মনে কামনা করতে থাকি, যেন উনি আমাকে চোদেন…এমনই উনার ক্ষমতা, এমনই উনার ব্যাক্তিত্ত, তুমি একবার উনার সাথে সঙ্গম করলেই তোমার ভুল ভাঙবে, যেই রাজত্বকে তুমি নিজের মনে করে রাজ করছ, সেটাকে মিথ্যে ধুলার রাজ্য বলে মনে হবে, তোমার মতো সুন্দরী, রূপসী, জমিদার বংশের, অসাধারণ রুপ যৌবনের অধিকারী মেয়েকে সুখের পৃথিবী দেখাতে পারে, জয় সিং এর মতো একজন লোকই, অন্য কেউ না, আমার ভাই ও না…যেই আমার ভাইকে তুমি উত্তম পুরুষ বলে মনে করছ, সে তোমার কাছে এক লহমায় নিচ থেকে নিচতর পুরুষ বলে মনে হবে তোমার কাছে, তোমার এই শরীরের উপর রাজত্ব করা জয় সিং এর মত লোকেরই সাজে, আমার ভাইয়ার মতো লোক নয়…এটা তুমি বুঝতে চেষ্টা করো…”-জেরিন আকুতি করে কান্না কণ্ঠে বলতে লাগলো। ওর কান্না আমাকে বিচলিত করে দিতে লাগলো, কিন্তু আমি আমার জায়গায় অটল, ননদের সুখের জন্যে আমি আমার সুখ, আমার সতীত্ব বিসর্জন দিতে পারবো না।
“আমি তোর কোন কাজে আসতে পারবো না জেরিন, তুই কি করবি, তুই নিজে ভাব…”-আমি অন্য দিকে মুখ করে কঠিন গলায় বললাম।
“ভাবী, তোমার সাথে জয় সিং যেভাবে আচরণ করেছে, আমি জানি, তোমার সাথে সেক্স করতে সে এমনি এমনি চায় নি, সে তোমাকে দেখেই বুঝে গেছে যে, তোমার স্থান কত উচুতে, তোমার যোগ্য সম্মান সে ছাড়া আর কেউ তোমাকে দিতে পারবে না…আর জয় সিং যদি চায়, তোমাকে যে কোন সময় এই বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যেতে পারে, দিনের পর দিন তোমাকে ওদের বাড়ীতে আঁটকে রেখে ধর্ষণ করতে পারে, এই ক্ষমতা ও জয় সিং এর আছে…কিন্তু সে তোমাকে সত্যিই সম্মান করেছে, না হলে তোমার চড়ের উচিত জবাব সে ওই মুহূর্তেই দিতে পারতো…”-জেরিন আমাকে বুঝানোর চেষ্টা করতে লাগলো।
“একটা গুণ্ডা লোক, আমাকে তুলে নিয়ে যেতে পারে, সেই লোককে তুই ভালবাসিস, আর এটাই তোর গর্বের ব্যাপার…ভাবতেই ঘিন লাগছে…ছিঃ ছিঃ…জেরিন…তোর এই অধঃপতন…তোর মনে এতো বিকৃতি…ছিঃ…”-আমি ওকে আরও কষ্ট দেয়ার জন্যে বললাম।
“ভাবী, জয় সিং মোটেই গুণ্ডা না, উনার সাথে না মিশলে তুমি উনার বড়ত্ব মহাত্ত সম্পর্কে জানতে পারবে না, তাই তো বলছি, তুমি উনার সাথে মিশো, উনি তোমাকে সুখের পৃথিবীর সন্ধান দিতে পারবে। উনি তোমাকে রানীর মতোই আচরন করবে তোমার সাথে…আমাকে তো উনি একটা রাস্তার বেশ্যা মাগীর চেয়ে বেশি কিছু মনে করে না, বা আমার সাথে তেমন আচরণ করে না, কিন্তু তোমার সাথে উনার আচরন সম্পূর্ণ ভিন্ন, ভাবী…প্লিজ, ভাবী…তুমি উনার কথা মেনে নাও…”-জেরিন আকুতি করে বললো আমাকে।
“তুই নিজেকে যেই নিচুতে নামিয়েছিস, এই লোকের সাথে সম্পর্ক করে, আমাকে ও তো সেই নিচতায় নামতে বলছিস? না জেরিন…আমি পারবো না তোর কথা মানতে…”-আমি এখন ও আমার সিদ্ধান্তে অটল হয়েই বললাম।
“প্লিজ, ভাবী, আমার দিকে তাকিয়ে হলেও এটা মেনে নাও, একটি বার তুমি জয় সিং এর সাথে সেক্স করো, আর আমাকে যদি তুমি এতটুকু ও বিশ্বাস করো, ভাবী, আমি তোমাকে গ্যারান্টি দিচ্ছি যে, একবার জয় সিং এর সাথে সেক্স করার পরে, তুমি চাইবে, দুনিয়ার সব কিছু বিনিময়ে হলে ও আরও একটি বার উনার সাথে সেক্স করতে…”-জেরিনের চোখে পানি।
“জেরিন…সেক্স জিনিষটাই এমন…যখন যার সাথে সেক্স করবি, তখন তাকেই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ পুরুষ মনে হবে…”-আমি শান্ত গলায় বললাম।
“কিভাবে জানো তুমি ভাবী? তুমি তো একজন লোকের সাথে সেক্স করেছো এই জীবনে, তুমি তো আমার মত অনেক লোকের সাথে সম্পর্ক করো নাই, কিভাবে জানবে তুমি ভাবী?”-জেরিন আমার দিকে তির্যক চোখে তাকিয়ে কান্না ভরা কণ্ঠে বললো।
