মুখোশ – The Mask [১২-১৩]

লেখকঃ Daily Passenger

১২
লিফটের সামনে আসতেই সেই স্পেশাল গেস্টের এক ঝলক দর্শন আমি পেলাম যার জন্য গতকাল রাতে মালিনী আমার কাছে আসতে পারেনি। উচ্চতা খুব বেশী হলে পাঁচ ফুট কি তারও কিছুটা কম। বেশ গোলগাল। আগের দিন রাতে যে বয়স্ক লোকটাকে রুমের বাইরে চিৎকার করতে দেখেছিলাম সেই যেন ওনাকে এসকোর্ট করে নিয়ে যাচ্ছে। বুঝলাম পি এ টাইপের কেউ হবে। আরও দুজন লোক আছে ওর সাথে, তবে একটু দূরত্বে। অসাবধানতায় একবার ধাক্কা লেগেছিল লোকটার সাথে। সাথে সাথে ওই দুজন লোক ছুটে এসে আমাকে ওর কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে গেল। লোকটা শুধু একবার বিরক্তি ভরে আমার দিকে তাকিয়ে নিজের থ্রি পিস শুটটাকে পরিপাটি করে নিল।
বাপরে বাপ, কি দাপট। লিফট নেমে গেল। আমি ওই দুই জনের এক জনের সাথে দাঁড়িয়ে রইলাম। ও ইশারায় আমাকে বুঝিয়ে দিল অপেক্ষা করার জন্য। মানে মুখে কিছু বলেনি, শুধু আমার দিকে একটা আঙুল তুলে মুখ দিয়ে বিরক্তি ভরা উহহহহ মতন একটা শব্দ করেছে। আমি ওর ইশারার মানে বুঝতে পেরে লিফটের সামনে থেকে সরে গেলাম। লিফট আবার উঠে এল আমাদের ফ্লোরে। এইবার ওই লোকটাও লিফটে চড়ে নেমে গেল। নাহ, শালা আর পারা যায় না। হতে পারে ইনি কোনও হোমরা চমরা লোক। কিন্তু আমিও ফ্রিতে হোটেলে থাকছি না। পকেটে হাত দিয়ে দেখলাম সিগারেটের প্যাকেটটা নিয়ে আসতে ভুলে গেছি। ধীরে ধীরে ঘরের দিকে হাঁটা দিলাম। প্রায় দশ মিনিট পর আবার এসে হাজির হয়েছি লিফটের সামনে। একটা সিগারেট ধরালাম। এটা নো স্মোকিং জোন। এখানে ধুম পান করলেই অ্যালার্ম বেজে উঠবে। আর তাই ইচ্ছে করেই এই সিগারেট ধরানো। সাথে সাথে অ্যালার্ম বেজে উঠল।
কোথা থেকে একজন লোক ছুটে এসে চারপাশটা দেখে নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আমার হাতে সিগারেটটা দেখেই আমার দিকে এক লাফে এসে হাজির হল। এ একজন বিশালায়তন শক্ত পোক্ত সিকিউরিটি। ইউনিফর্ম ধারি। উচ্চতায় আমার থেকেও বেশী। “স্যার আপনি এখানে সিগারেট ধরাতে পারেন না।” বেশ জোড়ের সাথে বলল লোকটা। আমি বললাম “কে বলল?” ও নিঃশব্দে একটা নো স্মোকিং বোর্ড দেখিয়ে দিল। আমি ওকে পাত্তা না দিয়ে বললাম “এখানে একজন গেস্ট আরেকজন গেস্ট কে লোক দিয়ে ঠেলে সরিয়ে লিফট নিয়ে চলে যেতে পারলে আর আপনারা সব কিছু জেনে শুনেও চুপ করে থাকতে পারলে, আপনাদের কোনও এথিকাল গ্রাউন্ড থাকে না কিছু করতে বারণ করার। “ ও একটু ভুরু কুঁচকে জিজ্ঞেস করল “মানে?” আমি বললাম “ এই যে লিফটের সামনে ক্যামেরা লাগিয়ে রেখেছেন, এটা কি দেখানোর জন্য? তাহলে অবশ্য আমি পুলিশে কমপ্লেন করে টাকা ফেরত চাইব। আর সেটা যদি শুধু দেখানোর জন্য না হয় তো ক্যামেরার রেকর্ডিং দেখে সেই অসভ্য লোকটাকে আমার সামনে নিয়ে এসে আমার সামনে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করুণ। নইলে এখান থেকে ফুটে যান। “
লিফট এসে উপস্থিত হয়েছে। দরজা খুলে গেছে। ও লাফিয়ে এসে আমার হাত থেকে সিগারেটটা নেওয়ার চেষ্টা করতেই আমি শরীরটাকে এক ঝটকায় ওর নাগালের বাইরে সরিয়ে নিলাম। ও যতক্ষণে বুঝতে পেরেছে যে কি হয়েছে, ততক্ষণে বেশ কয়েকটা জিনিস হয়ে গেছে। ওর মাথাটা গিয়ে লিফটের আয়নায় ঠুকে আয়নার কাঁচ ভেঙ্গে গেছে। ওর মাথা ফেটে রক্ত বেরোচ্ছে। ওর হাঁটুতে পিছন থেকে এমন এক জায়গায় লাথি মেরেছি যে ওর মালাইচাকির তলার দিকটা বোধ হয় গুঁড়িয়ে গেছে ওই এক লাথিতে। ঘাড়ের কাছে একটা হাড় যে ভেঙ্গে গেছে এক ঘুষিতে সেই ব্যাপারে আমি নিশ্চিত কারণ সেই হাড় ভাঙ্গার শব্দ আমি নিজের কানে শুনেছি। গ্রাউন্ড ফ্লোরের বাটন টিপে দেওয়া হয়েছে। আর বাইরে থেকে আমি লিফটের দরজা টেনে বন্ধ করে দিয়েছি।
সিগারেটে টান দিতে দিতে আমি এমারজেন্সি এক্সিটের দিকে এগিয়ে চললাম। অ্যালার্ম বেজে চলেছে তারস্বরে। লোকটার হাতে একটা ওয়াকিটকি গোছের কিছু ছিল যেটা মাটিতে পড়ে আছে। সেটাকে তুলে নিলাম। এটার ওপর অত্যাচার করে লাভ নেই। কারণ এ বেচারা নিরীহ। ভেতর থেকে আওয়াজ আসছে। বললাম “ নিচে আসছি। কেউ একজন একটা ওয়াকিটকি ফেলে গেছে লিফটের সামনে।” আমি রেগে গেলে এমনটা মাঝে মাঝে করেই থাকি। তবে এখন আবার মাথা ঠান্ডা। তবে এইবার যদি নিচে গিয়ে আবার ওই দুটো বডি গার্ডকে দেখি আর ওরা যদি আমার সামনে আবার বেশী বাড়াবাড়ি করতে আসে, তো এইবার ওরা ও বুঝতে পারবে যে আমি কিসের সংকেত। তবে আমি শুধু এটাই চাই যে হোটেলের ম্যানেজমেন্ট যেন আমার অসুবিধার জন্য আমার কাছে ক্ষমা চাক। নইলে চুলায় যাক। দেখা যাক।
সিগারেট হাতে যখন গ্রাউন্ড ফ্লোরে পৌছালাম তখন দেখলাম যে লিফটের সামনে গেস্ট আর সিকিউরিটির ভিড় জমে গেছে। একজন আমার দিকে ছুটে আসতেই আমি ওয়াকিটকিটা ওর হাতের দিকে এগিয়ে দিলাম। ও সেটা আমার হাত থেকে নিয়ে বলল “ সিগারেটটা ফেলে দিন।” আমি সরি বলে সিগারেটটা মাটিতে ফেলে দিলাম। লোকটা সাথে সাথে সাথে ওই সিগারেটটা মাটি থেকে কুড়িয়ে নিল। আধমরা লোকটা সবাইকে আমার দিকে আঙুল দেখিয়ে কিছু বলার চেষ্টা করছে।
দেখলাম ওই বিশেস গেস্ট তার দুজন বডি গার্ড আর একজন চামচা সমেত আমার দিকেই তাকিয়ে দেখছে। ওরা মেইন এক্সিটের মুখে গিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। বোধহয় গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছে। আজ কাউন্টারে মালিনীর সাথে ওই মেয়েটাও রয়েছে। দুজনেই বিশেষ সন্ত্রস্ত। একজন ম্যানেজার এগিয়ে এসে বলল “স্যার আপনার এরকম ব্যবহারের কারণ জানতে পারি?” আমি বললাম “ কি করেছি আমি? এমারজেন্সি সিঁড়ি দিয়ে নামাটা কি অপরাধ? আমি নামতে বাধ্য হয়েছি কারণ (ওই বিশেস গেস্টের দিকে আঙুল তুলে বললাম) একবার ওরা আমাকে লিফটে উঠতে দেয় নি। আর আরেকবার ওই (এইবার আধমরা লোকটার দিকে আঙুল তুলে বললাম) লোকটা আমাকে থামিয়ে লিফট নিয়ে নেমে গেছে। এছাড়া আমি কি করেছি।”
একজন সিনিয়র গোছের লোক এসে আমাকে জিজ্ঞেস করল “স্যার আপনি সিগারেট খেতে পারেন না ওখানে।” আমি বললাম “কোথায় লেখা আছে?” ও একটু আশ্চর্য হয়ে বলল যে “কেন ওপরে বোর্ড দেখেননি?” আমি মাথা নেড়ে বললাম “না তেমন কোনও বোর্ড আমার চোখে পড়েনি।” একজন লিফট নিয়েই উঠে গেল আর সাথে সাথে নেমেও এল। বলল “স্যার বোর্ডটা নেই।” আমি ভুরু নাচিয়ে বললাম “কেমন? “ লোকটা একটু থতমত খেয়েছে। কিন্তু সামলে নিল। “কিন্তু তার জন্য আপনি একজন সিকিউরিটির গায়ে হাত তুলবেন?” আমি বললাম “ কে বলেছে?” ও একবার ওই আধ মড়া লোকটার দিকে তাকাল। আমি হেঁসে বললাম “ও বললেই বিশ্বাস করতে হবে যে আমি ওকে পিটিয়েছি?”
