লেখক- মান্না ইসলাম মাহিম
“রাত ৯টা”
রাস্তার একসাইট দিয়ে প্রিয়া হাঁটছে আর চোখে দিয়ে পানি পরছে।
ছোট্ট বেলায় মা-বাবা একা করে চলেগেলো।তারপর দু-বেলা দু-মুঠো ভাতের জন্য মামীর হাজারাও অত্যাচার মারা-মারি করার পরেও থেকে গেলাম।ভাবতাম বড় হলে হয়তো মামী আর এমন করবে না।সেই ছোট্ট থেকে কষ্ট পেতে পেতে বড় হয়েও মামীর অত্যাচার গেল না।তারপর স্বপ্ন দেখতাম বিয়ের পর হয়তো আর কোন কষ্ট থাকবে না।শুখে-শান্তিতে স্বামীর ঘর সংসার করবো।৩টি বিয়ে ভেঙ্গে যাওয়ার পর বিয়েটা হলো ঠিকি,কিন্তু ঘর সংসার আর হলো না।
নিজের স্বামীর বাড়িতে কাজের মেয়ে হয়ে থাকতে হলো।সেই ছোট্ট বেলা থেকেই সবার কাছ থেকে অপমান অবহেলা কষ্ট ছাড়া আর কিছু পায়নি।
স্বামীর প্রেম আদর সোহাগ কি সেটা বিয়ের পরেও কিছু পেলাম না কষ্ট ছাড়া।যেই স্বামীকে নিয়ে সুখে থাকার স্বপ্ন দেখে হাজারাও কষ্টের পরেও বেচে ছিলাম, সেই স্বামীই আমাকে স্ত্রী হিসাবে মেনে নিল না।আর মেনে নিবেও না।তাহলে আমার এই জীবন বাঁচিয়ে রেখে কি লাভ কি পাবো জীবনে কষ্ট ছাড়া।দু-বেলা দু-মুঠো ভাত আর একটু থাকার জায়গার জন্য প্রতিদিন এত অবহেলা অপমান সহ্য করার চেয়ে চিরদিনের জন্য ঘুমিয়ে যাওয়া অনেক ভালো)’”””এইসব কথা প্রিয়া ভাবছে আর চোখের জল মুছছে।
রাত ১০টার দিকে প্রিয়া বাড়িতে ফিরলো।প্রিয়া বাড়িতে ফিরে দেখলো রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার আনানো হয়েছে।প্রিয়া বাড়িতে ঢুকতেই মাহিমের মা অনেক গুলো কথা শুনালো প্রিয়াকে।
প্রিয়া শুধু মাথা নিচু করে চুপ করে সব শুনলো কিছুই বললো না।
সবাই খাওয়া পর সবকিছু পরিষ্কার করে কিছু না খেয়ে রুমের ভিতরে গেল।
প্রিয়া রুমে ঢুকতেই মাহিম বলে উঠলো
মাহিম:-কোথায় যাওয়া হয়ে ছিল?
প্রিয়া কিছু না বলে রুমের ভিতরে আসলো।
মাহিম:-কি হলো বলুন কোথায় গিয়ে ছিলেন?(একটু রেগে)
প্রিয়া:-বাজারে।
মাহিম:-কেন বাজার করার জন্য তো বাসায় অন্য লোক রয়েছে।আপনি গিয়ে ছিলেন কেন?(রেগে)
প্রিয়া:-আমার প্রোয়জন ছিল তাই গিয়ে ছিলাম।
মাহিম:-কিসের প্রোয়জন?
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
মাহিম:-(প্রিয়ার কাছে এগি এসে)কি হলো কিছু বলছেন না কেন?(রেগেই)
প্রিয়া:-বললাম তো আমার প্রোয়জন ছিল তাই গিয়ে ছিলাম।
মাহিম:-হ্যাঁ প্রোয়জনটা কি সেটাই তো যানতে চাইছি আপনার কাছ থেকে(বিরক্তির ভাবে)
প্রিয়া কিছু বলছেনা চুপ করে আছে।
মাহিম:-ওহ্ বুঝতে পেরেছি আপনি নিশ্চই আপনার ঐ শিহাব ভাইয়ের বাসায় গিয়ে ছিলেন।কি তাই তো?
প্রিয়া:-দেখুন মাহিম বাবু আমার এখন আপনার সাথে ঝগড়া করতে একদম ইচ্ছে করছে না।
মাহিম:-আমি আপনার সাথে একদম ঝগড়া করতে চাইছি না।আমি যেটা যানতে চাইছি আপনি সেটা বলছেন না কেন?
প্রিয়া:-আপনাকে বলার প্রোয়জন মনে করছি না তাই আপনাকে বলছি না।(বিরক্তিকর ভাবে)
মাহিম:-এত পেচিয়ে কথা বলার চেয়ে Directly বললেই হয় যে আপনার শিহাব ভাইয়ের সাথে সময় কাঠাতে গিয়ে ছিলেন।
প্রিয়া:-ভদ্র ভাবে কথা বলুন মাহিম বাবু(রেগে মাহিমের দিকে ঘুরে)
মাহিম:-যে মেয়ে সারাটা দিন অন্য একটা ছেলের সাথে কাটিয়ে রাত করে বাসায় ফিরে।তার সাথে এর চেয়ে ভদ্র ভাষায় কথা বলাটা আমার যানা নেই।
প্রিয়া:-(রেগে)একদম উল্টা-পাল্টা কথা বলবেন না মাহিম বাবু(মাহিমের শার্ট কলার ধরে)
মাহিম:-তাহলে বলছেন না কেন আপনার প্রোয়জনটা কি?(শার্ট এর কলারটা ছারিয়ে নিয়ে)
প্রিয়া:-কেন আপনাকে বলতে যাব কি হন আপনি আমার,কোন অধিকারে বলতে যাব আমি।(রাগি কন্ঠে)
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
প্রিয়া:-আমি তো আপনাদের বাসার কাজের মেয়ে আপনার বউ না যে আমি কোথায় গিয়ে ছিলাম আপনাকে সেটা বলতে হবে।(একটু চিতকারে মতো করে)
মাহিম কিছু বলছে না।
প্রিয়া:-আপনি আমাকে স্ত্রী হিসাবে মানেন না আমিও আপনাকে স্বামী হিসাবে মানিনা।
মাহিম কিছু বলছে না শুধু রাগি চোখে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
প্রিয়া:-সো আমি কার বাসায় গেলাম না গেলাম, কার সাথে দেখা করি না করি তাতে আপনার কি?
মাহিম এখনো চুপ করে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
প্রিয়া:-আমি তো আপনার কেউ না তাই আমি কার সাথে সময় কাঠাই নাকাঠাই এই বিষয় নিয়ে আপনি একটা কথাও বলতে আসবেন না।
মাহিম রেগে প্রিয়া কাছে এগিয়ে এসে প্রিয়ার চুলের মুঠি ধরে টেনে নিজের কাছে এগিয়ে এনে।
মাহিম:-কি বললেন আপনি?
প্রিয়া:-যা শুনেছেন তাই বলেছি আমি,ছাড়ুন আমার লাগছে(ছারানোর চেষ্টা করে)
মাহিম আরো শক্ত করে টেনে ধরে।
মাহিম:-এই আপনার সাহস তো কম না আপনি…(রেগে)
প্রিয়া:-মাহিম বাবু প্লিজ ছাড়ুন আমার লাগছে(ছারানোর চেষ্টা করে কাদো কাদো ভাবে)
পর্ব-১০
———————————–
প্রিয়া:-মাহিম বাবু প্লিজ ছাড়ুন আমার লাগছে(ছারানোর চেষ্টা করে কাদো কাদো ভাবে)
মাহিম:-আপনি আমার সামনে দাড়িয়ে…..
মাহিম আর কিছু বলার আগেই প্রিয়া মাহিমের হাতটা ঝটকা দিয়ে সরিয়ে দিতেই প্রিয়া হাতের চুরি ভেঙ্গে মাহিমের হাতটা কেটে গেল।
মাহিম একটু চিতকার দিয়ে হাতটা চেপে ধরে প্রিয়ার কাছ থেকে সরে গেল।প্রিয়া হতাস হয়ে মাহিমের কাছে গিয়ে..
প্রিয়া:-দেখি কি হয়েছে,..একি হাত দিয়ে তো রক্ত বের হচ্ছে।
এইবলে প্রিয়া মাহিমের হাতটা ধরতে যাচ্ছিল,মাহিম হাতটা সরিয়ে নিয়ে।
মাহিম:-কিছু হয়নি থাক(প্রিয়ার কাছ থেকে সরে গিয়ে)
প্রিয়া:-আমি তো শুধু হাতটা সরিয়ে দিচ্ছিলাম,বুঝতে পারিনি এমনটা হবে।দেখি(মাহিমের হাতটা ধরানো চেষ্টা করে)
মাহিম:-বলছি তো কিছু হয়নি।
প্রিয়া:-হাত কেটে তো রক্ত বের হচ্ছে এক্ষনি ঔষধ লাগিয়ে দিতে হবে।
এইবলে প্রিয়া তারাতারি ঔষধ নিয়ে এসে
প্রিয়া:-দেখি হাতটা দিন।
মাহিম:-বললাম না আমার কিছু হয়নি।(রেগে)
প্রিয়া:-হাত দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে আর আপনি কিছু হয়নি।দিন তারাতারি ঔষধটা লাগিয়ে দেই।
মাহিম:-আমি তো আপনার কেউ না।আমার হাত কেটে রক্ত বের হলে তাতে আপনার কি?(অভিমান করে)
এইবলে মাহিম রুম থেকে বের হয়ে যাচ্ছিল এমন সময় প্রিয়া দরজার সামনে গিয়ে দারিয়ে বলতে লাগলো।
প্রিয়া:-আচ্ছা ঠিক আছে এতক্ষন আমি যা বলেছি সব ভূল বলেছি।আর কোদিনও এইসব কথা বলবো না।আপনি প্লিজ ঔষধটা লাগিয়ে নিন(কাঁদার মতো করে হাত জোর করে)
মাহিম:-এই কে আপনি আমার যে আমি আপনার কথা শুনবো।আপনি তো এই বাড়ির কাজের মেয়ে আমার বউ না।আপনি বাড়ির কাজের,কাজের মেয়ে হয়েই থাকবেন।কখনো আমার স্ত্রী হওয়া চেষ্টা করবেন না।(রাগ দেখিয়ে)
এইবলে মাহিম রুম থেকে বের হয়েগেল।আর প্রিয়া চোখে জল নিয়ে দাড়িয়ে রইলো।
“রাত ১২:৩০”
মাহিম ঘুমিয়ে আছে প্রিয়া মেঝে থেকে উঠে গিয়ে মাহিমের পাশে গিয়ে বসলো।বসে মাহিমের হাতের দিকে তাকালো দেখলো কেটে যাওয়া জায়গাটায় রক্ত জমে আছে।প্রিয়া তার শাড়ীর আচল দিয়ে সেটা অস্তে অস্তে মুছিয়ে দিতে লাগলো।যাতে মাহিমের ঘুম ভেঙ্গে না যায়।তারপর মাহিমের হাতে ঔষধটা লাগিয়ে দিল।তারপর চোখের জল মুছতে মুছতে মেঝেতে গিয়ে সুয়ে পরলো।
“সকাল বেলা”
সকাল বেলা মাহিম ব্রেকফাস্ট না করেই অফিসে গেল।মাহিমের মা অনেক বার বলল খেয়ে যেতে মাহিম শুধু বললো বাহিরে খেয়ে নিবে।
প্রিয়া রুম পরিষ্কার করছিল এমন সময় মাহিমের বাবা চিৎকার দিয়ে প্রিয়াকে ডাকছিল।
মাহিমের বাবার চিৎকার শুনে সবাই রুম চলে আসলো।
অর্পা:-কি হয়েছে বাবা এভাবে চিৎকার করছো কেন?
মাহিমের বাবা:-এই প্যান্টা ধুয়েছে কে?(রেগে)
অর্পা:-কি জানি প্রিয়া হয়তো ধুয়েছে।
কিছুক্ষণ পর প্রিয়া রুমে এলো
প্রিয়া:-বাবা আমাকে ডাকছেন?
মাহিমের বাবা:-(প্রিয়ার কাছে এগিয়ে এসে)এই প্যান্টা তুমি তুমি ধুয়ে আইরন করে রেখেছো?(রাগি কন্ঠে)
প্রিয়া হ্যাঁ বলতেই মাহিমের বাবা খুব জোরে ঠাসসস করে একটা চর বসিয়ে দিল প্রিয়ার গালে।প্রিয়া কিছু বুঝতে পরলো না,হতাশ হয়ে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো মাহিমের বাবা দিকে।
মাহিমের বাবা:-আমাকে জিগ্যেস না করে আমার পোশাক ধুরি আইরন করতে তোমাকে কে বলেছে(রাগি কন্ঠ)
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
মাহিমের বাবা:-আর ধুরি দেওয়ার সময় কি তোমার এই পেপার গুলি চোখে পরেনি?(পকেট থেকে পেপার গুলি বের করে)
প্রিয়া কিছু বলছেনা।
মাহিমের বাবা:-তুমি জান এই পেপার গুলি আমার কত important ছিল….just not only important,it was very important..!
অর্পা:-বাবা তুমি কাকে কি বলছে,ওর মতো একটা অশিক্ষিত গাইয়্যা মেয়ে এসবের কি বুঝবে।আর ও তো ফাকি বাজ কাজে ফাকি দেয়।
এখনো চুপ করে আছে।
অর্পা:-কি মনে করেছিলি যে তুই বাবাকে না বলে বাবার পোশাক ধুয়ে দিবি আর বাবা খুশি হয়ে তোকে এই বাড়ির বউ বলে মেনে নিবে তাই না।(রেগে)
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
অর্পা:-খুব সখ না বড়লোক বাড়ির বউ হওয়ার।একটা কথা ভালো করে শুন,তুই এই বাড়ির কাজের মেয়ে আর কাজের মেয়ে হয়েই থাকবি।কখনো এই বাড়ির বউ হওয়া দূর-সাহস করবি না।তোর মতো একটা গাইয়্যা অশিক্ষিত মেয়ের আমাদের বাড়ির বউ হওয়ার কোন যোগ্যতাই নেই।(রাগি কন্ঠ)
প্রিয়া কিছু বলছেনা শুধু দাড়িয়ে চোখে জল ফেলছে।
অর্পা:-এই একদম নাটক করবি সা বলছি,তোর এই নাটক দেখতে আমার একদম ভালো লাগেনা।যা গিয়ে কাজ কর গিয়া যা বলছি(রাগি কন্ঠে ধমক দিয়ে)
এইপর প্রিয়া চোখের জল মুছতে মুছতে কাজ করতে লাগলো।
রাতে সবাই খাওয়া-দাওয়া করলো কিন্তু মাহিম করলো না।প্রিয়া সবার খাওয়া-দাওয়ার পর সব কাজ শেষ করে মাহিমরে জন্য খাবার নিয়ে এলো রুমে।প্রিয়া খাবার নিয়ে রুমে এসে দেখলো মাহিম খাটের উপর বসে আছে।প্রিয়া খাবার নিয়ে মাহিমের কাছে এগিয়ে এসে..
প্রিয়া:-আপনি তো সারাদিন কিছু খান-নি।
কিছু বলল না শুধু প্রিয়া দিকে একবার ঘুরে তাকালো।
প্রিয়া:-নিছেও গেলন না খেতে,তাই আমি নিয়ে আসলো।আপনি কি এখনি খাবেন নাকি রেখে দিব।
মাহিম:-খাবো না আমি রেখে দিন।(রেগে)
প্রিয়া:-(ভয় ভয় করে)কেন?
মাহিম:-সকালে যখন না খেয়ে অফিসে গিয়ে ছিলাম তখন যখন জিগ্যেস করেন-নি কেন খেলাম না তাহলে এখন কেন জিগ্যেস করছেন?(রাগি কন্ঠে)
প্রিয়া:-মা-মনি চলে যাওয়ার সময় বলে গেছে,আপনার খেয়াল রাগতে,আপনার যত্ন করতে।তাই খাবারটা নিয়ে আসলাম।তাছারা আমার কোন দরকার নেই।
এইবলে খাবারটা রেখে দিল।
মাহিম:-সেটা তো আমি জানি,তা নাহলে তো আপনি খাবারটা নিয়ে আসতেন না।(বিরক্তিকর ভাবে)
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
মাহিম:-আপনার তো কিছু যায় আসেনা,আমি কি খেলাম কি পরলাম সেদিকে তো আপনার কোন খেয়াল নেই।এটা আমার থেকে ভালো আর কে যানে।(রাগি চোখে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়া:-আপনি আশা করেন নাকি আমি আপনার খেয়াল রাখি।যদি আশা করেন তাহলে এটা তো ভূল হবে।কারণ আমি তো এই বাড়ির কাজের মেয়ে আপনার বউ না।
মাহিম:-(বসে থেকে প্রিয়ার কাছে এগিয়ে এসে)ই আমি যদি আপনাকে এই বাড়িতে নিয়ে না আসতাম।তাহলে কিন্তু আপনাকে রাস্তায় থাকতে হতো(রাগ দেখিয়ে)
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
মাহিম:-কি পেলাম আমি আপনাকে বাঁচিয়ে রাস্তা থেকে এই বাড়িতে এনে।নিজের ইচ্ছে মতো আপনি চলবেন আর রাত হলে আপনার সাথে আমায় রুম শেয়ার করে থাকতে হবে।আর তার বিনিময় আমি কিছুই পাবো না।
প্রিয়া:-কি কি পেতে চান বলুন?
