বউ যখন কাজের মেয়ে [৩]

লেখক- মান্না ইসলাম মাহিম

পর্ব-১৮
———————————–
“নীল আর অর্পার রুমে”
নীল খাওয়া-দাওয়া শেষ করে রুমে এসে বোসে বোসে ভাবছে..”-যাক বাবা ভেবে ছিলাম কি আর হলো কি?
আমি কোথায় ভাবলাম প্রিয়াকে টাকা চুরির দায়ে বাসা থেকে প্রিয়াকে বেড় করে দিবে।আর আমি ঠিক ঐ সময় ওর পাশে গিয়ে দাড়াবো।
কিন্তু কিছুই হলো না।শুধু শুধু মিথ্যে চুরির দায়ে প্রিয়াকে থাপ্পড় খেতে হলো।
না এবার অন্যকিছু প্লান করতে হবে।যাতে সাপও না মরে আর লাঠিও না ভাঙ্গে।
কিন্তু করবোটা কি এটা তো প্লান কাজ হলো না।
এবার এমন কিছু একটা করতে হবে।যাতে সবাই প্রিয়াকে এই বাসা থেকে বেড় করে দিতে বাধ্য হয়।(নীল মনে মনে এইসব ভাবছিল)এমন সময় অর্পা রুমে এসে দেখলো নীল বসে বসে কি যেন একটা ভাবছে।নীলকে দেখেই তা বোঝা যাচ্ছে।
অর্পা:-কি ব্যাপার নীল কি ভাবছো তুমি(নীলের কাছে আসতে আসতে)
নীল অর্পার কথা শুনে চমকে উঠলো।সে বসা থেকে উঠে দাড়িয়ে..
নীল:-ককই কিছু না,না তো(মুখে ভয়ের ছাপ)
অর্পা:-না তোমাকে দেখে মনে হলো যে তুমি কিছু একটা ভাবছো তাই বললাম।
নীল:-আরে না তেমনি কিছু না।ভাবছিলাম যে প্রিয়ার মতো একটা মেয়ে এমন একটা কাজ করবে। এটা আমি ভাবতেই পারছি না।
অর্পা:-কেমন কাজ?(অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে)
নীল:-আরে সকালের ঐ ঘটনার কথা বলছি আমি।
অর্পা:-ওহ্,,এতে ভাবার কি আছে?জীবনে হয়তো কখনো ওত গুলো টাকা একসাথে দেখেনি।তাই দেখে হয়তো লোভ সামলাতে পারেনি।ওর মতো মেয়ে এইসব কাজ করতেই পারে।
নীল:-প্রিয়াকে দেখে কিন্তু তেমন মেয়ে মনে হয় না।
অর্পা:-শুধু মুখ দেখে কিন্তু মানুষ চেঁনা যায় না।
নীল:-(চমকে উঠে অর্পার দিকে তাকিয়ে)মানে)
অর্পা:-মানে যেমন প্রিয়াকে দেখে তোমার মনে হয়নি যে প্রিয়া কখনো এইসব কাজ করবে।কিন্তু আজকে দেখো তোমার ধারনা একদমি ভূল প্রমাণিত হলো।আর একটা কথা আমি বুঝতে পারছি না।
তুমি প্রিয়ার হয়ে এতকিছু ভাবছো কেন?(নীলের দিকে তাকিয়ে)
নীল:-না মানে আজকে যেটা ঘটলো প্রিয়ার মতো মেয়ে যে এটা করবে সেটা আমি কখনো ভাবিনি তাই আর কি।
অর্পা:-সত্যি তো?(নীলের দিকে তাকিয়েই)
নীল:-তাছাড়া কি?
অর্পা:-আমার মনে হচ্ছে না।
নীল:-মানে?
অর্পা:-না কিছু না।অনেক রাত হয়েছে ঘুমাও।
এরপর দুজনি সুয়ে পরলো
”মাহিম আর প্রিয়ার রুমে”
মাহিম কিছু বলছে না প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
প্রিয়া:-আপনি কি ভাবছেন আমি সারা জীবন এখানে থেকে যাব।থাকবো না আমি চলে যাব অনেক দূরে(কাঁদো কাঁদো ভাবে)
মাহিম:-(কিছুক্ষন চুপ করে প্রিয়ার দিকে থাকার পর)আচ্ছা আপনি এত যাই যাই করেন কেন বলুন তো?কোথায় যাবেন আপনি আপনার তো যাওয়ার মতো আর কোন জায়গা নেই।(বিরক্তিকর ভাবে)
প্রিয়া:-আছে
মাহিম:-কোথায় আপনার ঐ শিহাব ভাইয়ের কাছে?
প্রিয়া:-না।
মাহিম:-তাহলে কোথায় আর তো আপনার যাওয়ার মতো কোন জায়গা নেই।
প্রিয়া:-(…)
মাহিম:-আর আপনার তো কেউই নেই এই পৃথিবীতে।
প্রিয়া:-যার কেউ নেই তার উপর আল্লাহ্ আছে।আর তিনিই সব ব্যবস্থা করে দেন।
(চোখের জল মুছতে মুছতে)
মাহিম:-হুম রাইট,বাট যবেনটা কোথায়?
প্রিয়া:-সেটা সময় হলেই বুঝতে পারবেন।
মাহিম:-(কিছুক্ষন চুপ করে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে থাকার পর)কি নতুন কাউকে পেয়েছেন নাকি?
প্রিয়া:-মানে?(অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে)
মাহিম:-মানে ঐ আপনাদের মতো মেয়েরা যা করে আর কি তাই।একে ছেড়ে ও কে ধরে।আপনি কি তাই করছেন নাকি?
প্রিয়া:-আপনি যা মনে করেন(কাঁদার মতো করে)
মাহিম কিছুক্ষন চুপ করে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে থাকার পর।
মাহিম:-আপনার টাকার দরকার সেটা আমাকে বললেই তো হতো?
প্রিয়া:-মানে?
মাহিম:-মানে আপনার টাকার দরকার সেটা আমাকে বললে আমি কি আপনাকে টাকা দিতাম না।
প্রিয়া:-তার মানে সবাই যা ভাবছে আপনিও তাই ভাবছেন(কাঁদার মতো করেই)
মাহিম:-এখানে ভাবার কি আছে।সবকিছু তো আমি নিজের চোখেই দেখলাম।
প্রিয়া:-তার মানে আপনিও বলতে চাইছেন যে টাকা আমিই চুরি করেছি তাই তো?(কেঁদে কেঁদে মাহিমের দিকে তাকিয়ে)
মাহিম:-দেখুন টাকা কে চুরি করেছে সেটা বড় কথা নয়।বড় কথা হলো যে টাকা আপনার ব্যাগ থেকে পাওয়া গেছে।আর…(আর কিছু বলার আগেই)
প্রিয়া:-থাক মাহিম বাবু।আমি বুঝতে পেরেছি।
মাহিম:-(…)
প্রিয়া:-আমি শুধু এটা জানতে চাই ছিলাম যে আপনি কি মনে করেন।অন্যরা আর যাই ভাবুক।আপনি যে আমাকে অবিশ্বাস করেন না সেটা জানতে চাই ছিলাম।আর সেটাও জানা হয়েগেল।(চোখে জল নিয়ে)
মাহিম:-(…)
প্রিয়া:-আমি আসলে যেটা ভেবে ছিলাম সেটা ভূল ভেবে ছিলাম।
মাহিম কিছু বলছে না শুধু প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
প্রিয়া:-আপনার খাবার টেবিলে রাখা আছে খেয়ে নিন।(চোখের জল মুছতে মুছতে)
এইবলে প্রিয়া মেঝেতে বিছানা করতে লাগলো।
মাহিম আর কিছু না বলে চেঁয়ার টেনে বসে পরলো।
আর প্রিয়া মেঝেতে বিছানা করে অন্যদিকে মুখ করে সুয়ে পরলো।
“পরের দিন”
প্রিয়া সবার জন্য নাস্তা করার পর সবাই একসাথে টেবিলে নাস্তা করতে বসলো।প্রিয়া সবাইকে নাস্তা তুলে দিচ্ছিল।
আর নীল কেমন একটা খারাপ দৃষ্টি দিয়ে প্রিয়ার দিকে বার বার তাকাচ্ছিল।
মাহিমের বাবা:-এই মেয়ে মাহিম কোথায়? ও কে দেখছি না কেন?
প্রিয়া:-অনি তো এখন বাহিরে খেয়ে অফিসে যায়।
মাহিমের বাবা:-বাহিরে খেয়ে অফিসে যায় মানে?যাও ও কে গিয়ে আমার কথা বলে ডেকে নিয়ে আসো যাও।
প্রিয়া:-জ্বী।
এইবলে প্রিয়া মাহিমকে ডাকতে উপরে যাচ্ছিল,এমন সময় কলিংবেলটা বেজে উঠলো।
অর্পা:-এই সময় আবার কে আসলো, এই প্রিয়া আগে দেখতো কে আসলো।
প্রিয়া:-জ্বী দেখছি।
এরপর প্রিয়া গিয়ে বাড়ির দরজাটা খুলতেই।
:-তুমি প্রিয়া রাইট?
প্রিয়া:-হ্যাঁ আপনি কে?
:-আমাকে তুমি চিনবে আমি তোমাকে চিনি।
প্রিয়া:-মানে কি ভাবে?
:-মানে সব পরে বলবো আগে ভিতরে তো যেতে দাো।
এইবলে মেয়েটা ভিতরে আসলো।
প্রিয়ারও দরজাটা বন্ধ করে মেয়েটার পিচু পিচু আসলো।
মেয়েটা ভিতরে আসতেই অর্পা মেয়েটা দেখে..
অর্পা:-আরে তুন্নি তুমি(খুশি হয়ে মেয়েটার কাছে আসতে আসতে)
মেয়েটা/তুন্নি:-হুম এইতো চলে আসলাম।
অর্পা:-তো কেমন আছো?(তুন্নির কাছে এসে)
তুন্নি:-এইতো আছি ভালো,তুমি কেমন আছ আপু?
অর্পা:-আমিও ভালো,তো এতদিন পর বুঝি আমাদের কথা তোমার মনে পরলো তোমার?
তুন্নি:-আর বলো না,মাহিম তো ওর কাজ শেষ করে আমাকে ছেড়ে এসেছে।বিদেশ থেকে আশার পর গ্রামে গিয়ে ছিলাম।এরপর তোমাদের বাসায় আসলাম।
অর্পা:-এসেছো খুব ভালো করেছো,তোমার মা-বাবা কেমন আছে?
তুন্নি:-জ্বী ভালো।দুলাভাই কে তো দেখতে পারছি না?
অর্পা:-ঐ তো ওখানে(নীলকে দেখিয়ে দিয়ে)
তুন্নি:-আরে কি খবর দুলাভাই?(টেবিলের কাছে যেত
নীল:-এইতো..তোমার?
তুন্নি:-হুম ভালো।আপনি কেমন আছেন uncle? (মাহিমের বাবা দিকে তাকিয়ে)
মাহিমের বাবা:-জ্বী ভালো মা..তুমি কেমন আছো?
তুন্নি:-জ্বী আমিও ভালো।মাহিম কোথায় মাহিমকে তো দেখতে পারছি না।
মাহিমের বাবা:-ও উপরে আছে যাও উপারে যাও
তুন্নি:-ওকে আগে ওর সাথে দেখা করে নেই।
এইবলে তুন্নি উপরে চলে গেলো,আর অর্পা এসে আবার টেবিলে বসলো।
কিছুক্ষন পর প্রিয়া মাহিম আর তুন্নিকে নাস্তা করতে ডাকতে উপরে গেলো।
প্রিয়া তাদের কে ডাকতে মাহিমের রুমে ঢুকতেই প্রিয়া দেখলো তুন্নি আর মাহিম দুজন দুজনকে জরিয়ে ধরে আছে।প্রিয়া সেটা দেখতেই চমকে উঠে দরজার বাহিরে লুকালো।প্রিয়া তুন্নি আর মাহিমকে জরানো দেখে তার অজান্তেই প্রিয়ার চোখ দিয়ে পানি বেড় হয়ে আসলো।