আরও দুজন সিকিউরিটি এগিয়ে আসছে দেখে আমি বললাম “আমি পয়সা দিয়ে আপনাদের হোটেলে আছি। আমি তিনটে কথা বলছি আর সবার সামনে বলছি। যদি আপনাদের সিকিউরিটি আমার গায়ে হাত দেয় তো এরপর আমার উকিল এসে কথা বলবে। প্রথম। আমাকে ওই লোকটা (সেই বিশেস গেস্ট) আর তার সঙ্গী সাথীরা মিলে ফিসিকালি অ্যাঁবিউস করে লিফটের সামনে থেকে সরিয়ে দিয়েছে। সেকনড। ওপরে কোনও বোর্ড লাগানো ছিল না। আর ফাইনালি। ওই সিকিউরিটি কে আমি ছুই পর্যন্ত নি। ওরা লিফট দিয়ে নেমে যাওয়ার পর আমি দেখলাম আমার পকেটে সিগারেট নেই। তাই নিজের ঘরে গেছিলাম। ঘর থেকে বেরিয়ে কোনও নো স্মোকিং সাইন না দেখে সিগারেট জ্বালিয়েছি।
লিফটের সামনে আসতেই দেখলাম যে ওই লোকটা কোনও মতে এসে লিফটে ঢুকে নেমে গেল। ওর ওয়াকিটকিটা মাটিতে পড়েছিল। আমি সেটা কুড়িয়ে নিয়ে এসে আপনাদের হাতে তুলে দিয়েছি। এতে এত সওয়াল জবাবের কিছু আছে কি?” লোকটা কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না। এর ওর মুখের দিকে তাকাচ্ছে। আমি বললাম “ দেখুন,” একটু থেমে সব গেস্টের দিকে তাকিয়ে বললাম “ আপনারাও একটু আমার কথাটা মন দিয়ে শুনুন। এখানে আমরা এত গুলো টাকা দিয়ে আছি কারণ এই হোটেলের সিকিউরিটি ভালো। আপনাদের চেক ইনের সময় দেখবেন একটা চিঠি দেওয়া হয় যাতে লেখা আছে যে হোটেলের সিকিউরিটির জন্য এরা টাকা চার্জ করে।
এইবার সিকিউরিটির একটা প্রধান দিক হল এই সব ক্যামেরা গুলো। এই হোটেলের ম্যানেজমেন্ট (আবার ওই লোকটার দিকে আঙুল তুলে দেখিয়ে বললাম) ওই লোকটার জন্য, আমাকে হেনস্থা কেন করছেন আমি জানি না। ওনার লোকেরা আমাকে ফিসিকালি অ্যাঁবিউস করেছেন। এছাড়া ওপরে আর বলার মতন কিছুই হয় নি। এনাদের বা আপনাদের আমার কথা বিশ্বাস না হলে এক্ষুনি সবার সামনে ক্যামেরার রেকর্ডিং বের করে দেখা হোক।
কে সত্যি বলছে আর কেই বা মিথ্যে বলছে সেটা প্রমান হয়ে যাবে।” সবাই এর ওর মুখ চাওয়া চাওয়ি করছে। আমি ম্যানেজারের দিকে তাকিয়ে বললাম “যদি ক্যামেরার রেকর্ডিং না থাকে তো ভালো একটা উকিল খুঁজুন। কারণ এই সব গেস্টের পয়সা আপনাদের ফেরত দিতে হবে আর হোটেলটাও জালিয়াতির দায়ে উঠে যেতে পারে।”
বয়স্ক ম্যানেজার বিচক্ষন লোক। বলল “ এক্ষুনি আমি ফুটেজ চেক করছি।” আমি গলা চড়িয়ে প্রায় চেঁচিয়ে উঠলাম, বললাম “ এক সেকেন্ড। দাঁড়ান। আমাকে আপনারা দাঁড় করিয়ে রেখেছেন। কোনও কারণ এখনও অব্দি দেখাতে পারেননি। কিন্তু ওনাদের আটকাচ্ছেন না। সব গেস্ট দের জন্য একই রুল হওয়া উচিৎ। আজ আমাকে উনি ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়েছেন, কাল অন্য কাউকে সরাবেন। এখন অব্দি আমার কোনও অপরাধ প্রমাণিত হয়নি। কোনও নো স্মোকিং লেখা বোর্ড যে আপনারা ওপরে পান নি সেটা আপনাদের লোকই বলেছে। আপনাদের ধারণা হতেই পারে যে আমি সেটা সরিয়েছি ইচ্ছে করে। কিন্তু প্রমান করুণ। এতগুলো ক্যামেরা সাজিয়ে রেখে দিয়েছেন। সেই দিয়ে আগে প্রমান করুণ। কিন্তু তার আগে…আমি এখানে দাঁড়িয়ে আছি আপনার সামনে, তাহলে ওদের জন্য কোনও নিয়ম…”
লোকটার এক ইশারাতে তিনজন সিকিউরিটি ছুটে গিয়ে ওই বিশেষ গেস্টকে আর তার সঙ্গীদের কিছু একটা বলতেই ওরা কাউন্টারের সামনে এসে দাঁড়াল। ভদ্রলোক এই প্রথম বার মুখ খুললেন “Look Mr. Manager, I am totally clueless, why this young man is making such a fussy noise when nothing actually happened. If he really felt uncomfortable due to any of my team mates, I do apologize, but I can’t wait. I have an appointment to …” আমি কথার ওপর কথা চড়ালাম “ Look Mr. Manager, I am totally clueless about how your security got injured and why he has been making such a fussy noise when nothing actually happened… if he really felt uncomfortable due to my presence in front of the lift and me picking up his dropped walky, then I do apologize.. But I can’t wait. I have an appointment to…” ইচ্ছে করে কথাটা শেষ করলাম না।
একজন দেহাতি লোক (ইনি গেস্ট) এগিয়ে এসে বলল “আরে মশাই, এত কথনের কি আছে বাপু। ফুটেজ চেক করুণ। আর মীমাংসা করে দিন।” আমি বললাম “ Mr. Manager, it will be my pleasure if you can do that verification in presence of all the guests. ” উনি একটু গলা খাঁকড়িয়ে বিশুদ্ধ বাঙলায় বললেন “ দেখুন এইভাবে ফুটেজ পাবলিকলি আনা যায় না। আমরা চেক করে জেনে নিচ্ছি।” ইতি মধ্যে একজন কে ইশারা করা হয়েছিল। তিনি বেরিয়ে এসে ফিস ফিস করে ম্যানেজারের কানে কানে কি একটা বলতেই উনি সবাইকে সম্বোধন করে বললেন “দেখুন ফুটেজ সব ঠিক আছে। আমরা দেখে নিয়েছি। এনাদের দুজনের লিফটের সামনে সামান্য ধাক্কা ধাক্কি হয়ে থাকতে পারে, কিন্তু ফুটেজ থেকে তেমন কিছু আমরা দেখতে পাচ্ছি না যার জন্য ম্যানেজমেন্ট এই গেস্টের বিরুদ্ধে কোনও স্টেপ নিতে পারে। আর এই ইয়ং ম্যানও কোনও নো স্মোকিঙের বোর্ড দেখতে পায় নি। সেটা কেন, সেটা আমরা ভেরিফাই করব। কিন্তু এনারও কোনও দোষ নেই। আর ফুটেজ অনুযায়ী, ওই সিকিউরিটির সাথে ইনি কোনও অভদ্র ব্যবহার করেননি। এমনকি, ইনি ওই উন্ডেড ভদ্রলোককে নিচে আসতে হেল্পই করেছেন। সো দা ম্যাটার ইস ক্লোজড।”
আমি বেরিয়ে পড়লাম। আজ গাড়ি বলা ছিল। বাইরে দাঁড়িয়ে ওই সেকন্ড বডি গার্ডের দিকে তাকিয়ে আস্তে করে বললাম “ইট মারার সাহস দেখালে, পাটকেল খেয়ে সেটা হজম করারও সাহস থাকা দরকার।” ভদ্রলোক একবার আমার দিকে তাকিয়ে শান্ত গলায় বলল “সেটা সবারই মনে রাখা দরকার।” আমি মনে মনে হাসলাম। এই নাটকটাকে কি লোকটা পাটকেল ভেবে নিয়েছে? এই বুদ্ধি নিয়ে …।
গাড়িতে উঠতে না উঠতেই দোলনের ফোন। “কি রে সুস্থ আছিস?” বললাম “আমার আবার কি হল? ও হ্যাঁ। পিঠে একটু ব্যথা আছে। ব্যস। এর থেকে বেশী কিছু নয়। “ বলল “আচ্ছা তাহলে আজ কি আমাদের সাথে আসছিস?” জিজ্ঞেস করলাম “আমাদের সাথে মানে?” ও খিল খিল করে হেঁসে বলল “বললাম না কাল? পার্টি! আর আমাদের সাথে আসবি না তো কি আমার একার সাথে আসবি? লাইন মারার চেষ্টা ছেড়ে দে। শোন মোটামুটি সবাই তোর চেনা। শুধু দুই তিনজন অচেনা পাবি। আলাপ হয়ে যাবে। ফুর্তি হবে ভালো।” বললাম “কোথায় হচ্ছে এই পার্টি?” বলল “শুরুতে প্ল্যান ছিল বাড়িতে। কিন্তু সেটা আর হবে না। মম আর ড্যাড ও বাড়িতে আজ পার্টি থ্রো করেছে। তাই আমরা একটা ডিস্কে যাব। নাচ গান হবে। ও হ্যাঁ, তুই দারু খাস তো?” বললাম “আমি পিপে। কিন্তু আজ যেতে পারব কি না সেটা এখনই বলতে পারছি না। ও হ্যাঁ, কটায় শুরু হবে এই ব্যাপারটা।” ও পাশে কারোর সাথে কথা বলে বলল “ সন্ধ্যে সাড়ে আটটার মধ্যে নাইট ব্লুর সামনে চলে আয়। ফুর্তি হবে।” মনে মনে বললাম হুম্মম। ফোন কেটে গেল।
সাড়ে আঁটটায় নাইত ব্লুতে পৌঁছাতে পারব কি না সেটা সত্যি এখনও জানি না। যেখানে যাব সেখানে পৌঁছাতে প্রায় দেড় ঘণ্টা লাগবে। সুতরাং কানে হেড সেটটা লাগিয়ে নিয়ে ভালো মোবাইলটাতে গুঁজে দিলাম। কোথাও ভালো গান বাজছে কি? না সব স্টেশন কেমন যেন ঠাণ্ডা হয়ে রয়েছে। একের পর এক স্টেশন সার্ফ করেই চললাম বারবার এই আশায় যদি কোথাও আমার মনের মতন একটাও গান পাওয়া যায়। কিন্তু না। প্রায় চল্লিশ মিনিট এই স্টেশন ওই স্টেশন করে কাটিয়ে দেওয়ার পর অবশেষে একটা মোটামুটি মনের মতন গান পেলাম। এদিকে আমিও গন্তব্য স্থলের কাছাকাছি পৌঁছে গেছি। এমন রহস্য করে বলার অবশ্য কোনও মানে হয় না। বাবার হয়ে টাকা কালেক্ট করে একজনের হাতে পৌঁছে দিতে হবে। ভদ্রলোকের বাড়ি থেকেই গিয়ে টাকা ওঠাতে হবে।
দুপুর দুটো বেজে দশ মিনিট। সকালের সব কাজ মিটে গেছে, তবে খুব ভালো ভাবে মিটেছে সেটা স্বীকার করতে পারিনা। আজ ঠিক করেই রেখেছিলাম যে কোনও একটা বড় বাঙালি রেস্টুরেন্টে গিয়ে দুপুরের লাঞ্চটা সারব। হোটেলের কিছুটা দূরে একটা বড় বাঙালি রেস্টুরেন্ট দেখে ঢুকে পড়লাম। শীততাপনিয়ন্ত্রিত রেস্টুরেন্ট। মেনু দেখে বুঝলাম দামটা বেশ চড়ার দিকে এখানে। তাই হয়ত ভিড়টা একদম কম। তবে মনে হয় খাবার কোয়ালিটি খারাপ হবে না। হোটেলে বাঙালি খাবার অর্ডার করে তেমন একটা তৃপ্তি পাইনি, ওখানে কাবাব, রুটি মাংস, ফ্রাই ইত্যাদি খুব ভালো পাওয়া যায়, কিন্তু বাঙালি খাবার একদম বাজে। তাই আজকের এই প্ল্যান। ভাত, মাছের মাথা দিয়ে ডাল, পুড় দিয়ে পটল ভাজা, ইলিশ ভাপে আর সব শেষে মাটন ডাক বাংলো- এই হল আজকের মেনু।
অর্ডার দিতে না দিতেই আমার ঠিক পাশের টেবিলে এসে বসল একটা অল্প বয়সী কাপল। ওরা আসার পাঁচ মিনিটের মধ্যে ওদের যেটুকু কথা বার্তা আমার কানে ঢুকেছে তা থেকেই বুঝতে পেরেছি যে ওদের মধ্যে চাপা ঝগড়া হচ্ছে। বিবাহিত কাপল বলে মনে হল না। আমার ধারণা ডেটিঙে এসেছে। তবে এখন আমার মাথায় আরও অনেক চিন্তা ঘুরছে তাই ওদের দিকে আর বেশী খেয়াল করা হল না। আজকের সব কাজ মিটেছে বটে, কিন্তু ওই যে বললাম, খুব ভালো ভাবে মেটেনি। বাবাকে মুখ দেখাবো কি করে? এটা বড় আর দামি রেস্টুরেন্ট বটে, কিন্তু টেবিলগুলো বড্ড গায়ে গায়ে। পাশে বসা দুজনের প্রায় সব কথা আমার কানে আসছে।
বলাই বাহুল্য যে তাতে আমার চিন্তার ব্যাঘাত ঘটছে, বড্ড বিরক্তি লাগছে। এই রেস্টুরেন্টে যারা খেতে আসবে তারা মোটামুটি অবস্থাপন্নদের দলে পড়ে। সুতরাং আর সংকোচ না করে সেই ভয়ানক মোবাইলটা বের করে চট করে তাতে হেড সেটটা লাগিয়ে দিয়ে সেটাকে আবার পকেটে চালান করে দিলাম। এফ এম টা অবশ্য অন করে দিয়েছি। এখন হেড সেট থেকেই স্টেশন চেঞ্জ করা যাবে। না বরাতটাই খারাপ আজ। সকালে হোটেলে যা হল তাতে মনে হয়েছিল যে দিনটা বেশ ভালো কাটবে। মানে ওই লোকগুলোকে নাকাল করতে পেরে ভেবেছিলাম সব প্ল্যান মাফিক হয়ে যাবে। কিন্তু না। সেরকম হচ্ছে না । আর এখন? একটাও ভালো গান নেই রেডিওতে। মাঝে মাঝে বুঝতে পারি না, ভালো গান না চালিয়ে শুধু অযথা আর অহেতুক বক বক করার জন্য রেডিও স্টেশন খুলে বসার কারণ কি?