প্রিয়ার কথা শুনে মাহিম প্রিয়ার দিকে তাকালো।
প্রিয়া:-না মানে কি পেলে আপনার রিন শোত হবে।
মাহিম:-“আমি কি চাই সেটা তো তুমি কখনই বোঝোনা।আমি বার বার তোমাকে আপন করে নিতে চাই,সারা জীবনের জন্য তোমাকে নিজের করে পেতে চাই।আর তুমি প্রতিটা মুহূর্তেই আমাকে দূরে সরিয়ে দাও,আমাকে আঘাত করো।(মনে মনে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়া:-কি হলো বলুন?
মাহিম:-(চমকে উঠে)এই আপনি এখান থেকে যান তো যান।আপনার কথা বলতে এখন আমার একদম ভালো লাগছে না(বিরক্তিকর ভাবে প্রিয়া কাছ থেকে সরে গিয়ে)
প্রিয়া:-আমার সাথে কথা বলতে আপনার কবেই বা ভালো লাগে।আর বেশি দিন আপনাকে একটা কাজের মেয়ের সাথে রুম শেয়ার করে থাকতে হবেনা।চলে যাবো আমি যেখানে আর কারো সাথে রুম শেয়ার করে থাকতে হবে না।(কাঁদো কাদো ভাবে)
মাহিম:-এই এতবড় কথা বলছেন আপনি কোথায় বা যাবেন আপনার ঐ মামীর বাসা ছাড়া।আর তো কোন যাওয়ার মতো রাজ মহল নেই আপনার।যেখানে একাই থাকবেন।(বিরক্তিকর ভাবে)
প্রিয়া:-আছে মাহিম বাবু।
মাহিম:-আছে মানে? ওহ বুঝতে পেরেছি আপনার ঐ শিহাব ভাইয়ের বাসা যাওয়ার কথা বলছেন কি তাই তো?
প্রিয়া:-আমি জানি আপনি এটাই বলবেন।সেখানেও যাব না…।
মাহিম:-তাহলে কোথায় যাবেন আপনি?
প্রিয়া:-সেটা সময় হলেই বুঝতে পারবেন।আর আপনার জন্য খাবারটা এনে ছিলাম,এটা যদি দোষের হয়ে থাকে তাহলে দোষ হয়েছে।আপনি বললে খাবারটা আমি এক্ষনি নিয়ে যাচ্ছি(কাঁদো কাঁদো ভাবে)
মাহিম প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখলো প্রিয়ার মুখটা কেমন সুখিয়ে গেছে।দেখে মনে হচ্ছে সারাদিন কিছু খায়নি মেয়েটা।চোখ-মুখ কেমন লাল হয়ে আছে।
কথা বলতে বলতে চোখের কোনায় পানি চলে এসেছে মনে হয় আর অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রিয়ার চোখ দিয়ে পানি বেরিয়ে আসবে।
পর্ব-১১
———————————–
সকাল বেলা প্রিয়া সবার জন্য টেবিলে খাবার রেডি করছিল।একটু সবাই এসে খেতে বসলো।সবাই নাস্তা করার পর মাহিমের বাবা অফিসে যাওয়া জন্য রেডি হয়ে নিচে এসে কাজের ছেলে রাজু কে ডাকছিল।
অর্পা চিৎকার শুনে উপর থেকে নেমে এলো।
অর্পা:-বাবা রাজু তো নেই ও কে আমি একটু বাজারে পাঠিয়েছি।কেন কি হয়েছে?
মাহিমের বাবা:-ও কে আমি রাতে বলেছিলাম আমার জুতো গুলি পরিষ্কার করে রাখতে।ও এখনো জুতো গুলি পরিষ্কার করেনি।আমাকে তারাতারি অফিসে যেতে হবে।এখন কি বলতো?
অর্পা:-এ কথা দাড়াও ১মিনিট।
এরপর অর্পা প্রিয়া ডাকতে লাগলো।
অর্পা:-এই প্রয়াআআআআ(চিতকার দিয়ে)
প্রিয়া অর্পার কথা শুনে ছুটে এলো।
প্রিয়া:-আপু আমাকে ডাকছেন?
অর্পা:-কি করছিস এখন?
প্রিয়া:-কিচেনে কাজ করছিলাম কেন?
অর্পা:-ওসব কাজ পরে করবি।বাবা কে এখন তারাতারি বাহিরে যেতে হবে।তারাতারি বাবার জুতো গুলি পরিষ্কার করে দে।
প্রিয়া:-বাবা আপনি দাড়ান আমি এক্ষনি পরিষ্কার করে দিচ্ছি।
এইবলে প্রিয়া গিয়ে মাহিমের বাবার পায়ের কাছে গিয়ে বসে জুতো মুছে দিতে লাগলো।
এমন সময় মাহিমের মা এসে বলল..
মাহিমের মা:-এই মেয়ে তুমি নাকি মাহিমের রুমে থাকো?
প্রিয়া মাহিমের আম্মুর কথা শুনে একদম থমকে গেল।কি বলবে বুঝতে পারছেনা।
মাহিমের মা:-কি হলো কথা বলছো না কেন?
প্রিয়া:-জ্বী মানে হ্যাঁ(ভয় ভয় করে)
মাহিমের মা:-তোমার সাহস তো কম না তুমি বাড়ির কাজের মেয়ে হয়ে তুমি আমার ছেলের রুম শেয়ার করে থাকছো।(রেগে)
প্রিয়া কিছু বললো না মাথা নিচু করে জুতো মুছতে লাগলো।
মাহিমের মা:-শুনে ছিলাম তোমাকে এই বাড়িতে আনার আগে তুমি নাকি বলে ছিলে যে তুমি এই বাড়ির কাজের মেয়ে থাকবে।তো একটা কাজের মেয়ের জায়গা কোথায় সেটাও কি তুমি জানোনা নাকি?(রাগি কন্ঠে)
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
অর্পা:-কি জানি কথাটা উল্টে গেল নাকি?
মাহিম:-তোমরা সবাই উল্টাতে দিলে বুঝি?
মাহিম উপর থেকে নিচে আসতে আসতে কথাটা বলল।মাহিমের কথা শুনে সবাই অবাক দৃষ্টিতে মাহিমের দিকে তাকিয়ে রইলো।
অর্পা:-মানে???
মাহিম:-মানে আমি যতদূর জানি যে ও এখনো এই বাড়িতে কাজের মেয়ে হয়েই আছে।বাড়ির সমস্ত কাজ ও করছে এমনি কি যে কাজ গুলি ওর করার কথা না,সে কাজ গুলোও ও কে দিয়ে করাচ্ছ তোমরা।
এইবলে মাহিম প্রিয়া কাছে আসলো এসে
মাহিম:-এই আপনাকে জুতো মুছতে কে বলেছে,যান আমার জন্য গিয়ে কফি নিয়ে আসুন যান(রাগি কন্ঠে)
অর্পা:-মানে কি মাহিম,তুই দেখতে পারছিস না প্রিয়া কাজ করছে।
মাহিম:-হুম পাচ্ছি বাট ওর এই কাজটা করা মানায় না।(রেগে)
মাহিমের বাবা:-মানে কি মাহিম বাড়ির কাজের মেয়ে বাড়ির কাজ করবে না।এই রকম তো কথা ছিল না।
মাহিম:-(তার বাবা দিকে তাকিয়ে)সে তো তোমরা আমায় অমানুষ তৈরি করবে সে কথাও তো ছিল না বাবা।মানে আমার জানা ছিল না।এখন যানলাম।
মাহিমের বাবা:-কি বলছো কি মাহিম?
মাহিম:-হ্যাঁ ঠিকি বলছি।বাট ভাগ্য ভালো যে মা-মনির দোয়ার আমি পুরো-পুরি অমানুষ তৈরি হয়নি।আর ঠিক সেই কারণে আমার মনে হচ্ছে যে ওর এই কাজ গুলো করা অসম্ভব, ও কে দিয়ে এই কাজ গুলো করা মানায় না,সে গুলো ও করবে না।
মাহিমের মা:-ওকে ঠিক আছে…..আচ্ছা আমায় একটা বলতো এই মেয়ে কে তুই তোর রুমে থাকতে দিচ্ছিস কেন?
মাহিম:-(বিরক্তিকর ভাবে)মা তুমি আমার গুরুজন কিছু কিছু বিষয়ে তোমার ঢোকা উচিৎ না।(প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে)কি হলো আমি কি বলেছি কি শুনতে পারেন-নি?যান গিয়ে আমার জন্য কফি বানিয়ে উপরে নিয়ে আসুন(রাগি কন্ঠে)
এইবলে মাহিম উপরে চলে গেল।
“কিছুক্ষণ পর”
প্রিয়া মাহিমের জন্য কফি বানিয়ে নিয়ে উপরে চলে আসলো।এসে রুমে ঢুকে দেখলো মাহিম খাটের উপর বসে আছে।প্রিয়া মাহিমের কাছে এসে
প্রিয়া:-এই নিন আপনার কফি(মাহিমের দিকে বারিয়ে দিয়ে)
মাহিম কফির কাপটা হাতে নিল।
প্রিয়া কিছুক্ষণ চুপ করে দাড়িয়ে থাকার পর বলে উঠলো
প্রিয়া:-নিচে আপনাকে আমার হয়ে কথা বলতে আপনাকে কে বলেছিল?
মাহিম:-আপনার হয়ে কথা বলতে আমার বয়ে গেছে?(প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়া:-হ্যাঁ সেটাই তো যানতাম।বাড়ির কাজের মেয়ে বাড়ির কাজ করবে।তাহলে নিচে কেন শুধু শুধু সবার সামনে অতো গুলো কথা বলতে গেলেন কেন?
মাহিম:-সে তো মানবিকতার খাতিরে।আপনি কি ভাবলেন যে আমি আপনার হয়ে কথা বলছি।
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
মাহিম:-খুব ভালো ভাবেন আপনি।মানে I masse যে আপনার ভাবনা শ,ক্তি খুবি জোরালো
প্রিয়া:-দেখুন বিদ্রূপ করে কথা বলবেন না একদম(কাঁদার মতো করে)
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
প্রিয়া:-হ্যাঁ ভূল ভেবেছি।কিন্তু মোটেও চাই না যে আপনি আমার আর কোন দিন ভালো-খারাপ নিয়ে কথা বলুন।
মাহিম:-আপনার কথার আমি এতটা দাম দিব সে বিশ্বাস আপনার আমার প্রতি আছে?
প্রিয়া:-আমি ওতো কিছু জানিনা।এরপর আমার ব্যাপারে কারো যেন এত দরত উতলে না পরে।(অভিমানী সুরে)
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
প্রিয়া:-পরে যখন আমাকে কথা শুনতে হবে কখন তো আর কেউ আমাকে সামলাতে আসবে না।(অভিমানী কন্ঠে)
মাহিম:-আমার বুঝি আপনাকে সামলানোর কথা?
এইবলে মাহিম বসা থেকে উঠে অফিসে যাওয়া জন্য রেডি হতে লাগলো।
প্রিয়া:-আমি তো সে কথা একবারো বলিনি আপনাকে।আর কে বা আমাকে সামলাবে।এই বাড়িতে তো আমার আপন বলতে কেউ-ই নেই।
মাহিম:-কেউ যখন নেই।তখন এই বাড়িতে এত অপমান সয্য করে পরে আছেন কেন?যান চলে যান এই বাড়ি থেকে(রাগ দেখিয়ে বলেই রুম থেকে বের হয়েগেল)
“রাতে রান্না-বান্না করার পর সবাইকে খাইয়ে সবকাজ শেষ করে রুম এসে রুমটা গোছা-গোছি করছিল।এমন সময় প্রিয়া মাথাটা ব্যাথা করে উঠলো।প্রিয়া সাথে সাথে এসে বিছানার উপর বসে পরলো।না আর বসেও থাকতে পরছে না ব্যাথার কারনে।তাই মাহিমের বিছানায় সুয়ে পরলো।
প্রিয়া বিছানায় সুয়ে মাথা চেপে ধরে ছিল।এমন সময় প্রিয়ার তার মামা কথা মনে পরে গেল।সেদিন শিহাবের সাথে কথা বলার সময় শিহাব বলেছিল প্রিয়াকে যে তার মামা নাকি অসুস্থ।তারপর তো আর কথা হয়নি।এই কয়দিনে সুস্থ হলো কি না সেটাও জানেনা।প্রিয়া ভাবতে লাগলো ওর এতবড় একটা অসুখ ২/৩ মাস পর সে আর কতদিন বাচবে সে নিজেও জানেনা।এই পৃথিবীতে প্রিয়ার একমাত্র আপন বলতে প্রিয়ার মামা ছাড়া আর কেউ নেই।
যে করেই হক এই ২/৩ মাসের মধ্যে শেষ বারের মতো সবার সাথে দেখা করতেই হবে।(এইসব কথা ভাবতে ভাবতে অজান্তেই প্রিয়ার চোখ দিয়ে পানি বেরিয়ে আসলো)
“রাত ১০ট”
মাহিম এসে রুমে ঢুকতেই প্রিয়া মাহিম কে দেখে বিছানা থেকে উঠে দাড়ালো।মাহিম রুমে চেন্স করে ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নিল।
“কিছুক্ষণ পর”
মাহিম বিছানায় বসে ফোন টিপা-টাপি করছিল এমন সময় প্রিয়া বলে উঠলো..
প্রিয়া:-মামা নাকি খুব অসুস্থ।বলছিলম কি আমি তো একা-একা যেতে পারবো না।একদিন আমায় নিয়ে যাবেন মামার কাছে(ভয় ভয় করে)
মাহিম:-আমি কেন?আপনার ঐ শিহাব ভাই তো আপনাদের গ্রামেই থাকতো,তাকে নিয়ে যান।(রেগে)
প্রিয়া:-জানি আপনার সাথে যাওয়ার আমার কোন যোগ্যতাই আমার নেই।আর আমাকে নিয়ে বের হতেও আপনার অসুবিধে হবে।
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
প্রিয়া:-আমি সবটাই যেনে শুনেই বলে ছিলাম।হয়তো মামা আপনাকে আর আমাকে এক সঙ্গে দেখলে অনেক খুশি হবে।
প্রিয়ার কথা শুনে মাহিম প্রিয়া দিকে তাকালো।
প্রিয়া:-না আর অন্যকোন কারণ নেই।
প্রিয়া:-কোথাও যাওয়া জায়গা নেই তাই।ঠিক আছে আমি বুঝে গেছি ভূল বলেছি আর বলবো না।(মন খারাপ করে)
মাহিম:-(বসা থেকে উঠে দাড়িয়ে)আপনার কথা বলা শেষ হলে আমি কিছু বলতে চাই(বিরক্তিকর ভাবে)
প্রিয়া:-হ্যাঁ বলা শেষ এটাই বলার ছিল কিন্তু আপনি তো না করে দিলেন।আর কিছু বলার নেই আমার।বলুন আপনি কি বলবেন।
মাহিম কিছু বলছে না।
প্রিয়া:-কি নোটিশ দিবেন?
মাহিম:-নোটিশ?…!কি ডিভোর্স এর?(অবাক দূষ্টিতে তাকিয়ে)আপনার সাথে তো আমি এই বিয়েটা শিকারি করিনা।তার মধ্যে আবার ডিভোর্স,নোটিশ আসছে কেন?
প্রিয়া:-আমি ডিভোর্স এর নোটিশের কথা বলিনি।
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
প্রিয়া:-ওতটা বোকা আমি নই….!আপনার সাথে যে সেই ভাবে বিয়েটা হয়নি,সে কথাটা আমান যানা আছে।
মাহিম কিছু বলছে না।
প্রিয়া:-আমাদের বিয়েটা তো ঐ বিনি সূতর মালার মতো।শিকার করলে আছে না শিকার করলে নেই।(মন খারাপ করে)
মাহিম কিছু বলছে না শুধু প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
প্রিয়া:-আর এখনি বা আমি নিজেকে বিবাহিত মনে করি কি ভাবে।বিবাহিত বলতে গেলে তো স্বামীর মন বল হয়।আর আমার স্বামীটা যে সেটাই তো জানিনা।
মাহিম এখনো চুপ করে আছে।
প্রিয়া:-তাই আমি বিবাহিত নাকি অবিহিত, সধবা নাকি…(আর কিছু বললো না).
মাহিম:-(চমকে উঠে)নাকি কি বলুন(প্রিয়ার কাছে এগিয়ে এসে)বিধবা শব্দটা কি মুখে…..