পর্ব-১৯
———————————–
প্রিয়া:-হ্যাঁ আমি হয়তো আপনার মতো এত শিক্ষিত এত বড়লোক সুন্দর বর কখনো পাবনা।
তাইবলে এই না যে আমি সারাজীবন আপনার বাসায় লাঠিজাটা খেয়ে পরে থাকবো তেমন মেয়েও আমি নই।বুঝেছেন?(মাহিমের দিকে তাকিয়ে রাগি কন্ঠে)
মাহিম:-হুমম সেটাই আপনাদের মতো মেয়েদের যেখানে থাকার কথা সেখানেই তো আপনার যাওয়া উচিৎ তাই না।
প্রিয়া:-মানে???
“”””””””>(-এর আগে-)<“”””””””””
প্রিয়া হচ্ছে তার মা-বাবা একমাত্র আদরী মেয়ে।
অনেক আদর যত্ন করতো প্রিয়াকে প্রিয়ার মা-বাবা।
প্রিয়ার বয়স যখন ৪/৫ তখন একদিন হঠাৎ তার মা-বাবা একটা Accident এ মারা যায়।
আর তখন থেকেই শুরু হয় প্রিয়ার নতুন এক কষ্টের জীবন।
প্রিয়ার মা-বাবা মারা যাওয়ার পর প্রিয়ার আপন বলতে তার মামা ছাড়া আর কেউই ছিল না এই পৃথিবীতে।
তারপর প্রিয়ার মামা তার বাড়িতে নিয়ে যায় প্রিয়াকে।
সেখানে গিয়ে দু-বেলা দু-মুঠু ভাত আর একটু থাকার জায়গা তো পেতো কিন্তু সেটা তার চোখের জলের বিনিময়ে।
এরপর প্রিয়া যখন বড় হয় তখন গ্রামের ছেলেদের নানান ধরনের কথার জ্বালায় তার মামা ঠিক করলো প্রিয়ার বিয়ে দিয়ে দিবে।
এক এক করে প্রিয়ার ৩টি বিয়ে ভেঙ্গে যাওয়াতে অলক্ষি কুলাঙ্গানি গ্রামের লোকজনের নানান ধরনের কথা আরো বলতে থাকে প্রিয়াকে।
এরপর প্রিয়া ঠিক করে যে সে আর কখনই বিয়ে করবে না।
এভাবে ২/৩ বছর চলে যাওয়া পর প্রিয়ার মামাতো বোন শীলা বড় হয়ে উঠে।
২/৩টা ছেলে দেখার পর শিলার বিয়ে ঠিক হয় বিশাল বড়লোক রায়হান চৌধুরীর ছোট্ট ছেলে মাহিম চৌধুরীর সাথে।
মেয়ে দেখতে এসে মাহিমের প্রিয়াকে পছন্দ হয়ে যায়।
প্রথম দেখাতেই মাহিম প্রিয়াকে ভালোবেসে ফেলে।
কিছুদিন পর মাহিম প্রিয়াকে তার মনে কথা বলে আর প্রিয়া মাহিমকে চরম অপমান করে তাকে ফিরিয়ে দেয়।
বিয়ের দিন রাতে যখন বর পক্ষ আসে তখন সবাই জানতে পারে যে বিয়ের কন্যে অন্য একটা সাথে পালিয়েছে আর কন্যের জায়গায় অন্য মেয়ে মানে প্রিয়াকে বিয়ে করতে হবে।
মাহিমের মা-মনি আর প্রিয়ার উপর তার অপমানের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য মাহিম প্রিয়াকে বিয়ে করতে রাজি হয়।
বিয়ের পর মাহিম তার অপমানের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য প্রিয়ার উপর নানান ধরনের অত্যাচার কষ্ট যন্ত্রণা দেওয়া শুরু করে।
এভাবে কয়েক মাস যাওয়ার পর মাহিম প্রিয়ার প্রতি ধুরবল হয়ে পরে আরো বেশি প্রিয়াকে ভালোবেসে ফেলে।
একটা সময় মাহিম প্রিয়ার অনেক কেয়ার নেওয়া শুরু করে আর প্রিয়াকে তার স্ত্রী হিসাবে মেনে নেওয়ার চেষ্টা করে।কিন্তু হঠাৎ শিহাব তার মাঝখানে চলে আসাতে মাহিম আবার প্রিয়ার সাথে খারাপ ব্যবহার করা শুরু করে দেয়।
বিয়ের ৯মাস প্রিয়া জানতে পারে যে তার মাথায় ব্রেনে ছোট্ট একটা টিউমর জন্ম নিয়েছে আর সেটা তাকে ধিরেধিরে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
মাহিমের জীবনে তুন্নি আছে বলে প্রিয়া সবকিছুর আশা ছেড়ে দিয়ে সেও নিজেকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে দিতে থাকে।
এভাবে ১মাস চলে যাওয়ার পর মাহিমের ফ্রেন্ড তুন্নি বিদেশ থেকে মাহিমের বাসায় চলে আসে।
তুন্নি মাহিমদের বাসায় আশার কিছুদিন পর,
মাহিম আর তুন্নি ঘুরতে যায় পাহাড়ে।
মাহিম আর তুন্নি পাহাড়ে বেশ কিছুদিন ঘুরাঘুরি করার পর মাহিম বাসায় এসে তার বাবাকে বলে যে সে তুন্নিকে বিয়ে করবে।
মাহিমের কথা অনুযায়ী মাহিমের বাবা তুন্নি আর মাহিমের বিয়ের ব্যাবস্তা করে ফেলে।
এবার দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কি হয়।
“””””>(-এরপর-)<“””””
প্রিয়া রুম গোছাগোছি করছিল।
এমন সময় কে জানি প্রিয়ার নাম ধরে ডাকলো।
প্রিয়া পিছন দিকে তাকাই দেখলো নীল।
প্রিয়া নীলকে দেখতেই চমকে উঠলো।
প্রিয়া:-আআপনি?(কাঁপা কাঁপা কন্ঠে)
নীল:-হুম আমি(প্রিয়ার কাছে যেতে যেতে)
প্রিয়া:-এএখানে কেকন?
নীল:-কিছু না।এককাপ কপি নিয়ে আসো আমার রুমে।
প্রিয়া:-আআপনি যান আমি নিয়ে যাচ্ছি(ভয় ভয় করে)
নীল:-তারাতারি আসবে কিন্তু
এইবলে নীল চলে গেলো।
“কিছুক্ষন পর”
প্রিয়া নীলের জন্য কপি বানিয়ে নিয়ে নীলের রুমে গেলো।
প্রিয়া রুমে ঢুকতেই দেখলো নীল বিছানার উপর বোসে ফোনে কি জানি একটা করছে।
প্রিয়া নীলের কাছে গিয়ে কপির কাপটা নীলের দিকে বারিয়ে দিয়ে বলল
প্রিয়া:-আআপনার কপি(ভয় ভয় করে)
নীল প্রিয়ার কন্ঠ শুনে প্রিয়ার দিকে তাকালো।
প্রিয়া দেখতে পেলো নীল কেমন জানি একটা খারাপ দৃষ্টি দিয়ে তার দিকে তাকাচ্ছে।
প্রিয়ার নীলের তাকিয়ে থাকা দেখে সে নিজের একহাত দিয়ে নিজের কাপড়টা ঠিক করতে লাগলো।
নীল কিছু বলছে না শুধু প্রিয়ার দিকে তাকিয়েই আছে।
প্রিয়া:-আআপনার কপি(ভয় ভয় করেই).
নীল:-(চমকে উঠে)ও হ্যাঁ।
এইবলে নীল প্রিয়ার হাত থেকে কপির কাপটা হাতে নিল।
নীল কপির কাপটা হাতে নিতেই প্রিয়া চলে যাচ্ছিল এমন সময়
নীল:-আরে প্রিয়া শুনো(প্রিয়ার পিছন থেকে)
প্রিয়া নীলের ডাক শুনে দাড়িয়ে গেলো।আর পিছন দিকে ঘুরে দাড়ালো।
নীল:-একটা কথা বলার ছিল তোমাকে(প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়া:-জ্বী বলুন।
নীল কিছু না বলে কপির কাপটা টেবিলের উপরে রাখলো।
নীল:-আসলে সেদিন যখন অর্পা বাবা তোমাকে চর মারলো তখন জানো আমার খুব খারাপ লেগেছিল।(প্রিয়ার কাছে এগিয়ে আসতে আসতে)
প্রিয়া:-দেদেখুন আমার অনেক কাজ আছে আমাকে কাজ করতে হবে। আমি গেলাম।
এইবলে প্রিয়া চলে যাচ্ছিল এমন সময় নীল প্রিয়ার একহাত ধরে ফেলল।
নীল:-এত তারা কিসের?
প্রিয়া:-আমার হাতটা ছাড়ুন নীল বাবু আমার অনেক কাজ আছে(হাতটা ছাড়ানোর চেষ্টা করতে করতে কাঁদো কাঁদো ভাবে)
নীল:-(আরো শক্ত করে ধরে প্রিয়াকে কাছে টেনে নিয়ে)আরে প্রিয়া কাজ তো করবেই আগে আমার কথাটা তো শুনে নেও।
নীল প্রিয়াকে আরো কাছে টেনে নিতেই প্রিয়া নিজের হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে নীলকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে কাঁদতে কাঁদতে দৌড়ে রুম থেকে বেড় হয়েগেল।
প্রিয়াকে কাঁন্না করতে নিচে আসতে দেখে অর্পা বলে উঠলো..
অর্পা:-কিরে কি হয়েছে কাঁন্না করছিস কেন??
কিছু বলছে না শুধু কাঁন্না করছে।
অর্পা:-এত ন্যাকামি না করে বলবি তো কি হয়েছে(রেগে)
প্রিয়া:-আমি নীল বাবুকে কপি দিতে রুমে গিয়ে ছিলাম আর নীল বাবু আমার হাত ধরে টানাটানি করছিল(কেঁদে কেঁদে)
নীল:-ছিঃ ছিঃ প্রিয়া তুমি এইসব কি বলছো??(নিচে আসতে আসতে)
নীলের কথা শুনে প্রিয়া আর অর্পা দুজনি নীলের দিকে তাকালো।
নীল উপর থেকে নামতেই.
অর্পা:-নীল প্রিয়া এইসব কি বলছে??
নীল:-অর্পা তুমি একটা কাজের মেয়ের কথা বিশ্বাস করছো?আমার প্রতি তোমার একটুও বিশ্বাস নেই।(অর্পার দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়া:-না না বিশ্বাস করুন আপু আমি সত্যি বলছি(কেঁদে কেঁদেই)
অর্পা:-(…)
নীল:-আমি কিছু বুঝতে পারছি না প্রিয়া তুমি মিথ্যে কেন বলছো?
প্রিয়া:-আ…..(আর কিছু বলার আগেই(
নীল:-অর্পা আমি শুধু প্রিয়ার হাত থেকে কপির কাপটা নিচ্ছিলাম আর অমনি প্রিয়া কাঁন্না করতে করতে রুম থেকে বেরিয়ে আসলো।
প্রিয়া:-আপু আমি শুধু শুধু কেন মিথ্যে বলতে যাব বলুন??
অর্পা:-মিথ্যে বলছি কারন সেদিন নীল তোর ব্যাগ থেকে টাকা গুলো বেড় করে দিয়েছিল বলে আজ তুই মিথ্যে বলে নীল ফাসাতে চাইছিস কি তাই তো?(প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়া:-না না আপু আমি…
প্রিয়া আর কিছু বলার আগেই অর্পা ঠাসস করে একটা চর বসিয়ে দিল প্রিয়ার গাঁলে।
প্রিয়া গাঁলে হাত হাত দিয়ে চোখে জল নিয়ে অর্পার দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে..
প্রিয়া:-বিশ্বাস করুন আপু আমি…
অর্পা:-চুপ একদম চুপ।আর একটা কথাও বলবি না।আমার যা বোঝার আমি বুঝে গেছি।এখন চুপচাপ নিজের কাজ কর গিয়ে যা(রাগি কন্ঠে)
প্রিয়া কিছু বলছেনা শুধু দাড়িয়ে চোখের চল ফেলতে লাগলো।
অর্পা:-কি হলো এখনো দাড়িয়ে আছিস কেন বলছি না নিজের কাজ কর গিয়ে(রাগি কন্ঠেই)
প্রিয়া আর কিছু না বলে চোখের জল মুছতে মুছতে কাজ করতে চলে গেলো।
প্রিয়া সকাল বেলা ব্রেকফাস্ট রেডি করছিল কিন্ত কিছুতেই প্রিয়া দাড়িয়ে থাকতে পারছেনা।প্রিয়া মাথা চেপে ধরে বোসে চোখ বন্ধ করে ফেললো।
ডাক্তারের লিখে দেওয়া মেডিসিন গুলো শেষ হয়েছে ৪দিন হলো।এই ৪দিনে মেডিসিন গুলো না খাওয়াতে প্রিয়ার মাথায় প্রচুর ব্যাথা যন্ত্রণা করছে।প্রেসক্রিপশনটাও খুজে পাচ্ছে না।
এই ৪দিন অনেক কষ্ট যন্ত্রণা সহ্য করে বাড়ির সমস্ত কাজ করেছে।যতদিন যাচ্ছে ডাক্তারের লিখে দেওয়া সেই মেডিসিন গুলো না খাওয়াতে প্রবলেম গুলো শুধু বেরেই চলেছে।যে করেই হোক আবার ঐ ডাক্তারের সাথে দেখা করে মেডিসিন গুলো আনতে হবে।
এটা ভেবে প্রিয়া বাড়ির সমস্ত কাজ শেষ করে বিকাল ঐদিকে আবার ডাক্তারের কাছে গেলো।
২ঘণ্টা ধরে প্রিয়া ডাক্তারের চেম্বারে বোসে কিন্তু ডাক্তার বাবু এখনো আসছে না।
“কিছুক্ষন পর”
প্রিয়া জানতে পেলো যে ডাক্তার অন্য একটা Hospital এ গেছে অনার আসতে এখনো ১ঘণ্টা মতো সময় লাগবে।
প্রিয়া দেখলো সন্ধে হয়েগেছে আরো লেট করে বাসায় ফিরলে আরো অনেক কথা শুনতে হবে। তাই প্রিয়া আর লেট না করে বাসায় ফিরলো।
বাসায় ফিরে আগের মতোই অনেক বকাচকা শুনতে হলো প্রিয়াকে।এইসব শুনতে শুনতে অভ্যাস হয়েগেছে প্রিয়ার সে কারো কথায় কান না দিয়ে চুপচাপ সবকাজ শেষ করে রুমে আসলো।
প্রিয়া রুমে ঢুকতেই..
মাহিম:-দাড়ান..!
প্রিয়া মাহিমের কথা একদম থমকে গেলো।সে চুপচাপ দাড়িয়ে গেলো।
মাহিম বসা থেকে উঠে প্রিয়ার কাছে।
মাহিম:-এটা কোন হোসটেল রুম নয় যে আপনি বাহিরে নষ্টামি করে এসে এই রুমে থাকবেন।(রেগে)
প্রিয়া:-এত পেচিয়ে কথা বলার কি আছে।সোজা ভাবে বললেই তো হয় যে আমাকে আর এই রুমে থাকতে দিবেন না।
এইবলে প্রিয়া মাহিমের পাশ দিয়ে মাহিমের খাবারের প্লেটটা রেখে দিতে যাচ্ছিল এমন সময় মাহিম প্রিয়ার একহাত ধরে টেনে তার কাছে নিয়ে আসলো
মাহিম:-আজ আপনাকে বলতেই হবে আপনি কথায় গিয়ে ছিলেন।(রাগি কন্ঠে)
প্রিয়া:-মাহিম বাবু এভাবে আমার হাত ধরে টানার কোন অধিকার কিন্তু আপনার নেই।(মাহিমের চোখে দিকে তাকিয়ে)
মাহিম প্রিয়ার কথা শুনে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে প্রিয়ার হাতটা ছেড়ে দিল।
প্রিয়া:-কি জানতে চাইছেন আপনি আমার কাছে?আর কোন অধিকারে জানতে চাইছেন?
মাহিম:—–
প্রিয়া:-আর তো মাত্র কয়েকটা দিন তারপর তো আপনি অন্য একটা মেয়ে কে বিয়ে করবেন।
মাহিম:—–
প্রিয়া:-অবস্স আপনি বিয়ে করলেই বা কি?আপনি তো কোন দিনও একটা মুহূর্তের জন্যেও আমাকে আপনার স্ত্রী হিসাবে মেনে নেননি।আমি তো আপনাদের বাসার কাজের মেয়ে।আমি কোথায় গেলাম না গেলাম তাতে আপনার কি?আপনার তো এইসব জানার কোন দরকার নেই।(মাহিমের দিকে তাকিয়ে)
মাহিম:-(কিছুক্ষন চুপ করে থাকার পর)দরকার আছে।
প্রিয়া:-কিসের জন্য?
মাহিম:-দেখুন আপনার কথা অনুযায়ী আমি আপনার আসছয় দাঁতা।সো আপনি কোথায় যাচ্ছেন না যাচ্ছেন এটা আমার জানা অধিকার আমার আছে।(প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়া:-….
মাহিম:-আর সব থেকে important কথা হলো যে কেউ আপনাকে এই বাড়ির বউ হিসাবে মানুক আর না মানুক।আপনি তো আমার স্ত্রী।মানে সবাই তো এটাই জানে তাই না?(প্রিয়ার কাছ থেকে সরে গিয়ে)
প্রিয়া:-আপনি তো আমাকে ভালোবেসে বিয়ে করেননি।আপনি খুব দয়ালু মানুষ।তাই দয়া করেছেন আমাকে।
মাহিম:-(রেগে প্রিয়ার কাছে এসে)ঠিক আছে আমি না হয় আপনাকে ভালোবেসে বিয়ে করিনি দয়া করেছি আপনাকে কিন্তু আপনি?
প্রিয়া:-কি আমি(মাহিমের দিকে তাকিয়ে)
মাহিম:-আপনি তো জানতেন যে আমি একজন খারাপ চরিত্রহীন মানুষ।
বিয়ের আগে আপনার সাথে ফুর্তি করার জন্য আপনাকে বিয়ে করতে চেয়ে ছিলাম।
তাহলে পরে কেন আবার আমার সাথে বিয়েতে বসতে রাজি হলেন?
প্রিয়া:-…
মাহিম:-(কিছুক্ষন চুপ করে থাকার পর)চুপ করে আছেন কেন বলুন?
প্রিয়া:-….
মাহিম:-নাকি বড়লোক বর দেখে চুপ করে ছিলেন?নাকি ভেবে ছিলেন যে বিয়ের পর এইসব কাঁন্নাকাটি ন্যাকামি করবেন আর আমি আপনাকে আমার স্ত্রী হিসাবে মেনে নিব।
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
মাহিম:-শুধু মা-মনি আর আপনার মামা যদি হাত জোর করে আপনাকে বিয়ে করতে না বলতো।তাহলে আমি কোনদিনও আপনার মতো একটা নষ্ট মেয়ে কে আমি বিয়ে করতাম না।
মাহিমের কথা গুলো শুনে প্রিয়ার অজান্তেই তার চোখে দিয়ে পানি বের হয়ে আসলো।
মাহিমও দেখতে পেলো প্রিয়ার চোখ দিয়ে পানি পরছে।
মাহিম কিছুক্ষন চুপ করে থাকার পর।
মাহিম:-সবকিছুর না একটা সময় থাকে।আর সেই সময়টা চলে গেলে জীবন থেকে অনেক কিছুই হাড়িয়ে যায়।
প্রিয়া:-আমার জীবনে কখনো সেই সময়টা আসেইনি আর হাড়াবে কি(চোখের জল মুছতে মুছতে)
মাহিম:-এসেছিল আপনি হয়তো বুঝেও না ঝোঝার ভান করেছেন নয়তো কখনো বুঝেনেনি।
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
মাহিম:-তবে একটা কথা কি জানেন আপনার ভাগ্য ভালো যে আপনার বিয়েটা আমার মতো একটা ছেলের সাথে হয়েছে।অন্যকোনো ছেলের সাথে হলে হয়তো এতদিন আপনাকে রাস্তায় রাত কাটাতে হতো(প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়া:-হ্যাঁ আমি হয়তো আপনার মতো এত শিক্ষিত এত বড়লোক সুন্দর কাউকে পেতাম না।
তাইবলে এই না যে আমি সারাজীবন আপনার বাসায় লাঠিজাটা খেয়ে পরে থাকবো তেমন মেয়েও আমি নই।বুঝেছেন?(মাহিমের দিকে তাকিয়ে রাগি কন্ঠে)
মাহিম:–
প্রিয়া:-আপনি কি মনে করেছেন আমি আপনার তুন্নির মাঝে আপনাদের বিয়ের পরেও থেকে যাব কখনই না।
মাহিম:-হুমম সেটাই আপনাদের মতো মেয়েদের যেখানে থাকার কথা সেখানেই তো আপনার যাওয়া উচিৎ তাই না।
প্রিয়া:-মানে???
মাহিম:-মানে এই যে আপনি প্ররাই যেখানে যান।সেখানে একিবারেই চলে যাওয়াই ভালো।
প্রিয়া:-(কিছুক্ষন চুপ করে থাকার পর)হুমম চলে যাব।যেদিন একিবারেই চলে যাব সেদিন পর আর আপনার মাথায় বোজা হয়ে ফিরে আসবো না।কোনদিনও না।(মাহিমের দিকে তাকিয়ে কাদার মতো করে)
মাহিম কিছু বলল না শুধু প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো।
প্রিয়া:-আপনার খাবার রেখে দিব না নিয়ে যাব
মাহিম কিছু না বলে রেগে প্রিয়ার কাছে গিয়ে প্রিয়ার হাত থেকে খাবারের প্লেটটা কেরে নিয়ে মেঝেতে ছুড়ে ফেলে দিয়ে।
মাহিম:-আপনার মতো নষ্টা মেয়ের হাতের খাবার আমি খাবোনা।আজকের পর থেকে আর কখনই আপনি আমার খাবারে হাত দিবেন না।
আপনার মতো মেয়ের হাতে খাবার খেতে আমার ঘৃণা লাগে ঘৃণা।(রাগ দেখিয়ে বলেই গিয়ে বিছানায় সুয়ে পরলো)
প্রিয়া কিছু বলল না।শুধু মাহিমের দিকে তাকিয়ে মাহিমের কথা গুলো শুনলো।
প্রিয়া কিছুক্ষন দাড়িয়ে চোখের জল ফেলার পর চোখের মুছতে মুছতে মেঝেতে থাকা খাবার গুলো পরিষ্কার করতে লাগলো।

