রক্তমুখী নীলা [২]

Written by HASIR RAJA 19

সময়ের কোন জ্ঞান নেই কতক্ষন যে এখানে এভাবে আছি তার কোন হিসাব নেই। ঘরটা ভীষন অন্ধকার একটাও ফোকর নেই যেখান দিয়ে বাইরের আলো প্রবেশ করতে পারে। এখন কি রাত না দিন। আমায় সম্ভবত একটা চেয়ারে বসিয়ে হাতটাকে পিছমোরা করে বাঁধা হয়েছে পাটা চেয়ারের পায়ার সাথে বাঁধা। কয়েকবার দুহাত পেঁচিয়ে বাঁধন খোলার চেষ্টা করলাম পারলাম না, এ বজ্রবাঁধুনি এইভাবে খোলা সম্ভব নয়। খিদেতে পেট জ্বলছে ছোট থেকেই খিদে আমি একদম সহ্য করতে পারিনা।
হাল ছেড়ে দিলাম। ধূর শালা আর ভাববোইনা খিদের কথা, নিজের মনে গালাগাল দিয়ে উঠলাম।
মনটা অন্যদিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলাম। মাথাটা ঠান্ডা করে ভাবতে শুরু করলাম এসব কেন হচ্ছে আমার সাথে, আমি ত কারোর কোনদিন কোনপ্রকার ক্ষতি করিনি। তবে আমায় কেন ধরে রেখেছে এরা। আর ওই লোকটা, জ্ঞান হারাবার আগে ওই একঝলক দেখেই বুঝতে পেরেছিলাম লোকটা আমার চেনা কিন্তু কিছুতেই মনে করতে পারছিনা কোথায় কখন দেখেছি লোকটাকে।
স্মৃতির দরজায় বারবার আঘাত করতে লাগলাম। মনে পর, মনে পর, মনে পর, মনে পর।
বিদ্যুৎচমকের মত হঠাৎ একটা ঘটনা মনে পড়ে গেলো।
বছর দুয়েক আগের কথা।
দিল্লীর তাল্কাতোর স্টেডিয়ামে আই.কে.ইউ এশিয়ান ক্যারাটে চ্যাম্পিয়নশিপে আমি অংশগ্রহন করতে গেছি।
ছোটবেলায় গুরুকুলে ক্যারাটে প্রশিক্ষন তারপর কলকাতাতেই বিভিন্ন টুর্ণামেন্টে অংশগ্রহন করেছি। এইবারের ম্যাচটা আমার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কেননা এটা আমার প্রথম জাতীয় লেভেলের এত বড় স্টেজে খেলা। বাড়ী থেকে এখানে আসতে বাবা মা মৃদু একটু আপত্তি প্রথমে তুলেছিলো কিন্তু বারণ করেনি। বাবার কাছ থেকে এই বিষয়ে ছোট থেকেই উৎসাহ পেয়ে এসেছি। তাই কোনরকম বাধা আমার ওপর আসতে দেয়নি।
টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার দুদিন আগে দিল্লীতে পৌছে গেলাম। আমার সাথে আমার ট্রেনার ও আরো কিছু অংশগ্রহনকারীরা এসেছে। রাতে দিল্লীতে পৌছে সোজা হোটেলে চেকইন করেছি। বাবার এই একটা নির্দেশ আমায় পালন করতে হবে আসার আগে বলে দিয়েছে বিনা প্রয়োজনে কখনই যেন হোটেল থেকে না বেরোই আর ট্রেনার ছারা কোথাও যাওয়া চলবে না। একা যেন কোনপ্রকারেই ঘরের বাইরে পা না রাখি। মেনে নিয়েছিলাম সবকিছুই কিন্তু কেন এই সতর্কতা জিজ্ঞেস করেও সন্তোষজনক উত্তর পাইনি।
দুদিন পরেই আমার খেলা তাই নিজের প্রস্তুতি নিতেই ব্যাস্ত হয়ে পড়লাম।
খেলার দিন একটু আগেই স্টেডিয়ামে চলে গেলাম। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকেই খেলোয়াররা অংশগ্রহন করতে এসেছে। সমস্ত স্টেডিয়াম ভর্তি তবে কোথাও এতটুকু বিশৃঙ্খলতা নেই। আমি আমার নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়ে নিজে তৈরী হতে লাগলাম। বেশ একটু উত্তেজনা বোধ করছি। প্রথমবার এতবড় স্টেজে পারফর্ম করবো বলে।
ক্যারাটে প্রতিযোগিতা সাধারণত দুটি গ্রুপে অনুষ্ঠিত হয়। কাতা আর কুমিতি (লড়াই)। কাতা বলতে বোঝায় আত্মরক্ষা মূলক কলাকৌশলের পূর্ব প্রস্তুতি বা কলা কৌশলের সম্মিলিত প্রশিক্ষণ। কাতা প্রতিযোগিতা জুনিয়র গ্রুপ ও সিনিয়র গ্রুপ এ দুইভাগে হয়ে থাকে।
কুমিটি বা লড়াই প্রতিযোগিতা হয়ে থাকে ওজন শ্রেণীতে। কুমিটি বা লড়াই প্রতিযোগিতা তিনটি স্তরে হয়ে থাকে : ফুল কণ্ট্রাক্ট, সেমি-কণ্ট্রাক্ট, নন-কন্ট্রাক্ট। আমি এই কুমিটিতেই নন-কন্ট্রাক্ট হিসেবে অংশগ্রহন করেছি।
স্টেডিয়ামের মাইকে বিভিন্ন প্লেয়ারের নাম ঘোষণা চলছে। গ্রুপ হিসাবে নাম ডাকা হচ্ছে। এখন গ্রুপ ‘এ’ খেলা শুরু হচ্ছে পরে গ্রুপ ‘বি’।
“রাজেন্দ্রনাথ মন্ডল কেয়ার অফ দেবেন্দ্রনাথ মন্ডল ফ্রম কোলকাতা গ্রুপ বি। ট্রেনার প্রদীপ্ত ব্যানার্জী। হিজ স্পেসালাইজেসন ইস কালারিপায়াত্ত এন্ড তাইচি মিক্সড কমবাইন্ড”
মাইকে আমার নামটা শোনার সাথে সাথে ভিতরের উত্তেজনা দ্বিগুন বেড়ে গেল। তবে এটাকে ভয় বলতে আমি কোনমতেই রাজি নই।
এখানে বলে রাখা ভালো, টুর্নামেন্টে নাম রেজিস্টার করার সময় নিজের স্পেশাল মুভ উল্লেখ করে দিতে হয়। ঘোষনা করার সময় তাই নামের সাথে সাথে ওটাও উল্লেখ করে ওরা।
অনেকেই অবাক হবে যে দেশির সাথে বিদেশি যোগ করলাম কেন? দেশি বলতে এখানে আমি কালারিপায়াত্তকে বোঝাচ্ছি যেটার জন্ম আমাদের এই ভারতবর্ষেই
কেরালা তামিল নাড়ু রাজ্যে, আর ক্যারাটের জন্ম জাপানের রুক্কু আইসল্যান্ডে যার এখনকার নাম ওকিনাওয়া। এই দুই কলারই বিভিন্ন স্টাইলে কিছুটা মিল আছে যেমন মাঙ্কি স্টাইল, স্নেক স্টাইল, টাইগার ক্ল, ঈগল ক্ল ইত্যাদি। তাই আমি এই দুটোকে বেছে নিয়েছি।
যাই হোক, খেলা শুরু হওয়ার আর মাত্র দশ মিনিট বাকি। আমার ট্রেনার কিছু অফিসিয়ালি ফর্মালিটিস পূরণ করতে বাইরে গেছে হঠাৎ একটি লোক এসে আমার কক্ষে প্রবেশ করলো। সাধারণত ট্রেনার ছাড়া বাইরের কোন লোককে ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। তবে ইনি কি করে এ ঘরে প্রবেশ করলেন আর কি বা এনার উদ্দেশ্য??