মাহিম আর কিছু বলার আগেই প্রিয়া একহাত দিয়ে মাহিমের মুখ চেপে ধরলো।
প্রিয়া:-(একটু রাগি কন্ঠে)খবরদার আর একটা কথাও বলবেন না।আপনার যা মুখে আসবে সেটা বলার অধিকার আপনার নেই।আপনি কি মনে করেছেন আপনি যা খুশি তাই বলতে পারেন(মাহিমের মুখ চেপে ধরে মাহিমের চোখের দিকে তাকিয়ে)
দুজন দুজনার চোখের দিকে তাকিয়ে।কেউই আর কিছু বলছেনা।এভাবে দুজন দুজনার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকার পর মাহিম প্রিয়া হাতটা তার মুখ থেকে সরিয়ে দিল।
মাহিম প্রিয়ার হাতটা সরিয়ে দিতেই প্রিয়া একটু লজ্জিত ভাবে চোখ দুটো সরিয়ে নিল।
প্রিয়া:-আর কখনো আমাকে এই কথা বলবেন না।আপনার বলতে হয়তো ভালো লাগে কিন্তু আমার শুনতে ভালো লাগেনা।
মাহিম শুধু প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
প্রিয়া:-একটা বিবাহিত মেয়ের সামনে দাড়িয়ে তাকে বিধবা বলতে নেই।তাতে স্বামী অমঙ্গল হয়।হোক না আমার মিথ্যে বিয়ে।আপনি আমাকে স্ত্রী হিসাবে মানুন আর না মানুন।কিন্তু আমার স্বামী তো।আপনি পরুষ মানুষ এটা আপনি বুঝবেন না।(মাহিমের দিকে তাকিয়ে)
পর্ব-১২
———————————–
মাহিম:-এই আপনি নিজেকে আমার বউ ভাবেন নাকি?(রেগে)
প্রিয়া:-আমি ভাবলেও আপনার কিছু যায় আসে নাকি?
মাহিম:-না বাট যদি ভেবে থাকেন তো সেটা একদমি ভূল ভাবছেন।
প্রিয়া:-আমি বোকা হলেও ওতটা বোকা নই যে আপনাকে আমার স্বামী ভাববো।আপনাকে আমার স্বামী ভাবা তো দূরের কথা আমি কখনো কল্পনাও করিনা।
প্রিয়ার কথা শুনে মাহিম আরো প্রিয়া কাছে এগিয়ে এসে রেগে বললল
মাহিম:-এটা কি আপনার মনে কথা নাকি শুধু মুখের কথা।?(রেগে)
প্রিয়া:-শুধু মুখের কথা হতে যাবে কেন? যা বলছি মন থেকেই বলছি।
মাহিম:-“এতটাই অযোগ্য আমি এতটাই খারাপ আমি, এতটাই ঘৃণা করো আমাকে যে নিজের স্বামী ভাবা তো দূরের কথা কখনো কল্পনাও করো না।
অবস্স কেনই বা আমাকে তোমার স্বামী ভাববে।
আমাকে তো তুমি ভালোইবাসো না।আমি তো তোমার কাছে একটা খারাপ মানুষ।তুমি তো তোমার শিহাব ভাইকে ভালোবাসো আমাকে না।
এর মানে হচ্ছে যে তোমার শিহাব ভাই তোমার ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য আমি না।
তবে আমাকে তুমি এখন যেভাবে অপমানটা করলে,ঠিক সেভাবেই আমিও এর প্রতিশোধ নিব প্রিয়া।আরো কাঁদতে হবে তোমাকে অনেক।আর সেটা খুব তারাতারিই।(রাগি চোখে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে মনে মনে)
প্রিয়া:-সরুন আমাকে বিছানা করতে দিন,আমার খুব ঘুম পাচ্ছে।
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
প্রিয়া:-কি হলো কি দেখছেন এমন করে?
মাহিম:-দেখছি যে আপনার কপালে অনেক দুঃখ আছে।(প্রিয়ার কাছ থেকে সরে গিয়ে)
প্রিয়া:-এ আর নতুন কথা কি?আমার কপালে সুখটাই বা ছিল কখন।সেই ছোট্ট থেকেই তো সবার অবহেলা অপমান এইসব পেয়েই বড় হয়েছে।
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
প্রিয়া:-আমার কপালে না সুখ ছিল আর আশাও করিনা যে কোন দিন আসবে।
মাহিম:-হুমম সেটাই।
এরপর প্রিয়া মেঝেতে সুয়ে পরলো আর মাহিম খাঁটের উপরে।
“সকালে বেলা”
সকাল বেলা মাহিম ঘুম থেকে একটু ডেরিতে উঠে ফ্রেশ হয়ে খাঁটের উপর বসে অফিসের কিছু পেপার দেখছিল।
প্রিয়ার সবাকে ব্রেকফাস্ট করিয়ে মাহিমের ডাকতে আসলো রুমে।
প্রিয়া:-আপনার খাঁবার রুমে নিয়ে আসবো নাকি নিছে খাবেন?
মাহিম:-আমি এখন ব্রেকফাস্ট করবো না।
প্রিয়া:-কখন করবেন?
মাহিম:-এই আপনি আমাকে এই প্রশ্ন করার কে?(প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়া:-কেউ না বাট আপনার তো অফিসে যাওয়ার সময় হয়েছে।তাই বললাম আর কি কখন করবেন।
মাহিম:-আজকে অফিসে যাব না।আমার এক ফ্রেন্ড ৩দিন হলো বিদেশ থেকে এসেছে।তার সাথে দেখা করতে যাব।
প্রিয়া:-(ভয় ভয় করে)আপনার ফ্রেন্ড?
মাহিম:-হ্যাঁ..!আপনার যেমন সেই ছোট্ট বেলার শিহাব ভাই আছে, তেমন আমারও সেই ছোট্ট বেলার বেস্ট ফ্রেন্ড আছে।ওর নাম হচ্ছে তুন্নি।
আর আমার ফ্রেন্ড মানে? আমার কি ফ্রেন্ড থাকতে পারেনা নাকি?(রেগে)
প্রিয়া:-(কাপা কাপা কন্ঠে)না মানে আপনি যে মেজাজি তাই বললাম।
মাহিম:-এই আপনি আমার সাথে মজা করছেন নাকি?
প্রিয়া:-মজা করবো কেন?আপনার সাথে কি আমার সেই কোন সম্পর্ক আছে নাকি যে আপনার সাথে আমি মজা করবো।
মাহিম:-তাহলে এত কথা বলছেন কেন? যান গিয়ে কপি নিয়ে আসুন(রাগি কন্ঠে)
এরপর প্রিয়া আর কিছু না বলে কপি আনতে গেলো মাহিমের জন্য।
“কিছুক্ষণ পর”
প্রিয়া মাহিমের জন্য কপি এনে মাহিমের দিকে কপির কাপটা বারিয়ে দিয়ে বলল।
প্রিয়া:-এই নিন আপনার কপি
মাহিম কিছু না বলে পেপার গুলো রেখে কপির কাপটা হাতে নিল।
প্রিয়া:-বলছিলাম….(আর কিছু বলার আগেই)
মাহিম:-২দিন হলো আপনার শিহাব ভাইয়ের কাছ থেকে আশার।কই আপনার শিহাব তো আপনাকে ফোন করলো না।
প্রিয়া(নিশ্চুপপ)
মাহিম:-নাকি ফোন করেছিল আপনি আমায় বললেন নি।
প্রিয়া কিছু বলছে না চুপ করে আছে।
মাহিম:-কি হলো কিছু বলছেন না কেন?
প্রিয়া:-দেখুন কেউ আমাকে কোন ফোন করেনি।(রেগে)
মাহিম:-মিথ্যে কথা।
প্রিয়া:-আপনি যেটা মনে করবেন সেটা।আপনি এখন এইসব কথা নিয়ে আবার শুরু করবেন নাকি আমার কাজের কথাটা বলবো(রেগেই)
মাহিম:-কাজের কথা?(অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে)
প্রিয়া:-হুমম কাজের কথা।
মাহিম:-আপনার সাথে তো আমার কোন কাজের কথা নেই।
প্রিয়া:-আমি বলিনি যে আপনার আমার সাথে কাজের কথা আছে।আপনার নেই আমি জানি।কিন্তু আমার আপনার কাজের কথা সাথে আছে।
মাহিম:-আমার যখন নেই তখন আপনারাও নেই।থাকতে পারেনা।(বসা থেকে উঠে দাড়িয়ে)
প্রিয়া:-দেখুন আমরা দুজন সম্পূর্ণ দুটো আলাদা মানুষ।আপনার আমার সাথে কাজের কথা না থাকলেও আমার আপনার সাথে কাজের ককথা আছে।
মাহিম:-এই আপনি আমার সাথে এভাবে কথা বলছেন আপনার লজ্জা করেনা।(কাছে এগিয়ে এসে)
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
মাহিম:-আপনার অতীত কিন্তু আমার জানা শেষ।
প্রিয়া:-এই মধ্যে আমার অতীতো জানা শেষ হয়েগেছে?
মাহিম:-হ্যাঁ হয়েগেছে।
প্রিয়া:-তো কি জানলেন?
মাহিম:-জানলাম আপনি কেমন মানুষ(প্রিয়া কাছ থেকে সরে গিয়ে)
প্রিয়া:-হুমম সেটাই তো জানতে চাইছি কি জানলে?
মাহিম:-জানলাম যে আপনি আসলে একটা চরিত্রহীন মানুষ।
প্রিয়া:-মাহিম বাবু এবার কিন্তু আপনি আপনার অধিকারের সিমাটা লঙ্ঘন করছেন।(রাগি কন্ঠে মাহিমের কাছে এগিয়ে এসে)
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
প্রিয়া:-যাকে সম্মান করতে পারেন না তাকে অসম্মানও করবেন না।
মাহিম কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পর..
মাহিম:-বাবা আপনার শিহাব ভাইয়ের নাম এ দেখছি অনেক কথা ফুটেছে মুখে
প্রিয়া:-শিহাব ভাইকে মিন করে কথা গুলো আপনিই বার বার বলছেন।আমি একবারও শিহাব ভাইয়ের কথা বলিনি।(বিরক্তিকর ভাবে)
মাহিম:-আপনার শিহাব ভাইকে মিন করে কথা বলছি তার কারণ আছে।
প্রিয়া:-কি কারণ শুনি?
মাহিম:-কালকে অফিস থেকে আশার সময় আপনার শিহাব ফোন করে আপনার কথা জিগ্যেস করছিল।
প্রিয়া:-কি??(অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে)
মাহিম:-বাবা এতে অবাক হচ্ছেন কেন?মনে হচ্ছে যে আপনি কিছু জানেন না।
প্রিয়া:-আমি কিছু জানি মানে?
মাহিম:-এত ন্যাকামি করার কি আছে আমি ঠিক বুঝলাম না।আপনার মামার কাছে কথা বলে তো আপনার সাথে কথা বলার পারমিশন নিয়েই নিয়েছে।তাহলে আপনি এত ন্যাকামি করছেন কেন?(রাগি কন্ঠে)
প্রিয়া:-দেখুন এইসবের আমি কিছুই জানতাম না।
মাহিম:-এখন তো এই নাটকি করবেন।
প্রিয়া:-আমি আবার কি নাটক করছি?
মাহিম:-এই যে আপনি নাকি কিছু জানতেন না।
প্রিয়া:-দেখুন আমি সত্যিই বলছি আমি কিছুই জানতাম না।
মাহিম:-থাক আপনাকে আর মিথ্যে বলতে হবেনা।
প্রিয়া:-এই দেখুন আমার যা বলার আমি বলে দিয়েছি।এখন আপনার যেটা মনে হয় আপনি সেটাই ভাবতে পারেন।আর যদিও শিহাব ভাই আপনাকে ফোন করে আমার কথা জিগ্যেস করেও থাকে তাতে আপনিই বা কি?আমি তো আপনার কেউ না।(বিরক্তিকর ভাবে)
মাহিম:-হুমম ঠিকি আমার কিছু না।বাট আমার পারমিশন ছাড়াই আপনার শিহাব ভাইকে আমার নাম্বারটা দেওয়া হয়েছে কেন?(রেগে)
প্রিয়া:-আচ্ছা ঠিক আছে আমি মামাকে বলে দিব আমার কাছ থেকে যেন ক্ষমা চেয়ে নেয়।(বিরক্তিকর ভাবেই)
এইবলে প্রিয়া মাহিমের দিকে তাকিয়ে রুম থেকে চলেগেল।
মাহিম:-“তুমিও চাও যে তোমার শিহাব ভাই তোমাকে ফোন করুক।ঠিক আছে এবার তুমি দেখ তাহলে আমিও কি কি করি।(একা একা মনে মনে)
প্রিয়া কাজ করছিল এমন সময় মাহিম প্রিয়া ডাকলো।প্রিয়া মাহিমের ডাক শুনে রুমে এলো।
প্রিয়া:-কিছু লাগবে?
মাহিম:-না কিছু লাগবে না। আমার কাপড় গুলি একটু বের করে দিন তো।অনেক দিনপর তুন্নির সাথে দেখা করতে যাচ্ছি তাই ভালো একটা ড্রেস পরে যেতে হবে।
প্রিয়া মাহিমের কথা শুনে সব কাপড় বের করে বিছানার উপর দিয়ে বলল
প্রিয়া:-এই নিন আপনার সব কাপড় বের করে দিয়েছি(রাগি কন্ঠে)
এইবলেই রুম থেকে বের হয়ে যাচ্ছিল।
মাহিম:-মনে হচ্ছে খুব বিজি?
প্রিয়া:-বাড়ির কাজের মানুষ সব সময় তো কাজি করতে হয়।আর কিছু বলবেন?(রেগে)
মাহিম:-বাবা এত মেজাজ দেখাচ্ছেন কেন ঠিক বুঝলাম না।
প্রিয়া:-আপনি যেটা করতে বলেছেন সেটা করেছি এখন কথা না বারিয়ে তারাতারি রেডি হয়ে যান নাহলে আপনার ঐ তুন্নির সাথে দেখা করতে ডেরি হয়ে যাবে(রেগেই)
মাহিম:-আমার ডেরি নিয়ে আপনাকে মাথা ঘামাতে হবে না ওটা আমিই বুঝে নিব।।
প্রিয়া:-মাথা ঘামাচ্ছিল কারণ আপনার জন্য আপনার তুন্নি অপেক্ষা করে থাকবে।আর অনেক দিন পর দেখা করবেন কোথাও ঘুরতে যাওয়ার প্লান-ট্লানও করবেন। তাই বলছি(রেগেই)
মাহিম কিছু বলছে না চুপ করে আছে।
প্রিয়া:-আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছেন?
মাহিম:-দেখছি।
প্রিয়া:-মানে?
মাহিম:-মানে আপনি মুখে যতই উদার উদার কথা বলুন না কেন,আসলে আপনি ততটা উদার নন।
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
মাহিম:-আচ্ছা বাদ-দিন বলুন তো কোন ড্রেসটা পোরে যাই।
প্রিয়া:-আপনার তুন্নি যেই ড্রেসটা পছন্দ করবে সেটাই পোরে যান।
রাগ দেখিয়ে বলেই প্রিয়া রুম থেকে বের হয়েগের।
মাহিম:-“বুঝলাম না প্রিয়া আমাকে রাগি দেখিয়ে কথা বলছে কেন?(একা একা মনে মনে)
“রাত ১০টা”
মাহিম এখনো বাসায় ফেরেনি।প্রিয়া সমস্ত কাজ শেষ করে রুমে চলে আসলো।আজকে একটু বেশিই প্রিয়ার মনটা খারাপ।রুমে এসে তার মা-বাবার সেই ছবিটা বেড় করে তাকিয়ে ভাবছে যে সে যাকে বেশিই ভালোবাসে সেই তাকে ছেড়ে চলে যায়।মা-বাবাকে ভালোবাসতো তারা ছোট্ট বেলায় ছেড়ে চলেগেল।মামাকে ভালোবাসতো তাকে ছেড়ে আসতে হলো।মাহিমকে ভালোবাসে ঠিকি বাট তাকে পাওয়া হলো না।
“রাত ১১টা”
মাহিম রুমে ঢুকে দেখলো প্রিয়া সুয়ে আছে।প্রিয়া মাহিমকে দেখে বিছানা থেকে উঠে দাড়ালো।
মাহিম:-কি ব্যাপার আপনি এখনো জেগে আছেন যে?(ভিতর আসতে আসতে)
প্রিয়া:-না মানে ঘুম আসছিল না তাই।
এরপর মাহিম ওয়াশরুমে গেল।কিছুক্ষণ পর মাহিম ওয়াশরুম থেকে বেড় হওয়ার পর প্রিয়া বলে উঠলো..
প্রিয়া:-আপনার খাবার…..ওহ্ আপনি তো মনে হয় আপনার তুন্নির সাথে খেয়ে আসছেন তাই না।(একটু রেগে)
মাহিম:-হুমম ও কি আর না খেয়ে আসতে দেয়।রেস্টুরেন্ট ও আমাকে নিজ হাতে খাইয়ে তারপর আসতে দিল।(মিথ্যে কথা)
মাহিম:-ওহ্
মাহিম:-অনেক দিনপর ওর সাথে দেখা।আজকে সারাটা দিন ঘুরলাম।তুন্নি আমাকে আসতে দিচ্ছিল না।বলল যে আজকের রাত ওর বাসায় থেকে যেতে।
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
মাহিম:-আর ও বলল যে যতদিন এই দেশে থাকবে ততদিন নাকি আমাদের বাসায় থাকবে।
প্রিয়া:-কেন?
মাহিম:-কেন মানে?
প্রিয়া:-মানে আপনার ফ্রেন্ড এই বাসায় থাকবে কেন?(রেগে)
মাহিম:-বারে আমার ফ্রেন্ড আমার বাসার আসতে পারে না বুঝি?
প্রিয়া:-পারে কিন্তু এই বাসায় থাকবে কেন?
প্রিয়া:-আমি ঠিক বুঝলাম না।তুন্নি এই বাসায় থাকলে আপনার সমস্যা কি?