পর্ব-২০
———————————–
“কিছুদিন পর”
সকাল বেলা অর্পা তুন্নির হাতে মেহেদী লাগিয়ে দিচ্ছিল।আর মাহিমের মা বসে হাতে কপির কাপ।
প্রিয়ার বাড়ির ভিতরে মেঝেটা মুছছিল।
অর্পা:-তুন্নি মাহিম কোথায়? ও কি হাতে মেহেদি লাগাবে না নাকি?(তুন্নির হাতে মেহেদী লাগিয়ে দিতে দিতে)
তুন্নি:-ও তো সকাল বেলা বেরিয়ে গেলো।কতবার বললাম যে হাতে মেহেদী লাগিয়ে যা ও তো আমার কোন কথাই শুনলো না।
বলল যে তুই যা আমি পরে লাগিয়ে নিব।
মাহিমের মা:-তুন্নি তোমরা কি এখনো তুই তুই করে কথা বলো নাকি?
তুন্নি:-হ্যাঁ কেন আন্টি
মাহিমের মা:-কেন মানে সামনে তোমাদের বিয়ে আর তুমি বলছো কেন?
অর্পা:-হুমম সেটাই তো।আর তুমি মা কেও এখনো আন্টি বলছো কেন?
তুন্নি:-না মানে আপু প্রথম প্রথম তাই আসতে আসতে অভ্যেস হয়ে যাবে(লজ্জিত ভাবে)
একটু পর মাহিমের বাবা নিচে আসলো।এসে দেখলো প্রিয়া মেঝে মুছছিল মাহিমের বাবা প্রিয়ার কাছে আসতে আসতে
মাহিমের বাবা:-এই মেয়ে ভালো করে মুছো সামনে কিন্তু আমার ছেলের বিয়ে।অনেক দূর থেকে অনেক বড় বড় গেস্ট আসবে।কাজে যেন কোন ফাকি দেওয়া না হয়।
প্রিয়া:-হ্যাঁ বাবা আমি তো সব ঠিকঠাক মতোই করছি।মা যেমনটা বলে দিয়েছে তেমন ভাবেই বাড়ির সব কাজ করছি।
অর্পা:-এই প্রিয়া এই মা-বাবা বলাটা তোর কবে বন্ধ হবে?(রেগে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে)
মাহিমের বাবা:-আর মা-বাবা এইসব বলে না কোন লাভ নেই।এইসব বলে কাজে কোন সুবিধা হবে না।
প্রিয়া:-(কিছুক্ষন চুপ করে থাকার পর)বাড়ির কাজের মানুষরাও তো তাদের মালিকদের মা-বাবা বলে ডাকে।
আর আমার তো মা-বাবা বলে ডাকার মতো কেউ নেই।ধোরে নিননা আমিও সেইরকম ভাবেই ডাকছি।
“কিছুক্ষন পর”
মাহিম বাড়িতে ফিরলো।
মাহিম বাড়িতে ফেরার প্ররায় ১ঘণ্টার মতো হলো কিন্তু এখনো পর্যন্ত মাহিম সকালের ব্রেকফাস্ট তার রুমে আসলো না।
প্রিয়া বাড়ির কাজ করছিল এমন সময় উপর থেকে মাহিমের মা চিৎকার করে প্রিয়ার নাম ধরে ডাকছিল।মাহিমের মা এর চিৎকার শুনে প্রিয়া তারাতারি উপর গেলো।
প্রিয়া রুমে ঢুকতেই মাহিমের মা ঠাসস করে একটা চর বসিয়ে দিল প্রিয়ার গালে।প্রিয়া কিছুই বুঝতে পারলো না।
মাহিমের মা:-এখন কয়টা বাজে।সকাল ১০টা বেজে গেছে আর তুমি এখনো পর্যন্ত মাহিমের সকালের ব্রেকফাস্ট রুমে এনে দাওনি কেন(রাগি কন্ঠে)
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
মাহিমের মা:-কি হলো কখা বলছো না কেন?(রেগেই)
প্রিয়া কিছু না বলে অসহায় দৃষ্টিতে মাহিমের দিকে তাকিয়ে
প্রিয়া:-আপনি এটা কাউকে বলেননি?এটা তো সবার জানা উচিৎ।
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
প্রিয়া:-আপনি কাল রাতে নিজে আমাকে বলে দিয়েছেন যে আপনার আমার হাতের খাবার খেতে আপনার ঘৃণা লাগে।(কাঁদার মতো করে)
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
প্রিয়া:-আপনি তো হলেন আমার আসছয় দাঁতা,আপনার কথা তো আমি অমান্য করতে পারিনা।আপনি যখন আমার হাতে খাবার খেতে না করেছেন তখন তো আমি আর আপনার খাবারে হাত দিতে পারিনা।(চোখে জল নিয়ে)
মাহিম:-….
প্রিয়া:-আগে হলে হয়তো পারতাম জানেন এই আপনাদের বাসায় থেকে না আমি জেনে গেছি।যে জেচে কারো জন্য কিছু করলে তার দাম পাওয়া যায় না।(চোখে জল নিয়েই)
মাহিমের মা:-ঠিক আছে ঠিক আছে।যাও তুমি তোমার কাজে যাও আমি মাহিমের সকালের ব্রেকফাস্ট নিয়ে আসছি।
এইবলে মাহিমের মা রুম থেকে বেড় হয়েগেলো।
মাহিম দেখতে পেলো প্রিয়ার চোখে দিয়ে পানি পরছে। চরটা অনেক জোরেই লেগেছে।
প্রিয়া কিছুক্ষন দাড়িয়ে থাকার পর চোখে চোখে মুছতে মুছতে রুম থেকে বেড় হয়ে যাচ্ছিল এমন সময়
মাহিম:-আপনি কাল কোথায় গিয়ে ছিলেন?(প্রিয়ার পিছন থেকে)
প্রিয়া মাহিমের কথা শুনে দাগিয়ে গেলো।
প্রিয়া:-সময় হলে সব বুঝতে পারবেন।
এইবলে প্রিয়া রুম থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিল এমন সময়
তুন্নি:-প্রিয়া দাড়াও ১মিনিট(রুমে ঢুকতে ঢুকতে)
তুন্নি:-(প্রিয়া কাছে এসে)দেখ তুমি আমাকে উত্রর দিতে না চাও দিওনা।কিন্তু মাহিম তো তোমার কাছে এটা জানতেই পারে।কারণ তোমার কথা অনুযায়ী মাহিম তোমার আসছয় দাঁতা।তুমি এই বাড়িতে থাকছো খাচ্ছ আর তুমি কোথায় যাচ্ছ এটা এখনো পর্যন্ত কেউই জানেনা।
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
তুন্নি:-দেখো তুমি এখনো পর্যন্ত যখন এই রয়েছো তখনটা এটা সবার জানা উচিৎ।কারণ তোমার কিছু হয়েগেলে তখন তো এই বাড়ির সবাই তার দোষের ভাগিদারী হবে।বিশেষ করে মাহিম।
প্রিয়া:-….
তুন্নি:-তুমি আর কাউকে বলতে না চাও মাহিমকে বলো যে তুমি কোথায় যাও মাঝে মাঝে।
প্রিয়া:-ভয় নেই আমার কিছু হয়ে যাওয়ার আগেই আমি এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাব।
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
প্রিয়া:-এরজন্য যদি আমাকে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হয়।তাহলে আমি এক্ষনি এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাব।
তুন্নি:-তারপরেও তুমি বলবে না।
প্রিয়া:-না
মাহিম:-(প্রিয়ার কাছে আসতে আসতে)কি এমন গোপন জায়গায় যান যে বলা যাবেনা শুনি?(রেগে)
প্রিয়া:-কেন আপনি তো খুব ভালো করেই জানেন যে আমি কোথায় যাই(মাহিমের দিকে লক্ষ করে)
মাহিম কিছু বলতে যাবে ঠিক তখনি তুন্নি বলে উঠলো।
তুন্নি:-মাহিম আমাদের কিন্তু লেড হয়ে যাচ্ছে।এখনো প্রচর কেনাকাটা করতে হবে।
আর ১তারিখ আসতে কিন্তু আর বেশিদিন বাকি নেই।
মাহিম:-হুমম ঠিকি বলেছিস ১তারিখ আসতে আর বেশিদিন বাকি নেই।আসলে আগের বছরে ১তারিখে আমার জীবনে একটা বড় অবিশাপ এসে পরেছিল।
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
মাহিম:-আর সেই অবিশাপ থেকে আমি মুক্তি চাই।তাই এই ব্যাপারটা বাবা কে ১তারিখেই ঠিক করতে বলেছি।
প্রিয়া:-নিশ্চই আমাকে আপনাদের আর কিছু বলার নেই।না মানে আমার কাজ আছে আমাকে কাজে যেতে হবে(কাঁদার মতো করে)
তুন্নি:-না নেই যাও তুমি কাজে যাও।
এরপর প্রিয়া নিজের কাজে গেলো।
দুপুরের ঐদিকে সবাই মাহিম আর তুন্নির বিয়ে শপিং এর জন্য মার্কেটে গেলো।
“রাত ৯টা”
বাড়িতে কেউ নেই প্রিয়া ছাড়া।
প্রিয়া বাড়ির সমস্ত কাজ শেষ করে সবার জন্য রাতের ডিনার রেডি করে গোসল করে নিল।
অনেক বড় বাড়ি আর একটা মানুষ ও নেই প্রিয়া ছাড়া আর রাত ৯টা বেজে গেছে।
প্রিয়া একা একা কেমন জানি ভয় ভয় লাগছে।প্রিয়া বাড়ির দরজা লক করে রুমে বোসে আছে।
কিছুক্ষন বসে থাকার পর প্রিয়া আর বসে থাকে পারছেনা।তার মাথায় জ্বালা যন্ত্রণা শুরু হয়েগেলো।
প্রিয়া দুহাত দিয়ে তার মাথা চেপে ধরে সুয়ে পরলো।
না সুয়েও থাকতে পারছেনা।কেমন জানি বমি বমি লাগছে।মনে হচ্ছে পেটের ভিতরে যা আছে এক্ষনি সব বেড় হয়ে আসবে।প্রিয়া তারাতারি বিছানা থেকে উঠে বেসিনের সামনে গিয়ে বমি করার চেষ্টা করলো কিন্তু বমি হলো না।
কিছুক্ষন পর প্রিয়া অনুভাব করলো যে তার নাক দিয়া কিছু একটি বেড় হচ্ছে।
প্রিয়া মাথা উঠে আয়নার দিকে তাকাতেই দেখলো তার নাক দিয়ে রক্ত বেড় হচ্ছে।
প্রিয়া আয়নার দিকে তাকাতেই প্রিয়ার অজান্তেই চোখ দিয়ে পানি বেড় হতে লাগলো।
প্রিয়া মনে মনে ভাবতে লাগলো যে তার সময় শেষ হয়ে এসেছে।হয়তো আর কিছুদিন সে এই পৃথিবীতে থাকবে।তারপর চিরদিনের জন্য ঘুমিয়ে পরবে।এটা ভাবতেই প্রিয়ার চোখ দিয়ে গোরগোর করে পানি পরতে লাগলো।
কিছুক্ষন কাঁন্নাকাটি করার পর রক্ত গুলো মুছে ফ্রেশ হয়ে বেড় হয়ে আসলো।
আজকে প্রিয়ার মনটা অনেক খারাপ বলতে অনেক।আজকে নিজেকে অনেক একা একা লাগছে প্রিয়ার।
আসলে পৃথিবীটার নিয়মনটাই এমন যার আছে তো সবকিছুই আছে।যার নেই তো কিছুই নেই।আজকে প্রিয়ার খুবি একা একা অনুভাব করছে।প্রিয়া তার ব্যাগ থেকে তার মা-বাবার সেই ছবিটা বেড় করে বসে তাকিয়ে রইলো ছবিটার দিকে।
কিছুক্ষন তার মা-বাবার ছবিটার তাকিয়ে থাকার পর প্রিয়া অজান্তেই প্রিয়া চোখ দিয়ে পানি বেড় আসলো।
আজকে প্রিয়ার খুব ইচ্ছে করছে আপন কাউকে জরিয়ে ধরে কাঁদতে।তার মনের জোমে রাখা কষ্টের কথা গুলো বলতে।আপন কারো বুকে নিজেকে লুকিয়ে রাখতে। খুব ইচ্ছে করছে আপন কাউকে জরিয়ে ধরে কেঁদে কেঁদে বলতে””আমার অনেক ভয় লাগছে আমি এক্ষনি মরতে চাইনা আমি বাঁচতে চাই””