“কি বলছিস তুই? তার মানে তুই একাধিক লোকের সাথে সেক্স করেছিস?”-এইবার আমার অবাক হওয়ার পালা।
“হ্যাঁ ভাবী, আমি এমন লোকদের সাথে ও সেক্স করেছি, যাদের তুমি বা আমাদের পরিবার ভালো ভদ্র লোক বলে মনে করো, আর আমি সে জন্যেই তোমাকে নিশ্চয়তা দিচ্ছি যে, যেসব লোককে তুমি ভালো ভদ্র লোক বলে মনে করো, ওরা সেক্স কি জিনিষ, সেটা জানেই না, আমার ভাইয়ার মতো মানুষ, উনারা সেক্স কি জিনিষ, সেটা বুঝেই না, আর তুমি ও সেটাকে না বুঝেই নিজের শ্রেষ্ঠ সুখ মনে করছো বোকার মতন…আমার ভাইয়ার মত লোকগুলি হচ্ছে খুব দুর্বল চিত্তের লোক, এরা কোনদিন সত্যের সামনে দাঁড়াতে সাহস পায় না, বিপদ দেখলেই তোমাকে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যাবে, এমনই ওদের মেরুদণ্ড, আমার ভাইয়া ও এদের থেকে ব্যতিক্রম নয়, ভাবী…তুমি ভালো করে জেনে নাও ভাবী, তুমি আজ একটা বিপদে পড়ো, আমার ভাইয়া, তোমার দিকে ফিরে না তাকিয়ে সোজা নিজের রাস্তায় হেঁটে যাবে, মনে কষ্ট থাকবে হয়তো, তোমাকে হারানোর কষ্ট, কিন্তু ভয় কে জয় করতে, বা ভয়ের সম্মুখে দাঁড়াতে যেই সাহস লাগে, সেটা আমার ভাইয়ার, বা তোমার চেনাজানা তথাকথিত ভদ্র লোকেদের ভিতরে মোটেই নেই…এই সমাজে ওদের একটাই নাম, তা হলো কাপুরুষ…তুমি এদেরকে ভদ্র শিক্ষিত লোক বলে চিনতে পারো, কিন্তু এরা মেরুদণ্ডহীন কাপুরুষ ছাড়া আর কিছু নয়, এরা বাস্তব জীবনে যেমন কাপুরুষ, বিছানাতে ও তেমনি, আমি তো জানি, আমার ভাইয়ার দম কতটুকু…”-জেরিন জোর গলায় কথাগুলি বললো, শুনে আমার শরীরের লোম দাড়িয়ে গেলো, আমি শিহরিত হয়ে গেলাম।

“ওহঃ জেরিন! তোর চিন্তা ভাবনা সব কিছুই একদম বিকৃত, তুই সোজা কোন জিনিষ চিন্তা করতে পারছিস না, তুই চলে যা আমার সামনে থেকে…তোর সাথে কথা বলতে মোটেই ইচ্ছা করছে না আমার…তুই এতদিন পরিবারের ভিতরে থেকে বিদ্রোহ করতি, একগুয়ে ভাবে চলতি, সেটাকে আমি ছেলে মানুষী মনে করতাম, কিন্তু এখন যেই জন্যে তুই এসব নোংরা কথা বলছিস আমার সাথে, যাকে নিয়ে আমার সাথে তর্ক করছিস, সেটা শুনে, তুই যে আসলেই একটা বিকৃত মনের উড়নচণ্ডী মেয়ে, সেটাই বুঝতে পারছি, তুই চলে যা আমার সামনে থেকে…তোর সাথে কথা বলতে ইচ্ছা করছে না আমার…”-আমি উঠে দাড়িয়ে কড়া গলায় বললাম জেরিনকে।
আমাকে কোনভাবে মানাতে না পেরে, জেরিন ও উঠে দাঁড়ালো, “ভাবী, বিশ্বাস করো, আমি তোমার চেয়ে এই পৃথিবীকে অনেক কাছ থেকে দেখেছি, এই সমাজ, সংসারকে অনেক ভালো করেই বুঝি তোমার চেয়ে, আমার অভিজ্ঞতা দিয়েই বলছি যে, তুমি কোনদিন তোমার স্বামীকে একটা ভুয়া বা জাল বিপদকে দেখিয়ে দাও, দেখবে ,সে তোমাকে সামনে এগিয়ে দিয়ে নিজে পিছনে সড়ে যাবে…আমার ভাইয়ার মত ভদ্র মানুষের কদর আছে ততক্ষন যখন, সব কিছু শান্ত, কাজ করছি, টাকা কামাচ্ছি, সংসার সামলাচ্ছি, কাজেই সব কিছু ঠিক…একটা বিপদে পরলেই বুঝবে যে, ওদের দৌড় কতখানি? কারণ বাস্তব দুনিয়া অনেক কঠিন সেখানে আমার ভাইয়ার মত ভদ্র নম্র চিত্তের লোকের কোন ঠাই নেই, আর সেই কারণেই আমি জয় সিং এর মত লোকের জীবন সঙ্গী হতে চাইছি, কারণ, দিন শেষে ওর মতো লোকেরাই জয়ী হয়, আর আমার ভাইয়ার মতো লোকেরা হয় ওদের আজ্ঞাবহ দাস, ওদের চাকর শ্রেণীর লোক…তুমি চাইলে এটা প্রমান করে দেখতে পারো…”-জেরিন শেষ বারের মত বললো।
“ওফঃ জেরিন, তুই কি চাস আমার কাছ থেকে?”-আমার যেন চরম হতাস, এমনভাবে আকুতি ভরা গলায় বললাম জেরিনকে। ওকে আমি কোনভাবেই নিরস্ত করতে পারছিলাম না, আমার সাথে এই তর্ক করা থেকে। ওকে আমি যতই অপমান করে আমার কাছ থেকে দূর করতে চাইছিলাম, কিন্তু সে যেন ততই আমাকে সাপের মত পেচিয়ে ধরতে চাইছে।