প্রিয়া:-না আমার আবার কি সমস্যা।আমার কোন সমস্যা নেই।(মাহিমের কাছ থেকে সরে গিয়ে)
মাহিম:-তাহলে কথা না বানিয়ে খাবার দিন আমাকে।
প্রিয়া:-আপনি না খেয়ে আসছেন?(অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে)
মাহিম:-তো কি হয়েছে?বাহিরে খেয়ে আসছি বলে কি বাসায় খাওয়া যাবে না নাকি?
প্রিয়া:-আমি সেটা বলছি না।
মাহিম:-তাহলে কথা না বারিয়ে খাবারটা বেরে দিন।
প্রিয়া:-আমি পাব না টেবিলে রাখা আছে আপনি নিজে বেরে খেয়ে নিন।(রাগ দেখিয়ে)
এইবলে প্রিয়া মেঝেতে বিছানা করতে লাগলো।
মাহিম:-এই আপনি পাবেন না মানে কি?(প্রিয়ার কাছে এগিয়ে এসে)
প্রিয়া:-পাব না মানে পাব না।আমার খুব ঘুম পাচ্ছে আমি ঘুমাবো।সরুন তো সরুন(রাগ দেখিয়ে)
মাহিম:-এই আপনি আজ সকাল থেকেই আমাকে রাগ দেখাচ্ছেন কেন ঠিক বুঝলাম না।
প্রিয়া:-আমি আবার আপনাকে রাগ দেখাতে যাব কেন?(অভিমানী সুরে)
মাহিম:-না আপনি যখন থেকে তুন্নির কথা শুনেছে তখন থেকেই দেখছি আপনি আমাকে রাগ দেখিয়ে কথা বলছেন।
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
মাহিম:-এই আপনার কি হিংসে হচ্ছে নাকি?
প্রিয়া:-মানে
মাহিম:-মানে হলো প্রতিদিনি আমি বলার আগেই আমাকে খাবার বেরে দিতেন,কিন্তু আজকে দিচ্ছেন না।আমাকে বেরে খেতে বলছেন।
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
মাহিম:-তখন তুন্নি এই বাড়ি থাকার কথা শুনে বলছেন যে সে কেন এই বাড়িতে থাকবে।এই আপনি কি নিজেকে আমার বউ মনে করেন নাকি?(শান্ত ভাবে)
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
মাহিম:-কি হলো উতর দিচ্ছেন কেন?বলুন আপনি নিজেকে আমার বউ ভাবেন নাকি নাকি?
প্রিয়া:-(রাগি কন্ঠে)না ভাবি না ভাবি না।কোনদিন ভাবিনি।আর কোনদিন যেন ভাবতেও না হয় এইরকম একটা ভয়ানক ভাবনা। (কাঁদো কাঁদো ভাবে বলেই অন্যদিকে ঘুরে দাড়ালো প্রিয়া)
প্রিয়ার কথা শুনে মাহিম ফোনটা বিছানায় রেখে প্রিয়ার পিছনে দাড়িয়ে প্রিয়ার দু’কাধে দু’হাত রাগলো।তারপর প্রিয়ার কানের কাছে মুখ এগিয়ে এনে অস্তে অস্তে বলতে লাগলো
মাহিম:-কোনটা ভয়ানক ভাবনা শুনি?(শান্ত ভাবে)
প্রিয়া একদম নিশ্চুপ কিছু বলছে না।
মাহিম:-কি হলো বলুন কোনটা ভয়ানক ভাবনা বলুন।(শান্ত ভাবেই)
প্রিয়া:-(কাঁপা কাঁপা কন্ঠে)আপনার বউ হওয়াটা(বাচ্চাদের মতো করে)
মাহিম:-কোন দিক দিয়ে ভয়ানক শুনি?
প্রিয়া:-আপনার মতো একটা লোক আমার স্বামী এটা আমি ভাবতেও পারিনা।(কাঁদো কাঁদো ভাবেই)
মাহিম:-তো আপনার স্বামী হতে গেলে কি কি থাকতে হবে তার মাঝে?
প্রিয়া:-আর যাই থাকুক না কেন তার মাঝে।আমার যে স্বামী হবে,সে শুধুই আমাকে ভালোসবে।আর কাউকে না।আর কিছু না থাকলেও অন্তত তার চরিত্রটা ঠিক থাকতে হবে।(কেঁদে কেঁদে)
প্রিয়ার কথা শুনে মাহিম চমকে উঠে প্রিয়াকে ছেড়ে দিয়ে বলর
মাহিম:-সেটা নিশ্চই আপনার শিহাব ভাই(রাগি কন্ঠে)
প্রিয়া:-সেটা নিয়ে আপনার মাথা ব্যাথা কেন?শিহাব ভাই হোক আর হোক আর যাই হো আপনার কি তাতে?(কাঁদো কাঁদো ভাবেই)
মাহিম:-আপনি একজন অকৃতগ্য বেইমান।শুযুগশন নেন।(রেগে)
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
মাহিম:-এত যে চরিত্র নিয়ে বড় বড় কথা বলছেন আপনার নিজের চরিত্রটা কি?(রেগে প্রিয়ার কাছে এগিয়ে এসে)
প্রিয়া কিছু বলছেনা।
মাহিম:-সবাই তো জানে যে বোন বিয়ের পিরিতে বসার আগে পালিয়ে গেলো আর অনি অমনি শাড়ী গহনা পোরে বিয়ের পিরিতে বসে পরলো।(রেগেই)
প্রিয়া কিছুই বলছেনা শুধু দাড়িয়ে চোখের চল ফেলছে।
মাহিম:-আপনার শিহাব ভাই যদি এতই ভালো ওর প্রতি যদি আপনার ওতই প্রেম-পিরিত তাহলে অপেক্ষা করলেন না কেন তার জন্য।
প্রিয়া:-(……)
মাহিম:-আপনি তখন জানতে যে আমার জীবনেও তুন্নি আছে।
প্রিয়া:-(…..)
মাহিম:-আচ্ছা মানলাম আমি না হয় চরিত্রহীন,আপনি কি চরিত্রবতী?যে মেয়ে টাকার জন্য দেহ্ বিলিন দেয় তাকে মানুষ পতিতা বলে।আর যে মেয়ে বিয়ের পরেও অন্য একটা ছেলের সাথে সময় কাঠায় তাকে…..
মাহিম আর কিছু বলার আগেই প্রিয়া মাহিমের শার্ট এর কলার চেপে ধরে বলতে লাগলো.
প্রিয়া:-আর একটা কথা বললে আমি কিন্তু আপনাকে একদম খুন করে ফেলবো(কেঁদে কেঁদে)
মাহিম:-গায়ের জোরে আপনি কিন্তু আমার সাথে পারবেন না।ছাড়ুন আমাকে।(রাগি কন্ঠে)
এইবলে মাহিম ঝটকা দিয়ে প্রিয়ার হাত দুটো ছারিয়ে নিয়ে প্রিয়াকে সরিয়ে দিতেই প্রিয়া খাঁটের সাথে ধাক্কা লেগে মেঝেতে পোরে গেলো।
মাহিম:-(রাগি কন্ঠে)তুন্নি এই বাড়িতেই আসবে আর আপনিই তুন্নির সমস্ত কাজ করে দিবেন।
শব্দহীন প্রিয়া।
মাহিম:-আপনার ওত যোগ্যতাই নেই ভালো ব্যবহারের।আপনার যোগ্যতার থেকেও ভালো ব্যবহার করা হয়েছে আপনার সাথে।
রাগ দেখিয়ে বলে অন্যদিকে ঘুরে দাড়ালো মাহিম।
প্রিয়া কিছু না বলে মেঝে থেকে উঠে দাড়ালো।
প্রিয়া:-হ্যাঁ তাই তো,,আমি তো কাজ করার জন্যই এই বাড়িতে এসেছি।আমি জানি আমাকে কাজ করেই খেতে হবে।আর আমার কাজ করতে কোন কষ্টও হয় না।এখন সবার কাজ করছি এরপর তুন্নি এলে তুন্নিও কাজ করে দিব।(কেঁদে কেঁদে)
মাহিম প্রিয়ার কথা শুনে প্রিয়ার দিকে ঘুরে তাকাতেই দেখলো খাঁটের সাথে ধাক্কা লেগে প্রিয়ার কপাল কেটে রক্ত বের হচ্ছে।
প্রিয়া:-আর আপনি যদি বলেন তুন্নি এলে আমাকে চলে যেতে হবে,তাহলে আমিও চলেও যাব আপনার বাড়ি ছেড়ে(কেঁদে কেঁদেই)
পর্ব-১৩
———————————–
মাহিম:-তুন্নির আশার পর কেন আপনি এখনি চলে যান কে আপনাকে আটকাচ্ছে।
এইবলে মাহিম রেগে প্রিয়ার ব্যাগপত্র গুলো হাতে নিয়ে প্রিয়ার পায়ের কাছে ছুরে মারলো।
মাহিম:-এই নিন আপনার ব্যাগ।আপনি চলে গেলেই বা কার কি?দরকার নেই আপনার মতো বাজে মেয়ে এই বাড়িতে থাকার।রাস্তায় মেয়ে কে রাস্তাই ভালো মানায়।আপনি এক্ষনি চলে যান(রাগ দেখিয়ে)
প্রিয়া:-হুমম ঠিকি বলছেন।রাস্তায় মেয়ে কে রাস্তাই ভালো মানায়(কেঁদে কেঁদেই)
এইবলে প্রিয়া কান্না করতে করতে নিজের ব্যাগপত্র গুলো হাতে নিল।তারপর মাহিমের দিকে অন্যরকম একটা মায়ার দৃষ্টিতে তাকিয়ে কান্না করতে করতে রুম থেকে বের হয়েগল।
প্রিয়া রুম থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর মাহিম বিছার উপর বসে ভাবতে লাগলো।
মাহিম:-“”রাগের মাথায় তো বেরিয়ে যেতে বললাম।প্রিয়া কি সত্যি সত্যি এই মাঝ রাতে কোথাও বেরিয়ে যাবে নাকি?
না কোথায় আর যাবে।ওর তো যাওয়ার মতো আর কোথাও জায়গা নেই।কিছুক্ষণ পর এমনিতেই রুমে চলে আসবে।(মনে মনে)
এটা ভেবে মাহিম বিষয়টা বেশি কেয়ার না করে সুয়ে পরলো।
“কিছুক্ষণ পর”
মাহিম ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো রাত ১১টা।প্রিয়া রুম থেকে বেরিয়ে যাওয়া প্ররায় ১ঘণ্টার মতো হলো।কিন্তু এখনো রুমে ফিরে এলো না।
মাহিম উঠে বসে ভাবতে লাগলো””-প্রিয়া এখনো আসছে না কেন?ও কি সত্যি সত্যি বাড়ি ছেড়ে চলেগেল নাকি?
এরপর মাহিম উঠে পুরো বাড়িতে প্রিয়াকে খুঁজলো কিন্তু কোথায় পেলো না।মাহিম কেন জানি টেনশনে পড়ে গেলো।মেয়েটার যে জেদ যদি জেদের বসে উল্টা-পাল্টা কিছু করে ফেলে।
মাহিমের মন কেমন জানি ভয় ঢুকে গেলো।সে আর ডেরি না করে গাড়ি বের করে বেরিয়ে পরলো প্রিয়াকে খুঁজতে।
না আজকে একটু বেশিই হয়েছে।মেয়েটা কে ঐভাবে ধাক্কা দেওয়াটা ঠিক হয়নি।
আসলে আমারী দোষ কি?
প্রিয়াই তো বার-বার ওর শিহাব ভাইয়ের কথা বলে আমার মাথা গরম করিয়ে দিচ্ছিল।
আর ও যতই আমার মাথা গরম করিয়ে দিবে আমি ততই ও কষ্ট দিব।(ড্রাইভিং করছিল আর এইসব কথা ভাবছিল মাহিম)
অনেক জায়গায় খোঁজা-খোজি করলো কিন্তু কোথাও প্রিয়াকে পেলো না।
“”কোথাও গেলো মেয়েটা।অনেক জায়গায় তো খোজা-খোজি করলাম।রাস্তাতেও ভালো করে দেখেই তো আসলাম।হেঁটে এত তারাতারি কোথায় গেলো।(মনে মনে)
মাহিম গাড়ি চালাচ্ছিল এমন সময় হঠাৎ চোখ পরলো একটা দোকানে।দোকানটা বন্ধ বাট দোকানের সামনে কে যেন বসে আছে ধুর থেকে ভালো ভাবে বোঝা যাচ্ছেনা।
মাহিম গাড়িটা ব্রেক করে গাড়ি থেকে মেনে দোকানের সামনে এসে দেখলো প্রিয়া ব্যাগটা বুকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে বসে কান্না করছে।
মাহিম আরো এগিয়ে এসে
মাহিম:-আপনি এখানে আর আমি আপনাকে কোথায় কোথায় খুজলাম জানেন।
প্রিয়া মাহিমের কন্ঠ শুনে মাথা উঠে দেখলো মাহিম ওর সামনে দাড়িয়ে আছে।
প্রিয়া:-আপনি এখানে কেন এসেছেন কেন??(কান্না করতে করতে)
মাহিম:-কেন আবার আপনাকে খুজতে।
প্রিয়া:-কেন আমাকে খুজচ্ছেন কেন?আমিতো আপনার কেউ না।আমি কোথায় গেলাম না গেলাম তাতে আপনার কি?(কেঁদে কেঁদে)
মাহিম:-রাস্তায় কথা না বারিয়ে চলুন বাড়িতে ফিরে চলুন।
প্রিয়া:-কেন আমিতো খারাপ মেয়ে বাজে মেয়ে।আমাকে তো রাস্তাই মানায় আপনাদের বাড়িতে না।তাহলে আবার ফিরে যেতে বলছেন কেন?(কেঁদে কেঁদেই)
প্রিয়ার মুখের কথা গুলো শুনে মাহিম অনেটাই Emotional হয়েগেল।মাহিম প্রিয়ার চোখের দিকে তাকিয়ে দেখলো প্রিয়ার চোখের কোনায় পানি চলেছে।এখন কেন জানি প্রিয়ার উপর রাগ করতে মন চাইছে না মাহিমের।সে খুব শান্ত ভাবে প্রিয়াকে বলল
মাহিম:-ok I Am Sorry..আমি ভূল বলেছি।আপনাকে ঐসব কথা আমার একদমি বলা উচিৎ হয়নি।আর কখনো ঐসব কথা বলবো না আপনাকে।এবার চলুন বাড়িতে চলুন।
প্রিয়া ওর কান্না থামিয়ে চোখের জল মুছে।উঠে দাড়িয়ে বলতে লাগলো।
প্রিয়া:-যাব না আমি আপনি চলে যান এখান থেকে।(অভিমানী সুরে)
মাহিম:-Sorry বললাম তো।
প্রিয়া:-সব সময় Sorry বলে সব কিছু ঠিক করা যায় না।
মাহিম:-তো বলুন আমাকে কি করতে হবে?(শান্ত ভাবে)
প্রিয়া:-আপনাকে কিছুই করতে হবে না।আপনি চলে যান থেকে।
মাহিম:-আমি এখান থেকে গেলে আপনাকে নিয়েই যাব।
প্রিয়া:-বুঝতে পেরেছি আপনি তাহলে যাবেন না।আপনি যখন যাবেন না তখন আমিই এখান থেকে চলে যাচ্ছি।
এইবলে প্রিয়া নিজের ব্যাগটা হাতে নিয়ে চলে যাচ্ছিল এমন সময় মাহিম প্রিয়ার হাত ধরে টান দিয়ে নিজের কাছে টেনে নিল।
মাহিম:-কোথায় যাচ্ছেন?(প্রিয়ার চোখের দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়া কিছুক্ষণ মাহিমের চোখের দিকে তাকিয়ে হালকা ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে রাগি কন্ঠ বলতে লাগলো…
প্রিয়া:-আপনার কিন্তু এই অধিকার নেই মাহিম বাবু(রেগে)
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
প্রিয়া:-আপনি যদি আমাকে এভাবে রাস্তায় হাত ধরে টানাটানি করেন তাহলে আমি কিন্তু চেঁচিয়ে লোকজন জোরো করবো।আর আপনি নিশ্চই আমাকে ওতটা নিচে নামতে বাধ্য করবেন না(রাগি কন্ঠে)
মাহিম কিছু বলছে না।মন খারাপ করে শুধু প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।প্রিয়া কিছুক্ষণ চুপ করে মাহিমের দিকে তাকিয়ে থাকার পর।
প্রিয়া:-খারাপ লাগছে তো খুব খারাপ লাগছে তাই না।
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
প্রিয়া:-এর থেকেও খুব খারাপ খারাপ কথা আপনি আমাকে বলেন।ভেবে দেখুন এবার অন্যের কেমন লাগে।
এইবলে প্রিয়া কিছুক্ষণ দাড়িয়ে থাকার চলে যাচ্ছিল এমন সময় মাহিম প্রিয়া সামনে দাড়িয়ে গেল।
মাহিম:-এবার তো বলতে পারবেন যে চিৎকার করবো।টাচ্ করিনি আপনাকে।(প্রিয়ার সামনে দাড়িয়ে)
প্রিয়া:-পথ আটকালেন কেন?(রেগে)
মাহিম:-যেতে দিব না বলে।
প্রিয়া:-আমি বললাম আপনাদের বাসায় আর ফিরে যাব না।(রেগেই)
মাহিম:-ফিরে যাবেন না বললেই হলো।
প্রিয়া:-কি??