পর্ব-২১
———————————–
প্রিয়া তার মা-বাবার ছবি বুকে জরিয়ে ধরে কাঁন্না করছিল।
এমন সময় বাড়ির কলিংবেল বেজে উঠলো।
কলিংবেল এর শব্দ প্রিয়ার কানে পরতেই প্রিয়া তার কাঁন্না থামালো।তারপর তার মা-বাবার ছবিটা আবার ব্যাগে রেখে দিল।
তারপর চোখের জল মুছতে মুছতে রুম থেকে বেড় হয়েগেল।
প্রিয়া নিচে আসতেই হঠাৎ বাড়ির সমস্ত লাইট অফ হয়েগেলো।লাইট অফ হতেই প্রিয়া চমকে উঠলো।হালকা অন্ধকারে ভালো করে দেখা যাচ্ছে না।সে ভয় পেয়ে নিচেই দাড়িয়ে রইলো।
কিছুক্ষন পর আবার কলিংবেল বেজে উঠতেই প্রিয়া চমকে উঠলো।সে ভয় ভয় করে ধিরেধিরে দরজার কাছে গেলো।
প্রিয়া:-কেককে(কাঁপা কাঁপা কন্ঠে)
দরজার ওপাশ থেকে কোন উত্রর নেই।শুধু কলিংবেল বেজেই চলেছে।
প্রিয়া:-কে ককথা বলছে না কেকেন?(ভয় ভয় করে)
ওপাশ থেকে শুধু কলিংবেল বেজেই চলেছে।
প্রিয়া কি করবে বুঝতে পারছেনা।বাসাতে কেউই নেই তার উপর বিদ্যুৎ ও নেই বাড়ির সমস্ত লাইট অফ।
এমনিতেই প্রিয়ার ভয় লাগছে দরজার ওপাশে কে কোন কথাও বলছে না।শুধু কলিংবেল বাজিয়েই চলেছে।
প্রিয়া ভয় ভয় করে দরজার একদম কাছে গেলো।
তারপর ভয় ভয় করে দরজাটা খুললো কিন্তু কাউকেই দেখতে পেলো না।
প্রিয়া আরো অনেক ভয় পেয়ে দরজাটা বন্ধ করতে ঠিক তখনি হঠাৎ করে নীল চলে আসলো দরজার সামনে।
নীল:-সারপ্রাইজ
নীলকে দেখে প্রিয়া চমকে উঠে ভয়ে পিছন দেখে পিছিয়ে গেলো।
নীল:-কি ব্যাপার প্রিয়া ভয় পেয়েছো নাকি?(দরজায় দাড়িয়ে)
প্রিয়া:-নীল বাবু আআপনি(ভয় ভয় করে)
নীল:-হুমম আমি।
প্রিয়া:-বাবাড়ির আর সবাই কোথায়?
নীল:-আর সবাই তো এখনো শপিং করছে।
প্রিয়া:-আআপনি তাহলে আগে আসলেন কেকেন?
নীল:-তোমার জন্য
প্রিয়া:-(চমকে উঠে)মামানে?
নীল:-সবাইকে ফাকি দিয়ে তোমাকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য এলাম।আর এখন যদি তুমি এত প্রশ্ন করো তাহলে এটা কেমন দেখায় না প্রিয়া।
এইবলে নীল প্রিয়ার দিকে এগিয়ে আসতে লাগলো।
প্রিয়া:-দেখুন নীল বাবাবু বাসায় কেউ নেই।এমনিতেই আমার অনেব ভয় লাগছে।আআপনি প্লিজ চলে যান।
নীল:-আরে প্রিয়া আমি তার জন্যই তো এলাম।তোমার একা একা ভয় লাগবে বলেই তো আমি সবার আগেই চলে আসলাম।(প্রিয়ার তিকে এগোতে এগোতে)
প্রিয়া:-(ভয় ভয় করে)দেদেখুন আমি কিন্তু চিৎকার করে লোকজন জোরো করবো(পিছন দিকে পিছতে পিছতে)
নীল:-মানা করেছে কে।করো চিৎকার কোরো।(শয়তানি হাসি দিয়ে)
প্রিয়া পিছন দিকে পিছতে পিছতে দৌড়ে উপরে যেতে যাবে ঠিক তখন নীল প্রিয়ার হাতটা ধরে প্রিয়াকে নিজের কাছে টেনে নিল।
নীল:-কোথায় যাচ্ছ প্রিয়া?এমন একটা দিনের জন্য কতদিন ধরে অপেক্ষায় ছিলাম।আজ সেটার সুযোগ পেয়ে তো হাত ছাড়া করবো না।(প্রিয়ার মুখে দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়া:-প্লিজ নীল বাবু আমাকে ছেড়ে দিন(কেঁদে কেঁতে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে করতে)
নীল:-আরে প্রিয়া তুমি ভয় পাচ্ছ কেন?মাহিম আর তুন্নির বিয়ের পর তোমার আর আমার বিয়ে হবে।(প্রিয়ার হাতটা আরো শক্ত করে চেপে ধরে)
প্রিয়া:-প্লিজ নীল বাবু আমার হাতটা ছেড়ে দিন আমার লাগছে(কেঁদে কেঁদে)
এরপর নীল প্রিয়ার হাতটা ছেড়ে দিয়ে প্রিয়া কোলে উঠিয়ে নিল।তারপর প্রিয়াকে কোলে নিয়ে উপরে উঠতে লাগলো।
প্রিয়া কেঁদে কেঁদে নিজেকে অনেক ভাবে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে কিন্তু নীলের শক্তির সাথে কিছুতেই পেরে উঠতে পারছেনা।
এরপর নীল প্রিয়াকে কোলে করে রুমে নিয়ে আসলো।এসে প্রিয়াকে বিছানার উপর সুয়ে দিয়ে প্রিয়ার দুহাত দু দিকে চেপে ধরলো।প্রিয়া অনেক ভাবে কেঁদে কেঁদে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে কিন্তু পারছেনা।
এরপর নীল ধিরেধিরে প্রিয়ার মুখের কাছে নিজের মিখ এগিয়ে আনতে লাগলো।
নীল প্রিয়ার ঠোঁঠের সাথে নিজের ঠোঁঠ এক করতে যাবে ঠিক তখনি দরজা খোলার আওয়াজ ভেসে আসলো নীলের কানে।
নীলের কানে দরজা খোঁলার আওয়াজ আসতেই নীল চমকে উঠে ভয় পেয়ে পিছন দিকে তাকাতেই দেখলো মাহিম দাড়িয়ে দরজায়।তার দিকে রাগি চোখে তাবিয়ে আছে।
নীল মাহিমকে দেখে প্রিয়া পেচে ধরা হাত দুটো ছেড়ে দিতেই প্রিয়া দৌড়ে কেঁদে কেঁদে মাহিমের পিছনে গিয়ে দাড়িয়ে চোখের জল ফেলতে লাগলো।
তারপরেই অর্পা এসে সবকিছুই দেখলো।
নীল দেখতে পেলো অর্পার চোখ দিয়ে পানি পরতে লাগলো।
নীল:-মাহিম অঅর্পা তোমরা কখন এলে।(ভয় ভয় করে কাপা কাপা কন্ঠে)
এরপর অর্পা চোখে জল নিয়ে নীলের কাছে গিয়ে খুব জোরে ঠাসস করে একটা চর বসিয়ে দিল নীলের গাঁলে।
মাহিম নীলের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো।
নীল:-মাহিম দেদেখো আআমি তোমাকে সবকিছু ববলছি
মাহিম নীলের কোথার কোন কান না দিয়ে ঠাসস করে কয়েকটা চর বসিয়ে দিয়ে নীলে শর্ট এর কলার ধরে নিচে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো
!!!!!!
ভূমিকা করলে বড় হবে তাই শর্ট করে লিখছি।
!!!!!!!
নিচে সবার সামনে সবকিছু প্রিয়া কেঁদে কেঁদে বলার পর মাহিমের বাবাও অনেক কয়েকটা চর বসিয়ে দিল নীলের গালে।
অর্পা কিছু বলছিল না শুধু চোখের জল ফেলছিল আর দাড়িয়ে সবকিছু দেখছিল।
ঘটনাঅনুযায়ী নীলকে অপমান মারামারি করার পর
#সব_শেষে
মাহিম নীলের শর্ট এর কলার ধরে টেনে দরজার কাছে নিয়ে এক ধক্কা দিয়া বাড়ির বাহিরে ফেলে দিয়ে
মাহিম:-আর কোনদিনো যেন তোমাকে এই বাড়িতে না দেখি(রাগি কন্ঠে)
নীল:-(নিশ্চুপ)
মাহিম:-Next Time যদি আমার চোখের সামনে তোমাকে দেখি।তো সেদিনি তোমার লাইফের শেষ দিন হবে।(রাগি চোখের নীলের দিকে তাকিয়ে)
নীল কিছু বলছে না শুধু মাঠিতে পরে মাহিমের দিকে তাকিয়ে ছিল।
এরপর মাহিম বাড়ির দরজাটা বন্ধ করে দিল।
তারপর প্রিয়ার কাছে এসে প্রিয়ার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকার উপরে চলে গেলো।
সকাল ১০:৩০
প্রিয়া অর্পার রুমে গেলো।
প্রিয়া অর্পা রুমে এসে দেখলো অর্পা রুমে সুয়ে কাঁন্না করছে।
প্রিয়া অর্পার কাছে গেলো
প্রিয়া:-আপু চলুন খাবেন।
অর্পা প্রিয়ার কন্ঠ শুনে কাঁন্না থামিয়ে বোসে
অর্পা:-তুই যা আমার ক্ষিদে নেই।(চোখের জল মুছতে মুছতে)
প্রিয়া:-কালকে থেকে কিছু খাননি।
অর্পা:-ছোট্ট বেলা থেকেই কষ্ট কি জিনিস বুঝতে পারিনি।যখন যেটাই চেয়েছি তখন সেটাই পেয়েছি। কোন কিছুরী অভাব কি বুঝতে দেয়নি বাবা।চাওয়ার আগে সেটা পেয়ে যেতাম।
প্রিয়া:-……
অর্পা:-এখনো পর্যন্ত বাবা কোন কিছুরী অভাব হতে দেয়না।যেটাই চাই সেটাই বাবা দিয়ে দেয়।
প্রিয়া:-…….
অর্পা:-শুধু নীলের জন্য কালকে থেকে অনেক কাঁন্না করেছি অনেক কষ্ট হচ্ছে আমার।
কাল থেকে আমি বুঝতে পেরেছি আমি এতদিন তোর সাথে যা করেছি অন্যায় করেছি ভূল করেছি।আমি আমার ভূলটা বুঝতে পেরেছি,
প্লিজ প্রিয়া তুই আমাকে ক্ষমা করে দিস প্লিজ(হাত জোর করে কেঁদে কেঁদে)
প্রিয়া:-ছিঃ ছিঃ আপু আপনি আমার কাছে ক্ষমা চাইছেন কেন।আমি জানতাম আপনি একদিন ঠিক আপনার ভুলটা বুঝতে পারবেন।
অর্পা:-আমি শুধু শুধু তোকে এতদিন ভুল বুঝে কষ্ট দিয়েছি।আমি একটি বারের জন্য ভেবে দেখেনি যে তোর জায়গায় আমি থাকলে আমার কেমনটা লাগতো।সেটা আমি কাল থেকেই বুঝতে পেরেছি।প্লিজ আমাকে মাফ করে দিস(কেঁদেই কেঁদেই)
প্রিয়া:-আপনি আমার গুরুজন। আমি কিছুই মনে করেনি।আপনি ফ্রেশ হয়ে নিন আমি আপনার জন্য খাবার রেডি করে আনছি।
এইবলে প্রিয়া রুম থেকে বেড় হয়েগেলো।
অর্পার এমন ব্যাবহার দেখে প্রিয়ার অনেক আনন্দ লাগছে।এতদিনে এই বাড়ির অন্তত একজন আজ প্রিয়ার সাথে ভালোবেসে কথা বলছে।
প্রিয়া একটু আনন্দ নিয়েই অর্পার জন্য সকালের ব্রেকফাস্ট রেডি করছিল এমন সময় হঠাৎ করে প্রিয়ার মাথায় ব্যাথা যন্ত্রণা শুরু হয়েগেলো।প্রিয়া দাড়িয়ে থাকতে না পেরে সাথে সাথেই মাথা চেপে ধরে বসে চোখ বন্ধ করে ফেললো।
অনেক্ষন বসে থাকার পরেও কমছে না।তারপর উপায় না পেরে অনেক কষ্টে অর্পার ব্রেকফাস্ট রেডি করে দিয়ে আসলো।
আজকে সারাটা দিন প্রিয়ার ভালো লাগছে না।আজকে পছন্ড মাথায় যন্ত্রণা করছে।কিছুতেই কাজ করতে পারছে না।প্রিয়া রান্নাবান্না নিয়েই ব্যাস্ত।একটু বিশ্রাম নেওয়ার সময় পাচ্ছে না।
আজকের দিনটা প্রিয়ার অনেক কষ্টে কাঠলো।সেই সকাল থেকে শুরু হয়েছে মাথায় যন্ত্রণা রাত হয়েগেলো কিন্তু কিছুতেই কমছে না।শুধু বেড়েই যাচ্ছে।
বাহিরে বৃষ্টি হচ্ছে একটু শীত লাগছে।
আজকে সবাই একটু আগেই খেয়ে দেয়ে সুয়ে পরলো।মাহিম আর তুন্নি এখনো বাসায় ফেরেনি তারা দুজনি মাহিমের এক ফ্রেন্ড এর বাসা গিয়েছে invited করতে।
প্রিয়ার মাথায় অনেক যন্ত্রণা করছিল।
প্রিয়া বাড়ির কাজ গুলো শেষ করে একটু সুয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিল এমন সময় মাহিম রুমে আসলো।
প্রিয়া মাহিমকে দেখে তারাহুরো করে উঠে পরলো।
প্রিয়া বসা থেকে উঠে দাড়াতেই পারছেনা কেমন বমি বমি লাগছে।সে দাড়িয়ে না থেকে দ্রুত বেসিনের সামনে গিয়ে হরহর করে বমি করে দিল।
প্রিয়া দেখতে পেলো বমি সাথে তার নাক মুখ দিয়ে রক্ত বেড় হচ্ছে।প্রিয়া আয়নার দিকে তাকিয়ে ভাবতে লাগলো”-কাল থেকে আমার এমন কেন লাগছে এমন কেন হচ্ছে।তাহলে কি আমার সময় একিবারে শেষ হয়ে এসেছে-”
এটা ভাবতেই প্রিয়ার চোখ দিয়ে জল গরিয়ে পরতে লাগলো।
“-ছোট্ট থেকে এখনো পর্যন্ত অবহেলা অপমান ছাড়া কারো একটু কাছে একটু ভালোবাসা পায়নি।
বিয়ের পর নিজের স্বামীকে ভালোবেসে তার কাছ থেকে অবহেলা অপমান ঘৃণা ছাড়া কখনো তার
ভালোবাসা পায়নি।স্বামীর ভালোবাসা আদর সোহাগ কী সেটা আমি একটা মেয়ে হয়ে বিয়ের পরেও তা বুঝতে পারিনি।বরং মৃত্যুর আগে নিজের স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে দেখে মরতে হবে।
সেই ছোট্ট থেকে যেখানেই যাই সেখানেই সবার মাথায় বোজা হয়ে থাকি।
মৃত্যুর পরেও আর কারো মাথায় বোজা হয়ে থাকতে চাইনা।আমার কিছু হয়ে যাওয়ার আগেই এই বাড়ি ছেড়ে আমাকে চলে যেতে হবে।
অনেক দূরে যেন মৃত্যুর পরেও আমার লাশটা কারো বোজা হয়ে না থাকে।(কেঁদে কেঁদে আয়নার দিকে নিজেকে দেখতে দেখতে মনে মনে)
এভাবে আরো কিছুক্ষন কান্না করার পর রক্ত গুলো মুছে ফ্রেশ হয়ে বেড় হয়ে আসলো প্রিয়া।
প্রিয়া রুমে এসে দেখলো মাহিম চেঁয়ারে বোসে জানালা দিয়ে বাহিরের বৃষ্টি দেখছে।
প্রিয়া মাহিমের কাছে গেলো
প্রিয়া:-আপনাকে একটা কথা বলার ছিল(মাহিমের পিছন থেকে)
মাহিম প্রিয়ার কন্ঠ শুনে প্রিয়ার দিকে একবার তাকালো।তারপর চেঁয়ার থেকে উঠে
মাহিম:-আমার সাথে
প্রিয়া:-হুমম
মাহিম:-বলুন কি কথা
প্রিয়া:-না মানে একটা জিনিস চাইবো আপনার কাছে
মাহিম:-কি এমন জিনিস বলুন
প্রিয়া:-আমি কোদিন আপনার কাছে কিছু চায়নি।আর হয়তো চাইবোও না।আজকে চাইবো দিতে হবে কিন্তু?(মাহিমের দিকে তাকিয়ে)
মাহিম দেখতে পেলো প্রিয়াকে আজকে একটু অন্যরকম লাগছে।প্রিয়ার কথা গুলোও অন্য লাগছে।এর আগে কথা বললে শুধু ঝগড়াই করতো
কিন্তু আজকে একদম শান্ত শিষ্ট ভাবে কথা বলছে একদম নিষ্পাপ দেখাচ্ছে প্রিয়াকে।
প্রিয়া:-কি হলো কথা কলছেন না কেন?
মাহিম:-(চমকে উঠে)না কিছু না বলুন কি জিনিস
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
মাহিম:-কি হলো বলুন কি জিনিস?(প্রিয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়া কিছু না বলে মাহিমের একদম কাছাকাছি চলেগেলো।মাহিম কিছুই বুঝতে পারছেনা।অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো প্রিয়ার দিকে।
প্রিয়া:-একটা রাত চাই আপনার কাছে(মাহিমের চোখে দিকে তাকিয়ে)
মাহিম:-মামানে?(অবাক হয়ে প্রিয়ার চোখের দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়া:-মানে শুধু একটি রাতের জন্য আমি আমার স্বামীর অধিবার টুকু চাই।(মাহিমের চোখের দিকে তাকিয়েই)
মাহিম:-কি ববলছেন কি আপনি?(প্রিয়ার চোখের দিকে তাকিয়েই)
প্রিয়া:-ধরে নীননা এটাই আমার শেষ চাওয়া।আর কোনদিনও আপনার কাছে কিচ্ছু চাইবো না।কোনদিনও না।
মাহিম কিছু বলতে ঠিক তখনি প্রিয়া মাহিমের শার্ট এর কলার ধরে টেনে বিছানায় প্রিয়ার উপরে সোয়ালো মাহিমকে।
প্রিয়া:-প্লিজ শুধু একটি রাত আপনার কাছে নিলজ্জের মতো ভিক্ষা চাইছি।প্লিজ মাহিম বাবু।
এরপর প্রিয়া মাহিমকে আরো কাছে টেনে নিয়ে চোখ বন্ধ করে মাহিমের ঠোঁঠের সাথে নিজের ঠোঁট এক করে দিল।মাহিমের ঠোঁঠের ছুয়া প্রিয়া ঠোঁঠে পেতেই প্রিয়ার সারা শরিল কেঁপে উঠতেই প্রিয়া আরো শক্ত করে মাহিম শার্ট এর কলার চেঁপে ধরলো।