“আমাকে বিয়ে করতে সাহায্য করো ভাবী, এটাই চাই আমি তোমার কাছ থেকে…আমার প্রতি এই দয়া টা করো ভাবী!…”-জেরিন আবার ও আমার দু হাত ধরে আকুতি করে বললো।
“আমি পারবো না, তুই যা আমার সামনে থেকে…”-এই বলে আমি এক প্রকার জোর করে জেরিনকে আমার রুমের বাইরে বের করে দিলাম, তবে ওকে বের করে দিয়ে দরজা আটকানোর আগেই সে আবার ও বললো, “তুমি আমাকে সাহায্য না করলে, আমাকে আত্মহত্যা করতে হবে ভাবী, কথাটা মনে রেখো…”-আমি ওর মুখের উপর দরজা লাগিয়ে দিয়ে বিছানায় বসে হাফাতে লাগলাম। ঠাণ্ডা মাথায় আবার ভাবতে চেষ্টা করলাম, জেরিনের সাথে আমার এই দীর্ঘ কথোপকথন, আবার মনে করার চেষ্টা করলাম। জেরিনের আচরন যে খুব অসংলগ্ন সেটা সত্যি, কিন্তু, কেন সে এমন একটা লোককে বিয়ে করতে চায়, ওই লোকের দাসী হতে চায়, সেটাই ভাবার মতো ব্যাপার।
বেশ অনেকটা সময় আমি একা একা শুয়ে শুয়ে চিন্তা করতে লাগলাম জেরিনের কথা, ওর কি করা উচিত, আমার কি করা উচিত, এর পরে কি হতে পারে, অনেক কিছুই ভাবলাম। পরে সিদ্ধান্ত নিলাম যে, সুমন বাড়ি ফিরলে, ওর সাথে এটা নিয়ে কথা বলতে হবে, ওকে জানাতে হবে, ওর বোনের এই মানসিক বিকৃতির কথা। পরে আবার আমার মনে হলো যে, আগে জয় সিং এর সাথে যে জেরিনে সম্পর্ক শুধু এটুকু জানিয়েই দেখি সুমন কি বলে। এর পরে জয় সিং কি চায়, সেটা বলবো।
একবার বিছানা থেকে উঠে আয়নার সামনে দাড়িয়ে নিজেকে দেখলাম ভালো করে, খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে। জেরিন যা বললো, তা কি সত্যি? আসলেই কি আমার রুপ যৌবন কি অন্য রকম পর্যায়ের নাকি আর দশটা সাধারন মেয়ের মতই। নিজেকে নিজে যাচাই করে সেটা তেমন বুঝতে পারলাম না। মনে হলো যে, জেরিনের চেয়ে আমি হয়তো আরও বেশি ফর্সা, অনেক লম্বা, আমার বুক দুটি জেরিনের চেয়ে ও কিছু বড়, কিন্তু তার মানে এমন না যে, আমি একেবারে বিশ্বসুন্দরী। বিয়ের সময় সুমনের পাশে আমাকে দেখে অনেকে চুপিসারে মন্তব্য করেছে যে সুমনের সাথে আমাকে মানাচ্ছে না, সেটা হয়তো সুমন লম্বায় আমার চেয়ে কিছুটা ছোট বলেই মন্তব্য করেছে, কিন্তু আমি নিজে কোনদিন আমার রুপ, শরীর, আমার এই দিরঘাঙ্গি গঠন নিয়ে কোনদিন গর্ব করি নাই, আর মানুষের মুল্যায়ন আমি সব সময় মনকে দিয়েই করি, কার মন কেমন, কোনদিন মানুষের শারীরিক গঠনকে খাটো করা বা ওটাকেই উচুতে তুলে ধরাকে আমার বেশ নিচু শ্রেণীর কাজ বলে মনে হতো। তাই আমার শারীরিক সৌন্দর্যকে আমি কোনদিন খুব উচু নজরে দেখি নাই। আমার মনে হলো জেরিন হয়ত আমাকে ব্যবহার করার জন্যেই আমার রুপ সম্পর্কে এভাবে বাড়িয়ে বলছে, যেন ওর এই ঘৃণ্য নোংরা খেলার সাহায্যকারী করে নিতে পারে আমাকে।

***

রাতে বিছানাতে এসে আমি প্রথম আমার স্বামীকে জিজ্ঞেস করলাম, “আচ্ছা, সুমন, আমাকে একটা সত্যি কথা বোলোতো, আমি কি দেখতে অসাধারণ সুন্দর নাকি শুধু মাত্র চলনসই টাইপের?”
“আজ হঠাত এটা জানতে চাইলে যে?”
“আসলে আজ একজনে আমার রুপের খুব প্রশংসা করলো, তাই আমার মনে হলো, যে তোমার মুখ থেকেই শুনি, যদি ও তুমি কোনদিন আমাকে বোলো নাই আমার রুপ সম্পর্কে, তাই জানতে চাইছি, তুমি একদম সত্যি কথাই বলো, আমি মাইন্ড করবো না…”
সুমন নড়েচড়ে বসলো, কি বলবে তা বোধহয় গুছিয়ে নিচ্ছে, এর পরে বললো, “তুমি আসলেই এক অসাধারণ সুন্দরী নারী। আমি কোনদিন ও তোমার মত কোন নারীকে পাবো, এটা স্বপ্নে ও ভাবি নি। তোমার শরীরের প্রতিটি অংশই অতুলনীয়। আমাদের বংশের কারোর তো দুরের কথা, আমাদের এই পুরো শহরে ও তোমার শরীরের সাথে তুলনা করা যায়, এমন কোন মেয়ে নেই…যে তোমার রুপের প্রশংসা করেছে, সে সত্যি বলেছে, কিন্তু কে বলেছে, সেটা কি জানতে পারি?”