যখন ইলিশ ভাপের ডিশটা শেষ করলাম, তখনই ঠিক করে ফেললাম যে আজ সন্ধ্যায় নাইট ব্লুতে গিয়ে হাজির হওয়া যাক। ডিস্ক কেমন হয় সেটা আমার অজানা নয়। তাই সেখানে যাওয়ার কোনও বাড়তি টান বা কৌতূহল আমি অনুভব করছি না। তবে সদ্য আলাপ হওয়া ছেলে মেয়েগুলোর আরেকটা রূপ ওখানে দেখতে পাব। আর তাছাড়া…যাই হোক। আজ সেজে গুঁজে ওদের দলে ভিড়ে যাব। হোটেলে ফিরে গিয়ে একটা ছোট ঘুম দিয়ে নিতে হবে।
অবশ্য হোটেলে ফেরার আগে দুটো বড় বড় মদের বোতল কিনতে হবে। মালিনীর বরের জন্য যে কিছু একটা কিনতে হবে সেটা আমার মাথা থেকে বেড়িয়ে যায়নি এত চিন্তার মধ্যেও। যদিও মালিনী গোটা ব্যাপারটায় ভয় পাচ্ছে তবে আমাকে একটা চেষ্টা করতেই হবে। মালিনীর বরকে মাতাল বানিয়ে তার সামনে মালিনীকে ভোগ করার দৃশ্যটা কল্পনা করেই গাটা কেমন গরম হয়ে উঠল। হাত চালিয়ে বাকি খাবারটা শেষ করে, দু বোতল মদ কিনে হোটেলে ফিরে এলাম। ঘরে ঢুকেই একটা জরুরি কল সেরে নিলাম। ঘুম লাগানোর আগে হেড সেটটা কানে গুঁজে নিতে ভুললাম না অবশ্য। তবে এখন ঘুমের মধ্যে স্টেশন চেঞ্জ করা সম্ভব নয়, তাই সব থেকে ফেভারিট স্টেশনে টিউন করে চোখ বুজলাম।
চোখ প্রায় বুজে এসেছে এমন সময় হঠাত ঘুম ছুটে গেল। বাহ বেশ ভালো গান চালিয়েছে ফাইনালি। ঘড়িটা দেখে নিয়ে কান থেকে হেড সেটটা খুলে ফেললাম। মোবাইলটা চার্জে বসিয়ে দিয়ে আরেকবার শুয়ে পড়লাম। ঠিক বিকেল পৌনে ছয়টার সময় বিছানা ছেড়ে উঠে পড়লাম। একটু ফ্রেশ হয়ে বেড়িয়ে পড়লাম। নাইট ব্লুতে যাব নিশ্চই তবে এই রকম বেশ ভুষায় ওখানে যাওয়া যায় না। ওখানে যাওয়ার আগে আরেকবার ফিরে এসে ড্রেস চেঞ্জ করতে হবে। আপাতত একটা শস্তা মেসের সন্ধানে বেরোতে হবে। আজ সকাল বেলাতেই একজন দালালের সাথে মেস দেখতে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেটা আর যাওয়া হয়নি। কারণ অন্যান্য কাজগুলোতে এত ফেঁসে গেছিলাম যে ওই মেস দেখতে যাবার অ্যাঁপয়েন্টমেন্টটা ঘেঁটে গেল।
এইবার আর সেই বিশেষ গেস্ট বা তার কোনও সাঙ্গপাঙ্গকে দেখতে পাইনি। নো স্মোকিং বোর্ডটা আবার যথাস্থানে চলে এসেছে। এইবার আর লিফটের সামনে দাঁড়িয়ে সিগারেট ধরাইনি। এখন বাওয়াল করার সময় নেই। হোটেল থেকে বেড়িয়ে সোজা চলে গেলাম কলেজের দিকে। কলেজ ছাড়িয়ে আরও কিছুটা যেতে হবে। ওইখানেই সেই দালালের সাথে মিট করার কথা। একবার ফোন করে নিয়েছি লোকটাকে। লোকটার আসতে এখনও একটু সময় আছে।
আমি অনেক আগেই পৌঁছে গেছি ওখানে। সামনে একটা বাজার। সন্ধ্যে বেলায় বসে এই বাজারটা। বাজারে লোকের ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। গিয়ে দাঁড়ালাম ঠিক বাজারের মুখে। বার বার ঘড়ি দেখতে বাধ্য হচ্ছি। কারণ রাতে নাইট ব্লুতে যাবার ব্যাপারটা আমাকে এখন চুম্বকের মতন টানছে। সেক্সি দোলনের শরীরের দোলন দেখার আকর্ষণ সময়ের সাথে সাথে দুর্নিবার হয়ে উঠছে আমার ভেতরে। হঠাতই একটা পরিচিত গলার ডাক শুনলাম।
একি! সঞ্চিতা ম্যাডাম। দুই হাতে ভারী বাজারের থলি। বুঝলাম উইক এন্ডে, শনিবারের সন্ধ্যায় সারা সপ্তাহের বাজার করে ফিরছেন ম্যাডাম। আমাকে বাজারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আওয়াজ দিয়েছেন। আমি দৌড়ে ওনার কাছে এগিয়ে গিয়ে ওনার হাত থেকে বাজারের থলি দুটো নিয়ে নিলাম। হুম দুটো থলিই বেশ ভারী। উনি অবশ্য কিছুতেই দিতে চাইছিলেন না, কিন্তু আমার জোরাজুরিতে অবশেষে আমার হাতে বাজারের থলি দুটো দিয়ে দিলেন। ওনার হ্যান্ড ব্যাগ থেকে একটা রুমাল বের করে মুখটা একটু মুছে নিলেন।
সাদা রঙের ঢিলে কামিজটা ঘামে ভিজে শরীরের সাথে একদম সেঁটে গেছে। গলার কাছটা ভিজে কালো হয়ে গেছে। বগলের কাছটাও ঘামে ভিজে কালচে হয়ে আছে। একটা হালকা পারফিউম আর ঘামে মেশানো গন্ধ আসছে ওনার গা থেকে। একটা ঢিলে মেরুন রঙের শালোয়ার পরেছেন নিচে। সালোয়ার কামিজে একটু অন্য রকম লাগছে ম্যাডামকে। ম্যাডাম রুমাল দিয়ে নিজের মুখ থেকে ঘাম মুছে নিয়ে বললেন “আমার বাড়ি একদম সামনে। এসো। একটু জিরিয়ে চা খেয়ে যাও। আর এই হেল্পের জন্য থ্যঙ্কস।” রাস্তার উল্টো ফুটে এসে মিনিট দুয়েক হাঁটতে না হাঁটতেই ওনার বাড়ি চলে এল। পথে আমাদের দুজনের মধ্যে প্রায় কোনও কথা হল না। পাশাপাশি নিরবে হেঁটে চললাম। ম্যাডাম মাঝে মাঝে এই বিচ্ছিরি হিউমিড ওয়েদারের নামে গালি দিচ্ছিলেন, অবশ্য ভীষণ ভদ্র ভাষায়, মানে ঠিক গালি বলতে যা বোঝায় তেমন নয়।
বাড়ির বাইরে একটা বড় গেট। সেটা খোলা। গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকে ওনাদের বাড়ি। উনি দরজা খুলে বাড়ির ভেতরে ঢুকে আমাকে থলি দুটো নামিয়ে রাখতে বললেন এক পাশে। আমি তখনই বেড়িয়ে আসতে যাচ্ছিলাম, কিন্তু উনি আমাকে জোড় করে ভেতরে নিয়ে গিয়ে বসালেন। ফ্রিজ থেকে একটা বোতল জল বের করে ঢক ঢক করে কিছুটা জল গলা দিয়ে ঢেলে নিলেন।ওনার বৈঠক খানাটা বেশ সাজানো। রুচির ছাপ স্পষ্ট সব কিছুর মধ্যে। এক দিকে একটা উঁচু বইয়ের র্যােক। তার পাশে বেশ কয়েকটা ছবি সারি বদ্ধ ভাবে দেওয়ালের গায়ে টাঙানো আছে। কয়েকটা ওনার, কয়েকটা বোধহয় ওনার স্বামীর। আর কয়েকটাতে উনি আর ওনার স্বামী এক সাথে দাঁড়িয়ে আছেন। উনি কাঁচের গ্লাসে খানিকটা ঠাণ্ডা জল ঢেলে নিয়ে এলেন আমার কাছে। গ্লাসটা আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে রান্না ঘরের দিকে চলে গেলেন। বাড়িটা দ্বিতল। রান্না ঘরটা এক তলার পূর্ব দিকে। এক তলার এক ধারে একটা সিঁড়ির সারি ওপরে উঠে গেছে। ওপরে নিশ্চই ওনাদের বেডরুম। যাকগে। রান্নাঘরের আলো জ্বলে উঠল। চা বানানো হচ্ছে।
আমি চুপ চাপ বসে থাকতে পারি না। গ্লাসের জলটা গলা দিয়ে ঢেলে দিয়ে সেটা উঠে গিয়ে ডাইনিং টেবিলের ওপর নামিয়ে রেখে বইয়ের র্যা কের দিকে এগিয়ে গেলাম। না এইগুলো ইঞ্জিনিয়ারিঙের বই না। অধিকাংশ গল্পের বই। ইংরেজি আর বাঙলা বইয়ের সম্ভার। ম্যাডামের গল্পের বইয়ের কালেকশন বেশ ভালো!। কয়েকটা বাচ্চাদের গল্পের বইও চোখে পড়ল। আর বাকি বই গুলো হয় উপন্যাস, বা গোয়েন্দা কাহিনী বা অন্যান্য বিষয়ের বই। দুটো রান্নার বইও চোখে পড়েছে। তবে তৃতীয় তাকে একটা বইয়ের ওপর চোখ আটকে গেছে আমার। মাঝারি গোছের মোটা একটা বই। বিস্তর বইয়ের সারির ঠিক মাঝখানে এমন ভাবে বইটাকে গোঁজা আছে যে চট করে চোখে পড়ার কথা নয়। বইয়ের নাম “প্র্যাক্টিকাল সেক্স গাইড”। পিছনে ফিরে রান্নাঘরের দরজার মুখটা দেখে নিয়ে বইটা একটু বের করে বইয়ের কভারের সামনেটা একবার ভালো করে দেখে নিলাম। কভারে লেখা আছে “ গোপন শারীরিক মুহূর্তগুলোকে আরও আনন্দঘন করে তোলার মেডিসি-কামিনী পাবলিশার্স।” কভারটা উল্টাতেই প্রথম পাতায় বইয়ের মালকিনের নাম চোখে পড়ল-”সঞ্চিতা”। বইটাকে আবার র্যাকে গুঁজে দিতেই ম্যাডাম বেরিয়ে এলেন।

১৩