পর্ব-২২
———————————–
অর্পা:-প্রিয়াআআআ..! এই প্রিয়াআআআআা..!(নিচ থেকে চিৎকার করে)
অর্পার চিৎকার মাহিমের কানে পরতেই মাহিমের ঘুম ভেঙ্গে যায়।মাহিম ধিরেধিরে চোখ খুলার চেষ্টা করছে কিন্তু পারছেনা।ঘুমে আবার চোখ বন্ধ হয়ে আসছে।
কালকের রাতটা মাহিমের কাছে ছিল একটু অন্যরকম।
তাই এখনো চোখ থেকে ঘুমটা কিছুতেই কাঠছে না।
কিছুক্ষন চোখ বন্ধ করে থাকার পর অর্পা আবার প্রিয়ার নাম ধরে ডাকছিল।
“-কি ব্যাপার প্রিয়া তো এতক্ষন ঘুমিয়ে থাকার না।ও তো খুব সকাল সকালই উঠে।তাহলে আপু ওর নাম ডাকছে কেন?প্রিয়া কি এখনো ঘুমিয়ে আছে নাকি?(সুয়েই মনে মনে)
এরপর মাহিম উঠে বসে পরলো।আর মেঝেতে লক্ষ দেখলো প্রিয়া নেই।
এরপর তারাহুরো করে উঠে নিচে গেলো।
মাহিম নিচে এসে দেখলো আজকে অর্পাই সবকিছু রান্নাবান্না করছে।সবাই জন্য ডায়নিং টেবিলে খাবার রেডি করছে।
মাহিম চারদিকেই লক্ষ করলো কিন্তু প্রিয়াকে কোথাও দেখতে পেলো না।এরপর মাহিম অর্পা কাছে যেতেই
অর্পা:-কিরে এখনো ফ্রেশ হসনি কেন?যা গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আয়(টেবিলে খারার রেডি করতে করতে)
মাহিম:-আপু তুমি এইসব করছো কেন? প্রিয়া কোথাও??
অর্পা:-প্রিয়া কোথায় মানে? প্রিয়া রুমে নেই?(মাহিমের দিকে তাকিয়ে)
মাহিম:-না নেই।
অর্পা:-সে কি আমি তো ভাবলাম প্রিয়ার হয়তো শরিল টরিল খারাপ তাই এখনো উঠেনি।এরজন্যই তো আমি সবকিছুই করছি।
মাহিম:-(কিছুক্ষন চুপ করে থাকার পর)তাহলে প্রিয়া গেলো কোথায়
অর্পা:-কোথায় আর যাবে দেখ হয়তো বাদরুম গেছে।তুই উঠে দেখতে পারিসনি।
মাহিম অর্পার কথা শুনে মাহিম উপরে চলে গেলো।
উপরে এসে বাদরুমের দরজার সামনে দাড়িয়ে পরলো।মাহিম বাদরুমের দরজার সামনে দাড়িয়ে প্রিয়াকে ডাকতে যাবে ঠিক তখনি মাহিমের কানে একটা আওয়াজ ভেসে আসলো।শব্দটা শুনে মনে হচ্ছে ভিতরে কেউ আছে।গাঁয়ে পানি ঠালছে।
বাদরুমের ভিতরে কেউ আছে।তার মানে প্রিয়াই হবে।এটা ভেবে মাহিমের ভয়টা কেটে গেলো।এমনি সময় মাহিমের কালকের রাত্রির কথা মনে পরে গেলো।প্রিয়ার সাথে কাঠানো কালকে রাতের মুহূর্ত গুলো মাহিমের চোখের সামনে বার বার ভেসে উঠতে লাগলো।প্রিয়ার সাথে কাঠানো প্রথম রাত প্রিয়াকে প্রথম স্পর্শ করা।প্রিয়ার ঠোঁঠের সাথে নিজের ঠোঁঠের মিষ্টি সেই সম্পর্কের মুহূর্ত গুলো।
এইসব মুহূর্ত মাহিমের চোখের সামনে ভেসে উঠতেই মাহিমের মুখে একটু হাসি ফুটে উঠলো।
এরপর মাহিম শান্ত হয়ে রুমের ভিতরে আসলো।
“কিছুক্ষন পর”
মাহিম একটা তাওালা ঘারে নিয়ে বাদরুম দিকে এগিয়ে আসতেই বাদরুম থেকে ভেজা চুলে তুন্নি বেড় হয়ে আসলো।মাহিম তুন্নিকে দেখতেই থমকে গেলো
মাহিম:-তুন্নি তুই???(অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে)
তুন্নি:-হুম আমি(মাহিমের দিকে তাবিয়ে)
মাহিম:-তুই আমার বাদরুমে কেন?
তুন্নি:-আরে আমি যেই রুমে থাকি সেই রুমের বাদরুমে পানি আসছিল না।তাই গোসল করতে তোর বাদরুম এলাম।কেন কি হয়েছে??
মাহিম:-(কিছুক্ষন চুপ করে থাকার পর)না কিছু না।
তুন্নি:-ওকে ফ্রেশ হয়ে নিচে আয় আমি তোর জন্য ওয়েট করছি।
মাহিম:-হুমম
এরপর তুন্নি চলেগেলো।মাহিম ভাবতে লাগলো।
“-প্রিয়া গেলো কোথায় কালকে রাতে ওর কথা ব্যাবহার এমন কি প্রিয়াকে দেখতেও সবকিছু আলাদা লাগছিল।কালকের রাতের পর আমার মনে হয় না যে প্রিয়া আমার উপর রাগ করে এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাবে।
এরআগে ওর সাথে অনেক রাগারাগি ঝগড়া এমন কি গাঁয়ে হাত পর্যন্ত তুলেছি।
কিন্তু তার পরেও প্রিয়া এই বাড়ি চলে যায়নি।আর কাল রাতের পর তো চলে যাওয়ার কোন প্রশ্নই উঠেনা।
তাহলে প্রিয়া আজকে বাড়ি ছেড়ে চলেগেলো কেন?
আর যদি চলেই যায় তাহলে আমার সাথে কাল রাত কাঠালো কেন?নিশ্চই এর মাঝে কোন অহস্য রয়েছে।
যেটা আমি জানিনা যে করেই হোক আমাকে এটা জানতেই হবে।তারপর কি হবে হবে।(একা একা দাড়িয়ে মনে মনে)
নিচে সবাই একসাথে ডায়নিং টেবিলে বোসে সকালের ব্রেকফাস্ট করছিল।এমন সময় তুন্নি দেখতে পেলো মাহিম উপর থেকে ফ্রেশ হয়ে নিচে আসছিল।
তুন্নি:-কোথায় যাচ্ছিস?(মাহিমের দিকে লক্ষ করে)
মাহিম:-বাহিরে আমার একটু কাজ আছে
মাহিমের বাবা:-কিসের কাজ?
মাহিম:-বাবা আমি প্রিয়াকে খুঁজতে যাচ্ছি।
মাহিমের বাবা:-ঐ মেয়ে কে আবার খুঁজতে যাওয়ার কি আছে।ঐ মেয়ে তো প্ররাই প্ররাই এভাবে বাসা থেকে চলে যায় সারাদিন কোথায় কোথায় কি কি করে আর রাতের বেলায় বাসায় ফিরে।আজকেও যখন গেছে তখন ঠিকি রাতের বেলাই বাসায় ফিরবে।কোন দরকার নেই খোঁজার।(রেগে)
মাহিম:-বাবা প্রিয়া আগেও এভাবে চলে যেতো আবার ফিরে আসতো সেটা ঠিক।বাট আজকে আমার মনে হচ্ছে না যে ও ফিরবে।
তুন্নি:-মাহিম একটা কাজে মেয়ে এই বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে তাকে আবার খুঁজে ফিরিয়ে আনার কি আছে।
মাহিম:-হুম ঠিক বাট এতদিন একটা মেয়ে বাসায় কাজ করার পর হঠাৎ না বলে এভাবে কেন চলে গেলো সেটা আমি মানুষ হিসাবে আমার জানা দায়িত্ব বলে মনে করি।
তুন্নি:-প্রিয়ার হয়তো এই বাড়িতে কাজ করতে আর ভালো লাগেনা তাই চলে।
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
মাহিমের মা:-মাহিম সামনে তোমার বিয়ে।কোথায় তুমি এইসব নিয়ে ব্যস্ত থাকবে না।
তা না করে তুমি একটা কাজের মেয়ে কে নিয়ে কে নিয়ে টেনশন করছো।আর ভালোই হয়েছে প্রিয়া বাড়ি ছেড়ে চলেগেছে।ওর মতো একটা গাইয়্যা অশিক্ষিত মেয়ে আমাদের বাড়ির কাজের মেয়েও হওয়ারও যোগ্য নয়।
মাহিম:-আমার যা বলার আমি বলেছি।
এইবলে মাহিম গাড়ি নিয়ে প্রিয়াকে খুঁজতে বেড় হলো।
আসার সময় তুন্নি পিছন থেকে এত করে ডাকলো কিন্তু মাহিম তার কোন উত্রর না দিয়ে বেরিয়ে পরলো।
“সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা”
সারাটা দিন মাহিম প্রিয়াকে অনেক জায়গায় খোঁজলো।কিন্তু কোথায় পেলো না।
অবশেষে কোন উপায় না পেয়ে ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফিরলো মাহিম।
মাহিম বাসায় ফিরতেই তুন্নি খেতে বললো কিন্তু মাহিম খাবেনা বলে রুমে এসে দরজা লক করে দিল।
এরপর ফ্রেশ হয়ে চেঁয়ারে বোসে পরলো।মাহিম চেঁয়ারে বোসে ভাবতে লাগলো প্রিয়া কোথায় গেলো কোথায় যেতে পারে।এমন সময় মাহিমের শিহাবের কথা মনে পরে গেলো।
এরপর মাহিম ফোনটা হাতে নিয়ে শিহাবের নাম্বারে কল দিল।প্রথম বার রিং হলো কিন্তু কেউই রিসিভ করলো না।
তারপর আবার ট্রাই করছিল এমন সময় রিসিভ করলো।
মাহিম:-হ্যাঁলো(ফোনে)
শিহাব:-হুমম হ্যাঁলো(ফোনে)
মাহিম:-আমি মাহিম চিনতে পারছেন??
শিহাব:-হুমম আপনার নাম্বার আমার ফোনে সেভ করা আছে।হঠাৎ কি মনে করে?
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
শিহাব:-কি হলো চুপ করে আছেন কেন?
মাহিম:-হুম জ্বী বলুন
শিহাব:-আমি আবার কি বলবো আপনি তো ফোন দিয়েছেন কিসের জন্য ফোন দিয়েছেন আপনি বলুন।
মাহিম:-(কিছুক্ষন চুপ করে থাকার পর)না মানে প্রিয়া কি আপনার ঐখানে আছে
শিহাব:-কে প্রিয়া,ও তো কোনদিন আমার এখানে আসেইনি।ওর কি আমার এখানে আসার কথা নাকি?
মাহিম:-আমি যেটা বলছি সেটার Answer দিন।(একটু রেগে)
শিহাব:-না কেন প্রিয়া বাসায় নেই।
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
শিহাব:-কোথায় গেছে কিছু বলে যায়নি
মাহিম:-বলে গেলে কি আপনাকে জিগ্যেস করতাম(একটু রাগি কন্ঠে)
শিহাব:-কখন বেরিয়েছে
মাহিম:-ভোর বেলা।
শিহাব:-ভোর বেলা বেরিয়েছে আপনারা খোজাখোজি করেননি
মাহিম:-করেছি বাট কোথাও পেলাম না।তাই ভাবলাম দেখি আপনার ঐখানে গিয়েছে নাকি
শিহাব:-আচ্ছা প্রিয়ার সাথে আপনার ঝগড়া ঝাটি হয়নি তো
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
শিহাব:-ঝগড়া করে কোথাও চলে যায়নি তো?মান অভিমান হয়েছে
মাহিম:-আপনি হয়তো সবকিছু জানেনা তাই এইসব কথা বলছেন।আমি রাখলাম যদি প্রিয়ার কোন খোঁজ পেয়ে যান তো আমাকে জানাবেন।
এইবলে মাহিম লাইনটা কেটে দিল।তারপর ফোনটা রেখে দিয়ে চেঁয়ারে মাথা দিয়ে চোখ বন্ধ করে প্রিয়ার কথা ভাবতে লাগলো।কোথায় যেতে পারে কোথায় গেলো প্রিয়া।প্রিয়ার কিছু হয়ে যায়নি তো?…!
>(-এর আগে যা ঘটে ছিল-)<
প্রিয়া মাহিমকে আরো কাছে টেনে নিয়ে চোখ বন্ধ করে মাহিমের ঠোঁঠের সাথে নিজের ঠোঁট এক করে দিল।মাহিমের ঠোঁঠের ছোয়া প্রিয়া ঠোঁঠে পেতেই প্রিয়ার সারা শরিল কেঁপে উঠতেই প্রিয়া আরো শক্ত করে মাহিম শার্ট এর কলার চেঁপে ধরলো।
(শর্ট করে দিলাম বাকিটা আপনারা বুঝে নিবেন)
ভোর বেলা প্রিয়ার ঘুম ভেঙ্গে যায়।প্রিয়া চোখ খুলতেই দেখলো মাহিম প্রিয়াকে তার বুকে সাথে জরিয়ে ধরে আছে।প্রিয়ার একদম মাহিমের বুকের কাছে মাহিমের প্রতিটি শ্বাসপ্রশ্বাস এর শব্দ শুনতে পারছে।প্রিয়ারাও ইচ্ছে করছে সারাজীবন এভাবে মাহিমের বুকে নিজেকে লুকিয়ে রাখতে।কিন্তু প্রিয়াকে তো যেতে হবে অনেক দূর যেখানে আর কেউই তাকে খুজে না পায়।মাহিম প্রিয়াকে এমন ভাবে জরিয়ে ধরে আছে যে প্রিয়া চাইলেও নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে পারছেনা।
কিছুক্ষন চেষ্টা করার পর অনেক কষ্টে প্রিয়া নিজেকে মাহিম কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে উঠে পরে।প্রিয়া উঠে মাহিমের দিকে তাকালো দেখলো মাহিম এখনো ঘুমিয়েই আছে।মাহিমকে ঘুমন্ত আবস্তায় দেখতে একটু অন্যরকম লাগছে।প্রিয়া মাহিমের কাছে এসে বোসলো”-আর হয়তো কখনো তোমার বুকে মাথা রাখতে পারবো না তোমাকে দেখতেও পারবো না।আমাকেও আর কোনদিন দেখতে পারবে না আমিও আর চাইনা তোমাকে দেখাতে।যখন তুমি আমায় বলেছি যে তুমি আমাকে ভালোবাসো তখন আমার বোনের সাথে তোমার বিয়ে ঠিক হয়েছিল।তাই তোমায় সেদিন অবহেলা অপমান করছি যাতে তুমি আমায় ভূল বুঝো আমাকে ভূলে যাও আমাকে দুরে সরিয়ে দাও।
সেদিন তুমি আমার থেকে যতটা কষ্ট পেয়েছো তার চেয়ে বেশি কষ্ট আমি পেয়েছি তোমার গাঁয়ে হাত তুলে।সেদিন বাড়ি ফিরার পর অনেক কাঁন্না করেছি অনেক কেন জানো আমাকে ভালোবাসি বলে।তোমার এবং তোমার বাসার লোকজনের এত অবহেলা অপমান মাইর খাওয়ার পরেও কেন পরে থাকতাম জানো শুধু তোমার জন্য।তুমি যখন আমায় খারাপ খারাপ কথা গুলো বলো আমার গাঁয়ে হাত তুলো আমাকে বাসা ছেড়ে চলে যেতে বলো তখন জানো আমার অনেক কষ্ট হয় অনেক।তারপরেও আমি সব সয্য করে পরে থাকতাম তোমার একটু ভালোবাসা পাওয়ার জন্য।আমি ভাবতাম একদিন না একদিন তুমি ঠিকি ভালোবেসে আমাকে তোমার বুকে টেনে নিবে।কিন্তু যেদিন জানতে পারলাম যে তুমি আর আমাকে নয় তুমি তোমার ফ্রেন্ড তুন্নিকে ভালোবাসো।তারপর থেকেই তোমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা ছেড়ে দেই।সেদিনি আমি তোমাদের বাসা ছেড়ে তোমার জীবন থেকে চলে যেতাম কিন্তু ডাক্তারের কাছে যখন জানতে পারলাম যে আমি আর ২/৩মাস বাঁচবো তখন আর চলে যেতে পারলাম না।
ছোট্ট বেলায় মা বাবা কে যখন ভালোবাসলাম তখন তেনারা আমায় ছেড়ে চলে গেলেন।তারপর যখন নিজের মামীকে ভালোবেসে আপন করে মা এর কষ্টটা দূর করতে চাইতাম তখন মামী প্রতিটা মুহূর্তেই আমাকে অবহেলা অপমান করে দূরে সরিয়ে দিতেন।
আর তোমাকে ভালোবেসে কখনো তোমার ভালোবাসা পায়নি।তাই ঠিক করলাম যে যতদিন বাঁচবো ততদিন এখানেই থেকে যাব।আর কিছু পাইবা না পাই তোমাকে দেখে মরতে পারবো।সামনে তোমার বিয়ে আর আমার সময় শেষ হয়ে এসেছে।এমনিতেই আমি সবার মাথায় বোজা হয়ে আছি।মৃত্যুর পরেও যেন আমার লাশটা আর কারো মাথায় বোজা হয়ে না থাকে।
তাই আমার কিছু হয়ে যাওয়া আগেই আমি চলে যাচ্ছি অনেক দূরে যেখানে আর কেউই আমাকে খুঁজে না পায়।ভালো থাকবে আর কোদিনও আসবো না ফিরে।(মাহিমের দিকে তাবিয়ে কেঁদে কেঁদে মনে মনে)
এভাবে প্রিয়া মাহিমের দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে কাঁন্না করার পর মাহিমের গাঁলে আলতো করে একটা চুমু খেলো।তারপর সবাই উঠার আগেই প্রিয়া চোখের মুছতে মুছতে রুম থেকে বেড় হয়েগেলো।