“পারো, সে হচ্ছে তোমার বোন…”-আমি হেসে বললাম।
“এখন মন দিয়ে শুন, আরও একটা কথা আছে, খুব কঠিন কথা, শুনেই তোমার মাথা ঘুরতে পারে, তাই মন দিয়ে শুন, আর অযথা উত্তেজিত হইয়ো না…”-আমি আবার নাটক করে বললাম।
“বলো, শুনছি…”-সুমন আমার চোখের দিকে তাকালো।
“জেরিন একটা লোকের সাথে প্রেম করে, তুমি হয়তি চিনবে, জয় সিং, জমিদার প্রতাপ সিং এর ছেলে…প্রেম পর্যন্ত তো ঠিকছিলো, কিন্তু এখন জেরিন প্রেগন্যান্ট আর ওই জয় সিং লোকটা তোমার বোনকে বিয়ে করতে চাইছে না, আর তোমার বোন ও বাচ্চা নষ্ট করবে না, এবং তাকেই বিয়ে করবে বলে জিদ ধরে আছে…এখন বলো কি করা উচিত আমাদের? বাবা মা কে জানাবো এসব কথা?”-আমি ধীরে ধীরে ঠাণ্ডা গলায় বললাম কথাগুলি। সুমনের চোখে মুখে ভয়ের স্পষ্ট ছাপ দেখতে পেলাম, এমন পরিস্থিতিতে কি করা উচিত এটার কোন ধারনাই নেই ওর, তাই ওর অবস্থা অনেকটা দিশেহারা লোকের মতই লাগলো আমার কাছে।
অনেকক্ষণ মাথায় হাত দিয়ে বসে রইলো সুমন, কিছু না বলে, এর পরে বললো, “জেরিন তা একদম ছোট বেলা থেকে এমন একগুয়ে, উড়নচণ্ডী, ওকে বাবা মা ও কোনদিন শাসন করে নাই, কিন্তু এখন সে যে কাণ্ড করেছে, কি বলবো আমি ওকে? জয় সিং কে আমি চিনি, সে খুব ক্ষমতাবান, আর জেদি টাইপের, সে যদি জেরিনকে বিয়ে করতে না চায়, তাহলে ওকে রাজি করানো আমার পক্ষে সম্ভব না…বাবা মা জেরিনের এসব কথা জানলে খুব কষ্ট পাবে। কিন্তু একটা হিন্দু লোকের সাথে কেন সে প্রেম করতে গেলো, আমি বুঝে পাই না…”
“তুমি ওকে ডেকে বুঝাও…তুমি বড় ভাই ওর, তুমি ওকে শাসন না করলে কে করবে?”-আমি পথ বাতলে দিলাম সুমনকে।
“তুমি বলো, আমার কথা শুনবে না জেরিন…”-মাথা নিচু করে বললো সুমন। আমি সুমনের এই কথায় আশ্চর্য হয়ে গেলাম, নিজের বোন এক অবৈধ বাচ্চা পেটে নিয়ে বসে আছে, সেই বোনকে ডেকে ধমকাতে ও পারবে না আমার স্বামী, জয় সিং কে কিছু বলতে পারবে না সে, সেটা না হয় বুঝলাম কিন্তু নিজের ছোট বোনকে কিছু বলার সাহস কেন নেই ওর, সেটা আমার মাথায় ঢুকলো না।
“আমি ওকে বলেছি, অনেক বুঝিয়েছি, যে বাচ্চা নষ্ট এখন ও করা যাবে, তাই ওটা নষ্ট করে জয় সিং কে ভুলে নতুন করে জীবন শুরু করতে, ওর এক কথা জয় সিং কে না পেলে সে আত্মহত্যা করবে…এখন বলো আমাদের কি করা উচিত ওর জন্যে…তুমি ওর বড় ভাই, তাই তোমাকেই আগে জানালাম আমি, যদি ও জেরিন জানে না যে, আমি তোমাকে এসব জানিয়েছি…”-আমি সুমনকে বললাম।
“আমার পক্ষে কিছু করা সম্ভব না…”-সাফ জানিয়ে দিলো সুমন। আমি আশ্চর্য হলাম, এটা কি সুমনের বিপদকে সামনা না করার চালাকি নাকি, আসলেই ও বুঝছে না যে ওর কি করা উচিত। জেরিন আমার সাথে কি এটা নিয়েই তর্ক করলো যে, ওর ভাই একটা কাপুরুষ, মেরুদণ্ডহীন লোক, জেরিন কি ঠিক বলেছে? আমার সন্দেহ হতে লাগলো।
“তাহলে জেরিন যদি আত্মহত্যা করে তখন কি করবে?”-আমি জিজ্ঞেস করলাম।
“সেটা ওর ব্যাপার…তুমি কি একবার জয় সিং এর সাথে দেখা করে কথা বলে দেখবে যে সে রাজি হয় কি না?”-সুমন চুপচাপ ওর পায়ের বলটাকে আমার দিকে ঠেলে দিলো, আমি শিউরে উঠলাম।
“তুমি ঘরের কর্তা হয়ে ওই লোকটার সাথে কথা বলতে ভয় পাচ্ছ, আর আমাকে বলছো ওর সাথে কথা বলতে?”–আমি আশ্চর্য হয়ে বললাম, সুমন আমার কথা শুনে মাথা নিচু করে বসে রইলো, আমার চোখের দিকে তাকানোর মত সাহস ও যেন নেই ওর। আমার খুব রাগ হলো সুমনের উপর, নিজের বোন বিপদে শুনে ওর ঝাঁপিয়ে পড়া উচিত, সেখানে ও এভাবে পিছটান দিচ্ছে। জেরিনের বলা কথাগুলিকেই এভাবে সত্যি হতে দেখতে আমার খুব খারাপ লাগছে। আমার সন্দেহ হতে লাগলো যে, সুমন কি ওই লোকটার চরিত্র সম্পর্কে জানে? ওর লুচ্চা নোংরা চরিত্রের খোঁজ কি জানে সুমন?
“আচ্ছা, আমাকে একটা কথা বলো, যে তুমি কেন জয় সিং এর সাথে কথা বলতে পারবে না এটা নিয়ে…”-আমি সুমনকে সহজে ছাড়তে রাজি হলাম না।
কিছু সময় চুপ করে থেকে সুমন বললো, “উনি অনেক বড় মানুষ, বড় ব্যবসায়ী, বড় রাজনৈতিক নেতাও, চাইলে আমাদেরকে কিনে ফেলতে পারেন, উনার কাছে গিয়ে আমি কিভাবে দাবী করি যে, আমার বোনের পেটে উনার সন্তান…আর জয় সিং যেমন বদমেজাজি লোক, সে হয়তো আমার কথা শুনবেই না, আমাকে ঘাড় ধরে বের করে দিবে ওর অফিস থেকে, আর ওর অনেক ক্ষমতা, আমাদের দিক থেকে কোন বিপদ আসতে পারে, এটা বুঝতে পারলেই, সে উল্টো আমাকে বিপদে ফেলে দিবে…এই উত্তরাঞ্চলের রাজনীতি ওদের পরিবারের কাছে জিম্মি…”
“আমাদের বিপদ তো একেবারে নগন্য নয়, তোমার বোনের জীবন, ওর পেটের সন্তানের জীবন, এই পরিবারের সম্মান সব কিছুই বিপদের সামনে পড়তে যাচ্ছে…”-আমি যুক্তি দিলাম।