আমি সোফায় ফিরে গিয়ে বললাম “ আপনার তো অনেক বই আছে ম্যাডাম।” উনি জবাব দিলেন “হ্যাঁ। বই পড়তে আমার বেশ ভালো লাগে।” আমার হাতে চায়ের কাপটা ধরিয়ে দিয়ে একটা বিস্কুটের প্লেট নিচে নামিয়ে রাখলেন টেবিলে। নিজের চায়ের কাপটা নিয়ে উনি পাশের সোফাটায় গিয়ে বসলেন। আমাকে জিজ্ঞেস করলেন “বাজার করতে এসেছিলে?” চায়ের কাপটা আমার মুখে ধরে থাকায় জবাব দিতে একটু দেরী হল। উনি বললেন “নাকি কারোর জন্য অপেক্ষা করছিলে?” ওনার ঠোঁটের কোণে একটা মৃদু হাঁসির রেখা খেলে গেল। হাসলে ওনাকে বেশ মিষ্টি লাগে! শেষ কথায় উনি কি ইঙ্গিত করেছে সেটা বোঝার জন্য আইনস্টাইনের বুদ্ধি লাগে না। আমি চায়ের কাপটা মুখের সামনে থেকে সরিয়ে বললাম “ হ্যাঁ অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তু একজন বাড়ির এজেন্টের জন্য।”
উনি বললেন “এজেন্ট?” বললাম “হ্যাঁ। এখানে একটা ধর্মশালায় উঠেছি। বুঝতেই তো পারছেন, যতই শস্তা হোক না কেন, বেশী দিন ওখানে থাকতে হলে টাকা শেষ হয়ে যাবে। তাছাড়া খাওয়া দাওয়াও ভালো নয়। তাই একটা শস্তা মেস খুঁজছিলাম। খাওয়া দাওয়া একটু ভালো হলেই আমার চলে যাবে। আর একটু হাইজিনিক।” ম্যাডাম চায়ের কাপে একটা সশব্দ চুমুক দিয়ে বললেন “ কিন্তু এখানে তো অনেক হোস্টেল। তোমার তো মেস খুজে পেতে অসুবিধা হওয়ার কথা নেই। এখানে এসেই তো সেরকম একটা মেস খুঁজে নিতে পারতে। এত দেরী করলে কেন?” বললাম “হ্যাঁ পাঁচ ছয়টা মেস দেখেছি। কিন্তু ঠিক পছন্দ হয় নি। ঠিক ছাত্রদের মেস বলতে যা বোঝায় তেমন নয় ওগুলো। “ উনি একটু জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন দেখে বললাম “ বেশির ভাগ মেসে দুজন ছাত্র তো দুজন চাকুরেদার লোক। হই হট্টগোল লেগেই আছে। পড়াশুনা খুব একটা হবে বলে মনে হয় না। কলেজের হোস্টেলটা পেয়ে গেলে ভালো হত। কিন্তু এখন একটু ঠাণ্ডা গোছের কিছু একটা খুঁজতে হচ্ছে। “
ম্যাডাম একটু হেঁসে বললেন “ বাড়িতে কে কে আছেন?” আমি বাবা , মা সবার ব্যাপারে বললাম। গ্রামে আমাদের বাড়ির রান্না খুব ভালো সেটাও বললাম, কারণ ওনার বোঝা উচিৎ কেন আমার খাবার দাবারের ব্যাপারে এত খুঁতখুঁতে ভাব। উনি হেঁসে বললেন “শোনো সংকেত, তুমি উইকএন্ডে এসে আমাদের এখানে খেয়ে যেও। বাড়ির মতন ভালো রান্না মেসেও পাবে না। অবশ্য আরেকটা জিনিস না বলে পারছি না। এটা কোলকাতা। এখানে ছেলে মেয়েরা একটু হইহুল্লোড় পছন্দ করে। তাই তুমি যেমন খুঁজছ তেমন মেস পাওয়া বেশ শক্ত। “ আমার চা পান শেষ। উনি কি যেন একটু ভেবে বললেন “বাই দা ওয়ে, তোমার বাজেট কেমন? কিছু মনে করো না, জিজ্ঞেস করছি, কারণ বাজেট ম্যাচ করলে আমি হয়ত তোমাকে কিছু খোঁজ দিতে পারি, বা সাহায্য করতে পারি।”
আমি মনে মনে হিসাব করে নিলাম – “(কাল্পনিক ধর্মশালায়) আমার দৈনিক পড়ে ২০০ টাকা, সুতরাং মাসে পড়বে ৬০০০ টাকা, তার সাথে খাওয়া দাওয়ার জন্য দিনে আরও ৫০ টাকা করে নিচ্ছে, সুতরাং মাসে দাঁড়াচ্ছে ১৫০০ টাকা। সমস্যা হল, এতে লাঞ্চ পাওয়া যায় না। শুধু ডিনার আর ব্রেকফাস্টেই সবটা বেড়িয়ে যায়। দুপুরে লাঞ্চ করতে হলে আরও বেশী লাগবে। কলেজের ক্যান্টিনের দাম অনেক চরা, মানে আমাদের যা বাজেট সেই অনুপাতে। তাই ইদানিং দুপুর বেলায় কিছু খাওয়া হচ্ছে না। এখানে সবাই টিফিন নিয়ে আসে, কিন্তু বুঝতেই তো পারছেন যে আমার তেমন সুবিধা নেই। এইভাবে তো বেশী দিন চলতে পারে না। তাই কলেজের ধারে কাছে একটা শস্তা মেস খুঁজছি যাতে দুবেলার খাবার পাওয়া যাবে। আর কলেজের কাছে থাকায়, চট করে গিয়ে খেয়ে চলে আসতে পারব। “
উনি খুব করুণ মুখ করে আমার সব কাল্পনিক গল্প শুনে আমাকে বললেন “তোমার বাবা কি করেন?” বললাম “সমাজসেবী। তবে যা আয় হয় সবই এখানে ওখানে দিয়ে দেন। তাই বেশী চাপ দেওয়া যায় না বাবার ওপর।” উনি একটু কি যেন ভেবে নিয়ে বললেন “আচ্ছা এইবার খোলা খুলি বলোতো তোমার বাজেট কেমন মাসে?” আমি একটুও না ভেবে বললাম “সত্যি বলতে কি শুরুতে আমার আইডিয়া ছিল যে চার হাজারের মধ্যে চলে যাবে। কিন্তু এখন সাড়ে চার হাজার অব্দি উঠতে বাধ্য হচ্ছি। “ উনি বললেন “চার হাজারে কিন্তু ভালো মেস পেয়ে যাবে।” আমি অসহায় ভাবে বললাম “তার থেকেও অনেক কমে হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ওগুলো হয় ভীষণ নোংরা বা এত হইচই দেখলাম যে সাহসে কুলাল না। বাবা পড়াশুনার ব্যাপারে ভীষণ কড়া। রেজাল্ট খারাপ হলে আমার পিঠের চামড়া…” বাকি কথাটা শেষ করলাম না।
বোধহয় ম্যাডাম বিশ্বাস করতে পারছিলেন না যে এই জমানাতেও কোনও প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে তার বাবাকে এমন সমীহ করে চলে। উনি আমার কাছ থেকে আমার মোবাইল নাম্বারটা নিয়ে নিলেন। আমি ওঠার আগে আবারও বললাম “এখন মাসে শুধু থাকা আর খাওয়াতে ৭৫০০ এর ওপর বেড়িয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া এই শহরে থাকতে গেলে আরও ৫০০-৬০০ টাকা এদিক ওদিক খরচ হয়েই যায়। কি যে করি… খুব দুশ্চিন্তায় আছি। এমনিতেই এখানে পড়তে পাঠানোর সময় অনেক খরচ করেছেন বাবা। এখন আর মুখ ফুটে বেশী টাকা চাইতে খারাপ লাগে।” ম্যাডামের মুখ দেখে বুঝতে পারছিলাম যে উনি আমার অসহায় অবস্থা দেখে একটু চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।
আমার ভালোমানুষি ভাবটাও যে ওনাকে ভেতরে ভেতরে ছুঁয়ে গেছে সেটাও বোঝা যাচ্ছে ওনার মুখ দেখে। আমি উঠে পড়লাম। দরজার কাছে এসে উনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, “তোমার র্যাছঙ্ক কত ছিল জয়েন্টে?” বললাম। বেড়িয়ে পড়লাম। পিছন থেকে ওনার গলার আওয়াজ পেলাম “দেখি একটু ভেবে। তোমাকে কল করে জানাচ্ছি খুব তাড়াতাড়ি। “ ফোন করে জানতে পারলাম যে আমার দালালের আসতে এখনও দেরী আছে। সুতরাং আর দেরী করার কোনও মানে নেই। কারণ ও কখন আসবে জানি না। তার পর আবার দুটো মেস দেখতে যাব। সেগুলো কোথায় সেটাও জানা নেই। আপাতত আমি হোটেলে ফিরে চললাম। একটু সময় নিয়ে সাজ গোজ করতে হবে।
হাতে সময় নিয়েই বেরলাম যাতে নাইট ব্লুতে ঠিক সময়ে গিয়ে পৌঁছাতে পারি। পথে অবশ্য অন্য একটা কাজ সেরে নেওয়ার দরকার ছিল। সেটা ভালো ভাবেই মিটেছে। সাড়ে আঁটটায় টাইম দেওয়া আছে। তার আগে পৌঁছানোর কোনও মানে নেই। কারণ যাদের সাথে যাচ্ছি তাড়া বড়লোক বাপের সন্তান। তাদের সময় জ্ঞান খুব বেশী হবে বলে মনে হয় না। ওদের আগে পৌঁছে গেলে ভাবতেই পারে যে গাইয়া ভূতটার ডিস্কে যাওয়ার তর সইছে না। নাইট ব্লু একটা বড় বার।
আমি যখন পৌছালাম তার আগেই অবশ্য ওরা সবাই পৌঁছে গেছে। পথে দুবার কল পেয়েছি দোলনের কাছ থেকে। বারবার বলেছে যে আমি যেন দেরী না করি। পথে অবশ্য আরেকটা কল পেয়েছি। সেটা এসেছে সঞ্চিতা ম্যাডামের কাছ থেকে। আমি ওনাকে বললাম যে আমি মেস দেখছি। ধর্মশালায় ফিরে ওনাকে কল করব। এটুকু মিথ্যা না বললেই নয়। নাইট ব্লুর সামনে যাদের দেখলাম তাদের ব্যাপারে দু-এক কথা বলে দেওয়া দরকার।