ঘরে ঢুকে লোকটা আমার মুখের দিকে এক দৃষ্টিতে দেখতে লাগলো। খেয়াল করলাম ওনার চোখের দৃষ্টিতে অবাক হওয়ার ভাব। বেশকিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে নিজের মনে–
“রাজেন্দ্রনাথ” বলে উঠলো লোকটা।
— হ্যাঁ। কিন্তু আপনি?
— বাবার নাম, দেবেন্দ্রনাথ মন্ডল?
— হ্যাঁ কিন্তু আপনাকে ত ঠিক চিনতে পারছিনা।
কোন উত্তর না দিয়ে মৃদু হাসলেন লোকটা। পকেট থেকে একটা প্যাকেট বের করে একটা সিগারেট ধরালেন। বেশ জোরে একটা টান দিয়ে মৃদু মৃদু ধোঁওয়া বার করতে লাগলেন, ভাবখানা এমন যেন উনি অনেক দিন পর আজ নিজেকে নিশ্চিন্ত মনে করছেন।
–তোমরা কতদিন কোলকাতায় আছো।
আচমকা এই প্রশ্নে একটু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম। –কতদিন মানে? জন্ম থেকেই ত আছি।
মৃদু হাসলেন উনি। পকেট থেকে ফোন বের করে কিছু একটা দেখলেন তারপর আমার দিকে ঘুরে — আচ্ছা আজ চলি, আশা করি খুব শিগ্গির দেখা হবে। বলে সোজা দরজা দিয়ে বেরিয়ে চলে গেলেন।
মনে পড়েছে। এই সেই লোক, হ্যাঁ এই লোকটাই সেদিন হঠাৎ আমার রুমে ঢুকেছিলো, মনে পড়েছে কিন্তু আমার সাথে এমন শত্রুতা কেন? ওই টুর্নামেন্টের আগে ত কোনদিন ওনাকে দেখিনি। আর ওই ঘটনার পরও আমার সাথে আর ওনার দেখা হয়নি। তবে কি……..
ওনার সাথে সেদিনের কথোপকথন আরো একবার মনে মনে আওড়ে নিলাম। উমম উনি আমার নাম বাবার নাম আর কোলকাতায় কবে থেকে আছি জিজ্ঞেস করেছিলেন আর কোন কথাই জিজ্ঞেস করেনি। হঠাৎ আমার বাবার নাম জিজ্ঞেস করলো কেন? আর শোনার পরে ওরকম নিশ্চিন্ত ভাবটাও মনে পড়লো। তবে কি এইসবের সাথে আরো অনেক কিছু লুকিয়ে আছে? কিছু ত একটা আছে যার জন্য বাবা মাও আমায় বেশ কিছু কথা খুলে বলেনা সেই ছোট থেকেই বেশ বুঝতে পারতাম আমায় ওরা অনেক কথা গোপন করছে । তবে কি সেইসবের সাথে আজকের এই ঘটনার কোন যোগ আছে?
এই লোকটার সাথে দিল্লীতে দেখা হওয়াটা আমি বাবাকে জানাইনি। আসলে নিজেরই এত অদ্ভুত,এত বিচিত্র লাগছিলো যে মন থেকেই ঘটনাটাকে মুছে দিয়েছিলাম। আজ বুঝতে পারছি এর গুরুত্ব কোথায়।
“আচ্ছা আজ চলি, আশা করি খুব শিগ্গির দেখা হবে” লোকটার বলা কথাটা কানে একবার বেজে উঠলো। কথাটার গুরুত্ব যে কতখানি তা এখন বেশ বুঝতে পারছি।
হঠাৎ সামনে দিয়ে একটা তীব্র আলোর রশ্মি আমার ওপর এসে পড়লো। চোখ ধাঁধিয়ে গেলো সে আলোতে, মাথাটা নিচু করে নিলাম। একজন গুরুগম্ভীর গলা বলে উঠলো — অনেক খুঁজেছি তোমায় (একটু থেমে) অবশ্য বলতে পারো তোমাদের। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত চষে ফেলেছি শুধু তোমাদের খুঁজতে আর তোমরা কি না শেষে এই ধ্যাড়ধ্যাড়ে গোবিন্দপুর কোলকাতায়। হাঃ হাঃ হাঃ হাঃ হাঃ হাঃ। এর থেকে হাঁসির কথা আমার জীবনে আর কিছুই নেই। কত প্ল্যানিং কত চেষ্টা সব বৃথা। দেবুর সত্যি জবাব নেই কিন্তু একটু কাঁচা কাজ করে ফেলেছে ও। তোমায় দিল্লী পাঠিয়ে জীবনের সব থেকে বড় ভুলটা করে ফেলেছে।
— কে আপনি? আমার বাবাকে আপনি চিনলেন কি করে।
দপ করে আলোটা নিভে গেলো সঙ্গে সঙ্গে ঘরের আলো জ্বলে উঠলো। ঘাড় ঘুরিয়ে চারপাশে তাকিয়ে দেখলাম আগাগোড়া লোহার চাদরে মোড়া একটা ঘর। ঘরে কোন জানালা নেই। দরজাটাও লোহার। আর দরজার ওপর একটা ব্যালকনি সম্ভবত পাশের ঘরে যাওয়ার জন্য। আমি যে কোথায় ঠিক বুঝতে পারলাম না।
লক্ষ করলাম ব্যালকনির ওপর বেশ দামী একটা স্যুট পরিহিত একটি লোক দাঁড়িয়ে আছে। লম্বায় প্রায় আমার সমান, একমুখ কাঁচাপাকা দাড়ি, মুখটা একটু লম্বাগোছের, মৃদু একটা হাঁসির আভা ছড়িয়ে আছে সেই মুখে। একটা পাইপ মুখে কামড়ে ধরে আছে। সব থেকে অবাক লাগলো ওই চোখদুটো, ওই চোখ আমার খুব চেনা।
পাশের সিড়ি দিয়ে নেমে আমার সামনে এসে দাঁড়ালো লোকটা। আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বললো — তুমি শুনলে অবাক হবে আমি তোমার ওপর খুশি হয়েছি। কেন জানো? তোমার সাহসের জন্য। রবীনকে বলেছিলাম কোনরকম ঝামেলা না পাকিয়ে তোমায় নিয়ে আসতে কিন্তু ……