সুমন চুপ করে রইলো, কেন সে জয় সিং এর সামনে আমাকে পাঠাতে চাইছে জানতে চাইলাম, বললো “তুমি মহিলা মানুষ, আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করতে পারে, তোমার সাথে হয়তো করবে না, তুমি যদি উনাকে বুঝিয়ে রাজি করাতে পারো, তাহলে জেরিনের জীবন, আমাদের বাড়ির সম্মান নষ্ট হবে না, তাই বললাম…”।
“উনার কি চরিত্র ভালো? মেয়েদের ব্যাপারে উনার কোন দুর্নাম আছে?”-আমি কৌশলে জানতে চাইলাম সুমনের কাছে, দেখি সে কিছু জানে কি না।
“উনার চরিত্রের ব্যাপারে দুর্নাম আছে শুনেছি, কিন্তু কতটুকু সত্যি সেটা জানি না…”-সুমন আমতা আমতা করে বললো, যেন সে এটা আমাকে জানতে দিতে চায় না, এমনটাই মনে হলো আমার কাছে।
“এমন লোকের কাছে নিজের সুন্দরী স্ত্রীকে পাঠাবে তুমি? তোমার ভয় করবে না?”-আমি একটু হালকা স্বরে জানতে চাইলাম।
“কিন্তু কি করবে? তুমি যদি একটু চেষ্টা করে উনাকে রাজি না করাও, তাহলে জেরিনের তো আর মরা ছাড়া আর কোন উপায় নেই…প্লিজ, তুমি একবার দেখা করো উনার সাথে…”-সুমন এইবার পুরো আমার দিকে তাকিয়ে যেন ভিক্ষা চাইছে এমন স্বরে আকুতি জানিয়ে বললো।
“ঠিক আছে, আমি ভেবে দেখি…আমি বললেই কি উনি রাজি হয়ে যাবে? উনি তো নিজের স্বার্থ দেখবে? আচ্ছা, আচ্ছা…উনি যে হিন্দু, নিজের বোনকে হিন্দু লোকের কাছে বিয়ে দিবে, এটা নিয়ে তুমি মোটেই চিন্তিত না?”-আমি সুমনকে জিজ্ঞেস করলাম একটু অবাক হয়ে।
“আমাদের এই এলাকায় অনেক হিন্দু লোক মুসলিমকে বিয়ে করেছে, আর অনেক মুসলিম লোক ও হিন্দুদের সাথে বিয়ে করছে, জয় সিং এর বাবা ও একবার একটা মুসলিম মেয়ে কে বিয়ে করেছে, পরে সেই বৌ মারা গেলে আবার হিন্দু একটা মহিলাকে বিয়ে করেছে শুনেছিলাম…আগের দিনের যারা জমিদার, তাদের মধ্যে এমন অনেক কিছুই শুনা যায়…”-সুমন হালকা স্বরে বললো, যেন এটা কোন ঘটনাই না।
“আর উনি যদি কিছু দাবি করে, তখন কি করবে?”-আমি একটা দীর্ঘশ্বাস চাপা দিয়ে বললাম।
“মানে?”-সুমন জানতে চাইলো।
“মানে হচ্ছে, আমি উনাকে রাজি করাতে গেলে উনি যদি যৌতুক হিসাবে কিছু চেয়ে বসেন, তাহলে কি করবে?”-আমি চোখে চোখ রেখে জানতে চাইলাম। সুমন নিজের চোখ সরিয়ে নিয়ে জবাব দিলো, “জেরিনকে বিয়ে করার বিনিময়ে উনি যা চাইবেন আমাদের কাছে, সেটা যাই হোক আমাদের তো সেসব দিতে হবেই…”।
“যাই চাইবেন?”- আমি আবার নিশ্চিত হতে চাইলাম, জানি না আমার স্বামী সেই প্রশ্নের অর্থ বুঝেছেন কি না।
“হুম, যাই চাইবেন…যা আমাদের আছে”-সুমন অন্যদিকে তাকিয়েই জবাব দিলো।
“যদি আমাকেই চেয়ে বসেন উনি, তখন কি করবে?”-আমি একদম স্পষ্ট করে জানতে চাইলাম সুমনের দিকে তাকিয়ে, সুমন যেন কেঁপে উঠলো আমার কথা শুনে, আমি কি বুঝাতে চাই, সেটা না বুঝার মত বোকা লোক সে নয়। কিন্তু চুপ করে থেকে অন্যদিকে তাকিয়ে সে আমার কথাকে উপেক্ষা করে গেলো, কোন জবাব দিলো না।
বিকালে জেরিনের সাথে নিজের স্বামীকে নিয়ে তর্ক করার পরে এই মুহূর্তে সুমনকে সব জানানোর পরে ও সুমন নিজে এই সব বিপদের মোকাবেলা না করে, আমাকে ঠেলে দিচ্ছে, এর মানে জেরিন ওর ভাই সম্পর্কে যা যা বললো, তা কি সবই সত্যি? আমার মনে এই একটাই প্রশ্ন বার বার উকি দিলো। যদি ও অন্যদিন প্রতি রাতেই আমাদের মধ্যে সেক্স হতো, কিন্তু আজ হলো না। সুমন কেন জানি নিজে থেকে ও কোন আগ্রহ প্রকাশ করলো না, আর আমি ও সুমনকে পরীক্ষা করার জন্যে ওকে কিছু বললাম না।
পরদিন দুপুরের পরে জেরিন আবার ও আমার রুমে ঢুকলো, আমি প্রথমেই বলে দিলাম ওকে, “আমি তোমার ভাইয়াকে বলে দিয়েছি…তোমার সাথে জয় সিং এর সম্পর্কের কথা…আর জয় যে বিয়ে করতে রাজি না, সেটা ও বলে দিয়েছি…”
“ওহঃ আচ্ছা…”-এই বলে জেরিন কোন প্রকার অবাক বা রাগ না হয়ে আমার সামনে এসে বসলো। “ভাইয়া কি বললো?”
“সে সব শুনলো, সে বাড়ির ছেলে, সেই সিদ্ধান্ত নিবে কি করবে? তোমার ভাইয়া মনে হয় জয় সিং এর সাথে দেখা করে কথা বলবে…”-আমি সোজা উত্তর না দিয়ে একটু ঘুরিয়ে বললাম।
“উমঃ…সে কিছুই করবে না…তুমি নিশ্চিত থাকতে পারো, সে আমাকে ও কিছু বলবে না, আর জয় সিং এর কাছে যাওয়ার সাহস তো তার নেইই…তুমি কি ঠিক শুনেছো ভাবী, যে ভাইয়া জয় এর কাছে যাবে?”-জেরিন আমার চোখে চোখ রেখে জিজ্ঞেস করলো। জেরিনের চোখের দৃষ্টি আমি সহ্য করতে পারলাম না, তাই চোখ সরিয়ে নিয়ে বললাম, “তুই কিভাবে নিশ্চিত যে, সে কিছুই করবে না?…”
“আমি জানি আমার ভাইকে, তোমার চেয়ে বেশি সময় ধরে, তুমি তো এক বছর দেখছো আমার ভাইকে, আমি ২২ বছর ধরে দেখছি…আমাকে বা জয় সিং কে কিছু বলার সাহস নেই ভাইয়ার…উনি বড় জোর…বড় জোর…তোমার উপর জোর খাটাতে পারেন, এর বেশি কিছু না…”-জেরিন যেন একদম নিশ্চিত এমনভাবে চিন্তা করে বললো। আমি নড়ে উঠলাম, সুমনের নারী নক্ষত্র কোন কিছুই কি অজানা নয় জেরিনের কাছে?