দোলন আর রাকাকে আগে থেকেই চিনি। এদের ব্যাপারে আর কি বলব। বিশাল সিং এসেছে, আর তার সাথে এসেছে আরেকজন দীর্ঘকায় ছেলে। জানতে পারলাম তার নাম শুভ। এই হল বিশালের সেই বিখ্যাত দাদা। শুভ বারবার ঘড়ি দেখছে, যেন কারোর জন্য অপেক্ষা করছে। আরেকজন এসেছে, সুনীল সরকার। বেচারা কুন্তল যদি জানতে পারত যে ওর বন্ধু এই ভিলেন সুনীলের সাথে পার্টি করতে ঢুকছে তাহলে বোধহয় মর্মাহত হয়ে পড়ত। মালিনীর কথা ছেড়েই দিলাম। আরেকজন মেয়ে এসেছে, জানলাম তার নাম হল সুচেতা। বাহ। বেশ মিষ্টি মেয়েটা। সুচেতার বয়স মনে হল বিশালের সমান। এটাও দেখে মনে হল যে সুচেতা আর বিশালের মধ্যে কেমন যেন একটু ইয়ে ইয়ে ব্যাপার আছে। কিন্তু আরেকটা জিনিসও আমার চোখ এরায়নি। দেখে মনে হল সুচেতা আর শুভর মধ্যেও একটা ইয়ে ইয়ে ব্যাপার আছে।
আগেই বলেছি যে বিশাল আর রাকা একে ওপরের পূর্ব পরিচিত। অবশ্য আজ এই অবস্থায় দেখে মনে হল যে বিশালের রাকার ব্যাপারে তেমন কোনও ছুঁক ছুঁক ভাব না থাকলেও, রাকার বিশালের ওপর একটা অদৃশ্য টান আছে। অবশ্য বাইরে থেকে রাকার হাব ভাব দেখে সেটা বোঝা শক্ত। বিশালের সাথে কথা বলার সময় একদম সাধারান ভাবে কথা বলছে, ভাব খানা এমন যেন বিশালের প্রতি ওর তেমন কোনও অনুভূতি নেই। কিন্তু বিশালের সুচেতার সাথে মাখা মাখিটা যে ও সহজ ভাবে মেনে নিতে পারছে না সেটা ওকে একটু ভালভাবে লক্ষ্য করলেই ধরা যায়।
ব্যাপারটা কি একটু বেশীই জটিল বানিয়ে ফেলেছি? তাহলে সহজ ভাবে বলি। বিশাল সুচেতাকে পছন্দ করে, আর প্রকাশ্যে হাবে ভাবে সেটা বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। একটা বেশী রকম গায়ে পড়া ভাব। সুচেতা বিশালকে ঠ্যাকা দিয়ে চললেও বোঝা যায় যে ওর আকর্ষণের কেন্দ্র বিন্ধু হল শুভ। শুভ যে কার জন্য অপেক্ষা করছে সেটা বলা শক্ত। আর এই দিকে আমাদের ক্লাসের রাকা বিশালের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে। মোটের ওপর এই। দোলন হঠাত বলে উঠল “এইভাবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকার মানে হয় না। শুভ, চলো ভেতরে ঢুকে পড়ি। লেটস এনজয়।”
শুভ বলল “সে তো ঠিকই বলছিস। কিন্তু যে পার্টি দেবে বলেছে সেই না এলে বিলটা কে মেটাবে শুনি?” সবাই হেঁসে উঠল। আমি হাঁসতে পারলাম না, কারণ আমি জানি না যে কে এই পার্টিটা থ্রো করেছে। দোলন আর সুনীল এগিয়ে গেল দরজার দিকে। আমরা ঢিলে ঢালা তালে ওর পিছু নিলাম। হোটেলের ভেতরটা আলো আধারিতে ভরা। বিভিন্ন রঙ বেরঙের আলো এদিক ওদিক ঠিকরে পড়ছে বেশ কয়েকটা গোলাকৃতি বস্তুর ভেতর থেকে। উচ্চস্বরে মিউজিক চলছে। গানের তালে তালে, বা বলা ভালো মিউজিকের তালে তালে সেই গোলাকৃতি পিণ্ডটার থেকে রঙ বেরঙের আলো ঠিকরে ঠিকরে বেরোচ্ছে চতুর্দিকে। সিট নাকি রিজার্ভ করা আছে। তবে সিট অব্দি পৌঁছাতে বেশ বেগ পেতে হল। কারণ, অন্ধকারে, এতগুলো নৃত্যরত বিভিন্ন বয়সের উন্মাদ নরনারীর ধাক্কা সামলে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়াটাও একটা চ্যালেঞ্জ।
তবে সিট অব্দি পৌঁছাতে হল না, তার আগেই, একটা ব্যাপার দেখে থমকে না গিয়ে পারলাম না। আমি দোলনের হাতটা চেপে ধরে কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম “দীপকদাও কি জয়েন করবে নাকি?” ও যেন একটু আশ্চর্য হয়েই চারপাশটা একবার দেখে নিল। তার পর গলা তুলে বলল “কেন?” বললাম “ওই যে দেখ।” এত শব্দের জন্য আমাদের সবাইকে গলা তুলে কথা বলতে হচ্ছে। আমি জানি না আমাদের সিট কোথায়। কিন্তু একটু দূরে দেখতে পেলাম যে দীপক আর আরেকটা মেয়ে গায়ে ঢলাঢলি করে বসে আছে। অন্ধকারে আরেকটু চোখ সয়ে যাওয়ার পর বুঝতে পারলাম যে ওই মেয়েটা আর কেউ নয়, ইনি আমাদের পূর্ব পরিচিতা শিখাদি।
ওদের ওপর চোখ বুলিয়ে নিয়ে চাপা গলায় বলল “শালা রাখেল নিয়ে এসেছে।” বিভিন্ন কারণে দীপকের ব্যাপারে দোলন যদিও কলেজে কোনও রকম মুখ খুলতে পারে না প্রকাশ্যে, কিন্তু আজ এই মুহূর্তে বুঝতে পারলাম যে দীপক আর শিখার ব্যাপারে ওর ধারণা কেমন। আমি ওকে একটা চোখ মেরে বললাম “কথাটা কি সত্যি?” দোলন বলল “ না তো কি?” রাকাও দেখেছে দীপক আর শিখা কে। আমাদের জন্য একটা বড় টেবিল বুক করা ছিল। আমি টেবিলে পৌঁছেই ওদের বললাম “এক্সিউজ মি। আমি একটু আসছি।”
সবাই আমার দিকে একটু জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে দেখে বললাম “ দীপকদার সাথে এই গতকাল আলাপ হল। আরেকবার দেখা করে আসি।” ওদের মুখে চাপা বিরক্তির ভাব। কেউ যে ওদের সহ্য করতে পারে না সেটা আরও স্পষ্ট ভাবে প্রকাশ পেয়ে গেল ওদের হাবে ভাবে। আমি বললাম “আমি বাইরের ছেলে। ওর সাথে একটু দোস্তি রেখে চললে পরের কয়েকটা বছর এখানে শান্তিতে কাটাতে পারব।”
কিন্তু আমার যাওয়া হল না। কারণ ওদের দিকে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই, দোলন আমার একটা হাত চেপে ধরে বলল “চুপ করে বস। ওকে অত মাথায় তোলার দরকার নেই। “ কথাটা ও মিথ্যে বলেনি। অগত্যা। আমি বসে পড়লাম। শুভ বসেই মোবাইলে কি একটা দেখতে শুরু করে দিয়েছে। দোলন, রাকা, সুচেতা সবার গায়েই একটা করে শাঙ্ক বা জ্যাকেটের মতন জিনিস পরা ছিল। সিটে বসার আগে গায়ের জ্যাকেটগুলো সবাই খুলে সিটের পেছনে মেলে দিল।
উফফ এক লাফে আমার বাঁড়াটা খাড়া হয়ে গেল। তিনটে মেয়েই যেন একে ওপরের সাথে আলোচনা করে একই রকম ম্যাচিং ড্রেস পরে এসেছে। তিন জনের পরনেই কালো রঙের একদম একই রকমের পোশাক। এগুলোকে বলে টিউব ড্রেস। যারা জানে না কেমন দেখতে হয় এমন পোশাক তাদের জন্য একটু বুঝিয়ে রাখা ভালো। স্ট্র্যাপ বিহীন চামড়ার তৈরি এক ধরণের পোশাক যেটা বুকের ঠিক ওপর থেকে শুরু করে থাইয়ের মাঝ অব্দি নেমে এসেছে শরীরটাকে গোল ভাবে জড়িয়ে রেখে। স্তনের ওপর থেকে গলা অব্দি, আর থাইয়ের নিচ থেকে গোড়ালি সবটাই নগ্ন। তিন জনেরই গলায় একটা করে সরু সোনার চেন। সোনার চেনটা যেন ওদের শারীরিক সৌন্দর্য আরও দশ গুন বাড়িয়ে দিয়েছে। সমস্যা হল, অন্য জায়গা হলে এতক্ষন মাগীগুলোকে চোখ দিয়ে গিলে খেতাম। কিন্তু এখানে ওদের দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকা যাবে না। হায় রে আমার পোড়া কপাল।
অবশ্য এই পরিবেশে এই রকম পোশাক খুবই সাধারণ। দোলন বলল “পাঁচ মিনিট ওয়েট করা যাক। তারপর, আর নয়। অর্ডার দিয়ে দেব তারপর। “ সবাই সম্মতি জানালাম। তবে পাঁচ মিনিট ওয়েট করতে হল না। এরই মধ্যে শুভর কাছে একটা কল এলো। শুভ গলা চড়িয়ে ঠিক কি বলল সেটা এই চড়া মিউজিকের জন্য শুনতে পেলাম না, কিন্তু মিনিট দুয়েকের মধ্যেই দেখলাম একটা মাঝারি উচ্চতার ছেলে এসে হাজির হয়েছে আমার টেবিলে। গায়ের রঙ ফর্সা, স্বাস্থ্য ভালো। আলাপ হতে জানলাম, এর নাম শান্তনু মুখার্জি। ইনি দোলনের সেই আমেরিকান দাদা। ছুটিতে কয়েকদিনের জন্য এসেছে কলকাতায়, আর এরই অনারে আজ এই পার্টি। আর ইনিই আজকের পার্টির বিল মেটাবে।
ও আসতেই ড্রিঙ্কস আর খাবার দাবারের অর্ডার দিয়ে দেওয়া হল। শান্তনু গিয়ে বসেছে শুভর পাশে। আর শুভর আরেক পাশে বসেছে সুচেতা। আর সুচেতার পাশে বিশাল। ওই দিকে আর জায়গা না থাকায়, দোলন আর রাকা বসেছে আমার দুপাশে, আর রাকার পাশে বসেছে সুনীল। মদের গ্লাসে প্রথম চুমুক দিতে না দিতেই শুভ শান্তনুর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল “তাহলে মিস্টার এন আর এই, আমাদের আজকের প্রোগ্রাম ফাইনাল তো?”