” রবীন “। লোকটার গলা ঘরের মধ্যে গমগম করে উঠলো। দরজার বাইরেই সম্ভবত রবীন বলে লোকটা দাঁড়িয়েছিলো ডাক শুনতেই দরজা খুলে ভিতরে এলো।
আরে এই ত সেই লোকটা টুর্নামেন্টের দিন এই লোকটাই ত এসেছিলো। এরই নাম তাহলে রবীন।
— অবাক হচ্ছো তাই না। একে খুব চেনা বলে মনে হচ্ছে? লোকটা বলে উঠলো।
মাথা নাড়লাম।
— এ আমারই লোক দিল্লীতে প্রথম দেখতে পায় তোমায়। মনে আছে আশা করি সেইদিনের ঘটনা। তারপর থেকে তোমার ওপর ছায়ার মত নজর রেখেছিলো। বারো বছর তোমাদের পাগলের মত খুঁজেছি।
আচ্ছা আমায় আপনি মারতে চাইছেন কেন আমি ত আপনাকে চিনিনা। আপনি কে? আর,আর আমার বাবাকেই বা চেনেন কি করে? আমাদের সাথে আপনার কি শত্রুতা? বলে উঠলাম আমি।
— ও কথায় পরে আসছি তার আগে… রবীন ওই দুটোকে ভিতরে নিয়ে আসো।
রবীন বলে লোকটা বিনা বাক্য ব্যায়ে বাইরে চলে গেলো কিছুক্ষনের মধ্যেই দুজন লোককে স্ট্রেচারে করে নিয়ে এসে হাজির হলো চারজন লোক। রবীন তাদের পিছনে। স্ট্রেচার নামিয়ে রবীন বাদে সব লোক বাইরে চলে গেলো। রবীন গিয়ে দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে এলো।
মেঝে শোয়ানো লোকগুলোকে দেখলাম এই দুজনকেই পিটিয়েছিলাম,সম্ভবত অজ্ঞান।
— বলেছিলাম না তোমার ওপর আমি খুশি হয়েছি কারণটা এরা। বিপদের মুখেও যে তুমি ভয় না পেয়ে এদের জব্দ করেছো তা শুনে ভালো লাগলো।
নিমেষের মধ্যে পকেট থেকে কি একটা বের করে ওদের দিকে হাতটা বাড়ালো।
গুড়ুম..গুড়ুম..প্রচন্ড শব্দে চমকে উঠলাম। কানে তালা লেগে গেলো সাথে বারুদের তীব্র কটা গন্ধে ঘরটা ভরে গেলো। আগে ঘরটা বদ্ধ তারওপর আগাগোড়া লোহার, আওয়াজটা এত জোরে হলো যেন বোমা পড়লো। মেঝে শোয়ানো লোকগুলোর দিকে তাকালাম দুজনের মাথা থেতলে গেছে,রক্তে ভেসে যাচ্ছে।
— আমার কাছে দুর্বলদের কোন জায়গা নেই তাই….
একটা কথা তুমি শুনে নাও তোমার বাহাদূরীতে খুশি হয়েছি ঠিকই কিন্তু ভবিষ্যতে যেন এরকমটা না হয়। কটাদিন তোমায় এখানেই থাকতে হবে। কাজ এখন অনেক বাকি। রবীন এদের নিয়ে যা আর কোন প্রমান রাখবি না।
রবীন বলে লোকটা ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো।
তোমায় মারতে আমি চাই ঠিকই কিন্তু এত তাড়াতাড়ি নয়। এখনো অনেক কাজ বাকি। অনেক হিসেব নিকেস করার বাকি আছে। জানি তোমার মনে অনেক প্রশ্ন আমি অবাক হচ্ছি শুধু এই ভেবে যে এখনো তুমি কিছু জানোনা। যাক, আজ আমায় যেতে হবে এবার। আশাকরি ফিরলে তোমার উত্তর আমি দিতে পারবো ততদিন আমার অতিথি হয়ে থাকো।
আমায় আর কোন কিছু বলবার সুযোগ না দিয়ে সোজা ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো।
কতক্ষন যে ওভাবে ছিলাম জানি না। মাথার ভিতরটা ভোঁ ভোঁ করছে সব কেমন জট পাকিয়ে গেছে। আর কিছু ভাবতে ভালো লাগছেনা। শুধু চিন্তা হচ্ছে ম্যাডাম আর দিদার জন্য। দিদার অবস্থা সত্যি খুব খারাপ ছিলো হারামীগুলো যেভাবে আঘাত করেছিলো তাতে…. বেঁচে আছেন তো? কোথায় আছে ওরা,আমার মত কি ওদেরো নিয়ে এসেছে ? কিন্তু ওই লোকটার কথা শুনে ত তা মনে হলো না। আমার সাথে শত্রুতা হয়তো আমাকেই শুধু নিয়ে এসেছে। কিন্তু আছি কোথায়?এই ঘর দেখে ত কিছুই অনুমান করা যাচ্ছেনা।
বাবা মার কথা মনে পড়লো কি করছে ওনারা এখন,নিশ্চয়ই চিন্তা করছে। খোঁজাখুঁজিও করছে হয়তো। মায়ের মুখটা মনে পড়লো। বুকের ভিতরটা মোচড় দিয়ে উঠলো। বাবা মাকে আমি সত্যি খুব ভালোবাসি এর আগে এতটা টান আমি অনুভব করিনি কোনদিন। আসলে বাবা মা আমায় জীবনে কোনদিন কোন সমস্যায় পরতে দেয়নি। কিন্তু আজ ? আজ কি পাবো উদ্ধার এই শয়তানের কাছ থেকে। মেরে ফেলবে আমায় ওই লোকটা আর কোনদিন দেখতে পাবো না বাবা মাকে সবকিছুই হারিয়ে গেলো জীবন থেকে। এবার কি তবে শুধু মৃত্যুর প্রহর গোণার পালা।