“আচ্ছা, তোর ভাইকে তো ভালোই স্টাডি করেছিস, আমাকে কেমন বুঝিস তুই, সেটা বল তো শুনি? আমাকে দেখে কি মনে হয় তোর?”-আমি ওর দিকে তির্যক চোখে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলাম।
“সত্যি বলবো? সহ্য করতে পারবে তো?…তোমাকে ও আমি তোমার নিজের চেয়ে কম বুঝি না…”-জেরিন আমার চোখের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো। ওর আত্মবিশ্বাসী চোখ আমার ভিতরকে নাড়িয়ে দিলো। এই পুচকে মেয়েটা এতটা আত্মবিশ্বাসী কিভাবে হয়?
“বল, শুনি, তোর পর্যবেক্ষণ…”-আমি ব্যাপারটাকে একটু হালকা করার জন্যে যেন খুব মজা পাচ্ছি, এমনভাব করে বললাম।

“তাহলে বলছি, শুন…তুমি খুব বোকা ও নির্বোধ টাইপের মেয়ে…বোকা এই জন্যে যে, তুমি নিজেকে চিনো না, নির্বোধ এই জন্যে যে, তুমি তোমার মুল্য বুঝো না। লেখাপড়ায় খুব মনোযোগী ও ভালো, পরিবারের সবার প্রতি যত্নশীল, আদর্শ বৌ, বাবা মা এর চোখে আদর্শ মেয়ে, কারণ ওদের সব কথা তুমি শুনো, নিজের মতামতকে গুরুত্ব না দিয়ে, শ্বশুর শাশুড়ির চোখে তুমি ভালো, কারণ তুমি ওদের সেবা করো, ওদের কথা মেনে চলো। স্বামীর চোখে আদর্শ স্ত্রী, কারণ স্বামীর কথা ও তুমি মেনে চলো, কিন্তু আসলে ভীষণ বোকা, কারণ তা না হলে তুমি আমার ভাইকে বিয়ে করতে কোনদিন রাজি হতে না, পৃথিবীর বিষয় আশয়, পরিবার নীতি, রাজনীতি, এসব তোমার মাথায় ঢুকে না, মানুষের মাঝে যে পার্থক্য আছে, এটা ও তোমার মাথায় ঢুকে না, যৌনতাকে তুমি সংসারের আর দশটা কাজের মতো দেখো, সেই অর্থে তুমি নিরেট গর্দভ, যৌনতাকে উপভোগ করতে জানো না, এমন কি সেই সুখের সন্ধান নেয়ার মত মন মানসিকতা ও নেই তোমার…মানুষ চিনার ক্ষমতা তোমার একদমই নেই, চারপাশে তোমার যেসব পুরুষরা চলাফেরা করে, ওরা তোমাকে কি চোখে দেখে, সেটা ও বুঝো না তুমি…তুমি তোমার নিজের শরীরের ভাষা বুঝো না, তোমার নিজের মনকে ও বুঝো না, তোমার আশেপাশে মানুষদের মুল্যায়ন করার ক্ষমতা ও তোমার নেই, তোমার শুধু একটাই গর্বের জিনিষ আছে, সেটা হচ্ছে তোমার অসম্ভব সুন্দর কামনাময়ি, লাস্যময়ী, অপরুপ শরীর…যার মুল্য সম্পর্কে ও তুমি নিজে জানো না।”-জেরিন খুব সুন্দরভাবে আমাকে বুঝাতে লাগলো, ওর কথা শুনে আমার হাসি পাবে নাকি রাগ হবে, সেটা ও বুঝতে পারছিলাম না।
আমাকে চুপ হয়ে থাকতে দেখে জেরিন হেসে বললো, “কি? আমার পর্যবেক্ষণ শুনে রাগ হচ্ছে খুব…কিন্তু বিশ্বাস করো, আমি একটু ও মিথ্যে বলি নাই, তুমি আমার কথাগুলি নিয়ে চিন্তা করো, তাহলেই বুঝবে যে আমি ঠিক বলেছি…”।
“আচ্ছা, আমাকে নিয়ে পরে চিন্তা করবো, এখন তোর কথা বল, কি সিদ্ধান্ত নিলি তুই?”-আমি কথা ঘুরানোর চেষ্টা করলাম।
“সিদ্ধান্ত তো তুমি নিবে, আমার তো নেয়ার কিছু নেই, আমি তো অনেকেই বিয়ে করবো, না হলে আত্মহত্যা করবো, এখন তুমি আমাকে বাঁচিয়ে রাখতে চাও, আমার সন্তানকে বাচাতে চাও নাকি আমাদের দুজনকেই মেরে ফেলতে চাও, এটা তো তোমার সিদ্ধান্ত…”-জেরিন খুব হাসিখুসি মুখে যেন মজা পাচ্ছে, এমন গলায় বললো।
“জেরিন, তুই কেন বুঝছিস না, তুই যা বলছিস, সেটা সম্ভব না, কোন ভদ্রলোক এমন নোংরা প্রস্তাব দিতে পারে না…উনি একটা লুচ্চা চরিত্রহীন লোক…”-আমি আবারও বুঝাতে চেষ্টা করলাম আমার প্রিয় ননদিনীকে।
“না, ভাবী, তুমি ভুল বুঝছো, উনার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার দেখো তুমি, উনার নামে এই এলাকায় কোন খারাপ বদনাম নেই, উনার পরিবার দেখো তুমি, জমিদার পরিবার, ঐতিহ্যগতভাবে উনারা বড়োলোক, উনাদের পরিবারের সম্মান এর কথা কাউকে জিজ্ঞেস করে দেখো, জানবে, শুধু এই এলাকার না, গোটা উত্তরবঙ্গে ও উনাদের মত সম্মনী খানদানী পরিবার আর একটি ও নেই, গোটা উত্তরবঙ্গে যারা রাজনীতি করে, সব লোকের উপর জয় সিং এর প্রভাব আছে, ব্যবসায়ী হিসাবে ও সে সার্থক, এই বয়সেই উনি নিজের পরিবারের বাইরে নিজের ও আলাদা অনেকগুলি ব্যবসা শুরু করেছেন, আর সবগুলি ব্যবসাই সফল উনি। উনি সিগারেট খান না, মাঝে মাঝে অল্প কিছু ড্রিঙ্ক তো করেন, কিন্তু সেটাও সব সময় এমন মাত্রায় যে, কোনদিন উনি নেশায় আছেন, এমন কথা কেউ বলতে পারবে না।”