সবার মুখের ওপর একবার চোখ বুলিয়ে নিয়ে বুঝতে পারলাম যে দোলন ছাড়া সবার মুখেই একটা বিস্ময়ের ছায়া। মানে দোলন, শান্তনু আর শুভ ছাড়া এই ব্যাপারে কেউই কিছু জানে না। শুভ সবার মুখের এই কৌতূহলী ভাবটা লক্ষ্য করেই বোধহয় ব্যাপারটা একটু খোলসা করে বলল। “ আরে শান্তনুর সাথে অনেক দিন ধরে প্ল্যান করেছিলাম যে এই বার ও ইন্ডিয়ায় এলে দুই তিন দিনের জন্য মন্দারমনির দিকে ঢু মারব। এদিকে নেক্সট উইক থেকে আমাকে একটু কাজের ব্যাপারে বাইরে বাইরে থাকতে হবে। আর …” শান্তনু বাকি কথাটা শেষ করল “ আর আমাকেও নেক্সট উইক থেকে এর বাড়ি ওর বাড়ি খেয়ে বেড়াতে হবে। জত্ত সব। যাই হোক। তাই খুব সম্ভবত আর সময় পাওয়া যাবে না। তাই আজকেই …”
গ্লাসে আরেকটা চুমুক মেরে বলল “ বাই দা অয়ে, তোরা কেউ জয়েন করতে চাইলে এখনই বল। কারণ লোক বেশী হলে সেই মতন গাড়ির ব্যবস্থাও করতে হবে।” শুভ বলল “ইয়েস। তবে আমাদের গাড়িতে এখনও জায়গা আছে। “ দিয়ে শুভর দিকে তাকিয়ে বলল “কিছুক্ষনের মধ্যেই গাড়ি এসে পড়বে। কেউ যেতে চাইলে এখনই বলতে হবে। “ দোলন জানিয়ে দিল যে ওর যাওয়া হবে না। রাকারও যাওয়া হবে না। আমার যে যাওয়া হবে না সেটা বলাই বাহুল্য। মাঝখান থেকে দেখলাম সুনীল ওদের দলে ভিড়ে গেল।
বিশাল প্রথমে ওদের সাথে যেতে চাইছিল না। কিন্তু, সুচেতা হঠাত করে ওদের দলে ভিড়ে যেতেই দেখলাম বিশালও নিজের মত পাল্টে ওদের দলে ভিড়ে পড়ল। সুচেতা যাবে বলেই যে বিশাল ওদের সাথে যেতে রাজি হয়েছে সেটা জলের মতন পরিষ্কার। এই দিকে বিশাল সুচেতার সাথে যাচ্ছে জেনে রাকার চোখ মুখের কি অবস্থা হল সেটা আর দেখতে পেলাম না। রাকা আমার পাশে না বসে সামনে বসলে ভালো করে ওর রিয়েকশনটা উপভোগ করতে পারতাম। হেহে। কিন্তু ও যে যারপরনাই বিরক্ত হয়েছে সেটা প্রকাশ পেল ওর পরের কথাতেই।
“ধুস। তাহলে আজ এই প্রোগ্রামটা না করলেই পারতে। ভাবলাম একটু জমিয়ে বসে মদ খাব, নাচ টাচ হবে, কিন্তু এখন তো দেখছি যে তোমরা বসতে না বসতেই ওঠার প্ল্যান শুরু করে দিয়েছ।” শান্তনু বলল “ ডোন্ট অয়ারি মাই ডিয়ার, তোরা সবাই ভালো করে ফুর্তি কর। ম্যানেজার শুভর চেনা। যা বিল হবে ফিরে এসে আমি মিটিয়ে দেব। আমরা উঠে পড়ব বলে তোদেরও উঠতে হবে এমন কোনও কথা নেই।” রাকা অসম্মতি প্রকাশ করে বলল “দূর, গ্রুপ ভেঙ্গে গেলে আর ফুর্তি হবে কি করে। আমি আর একটা কি দুটো পেগ মেরে উঠে পড়ব।”
মনে মনে বললাম “বেচারি।” আমি একটা কথা জিজ্ঞেস না করে পারলাম না, “ তোমরা নিজেরা নিশ্চই এই অবস্থায় গাড়ি চালাবে না! ড্রাইভার যাবে তো সাথে? “ শুভ এক চুমুকে গ্লাসের পানীয় গলায় ঢেলে একটা ঢেঁকুর তুলে বলল “ইয়েস। আমরাই চালাব। আমরা যাতে মাতাল, কিন্তু স্টিয়ারিঙে হাত পড়লেই আমাদের হাত একদম স্টেডি হয়ে যায়। “ শান্তনুও দেখলাম এই ব্যাপারে এক মত। “ওই সব ড্রাইভার নিয়ে গিয়ে কোনও লাভ নেই। ওখানে গিয়ে দেখব মাল নিজেই মাল খেয়ে আউট হয়ে পড়ে আছে। তার থেকে নিজেদের কন্ট্রোল নিজেদের হাতেই রাখা ভালো।” ইতিমধ্যে আরেকটা অদ্ভুত ব্যাপার ঘটে গেল।
শুভ বলল “তাহলে ব্যাপারটা ফাইনাল করে নেওয়া যাক। আমি, তুই, সুনীল, সুচেতা, বিশু (বিশাল কে আদর করে বোধহয় এই নামেই ডাকা হয় বাড়িতে), ওই দিকে আসছে সঞ্জীব আর রঞ্জনা। লাস্ট টাইম জিজ্ঞেস করছি, আর কেউ যাবি?” উত্তরটা এল পাশ থেকে। “ইয়েস আমিও যেতে পারি যদি জানতে পারি যে শান্তনুদা কোথায় নিয়ে যাচ্ছে।” ঘাড় ঘুরিয়ে দেখলাম টলমল পায়ে আমাদের টেবিলের কাছে এসে দাঁড়িয়েছে দীপকদা। ডান হাতে মদের গ্লাস, আর বাঁ হাতে শিখাদিকে জড়িয়ে ধরে রেখেছে। শিখাদির হাতেও স্বচ্ছ তরলের গ্লাস। আর অন্য হাতে একটা আধ পোড়া সিগারেট। পরনে একটা চকলেট কালারের ডিপ নেক স্লিভলেস ঢিলে টপ, আর মিনি স্কার্ট। সরি, মিনি না বলে ওটাকে মাইক্রো মিনি বলা যেতে পারে। দেখে মনে হল জিনিসটা প্যানটির ঠিক নিচেই শেষ হয়ে গেছে। একটু এদিক ওদিক হলেই ওর প্যানটি সমেত ঊরুসন্ধি সবার চোখের সামনে নগ্ন হয়ে যাবে। ওপরে স্তন বিভাজিকার অনেকটা জামার বাইরে বেড়িয়ে আছে। কিছু সেই দিকে শিখাদির কোনও খেয়াল নেই।
বোঝাই যায় যে অনেকক্ষণ ধরে পেগ মারছিল দুজনে। বোধহয় একটু নাচানাচিও করে এসেছে। কারণ দুজনেই বেশ হাঁপাচ্ছে আর ঘামাচ্ছে। শিখাদির মুখের মেক আপ প্রায় সব ঘামে ধুয়ে গেছে। দুজনের অবস্থাই বেশ টলমল। শিখাদিকে দেখে মনে হচ্ছে যে দীপকদা হাত সরিয়ে নিলেই ও মাটিতে লুটিয়ে পড়বে। শুভ দীপক কে কিছু একটা বলতে গিয়ে থেমে গেল। কিন্তু দীপক ছাড়ার পাত্র নয়। আবার জিজ্ঞেস করল “কি শান্তনুদা, আমাকে নিয়ে যাবে না?” এর পর আর অন্য কিছু বলা যায় না। শান্তনু একটু গলা খাঁকড়িয়ে নিয়ে বলল “ আমরা মন্দারমনি যাবার প্ল্যান করছিলাম।” দীপক এক চুমুকে গ্লাসটা সাবার করে দিয়ে বলল “আই অ্যাঁম ইন।”
এরপর ও যা করল সেটা আরও বেশী অপ্রত্যাশিত। নিজের মুখ নামিয়ে শিখাদির ঘামে ভেজা নগ্ন কাঁধের ওপর চুমু খেয়ে ওকে জিজ্ঞেস করল “ কি হানি, তুমি যাবে না আমার সাথে?” কথা জড়ানো। আরেকটা চুমু খেল নগ্ন গলার কাছে। শিখাদি বোধহয় এতক্ষন চারপাশে কি কথা হচ্ছে সেটা শুনতেই পায়নি। নগ্ন কাঁধে আর গলার কাছে চুমুর অনুভূতি পেতেই কেমন যেন চমকে সম্বিত ফিরে পেল। একটা হুম মতন শব্দ করে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাল দীপকদার দিকে। দীপকদা ওর মাথার পেছনে হাত নিয়ে গিয়ে মাথাটাকে শক্ত ভাবে চেপে ধরে ওর মুখটা উচিয়ে নিজের মুখের দিকে নিয়ে এল, সবার সামনে নিজের ঠোঁট চেপে ধরল ওর ফাঁক হয়ে থাকা ঠোঁটের ওপর। ব্যাপারটা চলল প্রায় তিরিশ সেকন্ডের কাছা কাছি। তারপর ওর ঠোঁটের ওপর থেকে নিজের ঠোঁট সরিয়ে নিয়ে বলল “হানি , সেক্স অন দা বিচ কেমন হবে? যাবে নাকি মন্দারমনি আমাদের সাথে?”
দীপকদা কথাটা বলল বেশ আদেশের সাথেই। আমি চট করে একবার শুভ আর শান্তনুর মুখের ওপর চোখ বুলিয়ে নিলাম। ওদের মুখে এক রাশ বিরক্তি। পাশ থেকে দোলন চাপা গলায় বলল “শালা রেন্ডি কোথাকার।” ওর গলাতেও বিরক্তি আর রাগের আভাষ। তবে এত মিউজিকের মধ্যে বাকি কেউ ওর কথা শুনতে পেয়েছে বলে মনে হল না। শিখাদি এখনও চুপ। ওর চোখ আধবোজা। ও নিজেকে স্টেডি করার চেষ্টা করছে ঠিকই কিন্তু মদের নেশায় এতই আচ্ছন্ন যে চারপাশের ব্যাপার স্যাপার কিছুই বুঝতে পারছে না। দীপকদা আবার ওর ঠোঁটের ওপর নিজের ঠোঁট চেপে ধরল। আমরা সবাই আবার দেখলাম ওদের চুম্বনের নির্লজ্জ প্রদর্শন। কিছুক্ষণ পর আবার ওর ঠোঁটের উপর থেকে নিজের মুখ সরিয়ে বেশ গলা চড়িয়ে জিজ্ঞেস করল “কি বে যাবি নাকি সেটা বল। মন্দারমনি।”
এইবার কথাটা বলল বেশ রাগ আর বিরক্তির সাথে। এইবার শিখাদি ওর কথা বুঝতে পেরেছে বলে মনে হল। একটু নড়ে চড়ে উঠে বলল “ কবে?” দীপকদা শান্তনুর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল “কি দাদা কবে যাওয়া হচ্ছে?” শান্তনু আর শুভ একবার নিজেদের মধ্যে চোখা চুখি করল। বুঝতে পারলাম যে ওরা দীপককে নিজেদের সাথে নিয়ে যেতে চায় না। কিন্তু এখন আর কিছু করার নেই। শান্তনু বলল “ আজ, মানে এই একটু পরে।” দীপকদা শিখাদির নগ্ন ঘাড়ের ওপর একটা চুমু খেয়ে বলল “হানি , আজ এখন।” শিখাদি এইবার সব কথাই শুনতে পেয়েছে। ও জবাব দিল “ আজ হবে কি করে? আমাকে আজ …” দীপকদা বেশ বিরক্তির সাথে বলল “শাট আপ। আজ কোথায় যেতে হবে? সোনাগাছি?” বলে সবার দিকে তাকিয়ে নির্লজ্জের মতন হেহে করে কিছুক্ষণ নিজের মনেই হেঁসে চলল।
সবাই নিজেদের গ্লাসের দিকে তাকিয়ে আছে। শুধু আমিই নির্লজ্জের মতন ওদের দিকে তাকিয়ে দেখছি। দীপকদার সাথে আমার বেশ কয়েকবার চোখা চুখি হয়েছে এর মধ্যে। কিন্তু ও যেন আমাকে তেমন গ্রাহ্যই করল না। সেদিন যে আমার পিঠের ওপর এতগুল দুমাদ্দুম উত্তম মধ্যম দিয়েছে সেটা বোধহয় এখন আর ওর মনে নেই। বা হতে পারে আমার ওপর থেকে ওর রাগ সত্যিই পড়ে গেছে। যাই হোক শিখাদি তবুও মিন মিন করে কিছু একটা বলল দীপকদাকে যেটা আমরা শুনতে পেলাম না। দীপকদা বেশ বিরক্তির সাথে সবাই কে জানাল যে শিখাদি ওদের সাথে আজ যেতে পারছে না।
এইবার শান্তনুকে জিজ্ঞেস করল “তোমরা বেরচ্ছ কখন? তার মধ্যে ইয়ে মানে, আরও কয়েক পেগ মেরে মেজাজটা একটু চড়িয়ে নিতে হবে। হেহে।” শুভ বলল “ ধর আর এক ঘণ্টার মধ্যে বেরোবো।” দীপকদা “ওকে বস” বলে শিখাদিকে নিয়ে প্রায় টানতে টানতে নিয়ে চলে গেল। শিখাদির হাতের সিগারেটটা কিছুক্ষণ আগেই মাটিতে পড়ে গেছে ওর অজান্তে। তাড়াতাড়ি উঠতে হবে বলে আমরাও একটু তাড়াতাড়ি মদ গিলছি। সবারই একটা নেশা নেশা আমেজ এসে গেছে যেন কয়েক মিনিটের মধ্যে। শুভ ফোনটা কানে লাগিয়ে উঠে গেল টেবিল থেকে। মনে হয় গাড়ির বন্দবস্ত পাকা করতে গেল।
দোলন আর রাকা আমার সামনে ঝুঁকে নিজেদের মধ্যে ফিস ফিস করে কিছু কথা বলল। মনে হয় মদের নেশার জন্যই ওরা বুঝতে পারছে না যে ওদের দুজনের মাঝে বসে আমি ওদের সব কথাই শুনতে পেয়েছি। ওদের মধ্যে যে কথপকথনগুলো হল সেগুলো মোটামুটি এই রকম।
দোলন ঃ এখান থেকে বেরিয়ে কি করবি?