সম্ভবত একটু তন্দ্রা মত এসে গেছিলো দরজা খোলার শব্দে এক ঝটকায় সেটা চলে গেলো। একজন ভিতরে ঢুকে সোজা আমার সামনে এসে দাঁড়ালো হাতে একটা থালা। থালাটা মেঝে রেখে পিছন থেকে আমার হাতটা খুলে দিলো। হাতটা টনটন করছে এতক্ষন ওভাবে বাঁধা ছিলো সামনে এনে কবজি গুলো ঘুরিয়ে একটু ইজি করে নিলাম। খাবার আর কোন ইচ্ছা নেই আমার। মাথার মধ্যে হঠাৎ একটা বুদ্ধি খেলে গেলো। পালাতে হবে আমায়। যেমন করে হোক পালাতে হবে। আমি কাপুরুষ নই ভীতু কাপুরুষদের মত বসে বসে মৃত্যুর প্রহর গোণা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। মুখটা আবার নীচু করে নিলাম। খেলাতে হবে লোকটাকে।
— এই খেয়ে নে।
কিছুই বললাম না
— কিরে শুনতে পাচ্ছিস না খেয়ে নে। এবার একটু জোরে বলে উঠলো লোকটা।
আমার কোন হেলদোল দেখালাম না। সজোরে একটা চাপড় আমার গালে এসে পড়লো। চুল ধরে টেনে মাথাটাকে তুলে বলে উঠলো শালা হারামী কথা কানে যাচ্ছেনা। চোখ মেরে দিলো লোকটা।
আমি অবাক হয়ে গেলাম। লোকটা চোখ মারলো আমি ঠিক দেখলাম ত?
লোকটা চোখের ইশারায় থালার দিকে দেখতে বলছে।
থালার দিকে তাকালাম কিছু খাবার রয়েছে তাতে। দুটো রুটি একটু সবজি আর একটা কাগজ। চমকে লোকটার দিকে তাকালাম।ঠিক লোক বলা যায়না কেননা ওকে অনেকটা আমার বয়সী লাগছে। ছেলেটা চোখের ইশারায় ওর পিছন দিকে তাকাতে বললো। দেখলাম দরজার ওপর ব্যালকনিতে একজন লোক দাঁড়িয়ে আছে। আবার মুখটা ছেলেটার দিকে ফেরালাম।
ছেলেটা আমায় মুখটা কুঁচকে একটা ভঙ্গী করলো যেটা কারোর কাছে ক্ষমা চাইবার মত তারপর সজোরে একটা ঘুসি মারলো আমার মুখে।
ওপর থেকে এবার কথা ভেসে এলো ছেলেটার উদ্দেশ্যে — খানকির ছেলের রস হয়েছে ছেড়ে দে, বোকাচোদাকে রবীনদা এলে বুঝে নেবে। বেরিয়ে আয় তুই।
লোকটা আর দাঁড়ালো না পিছনের দরজা দিয়ে ভিতরে চলে গেলো। খট করে দরজা বন্ধ হয়ে গেলো।
এবার কাগজটা তুলে পড়লাম।
” বিনা বাক্যব্যায়ে সামনের ছেলেটার সাথে বেরিয়ে আসো ”
বুকের ভিতর হাতুড়ি পেটা শুরু হয়ে গেলো। তবে কি সত্যি মুক্তি পাবো? কে এই ছেলেটি,কোথা থেকে এসেছে সেসব তখন মাথায় নেই। এখান থেকে বেরোতে হবে যে কোন প্রকারে। কৃমিকীটের মত নির্জীব হয়ে থেকে আমি মরতে পারবো না। লড়াই করে বাঁচার আশাটা আমার কাছে অনেক ভালো।
চমকে তাকালাম ছেলেটির দিকে। মিটিমিটি হাসছে। হাতের ইশারায় শান্ত থাকতে নির্দেশ দিলো তারপর ঠৌঁটে আঙুল ঠেকিয়ে চুপ করতে বললো। শান্ত আমি এমনিতেই আছি। বিপদের সময় রুখে দাঁড়ানোর জন্য নিজেকে শান্ত রাখার মত আর কোন ভালো হাতিয়ার হয় না। আমার ক্ষেত্রে সেটা অনেক দ্রুত কাজ করে।
হাতের দড়িটা আগেই খুলে দিয়েছিলো এখন দ্রুত পায়ের দড়িটা খুলে দিলো। সঙ্গে সঙ্গে উঠে দাঁড়ালাম। ছেলেটা দরজার দিকে এগিয়ে গেলো হাতের ইশারায় থামতে বললো থেমে গেলাম দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে একবার আশপাশটা দেখে নিলো হাতের ইশারায় বেরিয়ে আসতে বললো। দরজা দিয়ে বেরিয়েই সোজা একটা করিডোর দিয়ে এগিয়ে চললাম অত্যন্ত নিশ্চুপে কিন্তু যত দ্রুত সম্ভব। বেশ লম্বা করিডোর পার হয়ে এসে বাঁদিকে বাঁক নিলাম সামনে সিড়ি ওপর থেকে দুজন লোক কথা বলতে বলতে নেমে আসছে সিড়ি দিয়ে। আমি দ্রুত আড়ালে চলে এলাম। ছেলেটি মুখ ঘুরিয়ে দেখে একবার হাঁসলো সম্ভবত নির্দেশ দেওয়ার আগেই কাজ করলে যেমন হয়। সে এগিয়ে গেলো সামনে। লোকদুটো নীচে নেমে ছেলেটির সাথে কথা বলতে লাগলো। একবার দ্রুত উঁকি মেরে দেখে নিলাম আমার দিকেই পিঠ করে দাঁড়িয়ে আছে দুজন। ওদের সামনে সিড়ির গোড়ায় ছেলেটি দাঁড়িয়ে আছে। বেরিয়ে এলাম আড়াল থেকে, পা টিপে টিপে ওদের কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম। যে একটু আমার সামনে তাকেই আগে সাবাড় করবো, নিমেষের মধ্যে বাঁ হাতটা এগিয়ে নিয়ে