পর্ব-২৩
———————————–
পরের দিন সকাল বেলা মাহিম ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট করে অফিসে চলেগেলো।মাহিম অফিসে গিয়ে কিছুতেই কাজে মন লাগাতে পরছে না।শুধু প্রিয়ার কথা মনে পরছে।প্রিয়ার সাথে কাঠানো রাতটার কথা মনে পরছে প্রিয়া সাথে কাঠানো সেই মুহূর্ত গুলো তার চোখে ভেসে উঠছে।প্রিয়া কেন এমন করলো আর কেনই বা চলেগেলো এইসব ভাতেই মাহিমের মাথায় ঘুরতে লাগলো কিছুই অফিসের কাজ করতে পারছেনা।
লান্স এরপর মাহিম গাড়ি নিয়ে প্রিয়ার গ্রাম এ যাওয়া উদ্দিশ্যে রওনা হলো।
রাস্তায় জ্যাম থাকায় প্রিয়ার মামার বাড়িতে আসতে সন্ধে হয়ে আসলো।
মাহিম প্রিয়ার মামা বাড়ির সামনে গাড়িটা সাইট করে গাড়ি থেকে নেমে পরলো।
এরপর মাহিম বাড়ির ভিতরে ঢুকতেই দেখলো প্রিয়ার মামা বারান্দায় চেঁয়ারে বোসে।হাতে কিসের যেন একটা পেপার আর অনি সেই পেপারটা দিকে তাকিয়েই আছেন।
এরপর মাহিম অনার কাছে গিয়ে
মাহিম:-আসসালামু-আলাইকুম।
প্রিয়ার মামা:-(মাহিমের দিকে তাকিয়ে)ওআলাইকুমসালাম।আরে বাবা তুমি(খুশি হয়ে বসা থেকে উঠতে উঠতে)
মাহিম:-জ্বী
প্রিয়ার মামা:-কখন এলে?
মাহিম:-এইতো একটু আগেই।আপনার শরিল কেমন আছে এখন?
প্রিয়ার মামা:-এইতো বাবা আল্লাহ্ একটু সুস্থ করেছে। এই রহিমা দেখো কে এসেছে(এরপর মাহিমের দিকে তাকিয়ে)তোমার মা-বাবা সবাই কেমন আছে?(রহিমা প্রিয়ার মামী)
মাহিম:-জ্বী ভালো।প্রিয়া কোথায়?
প্রিয়ার মামা:-ও একটু বাহিরে গেছে।
মাহিম:-যাক তাহলে প্রিয়া এখানেই আছে(মনে মনে)
কথা বলতে প্রিয়ার মামী রুম থেকে বেড় হয়ে আসলো
প্রিয়ার মামী:-আরে জামাই বাবা যে কহুন আসলে গো বাবা(খুশি হয়ে কাছে আসতে আসতে)
মাহিম:-এইতো একটু আগেই আসলাম।
প্রিয়ার মামী:-তয় তোমারা আব্বা আম্মায় কেমন আছে গো বাবা?
প্রিয়ার মামা:-আহা এখন বেশি কথা না বলে যাও জামাই বাবাকে ভিতরে নিয়ে খাইয়ে দাইয়ে ভালো করে বিশ্রাম নেওয়ার ব্যবস্থা করে দাও।অনেক দূর থেকে এসেছে।
প্রিয়ার মামী:-হুমম ঠিকি কইছো।আসো বাবা ভিতরে আসতো
মাহিম:-না মানে বলছিলাম কি প্রিয়া কোথায় গেছে কখন আসবে?
প্রিয়ার মামা:-ও একটু বাজারে গেছে আমার ঔষধ আনতে।আমি কত বার বললাম যে আমি যাচ্ছি ও বলল যে এখনো নাকি আমি পুরোপুরি সুস্থ হয়নি তাই আমাকে যেতে দিল না।যাও তুমি ভিতরে গিয়ে বিশ্রাম নেও প্রিয়া এসে যাবে।
এরপর মাহিমকে ভিতরে নিয়ে গিয়ে খাইয়ে দাইয়ে ভালো একটা রুমে বিশ্রাম নেওয়া ব্যবস্থা করে দিল প্রিয়ার মামী।
>(-এর আগে-)<
শিহাব:-আচ্ছা প্রিয়ার সাথে আপনার ঝগড়া ঝাটি হয়নি তো
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
শিহাব:-ঝগড়া করে কোথাও চলে যায়নি তো?মান অভিমান হয়েছে
মাহিম:-আপনি হয়তো সবকিছু জানেনা তাই এইসব কথা বলছেন।আমি রাখলাম যদি প্রিয়ার কোন খোঁজ পেয়ে যান তো আমাকে জানাবেন।
এইবলে মাহিম লাইনটা কেটে দিল।তারপর ফোনটা রেখে দিয়ে চেঁয়ারে মাথা দিয়ে চোখ বন্ধ করে প্রিয়ার কথা ভাবতে লাগলো।কোথায় যেতে পারে কোথায় গেলো প্রিয়া।প্রিয়ার কিছু হয়ে যায়নি তো?…!
প্রিয়া সারাটা দিন একটা কাজের জন্য অনেক খোঁজা খুজি করলো কিন্তু কোথায় একটা থাকা খাওয়ার কাজের ব্যবস্থা করতে পারলো না।
সেই ভোর বেলা না খেয়ে বাসা থেকে বেড় হয়েছে আর তখন থেকেই এখনো পর্যন্ত না খেয়েই আছে।সারাটা দিন খাওয়া দাওয়া না করায় প্রিয়ার মুখ টুখ কেমন সুখিয়ে গেছে।ভালো করে হাঁতেও পারছে না মাথাটা কেমন জানি একটু যন্ত্রণা করছে।
প্রিয়া কোথাও কোন ব্যবস্থা করতে না পেরে রাস্তারমর এক সাইট দিয়ে হাঁটছিল আর ভাবছিল”-রাত হয়ে আসলো কোথাও একটু থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করতে পারলাম না।এই রাতে একা একটা মেয়ে কোথায় যাই কার যাই।(এইসব ভাবতেই প্রিয়ার চোখের কোনায় পানি চলে আসলো)
প্রিয়া রাস্তার এই সাইট থেকে ঐসাইট যাচ্ছিল এমন সময় হঠাৎ একটা গাড়ি এসে প্রিয়াকে ধাক্কা দিতেই প্রিয়া চিৎকার দিয়ে নিচেতে পরে গেলো।
প্রিয়া নিচে পরতেই গাড়ি চালক গাড়ির ভিতর থেকে তারাহুরো করে মেনে
গাড়ি চালক:-স্যরি স্যরি আমি আসলে দেখতে পারিনি।আপনার কোথায় লাগেনি তো?(প্রিয়ার কাছে যেতে যেতে)
প্রিয়া মাথা উঠিয়ে গাড়ি চালক দিকে তাকাতেই
গাড়ি চালক:-(অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে)প্রিয়া তুমি?.
প্রিয়া দেখতে পেলো গাড়ি চালক আর কেউ নয়”শিহাব”
প্রিয়া শিহাব কে দেখি উঠে পরলো।
শিহাব:-প্রিয়া তুমি এতরাতে কোথায় যাচ্ছিলে?বাড়িতে ফিরে নাকি তোমার মামার বাড়িতে?
প্রিয়া:-বাড়িতে ফিরে মানে আপনি কোন বাড়ির কথা বলছেন শিহাব ভাই(অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে)
শিহাব:-তোমার Husband একটু আগে আমাকে ফোন করে তোমার কথা জিগ্যেস করছিল।তুমি নাকি রাগ করে বাড়ি থেকে বেড় হয়ে এসেছো।তাই বললাম যে তোমার শ্বাশুড় বাড়িতে নাকি তোমার মামার বাড়িতে যাবে?
প্রিয়া:-সত্যিটা বললে সবাই সবকিছু যেনে যাবে।যতদিন বেঁচে আছি ততদিন সবাই যেটা জানে সেটা থাকুক।আমার কিছু হয়ে যাওয়ার পর কি হবে হবে।তাছাড়া আমার সময় একিবারে শেষ হয়ে এসেছে।এইসব বলে আর কাউকে টেনশন ফেলতে চাই না।(মনে মনে)
শিহাব:-কি ভাবছো বলো কোথায় যাবে?
প্রিয়া:-না মানে গ্রামে যাব।
শিহাব:-প্রিয়া দেখ স্বামী স্ত্রীর মাঝে এইসব ঝগড়া ঝাটি মান অভিমান হয়েই থাকে তাই বলে এমনটা করা ঠিক না।
প্রিয়া:-শিহাব ভাই আপনি সবটা জানেন না তাই এইসব বলছেন।
শিহাব:-মাহিমও এটাই বলছিল যে আমি নাকি সবটা জানিনা সবটা কি আমাকে বলা যাবে?
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
শিহাব:-ওকে আমি তোমাদের স্বামী স্ত্রীর মাঝে ঢুকতে চাইনা।আমি মাহিমকে ফোন করে জানিয়ে দেই।
এইবলে শিহাব মাহিমকে ফোন করতে যাবে ঠিক তখনি
প্রিয়া:-(চমকে উঠে)না না তার কোন দরকার নেই।
শিহাব:-আচ্ছা চলো তোমাকে বাড়িতে পৌছে দেই।
প্রিয়া:-আমি বললাম তো গ্রামে যাব।আপনি কোথায় যাচ্ছিলেন যান শিহাব ভাই।
শিহাব:-রাত হয়েছে তো বাসে করে গেলে অনেক রাত হয়ে যাবে।চলো গাড়িতে উঠো আমি তোমাকে পৌছে দিয়ে আসি।
প্রিয়া:-না শিহাব আমার জন্য আপনাকে এত কষ্ট করতে হবে না।আমি বাসে করেই চলে যেতে পারবো।
শিহাব:-আরে উঠো তো অনেক পর দেখা হলো।অন্তত এটা টুকু তো করতে দাও।গাড়িতে উঠো গল্প করতে করতে যাই।
প্রিয়া যেতে চাইছে না কিন্তু শিহাব প্রথমে মিথ্যে বলে এখন নাও করতে পারছে না।
শেষমেশ কোন উপায় না পেয়ে গাড়িতে উঠে শিহাব সহ রহনা হলো গ্রামের উদ্দিশ্যে।
গ্রাম এ আসতে আসতে অনেক রাত হয়েগেলো।
শিহাব প্রিয়ার মামার বাড়ির সামনে গাড়িটা ব্রেক করে প্রিয়া সহ বাড়ির ভিতরে আসলো।
এরপর বাড়ির সবাইকে ডেকে উঠালো।সবাই বেরিয়ে আশা পর।শিহাব যে টুকু জানে সে টুকু সবাইকে বললো। তারপর প্রিয়াকে রেখে চলেগেলো।যাওয়া সময় প্রিয়ার মামা মামাী অনেক বার বললো থেকে যেতে কিন্তু শিহাব শুধু বলল:-আমার ইমার্জিন্সি Hospital এ যেতে হবে।”এটা বলে চলেগেলো।
শিহাব চলে যাওয়া পর প্রিয়া তার মামীর কাছে এসে
প্রিয়া:-বিশ্বাস করো মামী আমি আসতে চায়নি শিহাব ভাই আমাকে জোর করে নিয়ে আসলো।আমি কথা দিচ্ছি আমি কাল ভোর হতেই চলে তুমি শুধু প্লিজ আজকে রাত টুকু আমাকে থাকতে দাও।প্লিজ আমাকে বাড়ি থেকে বেড় করে দিওনা(কেঁদে কেঁদে তার মামীর পাঁয়ের কাছে বসে হাত জোর করে মিনতি করতে করতে)
প্রিয়ার মামী কিছুক্ষন প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে থাকার পর প্রিয়াকে দুহাত দিয়ে ধোরে উঠিয়ে
প্রিয়ার মামী:-পাগলী মাইয়্যা একটু থাকার জায়গার গাইগা এইভাবে মামীর কাছে হাত জোর কইরা কাঁনতে হয়।
প্রিয়া তার মামীর কথা শুনে একদম থমকে গেলো।সে কান্না থামিয়ে অবাক দৃষ্টিতে তার মামী মুখে দিকে তাকিয়ে রইলো।
প্রিয়ার মামী:-এটা তো তোরি বাড়ি শুধু আজকার রাতটা কেন তুই চাইলে সারাজীবন এই বাড়িতে থাকবি।
প্রিয়া:-মামী তুমি এইসব কি বলছো
প্রিয়ার মামী:-হ্ আমি ঠিকি কইতাছি রে মা।আমি সেই ছোট্ট কালথাইকা তোর লাগে অনেক অন্যনায় করছি।একটা মা-বাপ মরা মাইয়্যা রে বিনাকারনে কষ্ট দিছিলাম রে মা।আমি এহন বুঝবার পারছি আমি অনেক বড় ভূল হরছি আমারে ক্ষমা কইরা দিস রে মা(কেঁদে কেঁদে হাত জোর করে)
প্রিয়া:-মামী তুমি আমার গুরুজন আমার মায়ের মতো আমার কাছে ক্ষমা চাওয়া এটা মানায় না।(চোখে জল নিয়ে)
প্রিয়ার মামী:-তুই আমারে ক্ষমা না করলে আল্লায় আমারে কোনদিও ক্ষমা করবো না রে মা।(কেঁদে কেঁদে হাত জোর করেই)
প্রিয়া:-আমার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে না।আমার মা নেই বলে তাই ছোট্ট বেলায় তোমার কাছে বার বার যেতাম মা এর অভাবটা না বোঝার জন্য। তুমি যে তোমার ভূলটা বুঝতে পারছো এটাই আমার কাছে অনেক(কেঁদে কেঁদে)
প্রিয়ার মামী:-আজ থাইকা তুই আমারে মা কইয়া ডাকি।আয় আমার বুকে আয়।(কেঁদে কেঁদে দুহাত প্রিয়ার দিকে বারিয়ে দিয়ে)
এরপর প্রিয়া দৌড়ে গিয়ে তার মামীকে জরিয়ে ধরলো আর দুজনিই দুজনকে জরিয়ে ধরে হাওমাও করে কাঁদতে লাগলো।
>(-এরপর-)<
“কিছুক্ষন পর”
মাহিম রুমে বোসে বিশ্রাম নিচ্ছিল এমন সময় প্রিয়া রুমে আসলো।প্রিয়া রুমে আসতেই মাহিম বসা থেকে উঠে প্রিয়ার চোখে দিকে অন্যরকম একটা মায়া নিয়ে তাকিয়ে রইলো।প্রিয়াও কিছুক্ষন মাহিমের চোখে দিকে তাকিয়ে থাকার পর চোখ সরিয়ে নিয়ে।
প্রিয়া:-আপনি এখানে কেন এসেছেন?
মাহিম কিছু বলছে না এখনো সেই ভাবেই তাকিয়েই আছে প্রিয়ার দিকে
প্রিয়া:-কি হলো কথা বলছেন না কেন? বলুন কেন এসেছেন?
এরপর মাহিম চোখ সরিয়ে নিয়ে।
মাহিম:-আপনি এভাবে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি ছেড়ে চলে এসেছেন কেন?
প্রিয়া:-ওহ শুধু এটা জানার জন্য?(মাহিমের দিকে তাবিয়ে)
মাহিম:-আমি যেটা Question করেছি সেটার Answer দিন আগে(রেগে প্রিয়ার কাছে এগিয়ে এসে)
প্রিয়া:-তার আগে বলুন আপনি কি শুধু এটা জানার জন্য এসেছেন?(মাহিমের মুখের দিকে তাকিয়ে)
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
প্রিয়া:-কি হলো বলুন?
মাহিম:-(কিছুক্ষন চুপ করে থাকার পর)হুমম শুধু এটা জানার জন্যই।
প্রিয়া:-ওহ তাহলে শুনুন আমি আপনাদের বাসার কাজের মেয়ে।আমার আপনাদের বাসায় আর কাজ করতে ভালো লাগছিল না তাই চলে এসেছি।এবার আপনি আসতে পারেন।(অন্যদিকে মুখ করে)
মাহিম কিছুক্ষন প্রিয়ার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকার পর
মাহিম:-আমি চলে যাব কিন্তু আপনাকেও আমার সাথে যেতে হবে।(প্রিয়ার পিছন থেকে)
প্রিয়া:-কেন আমাকে যেতে হবে কেন?(মাহিমের দিকে মুখ করে)
মাহিম:-একটা কাজের মেয়ে হঠাৎ এভাবে চলে আসতে পারে না।
প্রিয়া:-কেন পারে না।(রেগে)
মাহিম প্রিয়াকে আজকে যতই দেখছে ততই অবাক হচ্ছে।সেদিনের রাতের প্রিয়া আর আজকের প্রিয়া একদম সম্পূর্ণ আলাদা লাগছে।কোন মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
মাহিম কিছুক্ষন চুপ করে প্রিয়ার দিকে তাবিয়ে থাকার পর
মাহিম:-(একদম শান্ত ভাবে)আপনার কি হয়েছে বলুন তো কেন এমন করছেন(প্রিয়ার কাছে এসে)
প্রিয়া:-আমি আপনার সাথে আবার কি করলাম(মাহিমের মুখের দিকে তাকিয়ে)
মাহিম:-আমার সাথে এমন করে কথা বলছেন কেন?কি হয়েছে আপনার প্লিজ আমাকে সব খুলে বলুন
প্রিয়া:-(মাহিমের কাছ থেকে সরে গিয়ে)দেখুন মাহিম বাবু আমার কিচ্ছু হয়নি।আপনি যেটা জানতে চেয়েছেন সেটা জেনেগেছেন এবার আপনি আসতে পারেন।(বিরক্তিকর ভাবে)
মাহিম:-প্লিজ বলুন না।
প্রিয়া:-বললাম তো আমার কিছু হয়নি আপনি চলে যান(রাগি কন্ঠে)
মাহিম:-না যাবো না।
প্রিয়া:-আপনাকে আমি বার বার চলে যেতে বলছি তবুও চলে যাচ্ছেন না কেন?আপনার একটু লজ্জ করে না(মাহিমের দিকে তাকিয়ে)
মাহিম:-(কিছুক্ষন চুপ করে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে থাকার পর)না করে না।
প্রিয়া:-নিলজ্ঝেে ব্যাহায়া কোথাকার
এইবলে প্রিয়া রুম থেকে বেড় হয়ে যাচ্ছিল এমন সময়
মাহিম:-বাহ্ আমি নিলজ্ঝেে হয়ে গেলাম।(প্রিয়ার পিছন থেকে)
প্রিয়া মাহিমের কথা শুনে দাড়িয়ে গেলো।
মাহিম:-নিলজ্ঝেের মতো আমি কোন কাজটা করলাম বলুন আমায়(প্রিয়ার কাছে যেতে যেতে)
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
মাহিম:-আরে অপিশিয়ালী হলেও আপনি এখনো পর্যন্ত আপনি আমার স্ত্রী।
প্রিয়া:-….
মাহিম:-আমি যদি চাইতাম না আপনাকে আমি আমার ঘরে বেধে রেখে দিতাম।আমার বিছানায় বেধে রাখতাম।
প্রিয়ার মাহিমে কথা শুনে মাহিমের মুখে দিকে তাকালো।
মাহিম:-হ্যাঁ তার অধিকার ছিল আমার।কিন্তু আমি সেই অধিকারে অপক্ষ ব্যবহার করেনি।
প্রিয়া:-…..
মাহিম:-যা গন্ডগুল ঘটে ছিল সেটা সেদিন সেই রাতে।তাও আবার আপনার ইচ্ছায়
প্রিয়া:-মাহিম বাবু আপনার যা জানার তা জানা হয়েগেছে এখন আপনার যাওয়া উচিৎ(মাহিমের কাছে এগিয়ে এসে রাগ দেখিয়ে)
মাহিম:-রাগ দেখাবেন না আমায় আমি কিছু ভূল বলিনি।(প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
মাহিম:-আমি যদি চাইতাম না আপনি আমার বিছানা ছেড়ে অন্য কোথাও যেতে পারতেন না।এডলিস আমার বিয়ে পর্যন্ত।
প্রিয়া:-আপনি সত্যি একটা বাজে অসভ্যলোক(রেগে)
মাহিম:-এই হচ্ছে আপনার সমস্যা আপনি সত্যি কথাটা সয্য করতে পারছেন না।
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
মাহিম:-আমি যেই রাতের কথা বলেছি আমি কি ভুল বলেছি কিছু??(প্রিয়ার দিকে তাকিয়েই)
প্রিয়া:-…
মাহিম:-সেই রাতে কোন ভূমিকা ছিল আপনার?নিজেকে উজার করে দেননি আমাকে?এতই যদি খারাপ ভাবেন আমাকে ঘৃণা করেন তাহলে নিজেকে উজার করে দিয়ে ছিলেন কেন?
প্রিয়া:-মাহিম বাবু আপনি এবার থামুন প্লিজ আমি আর এইসব কথা শুনতে পারছি না।আপনি কত নিচে নামাবেন নিজেকে?(কাদার মতো করে)
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
প্রিয়া:-এই যেই কথা গুলো আপনি বলছেন আমাকে। এই কথা গুলো যদি আমি আপনার তুন্নিকে বলে দেই তাহলে কি হবে?(মাহিমের দিকে তাকিয়ে)
মাহিম:-কি আর হবে যেটা সত্যি সেটাই তো বলছি।
প্রিয়া:-তাহলে আপনি বরং তুন্নিকেই বলুন।আমার এইসব কথা শুনতে একদম ভালো লাগছেনা।(রাগ দেখিয়ে)
এইবলে প্রিয়া রুম থেকে বেড় যাচ্ছিল এমন সময় মাহিম প্রিয়ার একহাত ধরে টেনে কাছে নিয়ে আসলো
মাহিম:-একদম এত রাগারাগি ভালো নয়(প্রিয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়া:-আপনি না সত্যি একটা বিকৃত মনের মানুষ(কাদো কাদো ভাবে মাহিমের দিকে তাকিয়ে)
মাহিম:-আর কতকিছু বলবেন আমায়??
প্রিয়া:-আপনাকে যতই ছোট্ট কথা বলা যায়।মনে হয় সেটাও কম।আরো অনেক ছোট্ট কথা আপনার পাওয়া না।(কাঁদার মতে করে)
মাহিম:-এখন এইসব কথা বলছেন ঠিকি কিন্তু সেই রাতে একটাও খারাপ কথা বলেননি আমাকে। যঠেষ্ট আদর করে ছিলেন আমাকে।মনে আছে আপনার?
প্রিয়া:-ভূল করে ছিলাম।পাপ করেছি আমি।সেই পাপটার কথা ভাবলে এখন আমার গাঁ ঘৃণ ঘৃণ করে হয়েছে(কাদার মতো করে বিরক্তিকর ভাবে)
মাহিম কিছুক্ষন চুপ করে থাকার পর
মাহিম:-তাহলে এই পাপটা কি করে ধোওয়া হবে?
প্রিয়া:-জানি তো আমি।এই পাপ সারাজীবনও আমার শরিল থেকে যাবে না।কখনই না।
মাহিম:-না না আমি একটা উপায় বলে দিতে পারি।যাতে আপনার শরিল থেকে চিরদিনের মতো এই পাপটা ধোওয়া যায়।
প্রিয়া:-হ্যাঁ হ্যাঁ বলুন তো বলুন।কি করলে এই পাপটা চিরদিনের জন্য আমার শরিল থেকে মুছে যাবে।এই পাপটা মুছে ফেলার জন্য আমি সব করতে রাজি বলুন আপনি(বিরক্তিকর হয়ে কাঁদো কাঁদো ভাবে)
মাহিম:-কেন আপনার শিহাব ভাইয়ের কাছে গেলেই তো আপনার….
মাহিম আর কিছু বলার আগেই প্রিয়া রেগে মাহিমের শর্ট এর কলার টেনে ধরে
প্রিয়া:-মাহিম বাবু আপনি যদি আর একটাও বাজে কথা বলেন না।তাহলে আমি কিন্তু একদম খুন করে ফেলবো আপনাকে(কাদার মতো করে মাহিমের শর্ট এর কলার টেনে ধরে)