রাকাঃ তুই বল।
দোলনঃ এখন বাড়ি ফেরার কোনও মানে হয় না।
রাকাঃ এখানে বসে থাকারও কোনও মানে হয় না।
দোলনঃ আই এগ্রি। তুই মন খারাপ করিস না বিশালের জন্য। হি ডাস নট ডিসার্ভ ইউ।
রাকাঃ ছাড় ওর কথা। কি করবি বল।
দোলনঃ তুই আমি আর সংকেত, চল কোথাও গিয়ে বোতল নিয়ে বসে আড্ডা মারি।
(উফফ আমার কি সৌভাগ্য)
রাকাঃ সে হতেই পারে, কিন্তু কোথায়?
দোলনঃ সেটা দেখা যাবে। দুজনের কাছেই তো গাড়ি আছে। পরে ওকে ড্রপ করে দিলেই হবে।
(উফফ আমার জন্য দোলনের কত চিন্তা। আমাকে ড্রপ করার প্ল্যানও বানিয়ে ফেলেছে।)
রাকা “ওকে” বলে ঘাড় সরিয়ে নিতে যাবে এমন সময় আবার মুখটা আমার সামনে দোলনের দিকে নামিয়ে নিয়ে আসল।
রাকাঃ শিখাদি বোধহয় আজও ভেতরে কিছু পরেনি। রাইট?
দোলনঃ ওর পরা না পরা সমান। টিপে টিপে তো ঝুলিয়ে দিয়েছে। খানকী একটা।
রাকা (হেসে বলল)ঃ তবে শালা এরকম মাসল ম্যান ঠুসলে খারাপ লাগবে না। হেহে।
দোলনঃ ছাড় ওর কথা। (একটু হেসে বলল) তবে আজ আমিও ভেতরে কিছু পরিনি।
রাকাঃ আমিও না। হেহে।
দোলনঃ শালা তোর যা সাইজ তাতে ব্রা পরা না পরা সমান।
রাকাঃ শাট আপ বিচ। (হাসতে হাসতেই কথাটা বলল)
দুজনে আবার সোজা হয়ে বসে পড়ল।
এখানে একটা কথা বলে রাখা ভালো। শিখাদি যে টপটা পরেছে তার ঘাড়ের কাছটা এত সরু যে ওর পুরো কাঁধটাই প্রায় নগ্ন। নর্মাল ব্রা পরলে সেটা বাইরে থেকে বোঝা যেত। আমারও ওর বুকের ওঠা নামা দেখে মনে হয়েছিল যে ওর বুক দুটোর গতিবিধি একদম অবাধ, লাগামছাড়া। ব্রা যে পরেনি সেটা আমারও একবার মনে হয়েছিল। তবে আজ তো অনেক রকম ব্রা বেড়িয়েছে। কে জানে ভেতরে কি পরে আছে। আর ওর বুক দুটো বেশ ভারী। হতে পারে সেই জন্যই পাতলা ব্রা থাকা সত্ত্বেও বাইরে থেকে মনে হচ্ছে যে ভেতরে কিছু পরেনি।
যাই হোক। আমার মাথায় এখন ঘুরছে অন্য কথা। আমাকে অন্য একটা কলও করতে হবে। উঠে পড়লাম বাথরুমে যাবার ভান করে। কল শেষ করে যখন ফিরলাম তখন দেখলাম টেবিলের ওপর সবাই ঝুঁকে পড়ে চাপা গলায় কি সব আলোচনা করছে। আমি টেবিলের সামনে এসে বুঝতে পারলাম যে আমার উপস্থিতি ওরা যেন টের পায়নি। আমি একটু গলা খাঁকড়িয়ে বললাম “ কোনও গোপন আলোচনা থাকলে, আমি বাইরে থেকে একটা সিগারেট খেয়ে আসছি।” শান্তনু খুব ব্যস্ত হয়ে দাঁড়িয়ে বলল “ উফফ। ডোন্ট টক লাইক দ্যাট। উই আর ইন দা সেইম টিম।
তুমি, মানে তুইও বুঝতে পারছিস যে দীপককে আমরা সাথে নিয়ে যেতে চাই না। সেই নিয়েই…” আমি বসে পড়লাম। আমি খুব সহজেই ওদের বলতে পারি যে দীপক কে ওরা কিভাবে কাটিয়ে দিতে পারে। কিন্তু সেটা আর করলাম না। কি দরকার। আর তাছাড়া, আমি চাই যে দীপক ওদের সাথে যাক। কেন? সেটা …দোলন বলল “ দাদাভাই, এই দীপক শালা এই সংকেত কেও সেদিন পিটিয়েছে ফর নো রিজন। এই রকম কারোর গায়ে হাত তোলা আমি একদম সহ্য করতে পারি না। আর ড্যাড এই শালাটাকে…” শান্তনু ওকে থামিয়ে দিয়ে বলল “থাক ওসব কথা।
বাই দা ওয়ে, সংকেত, তুমি কি আমরা বেড়িয়ে যাওয়ার পর রাকা আর দোলনকে একটু এসকর্ট করে বাড়িতে নামিয়ে দিতে পারবে। “ বুঝতে পারলাম বিলেতি আদব কায়দা। রাকা বাঁধা দিয়ে বলল “ দোলন সংকেত কে ছেড়ে দেবে। ওকে আর আমাদের এসকর্ট করতে হবে না। তবে আমরা একটু এদিক ওদিক ঘুরে তবে বাড়ি ফিরব।” দোলনের দিকে ফিরে শান্তনু বলল “ বাট, বেশী রাত করিস না। মম চিন্তা করবে।” দোলন এইবার ওর দাদা কে থামিয়ে দিয়ে বলল “ মম চিন্তা করবে? হাসালি। আজ সেন্সে থাকলে তবে না চিন্তা করবে…”
বোধহয় আরও কিছু বলতে যেত দোলন, কিন্তু নিজের বুদ্ধিতেই নিজেকে থামিয়ে দিল। শুভ বলল “গাড়ি চলে এসেছে। শালাটা আগের বারের মতন এইবার আবার বাওয়াল না করলেই বাঁচি। মালটা একটা পাড়ার মস্তান। শালা কোনও স্ট্যান্ডার্ড নেই। কোথায় কি করতে হয় তাই জানে না।” শান্তনু বলল “হোপ সো।” কথা অন্য দিকে ঘুরে গেল। আরেক রাউন্ড ড্রিঙ্কের অর্ডার দেওয়া হয়েছে। আমরা যেন মদ নয়, জল খাচ্ছি।
দীপক টলমল পায়ে কিছুক্ষণ পরে এসে হাজির হল। এর মধ্যে অবশ্য রাকা আর শান্তনুর দুই একটা খোঁচা মারা কথা থেকে আমার কেমন একটা সেন্স হয়েছে। ওরা খোঁচা গুলো মেরেছে দোলন কে। দোলন যদিও কিছুই হয়নি এমন একটা ভান করে নর্মাল বিহেভ করে গেছে আমার সামনে। ওদের কিছু ইঙ্গিতপুর্ন কথা থেকে মনে হচ্ছিল যে রাকা আর শান্তনু দোলনকে আমাকে নিয়ে খ্যাপাচ্ছে। দোলনের কি আমার প্রতি কোনও ব্যথা আছে না কি? শালা। কেস হয়ে যাবে। তবে দোলনের কিছু আচরণ থেকে এটা আমারও মনে হয়েছে যে ও আমার ব্যাপারে একটু বেশী চিন্তিত।
একথা অস্বীকার করতে পারব না যে দোলন কে প্রথম দিন দেখেই ওর প্রতি আমি একটা ভীষণ শারীরিক আকর্ষণ অনুভব করেছিলাম। নাহ এখানে আমি সংসার পাততে আসিনি। পড়তে এসেছি। দোলনের সাথে কিছু হলে সেটা বিছানা অব্দিই থাকবে। সিঁথিতে সিন্দুর পরানোর কোনও চান্স নেই। কিন্তু দোলনের মতন মাগীকে বিছানায় তুলে ঠুসতে পারলে জীবন ধন্য হয়ে যাবে। যাকে বলে, একদম ডাঁসা একটা মাগী। যাই হোক এখন বোকা সেজে থাকা ছাড়া অন্য কোনও রাস্তা নেই।
দীপক বলল “ দাদা বেরচ্ছি তো?” বিল মেটানোর তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে। যদিও কথা হয়েছিল যে শান্তনু আজকের পার্টি দিচ্ছে তবু দেখলাম বিল মেটানোর সময় শুভ ওর হাত থেকে বিলটা ছিনিয়ে নিয়ে নিজেই মিটিয়ে দিল। বেশ দোস্তি আছে দুজনের মধ্যে সেটা বোঝা যায়। আমিও একবার শেয়ার করব বলে প্রস্তাব করেছিলাম, তাতে শান্তনু আর শুভ দুজনেই এত ধমকে উঠল যে আমি চেপে গেলাম। শুভ বলল “তোর সাথে আমাদের তেমন করে আলাপই হল না। পরে একদিন জমিয়ে বসে আড্ডা মারা যাবে। তুই পুরো আমাদের মতন লেবেলের ছেলে। “
দীপক বলল “আমার একটা সমস্যা আছে। শিখাকে একটু মেসে ছেড়ে দিয়ে আসতে হবে। “ কেউই শিখা কে ছেড়ে দিয়ে আসবে না দেখে শেষ মেষ আমিই ভদ্রতা দেখিয়ে বললাম “ দীপকদা মেসটা কোথায়? কলেজে তো?” দীপক বলল “ না। ও বাইরে থাকে। তুই ছেড়ে দিয়ে আসবি? সরি ছেড়ে দিয়ে আসবে? মানে আসবেন?” ও যেন কেন আমার সামনে এরকম তুই, তুমি আর আপনি নিয়ে কনফিউসড হচ্ছে সেটা বোধগম্য হল না। আমি দোলনের মুখের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারলাম যে ও আগ বাড়িয়ে আমার এই সাহায্য করার ব্যাপারটা একদম পছন্দ করছে না। আর এর আগেই ও আর রাকা আমাকে অফিসিয়ালি ওদের প্ল্যানটা জানিয়ে দিয়েছে। আর এই সময় আমি হঠাত করে এমন একটা উটকো ঝামেলা কেন নিজের ঘাড়ে নিচ্ছি সেটা ওরা বুঝতে পারছে না।