গিয়ে লোকটার মুখ চেপে ধরলাম সাথে সাথে ডান পা দিয়ে হাঁটুর পিছনে লাথি মারলাম একটু নীচের দিকে ঝুঁকতেই প্রচন্ড জোরে ঘারে একটা ঘুসি মারলাম। নির্জীব শরীরটা ফেলে দিয়েই অন্য লোকটির দিকে তাকালাম লোকটিকে ছেলেটি কাবু করে এনেছে হাত দিয়ে পুরো গলা পেঁচিয়ে ধরেছে। হাত দিয়ে প্রাণপন ছাড়াবার চেষ্টা করছে লোকটি। আমি এগিয়ে গিয়ে সজোরে নাকে একটা ঘুষি মারলাম লোকটার। হাতের বাঁধন খুলে দিলো ছেলেটি তারপর সিড়ি ধরে এগিয়ে চললো। সিড়ি দিয়ে উঠেই লক্ষ করলাম এটাও একটা বেশ লম্বা করিডোর যেটার শেষ প্রান্ত ডানদিকে বাঁক নিয়েছে, এগিয়ে চললাম সেই করিডোর দিয়ে। ডানদিকে বাঁক ঘুরতেই আবার সিড়ি দুজনে চুপিসাড়ে উঠতে লাগলাম সেই সিড়ি দিয়ে। ওপর থেকে গানের শব্দ ভেসে আসছে। সিঁড়ির মাথার কাছে এসে ছেলেটি হাতের ইশারায় আমায় দাঁড়াতে বললো। উঁকি মেরে দেখলাম বেশ বড়ো একটা ঘরে এসে দাঁড়িয়েছি। পাঁচজন লোক ঘরের মধ্যে উপস্থিত। একটু ভাবনায় পড়লাম এদের এড়িয়ে সামনে এগোব কি করে ?
ওপাশের দরজা দিয়ে আরো কয়েকজন মানুষ প্রবেশ করলো। দেখলাম তার মধ্যে রবীন বলে লোকটিও আছে। ছেলেটি দ্রুত আমার হাত ধরে নীচে নামিয়ে আনলো সিঁড়ির মুখেই আমায় ইশারায় ওপরে তাকাতে বললো দেখলাম ছাদের কাছে একটা গোল ফোকর। চটপট ছেলেটি হাঁটু গেড়ে বসে পড়লো আমি ওর কাঁধে পা রেখে ফোকরে কাছে এসে হাতের চাপে ফোকরের দরজা খুলে ওর মধ্য সেধিয়ে গেলাম। নীচের দিকে হাত বাড়িয়ে দিলাম কিন্তু অবাক হলাম ছেলেটি হাত দিয়ে আমায় চলে যেতে বলছে। মানলাম না হাত দেখিয়ে জোর করলাম আমার সাথে আসার জন্য কিন্তু তাতে অনেক দেরী হয়ে গেছে সিড়ির মাথায় কয়েকজন এসে দাঁড়িয়েছে দ্রুত পিছনের দিকে সরে গেলাম। নীচ থেকে ওদের কথা ভেসে আসলো।
— কিরে ও খেয়েছে। রবীন বলে উঠলো।
— না সাহেব ও খাচ্ছে না গোঁজ হয়ে বসে আছে। আমি থালা দিয়ে চলে এসেছি।
— ঠিক আছে তুই যা আমি দেখছি।
আমি দ্রুত পিছনের দিকে তাকালাম এখান থেকে সোজা একটা সিঁড়ি উপরের দিকে উঠে গেছে। উপরে উঠে লক্ষ করলাম আবার সেই গোলাকার দরজা সন্তর্পনে দরজাটা খুলে বাইরে উঁকি মারলাম লম্বা একটা করিডরের শেষ প্রান্তে দুটি লোক দাঁড়িয়ে আছে। বেরোব কি করে। এখান থেকে নামতে গেলে যদি কোনরকম শব্দ করি তাহলে এখানেই শেষ। কিন্তু এভাবে থাকাও সম্ভব নয় যত দ্রুত আমি এখান থেকে বেরোতে পারলে বাঁচি। আস্তে করে দুটো পা ঝুলিয়ে ঝপ করে লাফিয়ে পড়লাম। শব্দ হলোনা ঠিকই কিন্তু লাফাবার আগেই একজন এদিকে তাকাতেই আমায় দেখতে পেয়ে গেলো। দৌড়ে আমার কাছে এসে কোমর থেকে পিস্তল বের করে মাথায় ঠেকালো। আবার কি তবে ধরা পড়ে গেলাম।
চল ওঠ। আমাদের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে যাওয়া এত সোজা নয় চাঁদু।ঠিক তখনই লোকগুলোর পিছনদিক থেকে ঝুপ করে একটা শব্দ হলো একটি লোক সোজা মাটিতে কুপোকাত অন্যজন হতভম্ভ হয়ে গেছে, দ্রুত লোকটার হাত ধরে একটা হেঁচকা টান মারলাম। টান সামলাতে না পেরে পরে গেলো লোকটা। হাতে ধরা বন্দুক থেকে প্রচন্ড শব্দ করে একটা গুলি বেরিয়ে বন্দুকটা লোকটার হাত থেকে ছিটকে চলে গেলো। ছেলেটি দ্রুত গিয়ে বন্দুকটা তুলে নিলো আমার হাত ধরে তুলে বললো আর দেরী করলে চলবে না এক্ষুনি সবাই জেনে যাবে পালাতে হবে চলো দৌড়াও। এক ছুটে লম্বা করিডোর পার করতেই শুনতে পেলাম জলের শব্দ। আর তার সাথেই পিছন থেকে অনেক লোকের চিৎকার। চিৎকারটা আমাদের দিকেই এগিয়ে আসছে। ছেলেটি আমার হাত ধরে চলো বলেই ছুট লাগালো সামনে একটা দরজা সেটা খুলতেই গোধুলী আলো আমায় স্নান করিয়ে দিলো, প্রকৃতির শীতল ঠান্ডা হাওয়া আমার শরীরে এসে পড়েছে প্রাণ জুরিয়ে গেলো কিন্তু এখন এসবের সময় নয় দ্রুত এখান থেকে সরে পরতে হবে না হলে সব শেষ। দরজা দিয়ে বেরোতেই ছেলেটি জিজ্ঞেস করলো সাঁতার কাটতে পারো ত? প্রথমটায় কথাটার মানে বুঝতে পারিনি হঠাৎ খেয়াল করলাম আমাদের পাশেই নদী। আর এতক্ষনে বুঝলাম যে আমি একটা জাহাজে রয়েছি। চারপাশটা একবার দ্রুত চোখ বুলিয়ে নিলাম। চারদিকেই জল, দূরে নদীর পারে জনবসতি দেখা যাচ্ছে তার মানে….আরে ওটা কি? এত আমাদের দ্বিতীয় হুগলী সেতু তবে কি… আর ওই যে দূরে হাওড়া ব্রিজ আমি ত তাহলে কলকাতাতেই আছি অবাক বিস্ময়ে একবার ছেলেটির দিকে তাকালাম। পিছনের চিৎকার অনেকটাই এগিয়ে এসেছে আর কিছু না ভেবে সোজা জলে ঝাঁপ দিলাম।