পর্ব-২৪
———————————–
মাহিম:-(প্রিয়ার হাত দুটো সরিয়ে দিয়ে)বলেছি না রাগ দেখাবেন না আমায়।আপনি আপনার পাপ মুছে ফেলতে চাইছেন তাই তো বললাম।
প্রিয়া:-…
মাহিম:-এছাড়া তো আর কোন উপায় নেই।ভূল যখন করেছেন তখন এবার তাহলে শুধরেনিন।
প্রিয়া:-(কিছুক্ষন মাহিমের দিকে চুপ করে তাকিয়ে থাকার পর)মাহিম বাবু আপনি সত্যি একটা নোংরালোক অসভ্য চরিত্রহীন মানুষ একজন(রেগে মাহিমের দিকে তাকিয়ে কাঁদার মতো করেই)
এইবলে প্রিয়া রুম থেকে বেড় হয়ে যাচ্ছি এমন সময়
মাহিম:-এই কই যাচ্ছেন ড়াদান(প্রিয়ার হাত ধরে কাছে টেনে নিল)বলুন না কি হয়েছে আপনার(শান্ত ভাবে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়া:-আপনাকে আসলে আমি আর কি বলল কি বলা উচিৎ।সেটাই খোঁজে পাচ্ছি না।(মাহিমের চোখে দিকে তাকিয়েই)
মাহিম:-কিচ্চু বলতে হবে না আপনাকে।আপনি শুধু বলুন কি হয়েছে আপনার কেন এমন করছেন?
প্রিয়া:-(ঝটকা দিয়ে হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে)বললাম তো আমার কিছু হয়নি।তার পরেও আপনি কেন এক কথা বার বার জিঙ্গেস করছেন আমাকে(রেগে বিরক্তিকর ভাবে)
মাহিম:-
প্রিয়া:-আর আমার কিছু হলেও বা আপনার কি?আমি তো আপনার কেউ না(রেগে)
মাহিম:-…
প্রিয়া:-আর কিছু হলেও কেনই বা বলবো আপনাকে?কে হন আপনি আমার?সামনে তো আপনার বিয়ে।আমার কি হলো না হলো এইসব নিয়ে তো আপনার ভাবার কথা না।(রাগি কন্ঠে মাহিমের দিকে তাকিয়ে)
মাহিম কিছু বলছে না প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
প্রিয়া:-দেখুন আমি আপনাদের বাসায় কাজ করে খেতাম আপনাদের বাসার কাজের মেয়ে আমি।আগে কাজ করতাম এখন আমার আপনাদের বাসায় কাজ করতে ভালো লাগেনা তাই চলে এসেছি।সো আপনার আর কোন অধিকার নেই আমার উপর।
মাহিম এখনো নিশ্চুপ শুধু প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে প্রিয়ার কথা গুলো শুনছে।
প্রিয়া:-আমার কি হলো না হলো এইসব জানার কোন অধিকারী আপনার নেই।
আমিও আপনার কেউ না আপনিও আমার কেউ না।আপনি এখানে এসেছেন আমাকে দয়া করতে তো তাহলে শুনুন।আমি চাই না আপনার দয়া।(রাগি কন্ঠে মাহিমের দিকে তাকিয়েই)
এইবলে প্রিয়া রুম থেকে বেড় হয়ে যাচ্ছিল এমন সময়
মাহিম:-তাহলে সেই রাতে আমি আপনার কে ছিলাম(প্রিয়ার পিছন থেকে)
প্রিয়া মাহিমের কথা শুনে থমকে গেলো।
তারপর পিছন দিকে ঘরে মাহিমের দিকে তাকালো।
মাহিম:-যেই রাতে নিজেকে উজার করে দিয়ে ছিলেন আমার কাছে।সেই রাতে আমি আপনার কে ছিলাম।(রেগে প্রিয়ার কাছে আসতে আসতে)
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
মাহিম:-কি হলো বলুন কে ছিলাম সেই রাতে আমি আপনার?(প্রিয়ার একদম কাছে এসে)
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
মাহিম:-চুপ রইলেন যে? বলছেন কেন?সেই রাতে আমি আপনার কে ছিলাম।বলবেন নাকি ধরে নিব যে আপনি আসলেই একজন চরিত্রহীন মহিলা।
প্রিয়া এখনো নিশ্চুপ কিছুই বলছে না।
মাহিম:-আপনি শুধু চরিত্রহীন নন আপনি একজন স্বার্থপরও বটে।এতদিন আপনাকে আমাদের বাসায় কাজের ব্যবস্থা করে দিলাম খাওয়ার ব্যবস্থাও করে দিলাম।এমন কি আমার রুমেও আপনাকে থাকতে দিলাম।কিন্তু তার বিনিময় আমি কিছুই পেলাম না।
প্রিয়া:-(কিছুক্ষন চুপ করে থাকার পর)কেন তার বিনিময় আমি আপনাকে দিয়েছি তো।একটি রাত।আপনি তো এটাই চাইছিলেন তাই না।(মাহিমের চোখের দিকে তাকিয়ে)
মাহিম:-মানে কি বলতে চাইছেন আপনি সেদিন রাতে আপনি আপনার রিন শোধ করেছেন তাই তো
প্রিয়া:-ধরে নিন সেটাই(রেগে বিরক্তিকর ভাবে)
মাহিম:-তার মানে কি আপনি আপনার রিন এভাবেই শোধ করেন কি তাই তো??
প্রিয়া:-আপনার মতো অসভ্য মানুষ এইসব ছাড়া আর কিবা ভাবতে পারে
মাহিম:-একটু আগে যেটা বললাম তার উত্ররটা দিন(প্রিয়ার কাছে এসে)
প্রিয়া:-হুমম এভাবেই শোধ করি হয়েছে কি করবেন মারবেন আমাকে(রেগে বিরক্তিকর ভাবেই)
প্রিয়া কথাটা বল সাথে সাথেই মাহিম রেগে প্রিয়ার একহাত ধরে ঝটকা দিয়ে একদম তার কাছে টেনে নিয়ে হাতটা চেপে ধরে।
মাহিম:-এই আপনার সাহস হলো কি করে আপনি আমার সামনে দাড়িয়ে আপনি আমাকেই এইসব বলতে।(রাগি কন্ঠে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়া:-মাহিম বাবু হাতটা ছাড়ুন আমার লাগছে(হাতটা ছাড়ানোর চেষ্টা করে)
মাহিম:-আমার সামনে দাড়িয়ে আপনার এইসব কথা বলতে একটু ভয় করছে না(রেগে প্রিয়ার হাতটা আরো শক্ত করে চেপে ধরে)
প্রিয়া:-না করছে না ছাড়ুন আমাকে(রেগে ঝটকা দিয়ে হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে)
মাহিম:-….
প্রিয়া:-দেখুন আপনার যা যা জানার ছিল তা সবকিছুই আপনার জানা হয়েগেছে।এবার আপনি এক্ষনি এখান থেকে চলে যান বলছি (রাগ দেখিয়ে)
মাহিম কিছু বলতে যাবে এমন সময় মাহিমের ফোনটা বেজে উঠলো।মাহিম ফোনটা বেড় করে দেখলো তুন্নি ফোন করেছে।মাহিম একবার প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে ফোনটা রিসিভ করলো।
মাহিম:-হ্যা বল(ফোনে)
তুন্নি:-কিরে কোথায় তুই আমি সেই কখন থেকে তোর জন্য অয়েট করে আছি।(ফোনে)
মাহিম:-আমি আজকে বাসায় ফিরবো না।তুই খেয়ে সুয়ে পর।
তুন্নি:-কেন কোথায় তুই?
মাহিম:-আমি একটা কাজে বাহিরে এসেছি।আজকে আর ফিরতে পারবো না।
তুন্নি:-কি এমন কাজ যে আজকে বাসায় ফিরবি না(রেগে)
মাহিম:-সেটা কাল আমি তোকে বাসায় ফিরে বলবো।বাই এখন রাখছি।
এইবলে মাহিম ফোনটা কেটে দিল।তারপর প্রিয়ার দিকে কিছুক্ষন চুপ করে তাকিয়ে থাকান পর।
মাহিম:-কাল ভোর হতেই আমি চলে যাব।(অভিমানী সুরে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে)
এইবলে মাহিম বিছার উপর গিয়ে সুয়ে পরলো।
প্রিয়া কিছুক্ষন চুপ করে মাহিমের দিকে তাকিয়ে থাকার পর রুম থেকে বেড় হয়েগেলো।
“কিছুক্ষন পর”
প্রিয়া রুমে আসলো।
প্রিয়া রুমে আশার পর দরজাটা লাগিয়ে দিল।
তারপর বিছানার কাছে আসলো।এসে দেখলো মাহিম ঘুমিয়ে পরেছে।কিছুক্ষন মাহিমের মুখের দিকে অন্যরকম একটা মায়ার দৃষ্টিতে নিয়ে তাকিয়ে থাকার পর।বিছানার চাদরটা মাহিমের গাঁয়ে উপর টেনে দিল।
তারপর মেঝেতে বিছানা করে ঘুমিয়ে পরলো।
“মাঝ রাতে”
কারো ভয়ানক শব্দে প্রিয়ার ঘুম ভাঙ্গে।প্রিয়া বুঝতে পারছে না শব্দটা কোথা থেকে আসছে।প্রিয়ার সুওয়া থেকে উঠে বসে পরলো।শব্দটা বিছানার উপর থেকে আসছে।
প্রিয়া ভয় পেয়ে তারাতারি উঠে লাইট টা অন করলো।তারপর মাহিমের কাছে গেলো।
প্রিয়া মাহিমের কাছে আসতেই দেখলো অমন করছে।
প্রিয়া কিছুই বুঝতে পারছে না মাহিম এমন করছে কেন?
প্রিয়া মাহিমকে ঘুম থেকে ডাকতে মাহিমের গাঁয়ে হাত দিতেই দেখলো জ্বরে মাহিমের গাঁ পুরে যাচ্ছে।সারা শরিল কাঁপছে মাহিমের।প্রিয়া মাথায় হাত দিয়ে দেখলো মাহিমের মাথা দিয়ে যেন আগুন বেড় হচ্ছে।যত তারাতারি সম্ভব মাথায় পানি দিতে হবে।
মাহিমের হঠাৎ এই অবস্থা দেখে প্রিয়ার কেন জানি চোখ দিয়ে পানি বেড় হয়ে আসলো।
প্রিয়া অনেক্ষন মাহিমকে ডেকে উঠানোর চেষ্টা করলো কিন্তু পারলো না।প্রিয়া কি করবে বুঝতে পারছে না।
তারপর কোন উপায় না পেয়ে প্রিয়া তার মামীকে ডেকে আনলো।
প্রিয়ার মামী এসে মাহিমকে দেখে মাহিমের হাতে পায়ে তেঁল মালিশ করতে লাগলো আর প্রিয়াকে বলল মাহিমের মাথায় পানি ঠালতে।
“কিছুক্ষন পর”
প্রিয়ার মামী দেখলো মাহিমের গাঁয়ের কাঁপুনিটা থেমে গেছে।
আর হাত পা গুলোও প্ররাই ঠান্ডা হয়ে এসেছে।
এরপর প্রিয়ার মামী প্রিয়াকে বলল অন্যরুম থেকে কম্বল আনতে।প্রিয়া দৌড়ে গিয়ে অন্যরুম থেকে কম্বল আনার পর।প্রিয়ার মামী ভালো করে মাহিমের গাঁয়ে কম্বলটা দিয়ে দিল।আর প্রিয়াকে বলল মাহিমের কপালে জল পট্টি দিয়ে দিতে।
এইবলে প্রিয়ার মামী রুম থেকে বেড় হয়েগেল।
এরপর প্রিয়া বসে বসে মাহিমের কপালে জল পট্টি দিয়ে দিচ্ছিল আর চোখের জল মুছছিল।
“সকাল বেলা”
প্রিয়া মাহিমের কপালে জল পট্টি দিতে দিতে যখন যে ঘুমিয়ে পরেছে বুঝতে পারেনি।প্রিয়া চোখতেই দেখলো মাহিম উঠে পরেছে মাহিম ভালো করে দাড়াতে পারছে না।প্রিয়া মাহিমকে দেখে তারাহুরো করে উঠে
প্রিয়া:-আরে আপনি এত সকাল সকাল উঠে পরলেন কেন?(মাহিমের কাছে যেতে যেতে)এরপর(মাহিমের গায়ে হাত দিয়ে)এমা এখনো তো দেখছি জ্বর আছেই আপনার গাঁয়ে।আপনি সুয়ে পরুন।
মাহিম:-আপনাকে কিচ্চু করতে হবে না আমার জন্য।আমি চলে যাচ্ছি।
এইবলে মাহিম রুম থেকে বেড় হয়ে যাচ্ছিল এমন সময় প্রিয়া মাহিমের সামনে দাড়িয়ে গেলো। মাহিমের দিকে তাকিয়ে দেখলো জ্বরে মাহিমের চোখ গুলো কেমন লাল হয়েগেছে।
প্রিয়া:-যতক্ষণ পর্যন্ত না আপনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠছেন।ততক্ষণ পর্যন্ত আপনার কোথা যাওয়া হচ্ছে না।(মাহিমের দিকে তাকিয়ে)
মাহিম:-কেন কাল রাতে তো থাকতেই দিচ্ছিলেন।চলে যেতে বলে ছিলেন আমাকে(রেগে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়া:-যখন বলে ছিলাম চলে যেতে তখন যখন জান্নি তখন আপনার যাওয়ার হবে না।আপনি পুরোপুরি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত।(শান্ত ভাবে মাহিমের চোখের দিকে তাকিয়ে)
মাহিম:-কাল রাতে যখন আপনি বলেছেন চলে যেতে তখন আমি চলে যাবই।(রাগ দেখিয়ে)
প্রিয়া:-আচ্ছা ঠিক আছে আমার ভূল হয়েছে আমি ভূল বলেছি।(কাঁদার মতো করে)
মাহিম:-পথ ছাড়ুন বলছি(রেগে)
প্রিয়া:-প্লিজ মাহিম বাবু আমার কথাটা শুনুন।
মাহিম:-আমি আপনার কোন কথাই শুনতে চাই না।আপনি সড়ুন বলছি(রাগ দেখিয়ে)
প্রিয়া:-আপনার গাঁয়ে এখনো অনেক জ্বর।এই অবস্থায় আপনি গাড়ি চালিয়ে যেতে পারবেন না।আমি বললাম তো আমি ভূল বলেছি ক্ষমা চাইছি তো আপনার কাছে।আপনি প্লিজ এমন করবেন না।(হাত জোর করে কাঁদার মতো করেই)
মাহিম:-আমি চাই না আপনার দয়া সড়ুন বলছি।(রাগি চোখে প্রিয়া দিকে তাকিয়ে)
এইবলে মাহিম রেগে প্রিয়াকে হালকা ধাক্কা দিতেই প্রিয়া দরজার সাথে ধাক্কা লেগে কপাল কেটে রক্ত বেড় হয়ে আসলো।মাহিমও দেখলো পেলো প্রিয়ার কপাল কেটে রক্ত ঝরছে।