মাহিম:-কোথাও টাওয়া হচ্ছে না আপনার।
প্রিয়া:-আপনার হুকুম নাকি?
মাহিম কিছুক্ষণ প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে থাকান পর
মাহিম:-হুমম আমার হুকুম।
প্রিয়া:-আপনি কে হুকুম করার?(রাগ দেখিয়ে)
মাহিম:-সেটা আপনার মন কে প্রশ্ন করুন কেন?উত্রর পেয়ে যাবেন।আমি কে হুকুম করার।(প্রিয়া চোখের দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়া:-প্রশ্ন করেছি তো।হাজার প্রশ্ন করেছি আর হাজার বারিই একি উত্রর পেয়েছি যে!!!!!!আমার উপর আপনার কোন অধিকার নেই।
মাহিম:-এই অনেক্ষন ধরে কিন্তু আপনার অনেক বারাবারি দেখছি।
প্রিয়া(!!!!)
মাহিম:-কিছু বলছি না বলে এটা ভাববেন না যে আমি আপনার সমস্ত জুলুম আমি সয্য করবো।
প্রিয়া কিছু বলছে না শুধু মাহিমের মুখের দিকে চেয়ে আছে।
মাহিম:-প্রয়জন পরলে না আপনাকে জোর করে কোলে উঠে বাড়িতে নিয়ে যাব।এখন বেশি কথা না বারিয়ে চুপচাপ গাড়িতে গিয়ে উঠে পরুন যান।
প্রিয়া:-(কাঁদো কঁদো ভাবে)ওত গুলো বলে ওত অপমান করে এখন…..(কিছু বলতে গিয়ে থেমে গেলো)
মাহিম:-হুমম ঐ কথা গুলোও আমি বলে ছিলাম এখন এই কথা গুলোও আমিই বলছি।
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
মাহিম:-যে ঐ কথা গুলো বলতে সে এই কথা গুলো বলতে পারে।
প্রিয়া:-তখন তো আপনার বাসা থেকে তারিয়ে দিলেন।তাহলে এখন নিতে আসছেন কেন?(কাঁদার মতো ভাবে)
মাহিম:-আসলে আপনার মাথায় তো গবর ভরা কেন সেটা এটা আপনি বুঝবেন না।অনেক রাত হয়েছে গাড়িতে গিয়ে বসুন বলছি।(প্রিয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে)
কিছুক্ষণ চুপ করে মাহিমের তাকিয়ে থাকার পর…
প্রিয়া:-না আমি যাব না(অভিমানী সুরে)
মাহিম:-এই জেদ করবেন না একদম জেদ করবেন না।আমার সাথে জেদ করে কিন্তু আপনি পারবেন না।আকাশ খারাপ মনে হয় অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই বৃষ্টি নামবে।যান গাড়িতে উঠুন(একটু রেগে)
প্রিয়া:-আপনার কোন কথা আমি শুনবো না।তখন ওত কিছু বলে কত রকম ভাবে আমাকে অপমান করলেন।ঐ অপমান গুলো আমি কখনই ভূলবো না।(কাঁদো কাঁদো ভাবে)
মাহিম:-এই দেখুন আমি কিন্তু আবার আপনার গাঁয়ে হাত দিতে বাধ্য হবো।
প্রিয়া:-ঐ যে আমি বলে ছিলাম না যে আপনি আমার গাঁয়ে হাত দিলে আমি চেঁচাবো।
মাহিম:-ও আচ্ছা আপনি তাহলে চেঁচাবেন?
প্রিয়া:-হ্যাঁ চেঁচাবই তো।
মাহিম:-ওকে(প্রিয়ার কাছে এগিয়ে আসতে আসতে)
প্রিয়া:-দেখুন আমি কিন্তু সত্যি সত্যি চেঁচিয়ে লোকজন জোর করবো বলে দিলাম(পিছন দিকে পিছতে পিছতে)
মাহিম আর কিছু না বলে প্রিয়া কোলে উঠিয়ে নিল।
মাহিম:-এবার তাহলে চেঁচান।
প্রিয়া কিছু বলছে না শুধু মাহিমের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে।মাহিমও আর কিছু বলছে না প্রিয়ার চোখের দিকে তাকিয়ে রইলো।চারদিকটা একদম নির্জন,কোন কিছুরি শব্দ নেই।মাহিম আর প্রিয়াও কিছু বলছেনা শুধু দুজন দুজনার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে।
কিছুক্ষণ পর আকাশ থেকে বৃষ্টি নামতে লাগলো।
বৃষ্টির প্রথম ফোঁটা প্রিয়ার ঠোঁটে পরতেই প্রিয়ার সারা শরিল কেঁপে উঠতেই প্রিয়া মাহিমের শার্ট এর কলাল চেঁপে ধরলো।
আকাশ থেকে আশা বৃষ্টি দুজনার শরিলকে ভিজিয়ে দিচ্ছে।দুজন দুজনার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে।মাহিম দেখতে পেলো বৃষ্টির পানিতে প্রিয়ার ঠোঁট গুলো কেমন কাঁপছে।মাহিম চোখ বন্ধ করে একটু একটু করে প্রিয়ার মুখের কাছে নিজের মুখ এগিয়ে আনতে লাগলো।প্রিয়া কিছুক্ষণ মাহিমের চোখের দিকে তাকিয়ে থাকার পর চোখ বন্ধ করে ফেললো।
পর্ব-১৪
———————————–
মাহিম প্রিয়ার মুখের কাছে নিজের মুখ এগিয়ে আনতেই হঠাৎ আকাশে বিদ্যুৎ চমকাতেই প্রিয়া ভয় পেয়ে মাহিমের শার্ট এর কলার আরো শক্ত করে চেপে ধরে মাহিমের বুকে মুখ লুকালো।
এরপর মাহিম চোখ খোলে দেখলো প্রিয়া অনেটাই ভয় পেয়ে বাচ্চাদের মতো তার বুকের মাঝে মুখ লুকিয়ে চুপ করে আছে।
মাহিম:-কি ভয় পাচ্ছেন?
প্রিয়া:-হুমম খুব(চোখ বুঝেই বাচ্চাদের মতো করে)
তারপর মাহিম কোলে করেই প্রিয়া নিয়ে গাড়িতে বসিয়ে দিল।এরপর বাড়িতে নিয়ে আসলো।
“পরের দিন সকাল বেলা।”
অর্পার চিৎকারে মাহিমের ঘুম ভাঙ্গলো।মাহিম ঘুম থেকে উঠে দেখলো অর্পা রাগি কন্ঠে খুব জোরে জোরে চিৎকার দিয়ে প্রিয়াকে ডাকছে।
মাহিম ব্যাপারটা ঠিক বুঝলো না।প্রিয়া তো খুব সকাল বেলাই উঠে।তাহলে অর্পা কেন এত চিৎকার দিয়ে বাড়ি মাথায় তুলছে।মাহিম খাঁটের উপর থেকে নামতে ঠিক তখনি দেখতে পেলো যে প্রিয়া এখনো ঘুম থেকেই উঠেনি।
মাহিম ব্যাপারটা ঠুক বুঝলো না।
সে খাঁট থেকে মেনে প্রিয়াকে ডাকতে লাগলো।কিন্তু প্রিয়া কোন সারা দিচ্ছে না।
এরপর মাহিম প্রিয়ার গাঁয়ে হাত দিতেই দেখলো কালকে হঠাৎ বৃষ্টিতে ভেজাতেই প্রিয়ার অনেক জ্বর এসেছে।
মাহিমের স্পর্শ পেতেই প্রিয়ার ঘুম ভেঙ্গে গেলো।প্রিয়া চোখ খুলেই দেখলো মাহিম তার পাশে।প্রিয়া মাহিম কে দেখে উঠতে যাবে কিন্তু না উঠতে পারছেনা।মাহিম সহ প্রিয়াকে ধরিয়ো উঠিয়ে দিল।প্রিয়া দেখলো অনেটাই বেলা হয়েগেছে তাই মনে হয় মাহিম তাকে ডেকে দিচ্ছে তাই সে বলল
প্রিয়া:-আসলে মাথাটা অনেক ধরেছে তাই বুঝতে পারিনি।আপনি যান ফ্রেশ হন আমি এক্ষনি আপনার জন্য নাস্তা করে আনছি।
এইবলে প্রিয়া উঠতে যাবে কিন্তু মাহিম তাকে উঠতে দিল না।
মাহিম:-না না একদম উঠবেন না।
প্রিয়া:-মানে?(অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে)
মাহিম:-আপনার গাঁয়ে তো অনেক জ্বর।এই জ্বর নিয়ে উঠার কোন দরকার নেই।
প্রিয়া:-আজকে সুর্য কোন দিকে উঠেছে বলুন তো?
মাহিম:-কেন সুর্য যেই দিকে উঠার কথা সেই দিকেই তো উঠেছে।আপনার কি মনে হয় আজকে সুর্য অন্যদিকে উঠেছে।
প্রিয়া:-আমার কাছে তো তাই মনে হচ্ছে।
মাহিম:-মানে?
প্রিয়া:-মানে এর আগেও তো আমি জ্বর নিয়ে আপনাদের বাসায় কাজ করেছি।কই তখন তো কিছু বলেননি।
মাহিম:-এর আগে বলিনি এখন বলছি।(একটু রেগে)
প্রিয়া:-কেন এখন বলবেন কেন?
মাহিম:-সেটা আপনার জানতে হবে না।আপনি বসুন আমি ফ্রেশ হয়ে আপনার জন্য ঔষধ নিয়ে আসছি।একদম উঠবেন না কিন্তু।
এইবলে মাহিম ওয়াশরুমে গেলো।
কিছুক্ষণ পর মাহিম ওয়াশরুমে থেকে বের হয়ে আসলো।এসে দেখলো যে প্রিয়া নেই উঠে গেছে,মাহিম অনেকটি রাগ নিয়ে নিছে আসলো।
মাহিম নিছে এসে দেখলো সবাই টেবিলে বসে আর প্রিয়া সবাইকে নাস্তা দিচ্ছে।
মাহিম খাবার টেবিলের কাছে এসে সবার দিকে লক্ষ করে বলল
মাহিম:-এটা কি ঠিক হচ্ছে?(একটু রেগে)
মাহিমের কথা শুনে সবাই অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো।
অর্পা:-কোনটা কি হচ্ছে না,কিসের কথা বলছিস তুই?
মাহিম:-ও কে দিয়ে যে তোমরা এভাবে কাজ করাচ্ছ এটা কি ঠিক হচ্ছ?
অর্পা:-মানে কি বাড়ির কাজের মেয়ে বাড়ির কাজ করবে না তো কি বোসে থাকবে?
মাহিম:-হুম কাজ করবে তাই বলে একটা অসুস্থ মানুষকে দিয়ে এভাবে কাজ করে নেওয়াটা কি ঠিক হচ্ছে?
মাহিমের কথা শুনে প্রিয়া বলে উঠলো
প্রিয়া:-না না আমার তো কোন অসুবিধা হচ্ছে না,আপনি শুধু শুধু কেন এত কিছু বলছেন।আর কেউ আমাকে কিছু করতে বলেনি আমি নিজে থেকেই সব করছি।
মাহিম প্রিয়ার কথা শুনে রেগে প্রিয়া কাছে এগিয়ে গিয়ে
মাহিম:-আপনাকে আমাদের মধ্যে কেউ কথা বলতে বলেনি।(রেগে)
প্রিয়া:-বারে আমার ব্যাপারে কথা হচ্ছে আর আমি কথা বলবো না।(মাথা নিচু করে ভয় ভয় করে)
মাহিমের মা:-তুমি তো খুব ভালো নাটক করে পারো হে মেয়ে।
সবাই নিশ্চুপ।
মাহিমের মা:-রাতের বেলা আমার ছেলে কান ভরাও অন্য কথা বলে।আর দিনের বেলা আমাদের সামনে উল্ট সুরে গান গাও।
প্রিয়া:-মাআআ…(আর কিছু বলার আগেই)
মাহিমের মা:-চুপ একদম চুপ।একটা কথাও বলবে না।
প্রিয়াbanana…..)
মাহিমের মা:-এই তোমাদের মতো মেয়ে কে আমি চিনিতো আমার খুব ভালো করে চেঁনা আছে।
প্রিয়া:-রাতের বেলা আমি আপনার ছেলে কে কিছু বলিনা মা।আপনি চাইলে আপনার ছেলে কে জিগ্যেস করতে দেখতে পারেন।(মাথা নিচু করেই)
মাহিম:-আমাকে কেউ কিছু বলেনা মা,আমি যা বলছি নিজে থেকেই বলছি।একটা অসুস্থ মানুষকে দিয়ে তোমরা এত কাজ করাতে পারো না।সেটা মানুষ হিসাবে দেখতে আমার খারাপ লাগে।(বিরক্তিকর ভাবে)
কেউ কিছু বলছে না।
মাহিম:-আপনাকে আমি কি বলে ছিলাম।বলে ছিলাম না বিছানা থেকে না উঠতে।তারপরেও আপনি উঠেছেন কেন?(রেগেই)
প্রিয়া কিছু বলছে না মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে।
মাহিম:-এক্ষনি আমার রুমে আমার জন্য কপি নিয়ে আসুন।
এইবলে মাহিম উপরে গেলো।
প্রিয়া সবাইকে নাস্তা দিয়ে কিছুক্ষণ পর মাহিমের জন্য কপি নিয়ে মাহিমের রুমে আসলো।
প্রিয়া রুমে এসে দেখলো মাহিম খাঁটের উপর রাগি মুখ করে বোসে আছে।প্রিয়া কপির কাপটা মাহিমের দিকে বারিয়ে দিয়ে…
প্রিয়া:-আপনার কপি(ভয় ভয় করে)
মাহিম প্রিয়ার কথা শুনে প্রিয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলো প্রিয়ার মুখে ভয়ের ছাপ।মাহিম কিছু না বলে কপির কাপটা হাত নিয়ে খুব শান্ত ভাবে বলতে লাগলো।
মাহিম:-আচ্ছা আমি যে আপনাকে কথা গুলো বলি এগুলো কি বোঝেন না নাকি বুঝেও আমার কথা গুলুর আপনি কোন গুরুর্ত দেন না।
প্রিয়া:-মানে?
মাহিম:-মানে আমি যে তখন আপনাকে বললাম যে বিছানা থেকে না উঠতে। তারপরেও কেন আপনি আমার কথা শুনলেন না।
প্রিয়া:-অসুস্থ হয়ে বাড়ির লোকজন বিছানা থেকে না উঠলেও চলবে।কিন্তু বাড়ির কাজে মেয়ে না উঠলে চলবে না।আর আমি তো এই বাড়ির বউ না।এই বাড়ির কাজের মেয়ে।আমি না চাইলেও আপনাদের বাসা আমাকে কাজ করেই খেতে হবে।(অভিমানী সুরে)
মাহিম কিছু বলছে না শুধু প্রিয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।
প্রিয়া:-আপনার আর কিছু লাগবে?
মাহিম:-না লাগবে না।
প্রিয়া:-আচ্ছা
এইবলে প্রিয়া রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।
প্রিয়া রুম থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর মাহিম বোসে বোসে ভাবতে লাগলো”-প্রিয়া তো ঠিকি বলেছে ও তো এই বাড়িতে আমার বউ হিসাবে না এই বাড়ির কাজের মেয়ে হিসাবে রয়েছে।আর যতদিন প্রিয়া এই বাড়িতে কাজের মেয়ে হয়ে থাকবে ঠিক ততদিনি প্রিয়াকে এই বাড়িতে কাজ করেই খেতে হবে।
কিন্তু আমি তো চাই না যে প্রিয়া এই বাড়িতে কাজের মেয়ে হয়ে থাকুক,সবাই প্রিয়া কে অবহেলা,অপমান করুক,ও কে এই বাড়িতে কাজ করে খেতে হোক।
আমি চাই যে প্রিয়া এই বাড়িতে আমার স্ত্রীর পরিচয়ে থাকুক,কেউ যেন প্রিয়াকে কিছু না বলে।প্রিয়াকে যেন এই বাড়িতে কাজ করে খেতে না হয়।
হ্যাঁ একটা সময় আমি চাইতাম যে প্রিয়া অনেক কষ্ট পাক,প্রিয়াকে এই বাড়িতে কাজ করে খেতে হোক।
কিন্তু তার মানে এই না যে প্রিয়াকে সারা জীবন এই বাড়িতে এভাবেই থাকতে হবে।
তখন চাইতাম তার কারণ আমি যখন আমার ভালোবাসা নিয়ে আমি প্রিয়ার কাছে গিয়ে ছিলাম,তখন সে আমায় অবহেলা,অপমান করে ফিরে দিয়েছিল।তাই প্রিয়ার উপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য চাইতাম।কিন্তু এখন তো আমি তা চাইনা,যতই দিন যাচ্ছে আমি ততই প্রিয়ার প্রতি দুর্বল হয়ে পরছি,আরো বেশি প্রিয়াকে ভালোবেসে ফেলছি।কিন্তু প্রিয়া এটা বুঝতে পারেনা কেন?