আমি আসলে চাইছি যেন দীপকদা আমার ওপর একটু খুশি থাকুক।ব্যস আর কিছু না। শিখাদির মেস এখান থেকে আধ ঘণ্টার রাস্তা ট্যাক্সিতে। রাস্তা খালি থাকলে আরও কম। আমি দোলনের দিকে মাথা ঝুঁকিয়ে গলা নামিয়ে বললাম “ এক কাজ কর, তুই আর রাকা একটা গাড়িতে চলে যা। আমাকে তোর গাড়িটা দে। তাতে আমি শিখাদিকে ছেড়ে দিয়ে আসি। তোর ড্রাইভার কে বলে দে যে তোর কোথায় যাচ্ছিস। এখানে আমি কিছুই চিনি না তো, তাই ড্রাইভার কে সবটা বুঝিয়ে দে। আর বলে দে যে একটু স্পীডে চালাতে। “
দোলন বলল “তোর এই ঝামেলায় না জড়ালেই চলছিল না, তাই না? আমাদের ড্রাইভার গাড়ি চালায় না। প্লেন ওড়ায়। তাড়াতাড়ি চলে আসিস। ওর পা টিপতে বসে যাস না প্লীজ।” আমি হেঁসে বেড়িয়ে পড়লাম। একটা সিগারেট ধরিয়েছি, এমন সময় দীপকদা শিখাদিকে প্রায় কোলে করে নিয়ে বেড়িয়ে এল বার থেকে। শিখাদির নিজের পায়ে হাঁটার আর কোনও অবস্থা নেই। দোলনের গাড়িতে শিখাদিকে বসিয়ে দেওয়া হল। রাকার গাড়িতে দোলন আর রাকা উঠে পড়ল। বাকিরা একটা বড় কোয়ালিস গাড়িতে উঠে পড়ল। আমি সিগারেটটা শেষ করে গাড়িতে উঠে পড়লাম। ভেতরে এসি চলছে। শিখাদির পাশে বসতেই শিখাদি ওর সংজ্ঞাহীন শরীরের ভার আমার শরীরের ওপর ছেড়ে দিল। এলিয়ে পড়ল আমার ওপর।
ওর পাশে পড়ে আছে ওর হ্যান্ড ব্যাগটা। ওর চোখ বন্ধ। জোড়ে জোড়ে নিঃশ্বাস পড়ছে ওর। ড্রাইভারের দিকে একবার তাকিয়ে দেখলাম। বেশ জোড়ে গাড়ি চালায়, তাই ওর সতর্ক নজর রাস্তার ওপর। গাড়িতে মিনিস্টারের স্টিকার লাগানো আছে। তাই যেন লোকটা আরও বেশী বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালাচ্ছে। আমি আস্তে করে শিখাদির হ্যান্ড ব্যাগটা হাতে তুলে নিলাম। ও টের পায়নি। ব্যাগের চেনটা খুলে ভেতরটা একবার দেখে নিলাম।
একটা ছোট আয়না। মেক আপের ছোট খাটো দু-একটা জিনিস। একটা বড় লিপস্টিক। একটা শস্তা ডিওর স্টিক। পরখ করে দেখলাম এটা হোয়াইটনিং ডিও। মানে ওই আজকাল যা বেড়িয়েছে আর কি, বগলে ঘষলে বগলের চামড়াটা কৃত্রিম ভাবে ফর্সা লাগবে, আর একটা সুগন্ধও আছে জিনিসটার। একটা সিগারেটের প্যাকেট আর দেশলাই বাক্স। কিছু খুচরো টাকা। ভেতরের চেনটা খুলতেই দেখলাম ভেতরে দুটো ওষুধের স্ট্রিপ। প্রথম ওষুধটার নাম ফেমিলোন। এটার কম্পোজিসন দেখে বুঝতে পারলাম যে এটা একটা গর্ভ নিরোধক ওষুধ। বিয়ের পর অসংখ্য মেয়ে রোজ এই রকম ওষুধ খেয়ে পেটে বাচ্চা আসা আটকায়। তিনটে ট্যাবলেট খাওয়া হয়ে গেছে ইতি মধ্যে। মাগী ভালোই আছে। আরেকটা ওষুধ দেখে বুঝতে পারলাম যে সেটা ব্রেস্ট ফার্ম আর বড় করার ওষুধ। একটা ওয়েনমেন্টও আছে, যেটা স্তনের ওপর লাগিয়ে মালিশ করতে হয়। যা দেখার দেখা হয়ে গেছে। সুতরাং যা করার সেটাও করে ফেলতে হবে। কাজ শেষ হলে ব্যাগটা বন্ধ করে দিলাম। রেখে দিলাম ওর পাশে।
পনের মিনিটও লাগেনি ওর বাড়িতে পৌঁছাতে। মেস না। বাড়ি। কলিং বেল বাজাতে একজন বৃদ্ধা এসে দরজা খুলে দিলেন। বুঝলাম শিখাদি এখানে পেয়িং গেস্ট হিসাবে থাকে। বৃদ্ধা যে আমাকে এইভাবে ওর সংজ্ঞাহীন মাতাল শরীরটাকে নিয়ে বাড়িতে ঢুকতে দেখে এক ফোঁটাও খুশি হন নি সেটা স্পষ্ট। মুখে একরাশ বিরক্তি নিয়ে উনি দরজা খোলা রেখেই ভেতরে ঢুকে গেলেন। আমাকে শুধু জিজ্ঞেস করলেন “ কতক্ষণ থাকবে?”
আমার কোনও জবাব দেওয়ার আগেই উনি আরেকটা ঘরের ভেতর ঢুকে গেলেন। ঘরের ভেতর কে আছে জানি না। পর্দা টাঙ্গানো। ভেতর থেকে আওয়াজ পেলাম উনি কাউকে বলছে “আজও গিলে এসেছে। সাথে ছেলে নিয়ে এসেছে।” অন্য আরেকজন মহিলার গলা পাওয়া গেল, “সেই বক্সারটাকে নিয়ে এসেছে?” প্রথম বৃদ্ধা উত্তর দিলেন “না আজ অন্য একটা ষণ্ডামার্কা ছেলে জুটিয়ে নিয়ে এসেছে।” আমি একটু গলা চড়িয়ে জিজ্ঞেস করলাম “দিদা ঘরটা কোথায়?” প্রথম বৃদ্ধা বেড়িয়ে এসে বললেন “দোতলায় চলে যাও। আর থাকবে কতক্ষণ?” আমি একটু হেঁসে বললাম “ দশ মিনিট।”
আমাকে বললেন “যা করার তাড়াতাড়ি করে চলে যাও। এটা ভদ্র লোকের বাড়ি। “ দরজা বন্ধ করতে করতে আপন মনেই বলে চললেন “কেন যে মরতে টাকার লোভে এই মেয়েটাকে এখানে রাখতে গিয়েছিলাম। মাথায় সেদিন রাহু, শনি সব এক সাথে তাণ্ডব করছিল, নইলে এত বড় ভুল করতে পারি।” আমার দিকে ফিরে বলল “দাঁড়িয়ে আছ কেন? যাও ওপরে। যা করার করে তাড়াতাড়ি বিদায় হও দেখি। আর হ্যাঁ, বেশী আওয়াজ করবে না একদম।” আমি সিঁড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে শুনলাম উনি ঘরের ভেতরের সেই অজ্ঞাত মহিলাকে বলছেন “দশ মিনিটে চলে যাবে বলছে।” অর্থাৎ এখানেই এসে দীপকদা শিখাদির সাথে রেগুলার মিলিত হয়। আর অনেকক্ষণ ধরে চলে ওদের এই কার্যকলাপ।
ওপরে উঠে দেখলাম ঘরের দরজা আব্জে বন্ধ করা আছে। দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে দেখলাম একটা ডিম লাইট জ্বলছে। বাড়িতে সারাদিন এরকম আলো জ্বালিয়ে রাখে নাকি। ঘরের মাঝখানে একটা ডবল বেড। বিছানার চাদর ওলট পালট। কয়েকটা বই খাতা এদিক অদিকে ছড়িয়ে রাখা আছে ঘরের অন্য দিকে রাখা টেবিলের ওপর। শিখাদিকে বিছানার ওপর শুইয়ে রেখে তাড়াতাড়ি গিয়ে দরজাটা ভেতর থেকে বন্ধ করে দিলাম। ছিটকিনি তুলে দিলাম। শিখাদির অচেতন শরীরটা বিছানার ওপর নিথর হয়ে পড়ে আছে।
আমার পায়ের মোজার ভেতর থেকে আমার সেই বিখ্যাত মোবাইলটা বের করে তাড়াতাড়ি পাশের টেবিলে গিয়ে সেটাকে সেট করে দিলাম। ক্যামেরা অন। পুরো ঘরটা এখন রেকর্ড হচ্ছে। আরও কিছু কাজ বাকি আছে। খুব বেশী হলে দুই থেকে তিন মিনিট…হাত চালাতে হবে… ব্যস হয়ে গেছে সব কাজ। এইবার এত পরিশ্রমের জন্য পারিশ্রমিক আদায় করার সময় এসেছে। এগিয়ে গেলাম শিখাদির নিথর শরীরের দিকে। জিন্সের বেল্ট, বোতাম, চেইন ইত্যাদি খোলা হয়ে গেছে। বিছানার পাশে এসে দাঁড়িয়ে প্যান্ট আর জাঙ্গিয়াটাকে দুই পা গলিয়ে নামিয়ে দিলাম। শরীরের থেকে বের করে পাশে টেবিলের ওপর রেখে দিলাম।
ক্যামেরাটাকে আরেকবার ঠিক করে দেখে নিলাম। বিছানাটা ভালো ভাবে দেখা যাচ্ছে। পুরো এইচ ডি রেকর্ডিং হবে। হাহা। টেবিলের ওপর কয়েকটা লুস সিগারেট রাখা আছে। নাকে লাগিয়ে শুকে বুঝতে পারলাম যে তাতে গাজার মশলা ঠুসে রাখা আছে। গাঁজার ব্যাপারে আমার কোন আকর্ষণ নেই। এগিয়ে গেল শিখাদির নিথর শরীরের দিকে। এইবার শিকারি শিকার করবে। আর শিকারের প্রমাণ রেকর্ড হবে ওই ক্যামেরায়।

গল্পটি কেমন লাগলো ?

ভোট দিতে স্টার এর ওপর ক্লিক করুন!

সার্বিক ফলাফল 0 / 5. মোট ভোটঃ 0

এখন পর্যন্ত কোন ভোট নেই! আপনি এই পোস্টটির প্রথম ভোটার হন।

Leave a Comment