সন্ধ্যা হয়ে আসছে তবু যতটুকু আলো আসছে তাতে জলের ওপর আমাদের দেখে ফেলাটা কিছুই আশ্চর্যের নয়। যত দ্রুত সম্ভব কতকটা ডুব সাঁতার দিয়েই চলতে লাগলাম। খিদিরপুর ডককে পিছনে ফেলে বেশ কিছুটা এগিয়ে ছেলেটাকে অনুসরণ করে তীরে উঠলাম। দাঁড়িয়ে বিশ্রাম নেওয়ার এতটুকু অবকাশ নেই যতদূর শীঘ্র সম্ভব এখান থেকে সরে পরতে হবে। একপ্রকার দৌড়েই বনবাদাড় পেরিয়ে রাস্তায় এসে দাঁড়ালাম। সামনেই একটা গাড়ী,আমরা কাছে যেতেই দরজা খুলে গেলো কোন দ্বিধা না করে ছেলেটির পিছন পিছন গাড়িতে গিয়ে উঠলাম। গাড়ী চলতে শুরু করেছে ততক্ষনে। খিদিরপুরের মোরে গাড়ী আসতেই লক্ষ করলাম পিছন থেকে তীরবেগে একটা গাড়ি আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে।
— আহঃ এরা কি কিছুতেই পিছু ছারবে না। রঞ্জুদা আরো জোরে চালাও। ছেলেটা উত্তেজিত কন্ঠে বলে উঠলো।
কিন্তু তার আগেই পিছনের গাড়ীটা আমাদের কাছে এগিয়ে এসে প্রচন্ড জোরে একটা ধাক্কা মারলো আমাদের গাড়ীর পিছনে। দক্ষহাতে স্টিয়ারিং হুইল ধরে সেই আঘাত সামলালো রঞ্জু নামের লোকটা। রাস্তায় গাড়ীর কমতি নেই হুসহাস করে গাড়ী চলছে এর মধ্যেই পিছনের গাড়ীটা এসে আমাদের পাশ থেকে আমাদের ওপর সজোরে আঘাত করতে লাগলো। দুটো গাড়ীরই স্পিড নেহাত কম নয়। দুর্ঘটনা ঘটলে বেলচা মারা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না। সামনেই হেস্টিংসের চারমাথা মোড়।
ছেলেটি তীব্র চিৎকার করে উঠলো রঞ্জুদা গাড়ী থামাবে না স্পিড বাড়াও।
হতভম্ব হয়ে গেলাম সিগন্যাল বোর্ডে লাল সিগন্যাল জ্বল জ্বল করছে। কোনদিকে যাবে এ গাড়ী? রাস্তায় ত গাড়ীর মেলা বসেছে বাঁদিক থেকে ডানদিকে গাড়ীগুলো হুসহাস করে বেরিয়ে যাচ্ছে।
না গাড়ী থামলো না। সবার শ্বাস রুদ্ধ করে দিয়ে নিয়ম ভেঙে এক্সলেটর ভীষন চাপ বসিয়ে দিলো রঞ্জু নামের লোকটা। ধন্যি ড্রাইভারি বিদ্যা, তীরবেগে গাড়ী এগিয়ে এসে সামনের গাড়ীটাকে কোনরকমে বাঁচিয়ে স্টিয়ারিং টাকে এপাশ ওপাশ করে চারমাথা ক্রশিং পার হয়ে গেলাম আর সাথে প্রচন্ড জোরে একটা শব্দে প্রায় সকলেই চমকে পিছনে তাকালাম। ধাওয়া করে আসা গাড়ীটা নিয়ন্ত্রন হারিয়ে একটা টেঙ্কারের পেটের ভিতর ঢুকে গেছে। গাড়ীর সামনের অংশটা ভেঙে গুঁড়িয়ে গেছে আশা করি আর কেউ প্রাণে বেঁচে নেই। হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম কিন্তু থামলে চলবে না, গাড়ী এগিয়ে চললো দ্বিতীয় হুগলি সেতুর দিকে। পিছন ফিরে একবার দেখে নিলাম। না আর কেউ নেই।
ব্রিজ পেরিয়ে কিছুদূর যাওয়ার পর আমাদের গাড়ীর গতি কমিয়ে দিলো, সামনে একটা গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে। ছেলেটির মুখের দিকে একবার তাকালাম আমার মুখের ভাষা বুঝতে পেরে একটু হেঁসে বললো ভয় নেই, এখন তুমি নিরাপদ। রঞ্জুদা কলকাতায় থাকে আমাদের এখানে নামিয়ে ও চলে যাবে। আমাদের ওই গাড়ীতে যেতে হবে চলো নামো।
— আচ্ছা আমরা যাচ্ছি কোথায়। আর কে তুমি। নামতে নামতে জিজ্ঞেস করলাম।
— বলছি আগে ওঠো।
গাড়ীতে উঠে বসলাম। গাড়ী চলতে শুরু করলো।
— আমি মুক্ত। বলে উঠলো ছেলেটি।
— তবে কি তুমিও বন্দি ছিলে ওই জাহাজে।
— আরে না না আমার নাম মুক্ত। মুক্তধারা সিং।
— কিন্তু তুমি আমায় চিনলে কি করে আর এভাবে আমায় উদ্ধার করলেই বা কেন?