-এই পর্যন্ত বলে জেরিন একটু থামলো, এর পরে আরও বললো, “উনার একমাত্র দোষ বা তুমি এটাকে গুন ও বলতে পারো, উনি মেয়েদের পছন্দ করেন, বা মেয়েরা ও উনাকে খুব পছন্দ করে, তবে উনি আবার সব মেয়েদের পিছনে ঘুরেন না, উনি বিশেষ বিশেষ রুপ ও গুনের মহিলা ছাড়া যার তার পিছনে ঘুরেন না…আজ পর্যন্ত আমার জানামতে, উনি আমি ছাড়া আর মাত্র ৪ জন মহিলার সাথে সেক্স করেছেন, তার মধ্যে দুজন অবিবাহিতা, আর দুজন বিবাহিতা…কিন্তু উনি যদি চান, প্রতি রাতে এক নতুন মেয়ের সাথে সেক্স করতে পারেন, উনার প্রভাব এমনই যে, এই এলাকার যে কোন মেয়ের দিকে উনি যদি আঙ্গুল তুলেন, সেই মেয়ে উনার জন্যে বিছানায় শুয়ে যেতে দ্বিধা করবে না। আর উনি তোমাকে চান, মানে হচ্ছে তুমি ও উনার চোখে সেই অতি উচু মাত্রার কোন নারী, যাকে জয় সিং এর মতো লোক কামনা করতে পারে।”
“দেখো…দেখো…জেরিন, তুমি উনার খারাপ দিকটাকে ও ভালো হিসাবে আমার সামনে দেখাচ্ছো, মানে তুমি উনার পক্ষে দালালী করছো, আচ্ছা তুমি বলো তো, উনি তোমার মতো একজন মেয়েকে কেন বিয়ে করতে চান, বা উনি তোমার মধ্যে কি দেখেছে, যে তোমার সাথে সেক্স করতে চেয়েছেন?”-আমি বিরক্ত হয়ে বললাম।
“ভাবী, আমি মোটেই উনার দালালি করছি না, তুমি জানো না উনার সম্পর্কে, তাই আমি তোমাকে উনার অবস্থান জানাচ্ছি শুধু মাত্র, আর উনি আমাকে কেন বিয়ে করতে চান বা আমার সাথে কেন সেক্স করতে চেয়েছেন, সেটার ও কারণ আছে, সব মেয়েই উনাকে নিজের করে রাখতে চায়, একমাত্র আমি জানি, যে জয় সিং এর মতো লোককে শুধু নিজের করে রাখা সম্ভব না, তাই আমি তার কোন আচরনে বিরক্ত বা তাকে খারাপ ভাবি না, অন্য মেয়েদের সাথে তার সম্পর্কে আমার দিক থেকে কোন বাঁধা নেই…এটাই আমার সাথে উনার সম্পর্কের কারন…”-জেরিন খুব সুন্দর করে যুক্তি দিলো।
“ওকে, তুই ভালোই যুক্তি দিলি, এখন আমার সিদ্ধান্ত হচ্ছে যে, আমি তোদের এই খেলায় নেই…তুই আর তোর প্রেমিক মিলে ঠিক কর, তোরা কি করবি…”-আমি হাল ছেড়ে দিয়ে আমার সিদ্ধান্তেই অটল থাকলাম।
“আচ্ছা ভাই, তুমি এটা তো মেনে নাও, যে আমার ভাইয়া, যে তোমার স্বামী, সে কোনভাবেই তোমার স্বামী হবার উপযুক্ত নয়, জয় সিং হচ্ছে সেই লোক, যে তোমার প্রকৃত স্বামী হবার উপযুক্ত, তুমি যদি রাজি থাকো, তাহলে সে তোমাকে বিয়ে ও করতে রাজি, কিন্তু সে তোমাকে শুধু একবার চাইছে, কেউ জানবে না, পৃথিবীর কোন প্রাণী জানবে না, শুধু আমি জানবো, এই ছোট দয়াটুকু কি তুমি করতে পারো না, আমার মুখ চেয়ে, আমার পেটের এই সন্তানের মুখ চেয়ে…আমাকে কি তুমি মা হবার সুখ দিতে চাও না, বলো, তুমি কি আমার শত্রু, যে আমার ক্ষতি হলেই তুমি সুখী হবে?”-জেরিন ও হাল ছাড়ার পাত্রি নয়।
“এসব কথা তুই এই কাজটা করার আগে কেন চিন্তা করলি না, তুই নিজেকে এতো বুঝদার, এতো বিচক্ষন মনে করিস, তাহলে তুই কেন, তোর চেয়ে ১০ বছরের বড়, ভিন্ন ধর্মের একটা লোক, অনেক মেয়ে মানুষের সাথে যৌন সম্পর্ক আছে, এমন এক লোকের প্রেমে পড়লি, সেই লোকের বাচ্চা তোর পেটে ঢুকালি কিভাবে তুই, এসব কথা তোর তখন কেন মনে হলো না?”-আমি পাল্টা আক্রমন করলাম জেরিনকে, কঠিন অস্ত্র দিয়ে। আমার কড়া গলার কঠিন কথা শুনে জেরিনের চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে গেলো, এতক্ষন ওর উতফুল্ল মুখে কালো মেঘের ছায়া ভেসে এলো, আর আপনাদের কাছে সত্যি বলছি, জেরিনকে আমি নিজে ও খুব ভালবাসি, আমার আপন ছোট বোনের চেয়ে ওকে আমি কম কাছের মনে করি না, ওর চোখের পানি আমি ও সহ্য করতে পারছিলাম না।