আমি ওর এত care নিচ্ছি, ওর সাথে ভালো ব্যাহার করছি,ভালো ভাবে কথা বলছি।এই গুলো আমি কেন করছি ও কি কিছুই বুঝতে পারেনা।
আমি তো প্রিয়াকে আমার জীবনের থেকেও অনেক ভালোবাসি।কিন্তু প্রিয়া কি আমাকে ভালোবাসে নাকি ও এখনো আমাকে ভাবে যে আমি একটা খারাপ মানুষ চরিত্রহীন।
এটা আমাকে জানতে হলে আমায় প্রিয়ার পরিক্ষা নিতে হবে।পরিক্ষা নিয়েই আমাকে জানতে হবে যে প্রিয়া আমাকে ভালোবাসে নাকি এখনো আমাকে একটা খারাপ মানুষ ভাবে আমাকে অপছন্দ করে আমাকে ভালোবাসে না বলেই আমার কথার কোন গুরুর্ত দেয় না।সবকিছু প্রিয়াকে পরিক্ষা করলেই বুঝতে পারবো।(একা একা মনে মনে)
“তারপরের দিন সকাল বেলা”
বাহিরে খুব বৃষ্টি হচ্ছে মাহিম বিছানা থেকে উঠে ওয়াশরুমে চলে গেলো।
“কিছুক্ষণ পর”
মাহিম ওয়াশরুম থেকে বেড় হতেই প্রিয়া বলে উঠলো
প্রিয়া:-আপনার নাস্তা কি রুমে নিয়ে আসবো?
মাহিম প্রিয়ার কথা শুনে প্রিয়ার দিকে ঘুরে তাকাকেই দেখলো প্রিয়া আজকে একটু অন্যরকম ভাবে সেজেছে।দেখে মনে হচ্ছে একটু আগেই গোসল করেছে।
লীল একটা শাড়ী কপড় পরেছে, চুল গুলো বেধেছে ঠিকি কিন্তু সামনে এক দিয়ে ছোট্ট ছোট্ট কিছু চুল বেড় করে রেখেছে।ঠোঁঠে হালকা করে লাল লিবিস্টিক মেখেছে।আর শাড়ীর আচলটা কমড়ে গুজে রেখেছে।যদিও প্রিয়া এর আগে কখনো এই ভাবে সেজে-গুজে মাহিমের সামনে কখনো দাড়ায়-নি।আজকে হালকা সাজে প্রিয়াকে অনেক সুন্দর লাগছে বাট মাহিমের চোখে প্রিয়াকে অন্যরকম লাগছে।ভেজা চুল আর কমড়ে শাড়ীর আচলটা গুজে রাখেতে প্রিয়াকে একটু হট-হট লাগছে।
বাহিরে বৃষ্টি হচ্ছে মাহিম প্রিয়াকে এভাবে দেখে তার ভিতরে অন্যরক একটা অনুভূতি কাজ করতে লাগলো।খুব ইচ্ছা করছে তার প্রিয়াকে জড়িয়ে ধরতে প্রিয়ার কমল নমর ঠোঁঠের সাথে তার নিজের মিষ্টি একটা সম্পর্কে চলে যেতে।
প্রিয়া:-কি হলো বলুন?নাস্তা রুমে নিয়ে আসবো নাকি?
মাহিম কিছু বলছে না।অন্যরকম একটা দৃষ্টি নিয়ে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
প্রিয়া:-কি হলো আমার দিকে তাকিয়ে কি দেখছেন?
মাহিম:-আপনাকে
প্রিয়া:-ওমা মনে হচ্ছে এর আগে কখনো আমায় দেখেন-নি??আজকে প্রথম দেখছেন।
মাহিম:-হুমম দেখেছি বাট আগের দেখার থেকে আজকে আপনাকে অন্যরকম লাগছে(প্রিয়ার কাছে এগিয়ে যেতে)
প্রিয়া:-মামানে কি বলছেন আপনি(ভয় ভয় করে পিছন দিকে পিছতে পিছতে)
মাহিম প্রিয়ার কথার কোন উত্রর না দিয়ে শুধু প্রিয়ার দিকে এগিয়েই যাচ্ছে।
প্রিয়া ভয় ভয় করে পিছতে পিছতে প্রিয়া দেওয়ালের সাথে প্রিয়ার পিঠ লেগে গেলো।
মাহিম প্রিয়ার একদম কাছাকাছি চলে আসলো।
মাহিম একহাত দিয়ে প্রিয়ার মুখের উপর পড়া ছোট্ট চুল গুলো সরিয়ে দিতে লাগলো।
প্রিয়া:-কি করছেনটা কি মাহিম বাবু।সড়ুন আমার অনেক কাজ আছে(হাত দিয়ে মাহিম সড়ানোর চেষ্টা করে)
মাহিম কিছু না বলে প্রিয়া হাতটা দেওয়ালের সাথে চেপে ধরলো।
প্রিয়া:-কিক কি করছেনটা কি মাহিম বাবু ছাড়ুন(হাতটা ছাড়ানোর চেষ্টা করে)
মাহিম কিছু না বলে চোখ বন্ধ করে ধিরেধিরে প্রিয়ার মুখের কাছে নিজের মুখ এগিয়ে আনতে লাগলো প্রিয়ার কমল নমর ঠোঁঠের সাথে তার নিজের মিষ্টি একটা সম্পর্কের জন্য।
এমন সময় অর্পা প্রিয়াকে ডাকদিল তার নাম ধরে।
প্রিয়া:-আআপু ডাডাকছে(ভয় ভয় করে)
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
প্রিয়া:-দেখুন এখনো না গেলে পড়ে আবার আপনার আপু বকা দিবে আমাকে,আমি যাই।
এইবলে প্রিয়া একহাত দিয়ে আর একটা হাত ছাড়াতে শহ জোরে ঝটকা দিতেই মাহিমের গাঁলে গিয়ে থাপ্পড় দেওয়ার মতো করে লেগে গেলো।
প্রিয়ার হাত মাহিমের গালে লাগতেই মাহিমের ঘোর কাঠলো,মাহিম চমকে উঠে প্রিয়ার দেওয়ালের সাথে চেপে ধরা হাতটা ছেড়ে দিয়ে প্রিয়ার কাছ থেকে সরে দাড়ালো।মাহিম নিজের ঠোঁঠে হাত দিয়ে দেখলো ঠোঁঠ দিয়ে রক্ত বেড় হচ্ছে।
প্রিয়াও দেখতে পেলো তার হাতের চুড়ি দিয়ে মাহিমের ঠোঁঠ ফেটে রক্ত পরছে।
প্রিয়া:-(মাহিমের কাছে এগিয়ে আসছল)বিবিশ্বাস করুন আমি ইচ্ছে করে করিনি,আমি তো হাতটা…..(আর কিছু বলার আগই)
মাহিম:-আপনাকে ডাকছে আপনি যান।
প্রিয়া:-(মাহিমের কাছে এসে)না আমি পড়ে যাচ্ছি দেখি আগে দেখি(মাহিমের ঠোঁঠে হাত দিয়ে)
মাহিম:-(প্রিয়ার হাতটা ঝটকা দিয়ে ধমকে)বললাম না আপনাকে ডাকছে(পছন্ড রাগি কন্ঠে)
প্রিয়া মাহিমের ধমক দেখে পছন্ড ভয় পেয়ে কাঁদার মতো করে মাথা নিচু করে রুম থেকে বেড় হয়েগেল।
“কিছুক্ষণ পর”
মাহিম অফিসে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছিল এমন সময় প্রিয়া রুমে এসে মাহিমের অফিসের জিনিস গুলো ব্যাগে ঢুকিয়ে দিচ্ছিল এমন সময় মাহিম ঝটকা দিয়ে প্রিয়ার হাত থেকে ব্যগটা কেরে নিয়ে
মাহিম:-আপনাকে কিছু করতে হবে না আমার জন্য(রাগি কন্ঠে)
মাহিম প্রিয়ার চোখের দিকে তাকিয়ে দেখলো প্রিয়া চোখে কেমন জানি একটা ভয় ভয় দেখতে পারছে,মাহিমের চোখের দিকে তাকাতেই পারছে না।
“প্রিয়া কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পর”
প্রিয়া:-চলুন নাস্তা করে করবেন।(ভয় ভয় করে)
মাহিম:-বাহিরে খেয়ে নিব।(রেগে)
এইবলে মাহিম ব্যাকটা নিয়ে রুম থেকে বেড় হয়েগেলো।প্রিয়া পিছন থেকে কত বার বলছিল নাস্তা করে যাওয়ার জন্য,কিন্তু মাহিম প্রিয়ার কথায় কোন কান না দিয়ে চলে চলেগেলো।
সারাদিন না খেয়ে অফিস শেষ করে বাসায় ফিরলো মাহিম।
রুমে ঢুকতেই মাহিম দেখলো রুমে সুয়ে আছে।
মাহিমকে দেখতেই প্রিয়া উঠে ব্যাকটা হাতে নিয়ে
প্রিয়া:-আপনি ফ্রেশ হন আমি আপনার জন্য খাবার রেডি করছি
এইবলে প্রিয়া রুম থেকে বেড়িয়ে গেল।
মাহিম ফ্রেশ হয়ে বাসার ছাদে আসলো।ছাদের এক কোনায় বোসে ভাবতে লাগলো”-আজকে ওর জন্যই এখনো না খেয়ে আছি।আর ও খেয়ে দেয়ে সুয়ে পরেছে”(মনে মনে)
ছাদে বোসে এইসব কথা ভাবছিল মাহিম এমন সময় পিছন থেকে কে যেন বলে উঠলো।
“চলুন খাবেন”(ম্যালি কন্ঠে)
মাহিম পিছনে তাকিয়ে দেখলো প্রিয়া।এখন সেই ভয় ভয়টা প্রিয়ার চোখে দেখতে পারছে।
মাহিম প্রিয়াকে দেখে আবার মুখটা অন্যদিকে ঘুড়ে বলল..
মাহিম:-নাহ আপনি যান।
প্রিয়া:-কেন??(পিছন থেকে)
মাহিম:-আমার ক্ষিদে নেই আপনি যান গিয়ে ঘুমিযে পড়ুন।(বিরক্তিকর ভাবে)
প্রিয়া:-না আপনাকে যেতেই হবে।
মাহিম:-বললাম না আমার ক্ষিদে নেই আপনি যান(রেগে)
প্রিয়া:-দেখুন আমি ইচ্ছে করে আপনাকে তখন চর দেয়সি(কাঁদার মতো করে)
মাহিম:-আমি জানি আপনি যান(রেগে বিরক্তর হয়ে)
প্রিয়া:-তাহলে চলুন খাবেন।
মাহিম:-বলছি তো আমার ক্ষিদে নেই।আপনি এখন যাবেন নাকি আমি যাব(রাগি কন্ঠে)
প্রিয়া:-দেখুন আপনার জন্য আমিও…….(আর কিছু বলার আগেই)
মাহিম বসা থেকে উঠে
মাহিম:-বুঝেছি আপনি যাবেন না আমাকেই যেতে হবে।
এইবলে মাহিম চলে যাচ্ছিল এমন সময় প্রিয়া মাহিমের হাতটা টেনে ধরলো পিছন থেকে।
প্রিয়া মাহিমের হাতটা টেনে ধরতেই মাহিম প্রিয়া দিকে তাকিয়ে দেখলো।প্রিয়ার চোখের কোনায় যেন পানি জমে আছে।চোখ গুলো কেমন লাল হয়েগেছে,
মনে হয় আর একটু হলেই প্রিয়ার চোখ দিয়ে পানি বেড় হয়ে আসবে।প্রিয়া কাঁদার মতো করে অন্যরকম একটা মায়া নিয়ে একটু রাগি চোখ করে তাকিয়ে রইলো মাহিমের দিকে
পর্ব-১৫
———————————–
“কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পর”
প্রিয়া:-আমি বলছি তো আমি ইচ্ছা করে আপনাকে চরটা দেয়নি(কাঁদার মতো করে)
মাহিম:-আপনি চাঁন যে এই রাতের বেলা আমি বাসা থেকে বেড় হয়ে যাই(রেগে)
প্রিয়া:-(চমকে উঠে)না না আমি সেটা চাইবো কেন??(হতাস হয়ে)
মাহিম:-তাহলে আমার হাতটা ছেড়ে দিন।
প্রিয়া:-বিশ্বাস করুন আমি সত্যি বলছি…(আর কিছু বলার আগেই)
মাহিম:-আমি জানি আপনি হাতটা ছাড়ুন(রেগে)
প্রিয়া:-তাহলে কেন এমন করছেন??
মাহিম:-কিই করছি আমি?(রেগেই)
প্রিয়া:-এই যে আমার সাথে এমন করে কথা বলছেন কেন??
মাহিম:-এমনি কথা বলতে ভালো লাগছে না ছাড়ুন।(বিরক্তিকর ভাবে)
এইবলে মাহিম হাতটা ঝটকা দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে রুমে চলে আসলো।
কিছুক্ষণ পর প্রিয়া রুমে এলো।রুমে এসে দেখলো মাহিম না খেয়েই ঘুমিয়ে পরেছে।প্রিয়া দরজাটা লক করে খাঁটের কাছে এসে মাহিমের গায়ে কম্বলটা টেনে দিল।
তারপর প্রিয়াও না খেয়ে মেঝেতে সুয়ে পরলো।
“সকাল বেলা”
মাহিম বিছানা থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে অফিসের জন্য রেডি হচ্ছি।কিছুক্ষন পর প্রিয়া রুমে এলো।
প্রিয়া:-এইনিন আপনার চাঁ(মাহিমের পিছন থেকে)
মাহিম প্রিয়ার কথা শুনে প্রিয়ার দিকে একবার তাকিয়ে বলল
মাহিম:-চাঁ খাবো না নিয়ে যান।
প্রিয়া:-ওহ আচ্ছা তাহলে আপনি বসুন আমি আপনার নাস্তা নিয়ে আসছি।(এইবলে চলে যাচ্ছিল)
মাহিম:-আনতে হবে না।
প্রিয়া থমকে গিয়ে দাড়িয়ে গেল।
প্রিয়া:-(মাহিমের দিকে ঘুড়ে)কেন?(অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে)
মাহিম:-আমি বাহিরে খেয়ে নিব।
এইবলে মাহিম প্রিয়ার পাশ দিয়ে অফিসে যাওয়ার জন্য রুম থেকে বেড় হয়ে যাচ্ছি,এমন সময় প্রিয়া এসে মাহিমের সামনে ড়াদালো।
প্রিয়া:-(কাঁদার মতো করে)আমি বলছি তো আমি ইচ্ছে করে অমন করিনি।শুধু একটি ভূলের জন্য আপনি আমার উপর এতরাগ করে আছেন,নিজেকে এভাবে কষ্ট দিচ্ছেন।কেন এত শাস্তি দিচ্ছেন(মাহিমের মুখের দিকে তাকিয়ে)
মাহিম:-শাস্তি দিচ্ছি মানে?
প্রিয়া:-মানে আপনার জন্য আমিও এখনো পর্যন্ত না খেয়ে আছি।
মাহিম:-কেন আমার জন্য কেন?আমি কি আপনাকে খেতে না করেছি নাকি?(একটু রেগে)
প্রিয়া:-আপনি আমার উপর রাগ করে না খেয়ে আছেন তাই।
মাহিম:-এই আপনি আমার কে হ্যাঁ যে আমি আপনার উপর রাগ করে না খেয়ে থাকবো?(বিরক্তিকর ভাবে)
প্রিয়া:-তাহলে কাল থেকে আপনি না খেয়ে আছেন কেন?
মাহিম:-আমার খেতে ইচ্ছে করছে না তাই।আমার অফিসে যাওয়ার সময় হয়েছে এখন কিন্তু আমার লেট হচ্ছে(রাগি কন্ঠে)
প্রিয়া:-দেখুন আমি বুঝতে পারছি যে আমি কালকে আপনাকে কিস করতে দেয়নি বলে আপনি আমার উপর রাগ করে এমন করছেন।(লজ্জিত ভাবে বলেই চোখ দুটো নিচু করে নিল)
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
প্রিয়া:-আসলে তখন আপনার আপু….আআপনি চাইলে এখন আমায় কিস করতে পারেন।
ভয় ভয় আর লজ্জিত ভাবে কথা গুলো বলেই প্রিয়া মাথা নিচু করে দাড়িয়ে রইলো।
মাহিম:-এটা একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে না।
প্রিয়া:-মানে?
মাহিম:-মানে হলো আপনার মনে হচ্ছে না যে আপনি আপনার limit cross করছেন?
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
মাহিম:-একটা কথা খুব ভালো করে শুনে রাখুন।আপনি হলেন এই বাড়ির কাজের মেয়ে আমার বউ না।
প্রিয়া:-(….)