— কি কেন কখন কিভাবে এসবের জবাব একজনই দিতে পারবে আমার বাবা।
— কিন্তু আমাকে জানতে হবে এখন, এসব কি হচ্ছে আমার সাথে। আর আমি যাচ্ছি বা কোথায়।
— দুর্গাপুর। আমরা দুর্গাপুর যাচ্ছি।
গাড়ি থামাও গাড়ি থামাও। চিৎকার করে উঠলাম আমি
— এই কেন কি হয়েছে।
— আমার বাবা মা কোলকাতায় ওদিকে ম্যাডাম আর দিদা কেমন আছে কে জানে আর তোমরা আমায় দুর্গাপুর নিয়ে যাচ্ছো। আমাকে এক্ষুনি কলকাতা ফিরতে হবে আমায় না পেয়ে নিশ্চয়ই ওই হারামীগুলো আমার বাবা মার ওপর অত্যাচার করবে ওরা জানোয়ার। মায়াদয়া নেই ওদের শরীরে দিদাকে কিভাবে মেরেছিলো ওরা।
— হ্যাঁ ঠিক। ওরা জানোয়ার। তুমি কি মনে করেছো তুমি গেলে তোমার বাবা মাকে তুমি বাঁচাতে পারবে। পারবে না। বিরাতে যাদের মেরেছিলে তারা সবাই তুচ্ছ এরা ভয়ঙ্কর তুমি কলকাতায় ফিরলে তোমায় আর বেঁচে ফিরতে হবে না।
— কিন্তু এভাবে পালিয়ে যাবো? বাবা মার বিপদ জেনেও।
— হ্যাঁ এটাই এখন একমাত্র রাস্তা আর তুমি চিন্তা করোনা তোমার বাবা মা নিরাপদেই আছে।
চমকে তাকালাম মুক্তর দিকে। তুমি এতটা নিশ্চিত হচ্ছো কি করে?
— সব উত্তর পেয়ে যাবে এখন শুধু একটু ধৈর্য ধরে থাকো।
গাড়ি এগিয় চলেছে বালি হয়ে দিল্লীরোডের উপর দিয়ে। শক্তিগড়ে পৌছে গাড়ি একটা ধাবায় থামলো। শক্তিগড় একটা জংশন জায়গার মতো এখানে সব রকমের দোকান আছে একটা পেট্রোল পাম্প আছে। বহু দূর পাল্লার গাড়ি এখানে দাঁড়ায়। এখানকার সেই বিখ্যাত ল্যাংচার কথা সবাই জানে।
আমার মোবাইল, মানিব্যাগের কোন হদিশ নেই সম্ভবত দিদার বাড়িতেই পড়ে আছে। পরণের বারমুন্ডা প্যানটা যে কি করে এলো সেটা ভগবান যানেন। ওসব নিয়ে মাথাও ঘামালাম না। গাড়ি থামতেই মুক্তকে বললাম আমি একটা ফোন করবো।
আমার দিকে তাকিয়ে হেসে ফেললো মুক্ত — তুমি চিন্তা করোনা যাদের ফোন করবে তারা নিরাপদেই আছে। এখানে বেশিক্ষন থাকা যাবেনা কিছু খাবার নিয়েই বেরিয়ে পরবো তুমি গাড়ির কাছে থাকো। আমি আসছি।
শক্তিগড় থেকে বেরিয়ে আধঘন্টা গাড়ি চালিয়ে পানাগড় যখন পৌছলাম তখন গাড়ির ড্যাশবোর্ডে রাখা ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি সাতটা বাজে। এখনো বেশ কিছুটা যেতে হবে। পেটের মধ্যে যে আগুন জ্বলছিল মুক্তর আনা খাবারে তা কিছুটা উপশম হয়েছে।
প্রায় ঘন্টা খানেক পর মুচিপাড়া এলো এখান থেকে বাঁদিকে ঘুরে পোলের নীচ দিয়ে আমরা বিধাননগর কমিউনিটি সেন্টারের দিকে এগিয়ে চললাম। বিধান নগর কলোনীকে বাঁদিকে রেখে ডানদিকে রাস্তায় গাড়ি আসতেই হঠাৎ মনে পড়লো এই রাস্তাটা আমার চেনা অবচেতন মন আমায় এই রাস্তাটাকে চিনিয়ে দিচ্ছে। সাথে কিছু ছবি ভেসে উঠছে। মাথার ভিতরটা যেন ফেটে যাবে। প্রচন্ড যন্ত্রনায় দুহাতে মাথার দুপাশ চেপে ধরলাম। ছবির পর ছবি ভেসে উঠছে মাথার মধ্যে কিন্তু সবগুলোই আবছা, যেন পুরোপুরি আসবে আসবে করেও আসতে পারছেনা।
কিছুক্ষন পর যন্ত্রনাটা কমে গেলো একটা স্তব্ধ ভাব চলে এসেছে মাথার মধ্যে। চোখটা বন্ধ করে নিলাম।
একটা হাতের স্পর্শে স্তব্ধ ভাবটা এক লহমায় কেটে গেলো। মা, মা বলে জড়িয়ে ধরলাম মাকে। বুকের ভিতরটা যেন ছিঁড়ে যাচ্ছে যন্ত্রনায়। মনে হচ্ছে একযুগ পর মাকে দেখছি। বুক থেকে মুখ তুলে মায়ের মুখের দিকে তাকালাম সেই মাতৃময়ী রুপ। কিন্তু মনের মধ্যে আরো একটি ছবি যে ভাসছে মন বলছে সেও আমার অতি আপন।
গাড়ি থেকে নেমে পড়লাম। মা হাত ধরে সামনে এগিয়ে নিয়ে চললো। সামনে বাবা দাঁড়িয়ে কাছে যেতেই বুকে জড়িয়ে ধরলো। চোখে জল না থাকলেও বুকটা যে ভেঙে গুঁড়িয়ে যাচ্ছে সেটা লাবুডুবু শব্দ শুনে বেশ বুঝতে পারছি।
কিছু একটা বলতে চাইছিলাম তার আগেই আমায় থামিয়ে বাবা বলে উঠলো — জানি তোর মনে অনেক প্রশ্ন, অনেক ধাঁধা লুকিয়ে আছে। সব উত্তর পাবি শুধু আর একটা রাত সময় দে আমায়।
মুখ নীচু করে নিলাম। বাবার কথার ওপর কথা আমি বলতে পারবোনা। আমায় নিয়ে পিছনদিকে তাকালো বাবা। অনেকেই দাঁড়িয়ে রয়েছে সেখানে,সবার মুখেই বিস্ময়। সবাই আমার অপরিচিত, এক এক করে দেখতে দেখতে একজনের ওপর চোখ পরতেই চমকে উঠলাম। মনের সেই ছবির সাথে অদ্ভুত এক মিল রয়েছে এর। কিন্তু…
রাতের অন্ধকারে বোঝা না গেলেও এই জায়গাটা যে যথেষ্ট নিরিবিলি তা এর স্তব্ধতা শুনেই বেশ বোঝা যাচ্ছে। আশেপাশে বাড়িঘর তেমন নেই বললেই চলে।
বাবা মার কাছ থেকে জেনেছি আমি দুরাত ওদের ডেরায় কাটিয়েছি। তারমধ্যে কোন খাবারই পেটে পরেনি তাই বিনা বাক্যব্যায়ে খেতে বসে গেলাম। সাধারন মাটির মেঝেতে খাওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। আমার পাশে মা, মুখোমুখি একটা আসন ফাঁক রেখে বাবা বসেছে। আর কেউ বসলোনা দেখে বেশ অবাক লাগলো। মাকে বলতে মুচকি হেসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। বেশি কথা না বাড়িয়ে প্রাণভরে খাওয়ার দিকে মনোনিবেশ করলাম। হঠাৎ মাথা তুলতেই চমকে উঠলাম। বাবার পাশে সেই ফাঁকা আসনটায় মনের ছবির সাদৃশ্য রমনী বসে আছে। খাওয়ার আর মুখে উঠলোনা। মা আমার দিকে তাকিয়ে বললো কিরে বাবু কি হয়েছে? ওর দিকে ওভাবে কি দেখছিস?