পর্ব-২৫
———————————–
মাহিম চলে যাওয়ার পর প্রিয়ার অজান্তেই তার চোখ দিয়ে পানি বেড় হয়ে আসলো।
মাহিম সকাল সকাল গাড়ি নিয়ে শহরের উদ্দির্শে রওনা দিল।আশার সময় প্রিয়ার মামাী এত করে বলল খেয়ে যেতে মাহিম শুধু বলল”আমার কাজ আছে আমাকে যেতে হবে”এইবলে মাহিম চলে আসলো।
“কিছুক্ষন পর”
মাহিম চলে যাওয়া পর প্রিয়ার মাথায় কেমন জানি যন্ত্রণা করছিল প্রিয়া চোখ বন্ধ করে মাথা চেপে ধরে সুয়ে আছে।
এমন সময় প্রিয়ার মামী প্রিয়াকে চিৎকার দিয়ে ডাকতে লাগলো।প্রিয়া তার মামী চিৎকার শুনে বেড় আসতেই প্রিয়ার মামী প্রিয়াকে কেঁদে কেঁদে বলল যে মাহিমের Accident হয়েছে।আর মাহিমকে Hospital a নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
প্রিয়ার মামীর কথা শুনতেই প্রিয়ার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পরলো।প্রিয়ার পায়ের নিচ যেন মাঠি সরে গেল,প্রিয়ার কাছে পুরো পৃথিবীটা ঘুরতে লাগলো।
প্রিয়া নিজেকে সামলিয়ে নিল।
প্রিয়া:-তুমি এইসব কি বলছো মামী?(হতাশ হয়ে)
মামী:-হ্ আমি ঠিকি কইতেছি তোর মামা এহনি ফোন করেছিল(কেঁদে কেঁদে)
প্রিয়া আর দাড়িয়ে না থেকে কেঁদে কেঁদে পাগলির মতো ছুটতে লাগলো Hospital এর দিকে।
মাহিমকে Hospital a নিয়ে যাওয়ার পর ডাক্তার তারাতারি ইমার্জিন্সিতে নিয়ে গেলো।
“কিছুক্ষন পর”
প্রিয়া Hospital এর ভিতরে আশার পর দেখলো ইমারজিন্সি রুমের বাহিরে তার মামা দাড়িয়ে আছে।
প্রিয়া তার মামাকে দেখার পর দৌড়ে তার মামার কাছে
প্রিয়া:-মামা উনার কিছু হয়নি তো উনি ঠিক আছে।বলো না মামা প্লিজ বলো আমায়(কেঁদে কেঁদে)
প্রিয়া কেঁদে কেঁদে এইসব কথা তার মামাকে বলছিল এমন সময় ডাক্তার সাহেব বেড় হওয়ে আসতেই প্রিয়া ডাক্তারের কাছে ছুটে গেলো
প্রিয়া:-ডাক্তার বাবু কি অবস্থা উনার উনি ঠিক আছে।উনার কিছু হয়নি তো?কেমন আছে আছে উনি এখন(কেঁদে কেঁদে)
ডাক্তার:-দেখুন উনার মাথায় আর বুকে অনেক বেশিই আঘাত পেয়েছে।এখনো কিছুই বলতে পারছি না।
ডাক্তারের কথা শুনে প্রিয়ার কান্না আরো বেরে গেলো।
ডাক্তার:-দেখুন এখন কান্নাকাটির সময় নয়,উনার শরিল থেকে অনেক রক্তক্ষরণ হয়েছে।ইমারজিন্সি দুব্যাগ A- ব্লড লাগবে।আমাদের Hospital a A-
ব্লড শেষ হয়েছে।আমরাও চেষ্টা করছি ব্লড ম্যানেজ করার আপনারাও করুন।
এইবলে ডাক্তার চলে যাচ্ছিল এমন সময়
প্রিয়া:-ডাডাক্তার বাবু কি ব্লড গ্রুপের কথা যেন বললেন?
ডাক্তার:-A-(প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়া:-আআমি দিব,আমার A-ব্লড(কেঁদে কেঁদেই)
ডাক্তার:-ওহ তাহলে ভালোই হলো।তারাতারি আসো আমার সাথে Quick।
এরপর প্রিয়া মাহিমকে ব্লড দিতে ডাক্তারের সাথে চলেগেল।
“রাত ১০টা”
প্রিয়া ব্লড দিয়ে সারাদিন না খেয়ে না দেয়ে,
ইমার্জিন্সি রুমের সামনে দাড়িয়ে দাড়িয়ে চোখের জল ফেলছে।
“কিছুক্ষন পর”
ডাক্তার বেড় হতেই
প্রিয়া:-ডাডাক্তার বাবু কি অবস্থা উনার উনি ঠিক আছে তো?(চোখে জল নিয়ে)
ডাক্তার:-ভয়ের কোন কারণ নেই।ব্লড দেওয়া হয়েছে।উনি এখন অজ্ঞান অবস্থায় আছে।জ্ঞান ফিরতে ২/৩ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।
এইবলে ডাক্তার চলেগেলো।
ডাক্তারের কথা শুনে প্রিয়া একটু শান্ত হয়েগেলো।
কিছুক্ষণ পর নার্স এসে বেড এ করে অজ্ঞান
অবস্থায় মাহিমকে অন্যরুমে নিয়ে গেলো।
প্রিয়া রুমে ঢুকতেই দেখলো মাহিমের মাথায় আর বুকে ব্যান্ডেজ করা,অজ্ঞান অবস্থায় মাহিম বেড সুয়ে আছে।মাহিমকে এভাবে প্রিয়া দেখতেই তার চোখ দিয়ে জল বেড় হয়ে আসলো।
আসলে প্রিয়া তার জীবনের থেকেও মাহিমকে
অনেক বেশি ভালোবাসে।কিন্তু কোনদিন তা মুখ ফুটে বলতে পারেনি।
প্রিয়ার জীবনে মাহিমই প্রথম মাহিমই শেষ।
প্রিয়া চোখে জল নিয়ে মাহিমের বেড এর কাছে এগিয়ে আসতেই..
পিছন থেকে প্রিয়ার মামা:-প্রিয়া?
প্রিয়ার তার মামা কন্ঠ শুনতেই চোখের জল মুছে পিছনে দিকে ঘুরে দাড়ালো।
প্রিয়ার মামা:-তুই তো সারাদিন কিছুই মুখে দিসনি।
তাই তোর খাবার নিয়ে আসলাম খেয়েনে মা।
প্রিয়া:-রেখে দাও আমার ক্ষিদে নেই মামা।
প্রিয়ার মামা:-এখন তো টেনশন করার কোন কারণ নেই।ডাক্তার সাহেব বলল তো জ্ঞান ফিরলে সব ঠিক হয়ে যাবে।তুই খাবার গুলো খেয়েনে।
প্রিয়া:-তুমি খাবার গুলো রেখে দাও।উনার জ্ঞান ফিরলে আমি খেয়ে নিব।
এরপর প্রিয়ার মামা আর জোর না করে খাবার গুলো টেবিল এর উপরে রেখে দিল।
প্রিয়া:-মামা?(পিছন থেকে)
প্রিয়ার মামা:-(প্রিয়ার দিকে ঘুরে)হ্যাঁ বল
প্রিয়া:-রাত তো অনেক হয়েগেলো।তুমি বাড়িতে ফিরে যাও।(মুখের দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়ার মামা:-না আমিও থেকে যাই কখন কোন সময় কি লাগবে না লাগবে।
প্রিয়া:-সেটা আমি দেখে নিব।তুমি বাড়িতে যাও মামী বাড়িতে একা রয়েছে।মামীও মনে হয় এখনো টেনশন করছে।(মামার দিকে তাকিয়েই)
প্রিয়ার মামা:-আচ্ছা ঠিক আছে।জামাই বাবার জ্ঞান ফিরলে খাবার গুলো খেয়ে নিস।
এইবলে প্রিয়ার মামা রুম থেকে বেড় হয়ে যাচ্ছিল এমন সময় প্রিয়া বলে উঠলো।
প্রিয়া:-মামা শুনো।
প্রিয়ার কথা শুনে তার মামা দাড়িয়ে গেলো।
প্রিয়া:-উনার জ্ঞান না ফেরে পর্যন্ত উনাদের বাসায় ফোন করে এইসব কিছুই বলার দরকার নেই।
প্রিয়া:-ঠিক আছে।
“রাত ১২টা”
প্রিয়ার মামা চলে যাওয়ার পর প্রিয়া দরজার কাছে এসে দরজার কপড়টা টেনে দিল।
সারাদিন কান্নাকাটি করায় প্রিয়ার মাথায় ব্যাথা যন্ত্রণা শুরু হয়েগেলো।
প্রিয়ার মাথা চক্কর দিয়ে উঠতেই প্রিয়া আর দাড়িয়ে থাকতে পারলো না।সাথে সাথেই মাথা চেপে ধরে মেঝেতে বোসে পরলো প্রিয়া।
সারাদিন কান্নাকাটি করায় প্রিয়ার মাথায় ব্যাথা যন্ত্রণা আজকে একটু বেশিই করছে।
কিছুক্ষণ প্রিয়া চোখ বন্ধ করে মাথা চেপে ধরে বোসে থাকার পর,প্রিয়া অনুভাব কররো তার নাক কিছু বেড় হচ্ছে।
প্রিয়া হাত দিয়ে মুছে দেখলো রক্ত বেড় হচ্ছে তার নাক দিয়ে।
রক্ত বেড় হয়ে আসতেই প্রিয়ারর মাথা ব্যাথা যন্ত্রণা একটু কমে আসলো।
এরপর প্রিয়া মেঝে থেকে উঠে টেবিলে রাখা টিসু দিয়ে রক্ত গুলো মুছে নিলো।
তারপর মাহিমের বেড এর কাছে এসে মাহিমের পাশে বোসে পরলো।
প্রিয়া মাহিমের পাশে বোসে অন্যরকম একটা মায়ার দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে রইলো মাহিমের দিকে।
কিছুক্ষণ মাহিমের দিকে চোখে জল নিয়ে তাকিয়ে থাকার পর।চোখের জল মুছে প্রিয়া ছোট্ট করে একটা চুমু দিল মাহিমের গালে।
প্রিয়া ঠোঁঠের স্পর্শ মাহিমের লাগে পড়তেই মাহিম চোখ খুললো।আর দেখতে পেলো প্রিয়াকে।মাহিম চোখ খুলতেই প্রিয়া তারাহুরো করে চোখের জল মুছতে লাগলো।প্রিয়া চোখের জল মুছে উঠতে যাবে ঠিক তখন মাহিম প্রিয়ার হাতটা ধরে ফেললো।
মাহিম প্রিয়ার হাত ধরতেই প্রিয়া চমকে উঠলো,আর মাহিমের চোখের দিকে তাকালো।মাহিমও প্রিয়ার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে।
মাহিম দেখতে প্রিয়ার কপালে সেই কেটে যাওয়া দ্যাগ এ এখনো কিছু রক্ত জোমে আছে।
সারাদিন না খাওয়াতে মুখটা কেমন সুখনা সুখনা লাগছে।
দুজন দুজনার চোখের দিকে অন্যরকম একটা মায়ার দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।

পর্ব-২৬
———————————–
দুজনি কিছুক্ষণ দুজনার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে।
এমন সময় নার্স রুমে ঢুকে দরঝার সামনে দাড়িয়ে।
নার্স:-আসতে পারি।
প্রিয়া নার্স এর কন্ঠ শুনে চমকে উঠলো।
প্রিয়া চমকে উঠে পিছন দিকে তাকিয়ে দেখলো।
নার্স দাড়িয়ে আছে দরঝার সামনে।প্রিয়া নার্স কে দেখে হাত ছাড়িয়ে নিয়ে তারাহুরো করে উঠে দাড়িয়ে বলতে লাগলো।
প্রিয়া:-হ্যাঁ আসুন।
নার্স প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে একটু মিসকি হেসে মাহিমের কাছে আসলো।
তারপর মাহিম কে ভালো করে দেখে।
প্রিয়াকে কিছু ঔষধ দেখিয়ে দিয়ে চলে গেলো।
নার্স রুম থেকে চলে যাওয়ার পর মাহিম নিজে থেকে একাই উঠে বসার চেষ্টা করছিল।
প্রিয়া সেটা দেখে মাহিমকে ধরে উঠে বসিয়ে দিল।
তারপর মাহিমের মুখোমুখি হয়ে বসে মাহিমকে জিজ্ঞেস করতে যাবে সে কি খাবে।
এমন সময় মাহিম বলে উঠলো
মাহিম:-আপনি এখানে কেন.?(একটু রাগি কন্ঠে,প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়া মাহিমের কথা শুনে অবাক দৃষ্টিতে মাহিমের দিকে তাকিয়ে রইলো।
মাহিম:-আপনার বাসা থেকে তো তারিয়ে দিচ্ছিলেন,তাহলে আপনি এখানে?
প্রিয়া:-আপনি এখনো আমার উপর রেগে আছেন?(মাহিমের দিকে তাকিয়ে)
মাহিম:-আমি যেটা বলছি সেটার উত্রর দিন।(রেগে)
প্রিয়া:-আমি বলেছি তো আমি ভূল বলেছি।
আপনার Accident হয়েছে আর আসবো না
(কাঁদার মতো করে)
মাহিম:-আপনিই তো বলেছিলেন যে আমার সাথে আপনার কোন সম্পর্ক নেই।তাহলে আমার কি হলো না হলো তাতে আপনার কি??
প্রিয়া কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পর,
মাহিমের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো।
প্রিয়া:-আমার কি সেটা কোনদিন বুঝতে পারেন্নি আর কোনদিন বুঝারর চেষ্টাও করেননি আপনি।
মাহিম:-কি বোঝার কথা বলছেন?
প্রিয়া:-না কিছু না।(এই বলেই প্রিয়া মাথা নিচু করে নিল।)
মাহিম:-কি ভালোবাসেন আমাকে..?
মাহিমের কথা শুনে প্রিয়ার বুকে কেমন যেন মোচড় দিয়ে উঠলো।প্রিয়া চমকে উঠে মাহিমের দিকে হতাশ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো।
মাহিম:-কি হলো বলুন ভালোবাসেন আমাকে.??(প্রিয়ার চোখের দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়ার মুখ দিয়ে কোন কথাই বেড় হচ্ছে না।
শুধু মাহিমের দিকে হতাশ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
মাহিম:-জানি বাসেন না।আর বাসবেনি বা কেন? আপনি তো আমাকে পছন্দই করেন না।আমি তো আপনার চোখে একজন খারাপ দুশ্চরিত্রহীন মানুষ।আপনি তো আপনার শিহাব ভাইকে ভালোবাসেন।(রেগে)
প্রিয়া:-একদম বাজে কথা বলবেন বলে দিচ্ছি।(একটু রাগি চোখে তাকিয়ে)
মাহিম:-আমি কোন বাজে কথা বলছি না।আপনার মনে শুধু আপনার শিহাব ভাই রয়েছে।আপনি কোনদিনও আমায় ভালোবাসেননি।আপনি আমার জন্য আগে যা করেছেন।সব আপনার আশ্রয় ঠিকি রাখার জন্য।আর এখন যা করছেন সেটা মানবতার খাতিরে।আপনার মতো মেয়েদের আমি খুব ভালো ভাবেই চিনি।
মাহিমের কথা শুনে প্রিয়ার চোখের কোনায় জল চলে আসলো।যার জন্য সেই সকাল থেকেই না খেয়ে না দেয়ে পাগলের কান্নাকাটি করলো।নিজের অসুস্থ শরিল থেকে ব্লড দিয়ে বাঁচালো।
যার জন্য এখনো পর্যস্ত না খেয়েই তার খাওয়ার অপেক্ষা করে আছে।আর এখন সেই বলছে যা করছে সব মানবতা আর নিজের স্বার্থ এর জন্য এইসব করছে।
প্রিয়া কিছুক্ষণ চুপ করে মাহিমের দিকে তাকিয়ে থাকার পর।
প্রিয়া:-ঠিক আছে আপনার জন্য আমি যা করেছি সব আমার নিজের স্বার্থ এর জন্য।আমি না হয় আপনাকে কোনদিনও ভালোবাসিনি।কিন্তু আপনি? আপনি আমায় কোনদিন ভালোবেসেন?(কাঁদার মতো করে)
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
প্রিয়া:-বাসেন্নি তো।বিয়ের পর প্রতিটা দিনি প্রতিটা মুহূর্তে আপনার পরিবার এবং আপনার শুধু অবহেলা অপমান আর কষ্ট ছাড়া কিছুই পাইনি আমি।এমন কি আপনি আমার গাঁয়ে হাত পর্যন্ত তুলেছেন।কত বাজে বাজে ভাষায় প্রতিটা মুহূর্তে আপনি আমায় আঘাত করেছেন।(চোখে জল নিয়ে)
মাহিম কিছু বলছে না।
প্রিয়া:-এতকিছু সহ্য করে তারপরেও আপনাদের বাসায় পোড়ে থাকতাম জানেন?(চোখে জল নিয়েই)
মাহিম:-কি কারণ(প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়া:-কারণ………
মাহিম:-থামলে কেন বলো না প্রিয়া শুধু একবার বলো যে তুমি আমায় ভালোবাসো।শুধু তুমি একবার বলো তুমি তোমার শিহাব ভাইকে না,তুমি আমায় ভালোবাসো।(প্রিয়ার চোখের দিকে তাকিয়ে মনে মনে)
প্রিয়া:-সবকিছুই একটা সময় থাকে।যখন তোমার ভালোবাসা পাওয়ার জন্য এত অবহেলা অপমান কষ্ট সহ্য করতাম।তখন কোনদিও জানতে চাওনি।
আর আজকে যখন আমি আমার জীবনের শেষ মুহূর্তে এসে পরেছি।তখন তুমি জানতে চাইলেও তোমাকে আর বলব না।(মাহিমের চোখের দিকে তাকিয়ে মনে মনে)
মাহিম:-কি হলো বলুন কেন?
প্রিয়া:-(চমকে উঠে)কেন আবার আআমার কোথাও যাওয়ার জায়গা ছিল না তাতাই জন্য।(কাঁপা কাঁপা কন্ঠে)
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
প্রিয়া:-এইসব কথা বাদদিন।আমি খাবার এনে দিচ্ছি আপনি খাবারটা খেয়ে ঔষধ খেয়ে নিন(চোখের জল মুছতে মুছতে)

গল্পটি কেমন লাগলো ?

ভোট দিতে স্টার এর ওপর ক্লিক করুন!

সার্বিক ফলাফল 5 / 5. মোট ভোটঃ 2

এখন পর্যন্ত কোন ভোট নেই! আপনি এই পোস্টটির প্রথম ভোটার হন।

Leave a Comment