মাহিম:-আপনার কাজ হলো এই বাড়ির সমস্ত কাজ করা এবং এই বাড়ির প্রতি মানুষের কথা অক্ষরে অক্ষরে তা পালন করা।আপনাকে ঠিক যতটুকু বলা হবে আপনি ঠিক ততটুকিই করবেন।
প্রিয়া কিছু বলছে না শুধু মাহিমের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে।
মাহিম:-সো আমি কি করলাম কি খেলাম না খেলাম সেটা নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে না।একটা কাজের মেয়ে হিসাবে আপনার যতটুকু ভাবার যতটুকু বলার ঠিক ততটুকুই ভাববেন বলবেন।
প্রিয়া কিছুক্ষণ চুপ করে মাহিমের দিকে থাকার পর।
প্রিয়া:-ভূল হয়েছে আমার,ক্ষমা করে দিবেন আমকে।আর কখনো আপসাকে জোরাজোরি করবো না।(কাঁদার মতো করে)
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
প্রিয়া:-আর ধন্যবাদ আপনাকে ভূল গুলো ধরিয়ে দেওয়ার জন্য।(কাঁদার মতো করেই)
মাহিম:-হুম আপনি বাড়ির কাজের মেয়ে কাজের মেয়ে হয়েই থাকবেন।কখনো আমার বউ হওয়ার দুঃসাহস করবেন না।(রাগ দেখিয়ে)
এইবলেই মাহিম রুম থেকে বেড় হয়েগেল।
মাহিম চলে যাওয়ার পর প্রিয়ার চোখ দিয়ে পানি বেড় হতে লাগলো।
পর্ব-১৬
———————————–
মাহিম চলে যাওয়ার পর প্রিয়ার চোখ দিয়ে পানি বেড় হতে লাগলো।প্রিয়া কিছুক্ষণ দাড়িয়ে চোখের জল ফেলার পর,চোখের জল মুছতে মুছতে কাজ করতে গেলো।
সারাদিন কাজ করার পর,রাতের বেলা প্রিয়ার মাথা ব্যাথা করতে লাগলো কিছু ভালো লাগছিল না।
কাজ শেষ করে গিয়ে বিছানায় মাথা চেপে ধরে সুয়ে পরলো।
কিছুক্ষণ পর মাহিম রুমে এলো এসে দেখলো প্রিয়া মাথা চেপে ধরে বিছানায় সুয়ে আছে।
মাহিম যে রুমে এসেছে প্রিয়া বুঝতে পারেনি।
মাহিম তার হাতের ফোনটা টেবিলের উপর রাখাতে শব্দ পেয়ে প্রিয়া চোখ খুলে দেখলো মাহিম।
প্রিয়া মাহিমকে দেখে নিজেকে সামলিয়ে নিয়ে উঠে দাড়ালো।
প্রিয়া:-আপনার খাবার কি রুমে নিয়ে আসবো?
মাহিম দেখতে পারছে প্রিয়া ঠিক মতো দাড়াতে পারছে না।চোখ গুলো কেমন লাল হয়েগেছে।
মুখ দিয়ে কোন কথাই বেড় হচ্ছে না।
মাহিম:-না আমি বাহিরে খেয়ে আসছি।
প্রিয়া:-ওহ আচ্ছা।
এইবলে প্রিয়া মেঝেতে বিছানা করে সুয়ে পরলো।
মাহিম দেখতে পেলো প্রিয়াকে আজকে একটু অন্যরকম লাগছে।খুব ক্লান্ত ক্লান্ত লাগছে।
সে আর কিছু না বলে ফ্রেশ হয়ে সুয়ে পরলো।
“রাত ১টা”
প্রিয়ার মাথায় অনেক যন্ত্রনা করছে প্রিয়া কিছুতেই ঘুমাতে পারছে না।সুয়ে থাকতেও পারছে না অনেক কষ্ট হচ্ছে প্রিয়ার।প্রিয়া উঠে মাথা চেপে ধরে বসে পরলো।কি করবে বুঝতে পারছেনা। ইদারিং যতদিন যাচ্ছে প্রিয়ার ততই প্রবলেম শুধু বেড়েই যাচ্ছে।
মাথা চেপে ধরে বোসেও থাকতে পারছে না।প্রিয়া আবার মাথা চেপে ধরেই সুয়ে পরলো।
“সকাল বেলা”
প্রিয়া মাথায় অনেক যন্ত্রণা করার কারণে ব্রেকফাস্ট করতে লেট হওয়ার কারণে অনেক বকবক শুনতে হলো তার।
সবাই ব্রেকফাস্ট করার পর।
মাহিম অফিসে না গিয়ে তুন্নির সাথে দেখা করতে।
আজকে প্রিয়া কিছুতেই বাড়ির কাজ করতে পারছে না।মাথায় অনেক যন্ত্রণা করছে বাট কিছু করার নেই যতই কষ্ট হোক না কেন তার কাজ করতেই হবে।
সকাল বেলা কিছু খেতেও পারলো না।সকালে নাস্তা করতে গিয়ে যা ছিল পেটে সব বোমি করে বেড় করে দিল।
কাল রাত থেকেই কিছুতেই মাথায় যন্ত্রণা থামছে না।শুধু ব্যাথা করেই যাচ্ছে, মাথা ঘুরাচ্ছে বোমি লাগছে।
কিছুই ভালো লাগছে না প্রিয়ার।
বাড়ির সমস্ত কাজ শেষ করে বিকাল ৪টার ঐদিকে প্রিয়া ডাক্তারের কাছে গেলো।
প্রিয়ারর কাছ থেকে ডাক্তার সবকিছু শুনার পর বলল
ডাক্তার:-দেখুন আমি আপনাকে আগেই বলেছি যে যতদিন যাবে ততই আপনার মাথার ছোট্ট টিউমরটা বড় হবে আর আপনার গুলো বারতে থাকবে।তাই যত তারাতারি সম্ভব এই ২/১মাসের মধ্যেই আপনাকে অপারেশন করাতে হবে।নাহলে পরে প্রবলেম হবে।
প্রিয়া:-আর কোন অপশন নেই ডাক্তার বাবু
ডাক্তার:-আর কোন অপশন নেই মানে?
প্রিয়া:-মানে যতদিন পর্যন্ত অপারেশন করার সময় থাকবে।ঠিক পর্যস্ত যেন আমার এই প্রবলেম গুলো না হয় তার কোন অপশন নেই।
ডাক্তার:-হুমম আছে বাট আমি একটা জিনিস বুঝতে পারছি না।আপনি এতবড় একটা কথা লুকাচ্ছেন কেন?
প্রিয়া:-শুনার মতো কেউই নেই আর লুকাবো কার কাছ থেকে বলুন?
ডাক্তার:-মানে?
প্রিয়া:-না কিছু না।আপনি কি যেন অপশনের কথা বল ছিলেন?
ডাক্তার:-হুম আমি কিছু ঔষধ লিখে দিচ্ছি সেটা খেলে যতদিন অপারেশন করার সময় থাকবে ঠিক ততদিন পর্যন্ত আপনার প্রবলেম গুলো আর হবে না।
প্রিয়া:-ধন্যবাদ ডাক্তার বাবু।
ডাক্তারের কাছ থেকে বাসায় ফিরতে ফিরতে প্রিয়ার রাত হয়েগেল।প্রিয়া রাত করে বাসায় ফেরাতে আজকেও তাকে অনেক বকা-চকা শুনতে হলো।
সব কাজ শেষ করে প্রিয়া রুমে ঢুকতেই
মাহিম:-কোথায় গিয়ে ছিলেন?
প্রিয়া কিছু না বলে মাহিমের জন্য আনা খাবার গুলো টেবিলে রেখে দিল।
মাহিম:-কি হলো বলুন কোথায় গিয়ে ছিলেন?
প্রিয়া কিছু না বলে মেঝেতে বিছানা করতে এমন সময় মাহিম প্রিয়ার একহাত ধরে ঝটকা দিয়ে নিজের কাছে টেনে নিয়ে
মাহিম:-এই আপনাকে একটা প্রশ্ন করছি শুনতে পারছেন না।(রাগি কন্ঠে)
প্রিয়া:-শুনতে পাচ্ছি কিন্তু উত্রর দেওয়ার প্রোয়জন মনে করছি না।(এইবলে হাতটা ছাড়িয়ে নিল)
মাহিম:-কেন প্রোয়জন মনে করছেন না?
প্রিয়া:-কারণ প্রশ্নটা অবান্ধব তাই।
মাহিম:-কোন প্রশ্নটা অবান্ধব?(রেগে)
প্রিয়া:-দেখুন আমার এখন কথা বলতে ভালো লাগছে না।আপনার খাবার টেবিলের উপর রাখা আছে খেতে হলে খেয়ে নিন আর না হলে সুয়ে পরুন।(রেগে)
মাহিম:-ওহ বুঝেছি আজকেও বুঝি আপনার শিহাব ভাইয়ের বাড়িতে গিয়ে ছিলেন তাই তো?
প্রিয়া:-আপনার যা ইচ্ছে আপনি ভাবতে পারেন।এবার সরুন আমাকে বিছানা করতে দিন(বিরক্তিকর ভাবে)
এইবলে প্রিয়া এবার বিছানা করতে যাবে ঠিক তখনি মাহিম আবার আগের মতো করে প্রিয়ার হাত ধরে ঝটকা দিয়ে কাছে টেনে নিয়ে
মাহিম:-খুব তেজ না আপনার?
প্রিয়া:-কেন ওটা কি আপনার একচেটিয়া সম্পত্তি নাকি?(মাহিমের মুখের দিকে তাকিয়ে)
মাহিম:-আমি যেটা বললাম সেটার আগে উত্রর দিন(রাগি কন্ঠে)
প্রিয়া:-(প্রিয়া আবার নিজের হাতটা ছারিয়ে নিয়ে)কেন আমি কোথাও গেলে আপনাকে তার কৈফত দিতে হবে নাকি?
মাহিম:-হুমম হবে।(রেগে)
প্রিয়া:-কেন আমি তো এই বাড়ির কাজের মেয়ে আপনার বউ না যে আমি কোথাও গেলে আপনাকে তার কৈফত দিতে হবে।
মাহিম:-হুম রাইট আপনি এই বাড়ির কাজের মেয়ে আমার বউ না।আর আমার বউ হওয়ার কোন প্রশ্নই উঠেনা।কারণ আমার বউ হওয়ার কোন যোগ্যতাই আপনার নেই।(প্রিয়া কাছে এসে)
প্রিয়া:-তাহলে আমি কোথায় কার সাথে দেখা করতে গিয়ে ছিলাম সেটা জানতে চাইছেন কেন?(মাহিমের মুখের দিকে তাকিয়ে)
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
প্রিয়া:-এটা জানতে চাওয়ার তো কোন অধিকারী আপনার নেই।
মাহিম:-এতকথা পেটাচ্ছন কেন? সোজা ভাবে বললেই তো হয় যে আপনি আজও আপনার শিহাব ভাইয়ার সাথে সময় কাঠাতে গিয়ে ছিলেন।(রাগ দেখিয়ে)
প্রিয়া:-একদম বাজে কথা বলবেন না বলে দিচ্ছি(রাগি কন্ঠে)
মাহিম:-আমি একদম বাজে কথা বলছি না।আপনি যদি আপনার ঐ শিহাব ভাইয়ের সাথে সময় কাঠাতে যান্নি তাহলে বলছেন না কেন যে আপনি আজকেও কোথায় গিয়ে ছিলেন?
প্রিয়া:-বলছি না কারণ আমি আমার কথা আমার কোন অযোগ্য মানুষকে বলতে চাই না।
মাহিম:-(প্রিয়ার কাছে এগিয়ে এসে)এই একদম করুন বড় বড় কথা বলবেন না বলে দিচ্ছি(রাগ দেখিয়ে)
প্রিয়া:-(বিরক্তিকর ভাবে)আমি তো কোন কথা বলতে চাইনি আপনি তো বাধ্য করলেন আমাকে কথা বলাতে।(রাগি কন্ঠে)
মাহিম:-যার চরিত্রর ঠিক নেই তার মুখে আবার বড় বড় কথা।(প্রিয়ার কাছ থেকে সরে গিয়ে)
প্রিয়া:-হুম তাও আপনার থেকেও ভালো।
প্রিয়ার কথাটা শুনে মাহিম একদম থমকে গেলো।সে প্রিয়া কাছে গিয়ে
মাহিম:-এই এ কথাটার মানে কি?
প্রিয়া:-আপনি যা বুঝেন তাই।
মাহিম:-আমি কি বুঝি সেটা প্রশ্ন নয়,আপনি কি বোঝাতে চাইছেন সেটা বলুন।(রেগে)
প্রিয়া:-আপনাকে আমি কিচ্ছু বোঝাতে চাই না।(বিরক্তিকর ভাবে)
মাহিম:-যে মেয়ে নিজের জ্বালা মিটানোর জন্য অন্য একটা ছেলের সাথে সময় কাঁঠায়।তার কাছ থেকে আমি আর কিছুই বুঝতেও চাই না।(প্রিয়ার মুখে দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়া মাহিমের কথাটা শুনে কিছুক্ষণ মাহিমের দিকে তাকিয়ে থাকার পর
প্রিয়া:-আপনার মতো নোংরা মানুষ এইসব নোংরামি ছাড়া আর কি বা ভাবতে পারে।(মাহিমের মুখের দিকে তাকিয়ে)
মাহিম:-(রাগি চোখে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে)এবার আপনি কিন্তু আপনার limit cross করছেন।এরপর কিন্তু আমি…(কিছু একটা বলতে গিয়ে বলল না)
প্রিয়া:-কি করবেন মারবেন।
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
প্রিয়া:-মারুন আমাকে সেটা আর বাকি রাখছেন কেন আমার যা পাওনা তা আমাকে দি……!.অবস্স আপনি আমার পাওনা দেননি তা তো নয়।(মাহিমের দিকে তাকিয়ে)
মাহিম:-(….)
প্রিয়া:-আমার সোয়েও গেছে।আর আমি জানি যে যতদিন আমি আপনাদের বাসায় থাকবো,ততদিন আপনার বাড়ির লোকজন এবং আপনার লাঠি-জাটা খেয়েই আমাকে বাচঁতে হবে।
মাহিম কিছু বলছে না শুধু দাড়িয়ে প্রিয়া দিকে তাকিয়ে আছে।
প্রিয়া:-(শান্ত ভাবে)তবে আর বেশি দিন আমাদের লাঠি-জাটা খেতে হবে না।আর আপনারও বোজা হয়ে থাকবো না।মুক্তি করে দিব আপনাকে(মাহিমের মুখে দিকে তাকিয়েই)
পর্ব-১৭
———————————–
মাহিম:-হুম জানি তো আমি।
প্রিয়া:-(চমকে উঠে)কি জানেন আপনি?
মাহিম:-এই যে আপনাদের মতো মেয়েদের যাওয়ার জায়গার অভাব আছে নাকি(প্রিয়ার কাছ থেকে সরে গিয়ে)
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
মাহিম:-আজ এর বাসায় কাল ওর বাসায়। এর কাছে ভালো না লাগলে ওর কাছে ওর কাছে ভালো না লাগলে এর কাছে।
প্রিয়া কিছু বলছে না শুধু দাড়িয়ে দাড়িয়ে চোখে জল ফেলছে।
মাহিম:-(প্রিয়ার কাছে এগিয়ে এসে)আপনি একটা কাজ করতে পারেন।আপনি পরে যাবেন কেন?আপনি বরং কালিই বাজারে গিয়ে উঠুন।
এতে আপনার পক্ষে ভালোই হবে।
মাহিমের কথাটা শুনে প্রিয়া মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো।
কিছুক্ষণ পর.
মাহিম:-কি হলো আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছেন কেন?আমি যা বললাম আপনার ভালোর জন্যই তো বললাম।
প্রিয়া:-আপনার বলা শেষ(চোঁখে জল নিয়ে)
মাহিম:-হুমম শেষ।
প্রিয়া:-তাহলে সরুন এবার আমাকে বিছানা করতে দিন(চোখের জল মুছতে মুছতে)
মাহিমের প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখলো প্রিয়ার মুখটা কেমন অসহায় দুখী দুখী লাগছে।
প্রিয়া:-কি হলো সরুন।
মাহিম আর কিছু না বলে খাঁটের উপর গিয়ে বোসে পরলো।এরপর প্রিয়া মেঝেতে বিছানা করে অন্যদিকে মুখ করে সুয়ে পরলো।
মাহিম খাঁটের উপর বোসে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে…
মাহিম:-“তুমি আমাকে এতটা নিচে নামাতে বাধ্য করো।যেই কাজ যেই কথা গুলো শুনলে আমার মাথা গরম হয়ে যায়।তুমি ঠিক সেই কাজ সেই কথা গুলো আমাকে বলেই আমার মাথায় তুমি আগুন জ্বালিয়ে দিবে,ততই আমি তোমাকে জ্বালিয়ে পুরিয়ে শেষ করে দিব।(বোসে বোসে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে মনে মনে)
এভাবে কিছুক্ষন প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে থাকার পর মাহিম সুয়ে পরলো।
প্রিয়া ঘুমাতে পরছেনা মাহিমের সাথে বেশি কথা বলার কারণে মাথায় যন্ত্রণা ব্যাথা অনুভাব করছে।
প্রিয়া:-“বলবো না কাউকে কিছুই বলবো না।যার কাছেই যাই তার মাথায় বোজা হয়ে থাকি।
শুধু দু-বেলা দু-মুঠু খাবার আর থাকার একটু জাগার জন্য প্রতিদিন এভাবে সবার এত অপমান অবহেলা পেয়ে বেচেঁ থাকার চেয়ে।একি বারে চিরদিনের জন্য ঘুমিয়ে যাওয়া অনেক ভালো।(সুয়ে সুয়ে চোখের জল মুছতে মুছতে মনে মনে)
“সকাল বেলা”
মাহিম ফ্রেশ হয়ে অফিসে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছিল এমন সময় মেঝেতে রাখা প্রিয়ার ব্যাগের দিকে মাহিমের চোখ পরলো।
মাহিম দেখতে পারছে ব্যাগ থেকে কিসের যেন একটা চিঠির মতো দেখতে কাগজের মাথা বের হয়ে আছে(প্রিয়ার ডাক্তারের লিখে দেওয়া প্রেসক্রিপশন)
মাহিম ব্যাগটার কাছে গিয়ে প্রেসক্রিপশনটায় হাত দিয়ে টেনে বের করলো।
প্রেসক্রিপশনটা টেনে বের করার পর মাহিম খুলে দেখতে যাবে ঠিক তখনি নিচ থেকে চিল্লাচিল্লির আওয়াজ ভেসে আসলো মাহিমের কানে।মাহিম তারাহুরো করে প্রেসক্রিপশনটা ব্যাগের উপরে রেখে রুম থেকে বেড় হয়েগেল।
মাহিম প্রিয়ার প্রেসক্রিপশনটা ব্যাগের উপরে রেখে দেওয়াতে জানালা দিয়ে আসা হাওয়াতে উড়ে খাঁটের নিচে চলেগেল।
মাহিম নিচে এসে দেখলো বাড়ির সবাই নিচে দাড়িয়ে।
অর্পা:-বল কোথায় রেখেছিস?(রেগে)
প্রিয়া:-আমি বলছি তো আমি কিছু জানিনা।(অসহায় হয়ে)
অর্পা:-তুই সবকিছুই জানিস বল কোথায় রেখেচিস?(রাখ দেখিয়ে)
অর্পা:-আপু আমি সত্যি বলছি আমি কিছু জানিনা।(কাঁদার মতো করে)
মাহিম:-কি হয়েছে এখানে?