জেরিন ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্না করতে লাগলো, আর বলতে লাগলো, “আমি শুধু একজন সত্যিকারের সুপুরুষ লোকের সাথে আমার জীবন কাটাতে চেয়েছি, তার দাসি হয়ে থাকলে ও আমার জীবন সার্থক, একজন আলফা পুরুষের স্ত্রী হতে চেয়েছি, এই জন্যেই জয় সিং এর সাথে আমার সম্পর্কের শুরু, আমাদের চারপাশে যেসব মেরুদণ্ডহীন লোক বাস করে, ওদের কারো সাথে আমি আমার জীবন কাটাতে চাই নি, সেই জন্যেই…” আমি বেশ কিছু সময় চুপ করে থাকলাম, কিন্তু সত্যি বলতে আমার ও খুব কষ্ট হচ্ছিলো, তাই এক সময় ওকে আমি টেনে বুকে জড়িয়ে ধরলাম, আর সান্তনা দেয়ার চেষ্টা করলাম, “প্লিজ, জেরিন, কাদিস না, একটা উপায় বের হবেই…”
“আর কবে বের হবে, আর এক মাস পর তো আমার ফুলে উঠা পেট সবার চোখে পড়বে, আজ সকালে ও আমাকে ফোনে বলেছে, যে একমাত্র তুমি ওর প্রস্তাবে রাজি হলে, তবেই সে আমাকে বিয়ের ব্যাপারে ওর বাবার সাথে কথা বলবে, না হলে, আমাদের বিয়ে কোনদিন ও সম্ভব হবে না…”। ওর কথা শুনে আমার শরীর আবার ও শিহরিত হলো, আমার ননদ চায়, আমার শরীর দিয়ে ওর স্বামীর সাথে সম্পর্ক তৈরি করতে, আমার নিজের স্বামী ও চায়, যেন, আমি ওর বোনের এই সমস্যা দূর করে দেই, যে কোন উপায়েই, আর আমি নিজে সতি সেজে স্বামী পূজা করছি, একটা দোটানার মাঝে পরে গেলাম আমি, বার বার শুধু মনে হতে লাগলো, সুমন কি সত্যি জেনে বুঝেই জয় সিং এর কাছে আমাকে পাঠাতে চায়, নাকি সে ভেবেছে, জয় সিং এর মতো লোককে রুপ দেখিয়ে, সুন্দর কথা বলে সত্যিই সত্যি বশ করতে পারবে আমার মত একজন মেয়ে? উফঃ আমি আর ভাবতে পারছি না, কি করবো? কিছুই মাথায় আসছে না।
“জেরিন, আমি তোকে খুব ভালবাসি, আবার আমি আমার স্বামীকে ও খুব ভালবাসি, তোর মতে আমার স্বামী মেরুদণ্ডহীন হতে পারে, কিন্তু সে তো আমার সতীত্বের সাক্ষী…এখন তোর কথা মানতে গেলে আমাকে ব্যভিচারী হতে হবে, আর স্বামীর প্রতি আনুগত্য দেখাতে গেলে, তোর জীবন বরবাদ হতে পারে, কি করবো আমি, তুইই বলে দে…”-আমি যেন কোনভাবেই কোন সুস্থ চিন্তা করতে পারছিলাম না।
“ভাবি, আমি তোমাকে বার বার বলছি, সতীত্ব, পতিব্রতা…এসব সব ঠুনকো শব্দ, শুনতে ভালো শুনায়, কিন্তু কোন কাজের শব্দ না…আর জয় সিং এর যেহেতু তোমার প্রতি লোভ হয়েছে, তাই, আমি তোমাকে রাজি করাতে না পারলে, সে হয়তো সরাসরি ভাইয়ার কাছে চেয়ে বসবে তোমাকে, তখন সুমন ভাইয়া নিজে থেকে তোমাকে তুলে দিবে জয় সিং এর বিছানায়, তোমার চোখে ভাইয়ার স্থান আরও নিচে নেমে যাবে, তার চেয়ে কি এটাই ভালো না, যে, ভাইয়া প্রকাশ্যে কিছু জানলো না, আর সব কিছু ঠিক হয়ে গেলো…”-জেরিন যুক্তি দিলো।
“জেরিন, তুই যত যাই বল, আমি কিছুতেই নিজেকে অন্য কোন পুরুষের সাথে বিছানায় দেখতে নিজের মন থেকে সায় পাচ্ছি না…আমাকে ভাবতে সময় দে…”-আমি জেরিনকে থামিয়ে দেয়ার জন্যে বললাম। জেরিন চলে গেলো আমার রুম থেকে গোমড়া মুখে ভারাক্রান্ত মন নিয়ে।
আমি নিজে নিজে আমার অবস্থানের এদিকে ওদিকে যুক্তি দিয়ে চিন্তা করতে লাগলাম, আমার কি করা উচিত? জেরিন আমার খুব কাছের বন্ধু হতে পারে, কিন্তু সুমন তো আমার স্বামী, ওকে কিভাবে আমি লুকিয়ে একটা পর পুরুষের শয্যাশায়িনী হই? আমার ভিতরের এতো বছরের লালিত ভদ্রতা, শিক্ষা, সব কিছুই যে তাহলে ধসে যাবে। কোন ভদ্র রুচিশীল মেয়ে কি পারে, একাধিক পুরুষের সাথে যৌন সঙ্গম করতে? আর জেরিন কি সত্যি বলছে যে, জয় সিং আমাকে নিয়ে সুমনের সাথে ও কথা বলতে পারে? আর কথা বললেই কি সুমন আমাকে তুলে দিবে জয় সিং এর কাছে? এতটাই কাপুরুষ কি আমার স্বামী? জেরিনের তো ওর ভাইকে আমার চেয়ে বেশি চিনার কথা, কিন্তু আসলেই কি জেরিন সত্যি বলছে নাকি আমাকে রাজি করানোর জন্যে, সাজিয়ে মিথ্যে বলছে। এসব প্রমানের একটাই উপায় আমার কাছে, তা হলো, এগুলি নিয়ে সুমনের সাথে সরাসরি কথা বলা, কিন্তু কোন মেয়ে কি করে স্বামীর সাথে এসব আলাপ করে, সেটাও আমার মাথায় আসছে না।

গল্পটি কেমন লাগলো ?

ভোট দিতে স্টার এর ওপর ক্লিক করুন!

সার্বিক ফলাফল 4 / 5. মোট ভোটঃ 4

এখন পর্যন্ত কোন ভোট নেই! আপনি এই পোস্টটির প্রথম ভোটার হন।

Leave a Comment