মাহিমের কথা শুনে অর্পা মাহিমের কাছে গেলো
অর্পা:-কি আর হবে কালকে বাবা আমাকে নীলের কাজের জন্য ২লাখ টাকার একটা বান্ডিল দিয়ে ছিল।রুমেই রেখে দিয়ে ছিলাম কিন্তু সেটা আজকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
মাহিম:-তো সেটা ও কে বলছিস কেন?(প্রিয়াকে দেখিয়ে দিয়ে)
অর্পা:-ও কে বলবো না মানে? যখন বাবা আমাকে দেয় টাকা টা দেয় তখন প্রিয়াও রুমেই ছিল আর প্রিয়া জানে যে আমি টাকা কোথায় রেখে ছিলাম।
প্রিয়া:-(মাহিমের কাছে এসে)বিশ্বাস করুন আমি টাকা টা নেই-নি।(অসহায়ের মতো করে)
অর্পা:-চুপ একদম চুপ তুই ছাড়া আর কেউই টাকা টা নিতে চুরি করবে না।এখনো সময় আছে সত্যি করে বল টাকা তুই কোথায় রেখেছিস?(রাগি কন্ঠে)
প্রিয়া কিছু বলতে যাবে তার আগেই মাহিম বলে উঠলো.
মাহিম:-আপু তোমার কোথাও ভূল হচ্ছে ও বলছে তো ও টাকা নেয়নি।
অর্পা:-তুই আমার কথা বিশ্বাস না করে একটা কাজের মেয়ে কথা বিশ্বাস করছিস।(মাহিমের দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
মাহিম:-যতক্ষণ পর্যন্ত প্রুফ হচ্ছে না যে ও টাকা টা নিয়েছে।ততক্ষণ পর্যন্ত তুমি ও কে কিছুই বলতে পারোনা।
মাহিমকে প্রিয়ার হয়ে কথা বলতে দেখে প্রিয়া অন্যরকম একটা মায়াবী দৃষ্টিতে মাহিমের দিকে তাকিয়ে আছে।
নীল:-এতকথা বলার চেয়ে প্রিয়ার ব্যাগপত্র চ্যাগ করে দেখলেই তো হয়।
মাহিমের বাবা:-হুম তাহলে সেটাই করা হোক।এই বাবুল যা উপর থেকে প্রিয়ার ব্যাগটা নিয়ে আয় যা।(বাবুল বাড়ির কাজের ছেলে তার দিকে লক্ষ করে)
প্রিয়া:-(চমকে উঠে)না কেউ আমার ব্যাগে হাত দিবেন না।
প্রিয়ার কথা শুনে সবাই অবাক দৃষ্টিতে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো।
মাহিম:-না মানে? আপনি তো টাকা নেননি তাহলে আপনার ব্যাগ চ্যাগ করে দেখতে প্রবলেমটা কি?
প্রিয়া:-(কাপা কাপা কন্ঠে)আমি বলছি তো আমি টাকা টা নেই-নি।
মাহিমের বাবা:-এই মেয়ে তুমি যখন টাকা নেওনি তখন তোমার ব্যাগ চ্যাগ করে দেখতে প্রবলেমটা কি?
নীল:-ওয়েট আমি গিয়ে নিয়ে আসছি।
এইবলে নীল উপরে গেলো।
কিছুক্ষন পর নীল প্রিয়ার ব্যাগটা নিয়ে আসলো।
প্রিয়া নীলের কাছে গিয়ে
প্রিয়া:-দেখুন এই ব্যাগে আমার কাপড় গুলো ছাড়া কিছুই নেই।প্লিজ এটা আমাকে দিয়ে দিন(কাঁদার মতো করে)
নীল:-দেখো প্রিয়া তুমি যখন নেওনি তখন সবাই তোমার ব্যাগটা দেখেনিক।সড়ো আমাকে ব্যাগটা ঢেলে দিতে দাও সড়ো।
এইবলে নীল প্রিয়াকে সরিয়ে দিয়ে ব্যাগে যা ছিল সবকিছু ঢেলে দিতেই সেই টাকার বান্ডিলটা সহো নিচে পরলো।
টাকার বান্ডিলটা নিচে পরতেই প্রিয়ার চোখ উপরে উঠে গেলো প্রিয়ার মাথায় যে আকাশ ভেঙ্গে পরলো।প্রিয়ার পুরো পৃথিবীটা যেন উল্টে গেলো।
প্রিয়ার অজান্তেই প্রিয়ার চোখ দিয়ে পানি বেড় হয়ে আসলো।
অর্পা:-আমি বলে ছিলাম না যে এই প্রিয়া ছাড়া আর কেউই টাকা টা চুরি করবে না।
“সবাই নিশ্চুপ”
অর্পা:-(মাহিমের কাছে এগিয়ে এসে)কিরে এতক্ষন তো প্রিয়ার হয়ে খুব বড় বড় কথা বললি এখন নিজের চোখে দেখলি তো সবকিছু।
মাহিম কিছু না বলে প্রিয়ার কাছে এগিয়ে গেলো।
কিছুক্ষন চুপ করে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে থাকার পর..
মাহিম:-এইসব কি?(রাগি চোখে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়া:-বিশ্বাস করুন আমি এইসবের কিছুই জানিনা কি ভাবে আমার ব্যাগে এই টাকা টা আসলো(কেঁদে কেঁদে মাহিমের দিকে তাকিয়ে)
মাহিমের বাবা:-তোমার ব্যাগে টাকা আর তুমি বলছো তুমি কিছুই জানোনা।
প্রিয়া মাহিমের বাবার কাছে এসে
প্রিয়া:-বিশ্বাস করুন বাবা আমি টাকা টা চুরি করিনি আমি সত্যি বলছি আমি জানিনা কি ভাবে টাকা টা আমার ব্যাগে আসলো(কেঁদে কেঁদে)
মাহিমের বাবা কিছু না বলে সহ জোরে ঠাসস করে একটা চর বসিয়ে দিল প্রিয়ার গালে।
মাহিমের বাবা:-শুধু আয়েশা বলেছে বলেই তুমি এখনো পর্যন্ত তুমি এই বাড়িতে আছো।তা নাহলে এতক্ষনে তোমাকে গলা ধাক্কা দিয়ে এই বাড়ি থেকে বেড় করে দিতাম।(রাগি চোখে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে)((আয়েশা মাহিমের মা-মনি))
এইবলে মাহিমের বাবা চলেগেলো।
মাহিম কিছুক্ষন চুপ করে দাড়িয়ে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে থাকার পর উপরে চলেগেলো।
প্রিয়া গালে হাত দিয়ে দাড়িয়ে চোখের জল ফেলছিল।
অর্পা:-এই একদম ন্যাকামি করবি না বলে দিচ্ছি(রেগে)
প্রিয়া:-(….)
অর্পা:-কিচ্ছু হয়নি।আর যদি কিছু হয়েও থাকে তাহলে এটা হলো তোর চুরি করার শাস্তি।(রেগেই)
প্রিয়া কিছু বলছে না শুধু কান্না করছে।
অর্পা:-এমন ভাব করছিস যেন খুব লেগেছে।এখন বেশি ন্যাকামি না করে যা গিয়ে কাজ বলছি যা।(রাগি কন্ঠে ধমক দিয়ে)
প্রিয়া:-যাচ্ছি(কেঁদে কেঁদেই)
আজকে সারাটি দিন প্রিয়া চোখের জল ফেলছিল আর কাজ করছিল।
আসলে প্রিয়া নিজেও জানেনা যে ওর ব্যাগে ঐ টাকার বান্ডিলটা কি ভাবে আসলো,কে রাখলো।
চুরি না করেও তাকে সবাই এখন চোর ভাবছে।
সারাদিন কাজ করার পর সব কাজ শেষ করে ঔষধটা খেয়ে নিল।
মাহিম অফিস থেকে এসে ফ্রেশ হয়ে খাটের উপর বোসে আছে।
“কিছুক্ষন পর”
প্রিয়ার রুমে আসলো।প্রিয়া রুমে এসে দেখলো মাহিম খাটের উপর বোসে আছে।
প্রিয়া:-আপনার খাবার?
মাহিম প্রিয়ার কন্ঠ শুনে প্রিয়ার দিকে তাকালো।
মাহিম দেখতে পারছে প্রিয়ার চোখ গুলো ফুলো ফুলো মুখটা কেমন সুখিয়ে গেছে,সকালের চরটার আঙ্গুলের ছাপ প্রিয়ার গালে এখনো দ্যাগ হয়ে আছে।
প্রিয়া কে কেমন জানি অসহায় আর দুখী দুখী দেখাচ্ছে।প্রিয়াকে এভাবে দেখে তার কেন জানি এখন রাগ করতে ইচ্ছে করছে না।কেমন জানি একটা মায়া হচ্ছে প্রিয়ার জন্য।
মাহিম কিছু না বলে বসা থেকে উঠে..
মাহিম:-রেখে দিন।
প্রিয়া আর কিছু না বলে খাবারটা টেবিলের উপর রেখে দিল।
তারপর মাহিমের কাছে আসলো।
প্রিয়া:-আপনাকে একটা কথা বলার ছিল।(মাহিমের পিছন থেকে)
মাহিম প্রিয়ার কথা শুনে ঘুরে ড়াদালো।
মাহিম:-আমাকে?
প্রিয়া:-হুমম আপনাকে
মাহিম:-আমাকে আপনার আবার কি এমন কথা বলার আছে।
প্রিয়া:-একটা কথা জানার ছিল।
মাহিম:-কি কথা?
প্রিয়া:-সকালের ঘটনা টা নিয়ে।
মাহিম:-দেখুন ঐসব নিয়ে আমি আপনার সাথে কোন কথা বলতে চাই না।
প্রিয়া:-আপনি জানেন আমার বাবা কখনো আমার গায়ে হাত তুলেনি।আর আজকে মিথ্যে চুরি দায়ে আপনার বাবা আমায় গায়ে হাত তুলেছে।(কাঁদো কাঁদো ভাবে)
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
প্রিয়া:-আজকে যদি আমার মা-বাবা বেচে থাকতো তাহলে হয়তো এভাবে আপনাদের বাসায় আমাকে থাকতে হতো না।
মাহিম:-(…
প্রিয়া:-আপনাদের বাড়ির সবাই তো আমাকে চোর ভাবছে…(কাঁদার মতো করে)
মাহিম কিছুক্ষন চুপ করে থাকার পর..
মাহিম:-দেখুন কারো ভাবনার উপর কিন্তু আমার কোন কন্ট্রোল নেই।(শান্ত ভাবে)
প্রিয়া:-আপনারও কি মনে হয় আমিই টাকা টা চুরি করেছি
মাহিম:-দেখুন সহজ ব্যাপারে হচ্ছে যে আমার বাড়ি থেকে একটা টাকার বান্ডিল চুরি হয়েছে বা পাওয়া যাচ্ছে না, সেটা আপনার ব্যাগ থেকে পাওয়া গেছে।
প্রিয়া:-(….)
মাহিম:-এতে সবাই যদি আপনাকে চোর ভাবে তাতে আমার কি করার আছে বলুন।কারো ভাবনার উপর তো আমার কোন কন্ট্রোল নেই তাই না।
প্রিয়া:-কিন্তু আপনি….
মাহিম:-কি আমি..?
প্রিয়া:-(কিছুক্ষন চুপ করে থাকার পর)মানে সবাই যা ভাবছে আপনিও কি তাই ভাবছেন?(অসহায় দৃষ্টিতে মাহিমের দিকে তাকিয়ে)
মাহিম:-আমার ভাবনাকে আপনি এতটা গুরুর্ত দিচ্ছেন কবে থেকে(প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়া:-আগে আমার প্রশ্নর উত্ররটা দিন না(কাঁদার মতো করে)
মাহিম:-না আগে আপনি আমার প্রশ্নর উত্ররটা দিন,আমার ভাবনাকে আপনি এতটা গুরুর্ত দিচ্ছেন কবে থেকে।
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
মাহিম:-উত্রর নেই নিশ্চই?
প্রিয়া:-আছে
মাহিম:-কি বলুন?
প্রিয়া:-উত্রর জানা থাকলেও সব প্রশ্নর সব উত্রর কি দেওয়া যায়।
মাহিম:-(…)
প্রিয়া:-তাতে নিজেকে তো আরো ছোটো হতে হয়।
মাহিম:-হেয়ালিটা বন্ধ করুন।যা জিগ্যেস করছি তার উত্রর থাকলে দিন আর নাহলে আমার চোখের সামনে থেকে চলে যান।(বিরক্তিকর ভাবে)
প্রিয়া কিছুক্ষন চুপ করে মাহিমের দিকে তাকিয়ে থাকার পর।
প্রিয়া:-আপনার চোখে সামনে আমি এসে দাড়াই কখনো।সড়েই তো থাকি(কাঁদো কাঁদো ভাবে)
মাহিম:-(…)
প্রিয়া:-আর সড়েও যাব।(কেঁদে কেঁদে)
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
প্রিয়া:-শুধু এই একটা কথা আমার জানা দরকার ছিল তাই বললাম।
মাহিম:-কোন কথাটা?
প্রিয়া:-এই যে সবাই যা ভাবছে আপনিও কি তাই ভাবছেন সেটা।
মাহিম:-কেন আমি তো আপনার কেউ না।আমি কি ভাবলাম না ভাবলাম তাতে আপনার কি?
প্রিয়া:-আমার অনেক কিছু আপনি বলুন না।
মাহিম:-আপনার অনেক কিছু মানে?
প্রিয়া কিছু বলল না।
মাহিম:-ওহ যেহেতু আমি আপনাকে এই বাড়িতে এনেছি,এই রুমে থাকতে দিয়েছি।কাল যাতে আপনাকে এই বাড়ি থেকে বেড় না করে দেই,তাই আপনি আমার ভাবনাকে এতটা গুরুর্ত দিচ্ছেন। কি তাই তো?
প্রিয়া:-(…)
মাহিম:-আসলে আপনি একজন চালাক মানুষ,শুধু চালাক নন স্বার্থপরেও বটে(প্রিয়ার কাছ থেকে সরে গিয়ে)
প্রিয়া:-হ্যা বলুন।আরো যত খারাপ খারাপ কথা আছে আমাকে বলুন।কারণ পৃথিবীর সবকিছু খারাপ মিলেই তো আমি।(কাঁদার মতো করে)
মাহিম:-ব্যাছ অনেক হয়েছে।এবার যেটা বলছি সেটা মন দিয়ে শুনুন।আমার বাবা যখন আপনাকে বাসা থেকে বেড় করে দেয়নি তখন আমিও আপনাকে তারিয়ে দিব না।এবার নিজের জায়গায় গিয়ে সুয়ে পড়ুন যান।
এইবলে মাহিম রুম থেকে বেড় হয়ে যাচ্ছিল এমন সময় প্রিয়া বলে উঠলো
প্রিয়া:-আমি কিন্তু শুধু বাড়ি থেকে বেড় করে দেওয়ার ভয়ের জন্য আপনার কাছে জানতে চাইনি(মাহিমের পিছন থেকে)
প্রিয়ার কথা শুনে মাহিম থমকে গেলো।মাহিম দাড়িয়ে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে..
মাহিম:-তাহলে?
প্রিয়া:-আপনার ভাবনারও দাম আছে আমার কাছে…অনেক(মাহিমের দিকে তাকিয়ে)
মাহিম:-সেটা আমি তারিয়ে দেওয়ার ভয়ে নয় তো?(প্রিয়ার চোখের দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়া:-না সেটা আপনি তারিয়ে দিলেও নয়।(মাহিমের চোখের দিকে তাকিয়ে)
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
প্রিয়া:-আর আপনাকে কখনো আমায় তারিয়ে দিতে হবে না।আমি নিজেই চলে যাব।
মাহিম:-(….)
মাহিম কিছু বলছে না প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
প্রিয়া:-আপনি কি ভাবছেন আমি সারা জীবন এখানে থেকে যাব।থাকবো না আমি চলে যাব অনেক দূরে(কাঁদো কাঁদো ভাবে)