— এ্যাঁ…. না। না কিছু না।
— ওর নাম সংঘমিত্রা খুব ভালো মেয়ে নে এবার খেয়ে নে।
খাওয়া শেষ হয়ে গেছে কিন্তু খাওয়ার সময় ওর চোখ দুটো আমাকে পাগল করে তুলেছে। মন বলছে খুব ভালোবাসি ওই চোখ দুটোকে। দুজন দুজনকেই নীরবে দেখে গেছি শুধু।
মনের মধ্যে সব চিন্তা কপূরের মত উবে গেছে এখন একটাই প্রশ্ন এই মেয়েটি। কে এই মেয়েটি? মনের মধ্যে যে আবছা ছবি ফুটে উঠেছে। তাতে মুখের অবয়ব অস্পষ্ট হলেও ওই চোখ আমার মনে গেঁথে গেছে।
বেশ রাত হয়েছে, পুরো জায়গাটাই নিশ্চুপ থমথম করছে। সবাই ঘুমের রাজ্যে চলে গেছে। আমার চোখে ঘুম নেই। চিন্তার মহাসমুদ্রে ভাসছি আমি, কোন তল খুঁজে পাচ্ছি না। নানান চিন্তা মাথার মধ্যে কিলবিল করছে।
উঠে পড়লাম বিছানা থেকে আমার পাশে মুক্ত শুয়ে আছে। অঘোরে ঘুমোচ্ছে। আস্তে করে দরজাটা খুলে বাইরে বেরিয়ে এলাম। ঝিরঝিরে বাতাস গায়ে লাগতেই মনটা জুড়িয়ে গেল। আহঃ চাঁদের জ্যোৎস্না আলো সারা পৃথিবীকে যেন স্নান করিয়ে দিচ্ছে। কতরাত কতভাবে এরকম একা চাঁদ দেখেছি কিন্তু আজ, আজ যেন একটু বেশি ভালো লাগছে।
— কি ঘুমোন নি এখনো ?
চমকে পিছনে তাকালাম। সেই রহস্যময়ী মেয়েটি দাঁড়িয়ে আছে। মুখে একটা সরল মিষ্টি হাসি। কি যেন নামটা…. মিত্রা…সংঘমিত্রা।
— কি হলো কি দেখছেন ওভাবে?
আহঃ গলার স্বরটা ভারী মিষ্টি।
— না মানে ঘুম আসছিলো না। আমতা আমতা করে জবাব দিলাম।
— তাই বুঝি? তা কি এত চিন্তা করছেন?
হেসে ফেললাম। এই মেয়েটা বলে কি, গত দুদিন ধরে যেসব ঘটনা ঘটে চলেছে তাতে চিন্তার খোরাকের ত অভাব নেই আমার, আর সর্বপরি এই মেয়েটি ত এখন আমার বড় চিন্তার। ওই যে চোখ, ওই কাজল কালো টানা টানা চোখটাই ত এখন আমার বড় চিন্তার। ওই চোখটা ত আমার বড় আপন বলে মনে হয়।
— এই, কি দেখছেন
হাতটা আমার মুখের সামনে নাড়িয়ে দিলো মেয়েটি।
— আপনাকে। দেখুন এক্ষুনি বললেন না যে আমি কি চিন্তা করছি তাতে আমি বলবো এখন যা আমার পরিস্থিতি তাতে আমার মনে হয় কেউ যেন আমরা মাথার মধ্যে চিন্তার একটা বড় মাটির হাড়ি ফাটিয়ে দিয়েছে আর সেই চিন্তাগুলো সাপের মত কিলবিল করছে মাথার মধ্যে। আর সবথেকে বড়ো সাপটা কি করছেন জানেন?
— কি….অবাক হয়ে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বললো।
একটু থেমে জবাব দিলাম …. আপনার রহস্যের উদঘাটন।
একদৃষ্টে চেয়ে রইলাম দুজন দুজনের দিকে। এ যেন ঠিক লুকোচুরি খেলা মন থেকে নিঃশব্দে কথা চুরির খেলা।
একটু এগিয়ে গেলাম সামনে। ঝিরিঝিরি বাতাসে মেয়েটির মুখে কিছু চুল এসে পড়েছে। ডান হাত তুলে আলতো করে চুল গুলো এক আঙুলে ধরে কানের পিছনে চালান করে দিলাম। আঙুলের স্পর্শে চোখ বন্ধ করে নিল মিত্রা। অপূর্ব মায়াময়ী সৌন্দর্যতায় আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। রাতের চন্দ্রালোকে আমার স্বপ্নের রাণী আমার একদম কাছে। হ্যাঁ স্বপ্নেরই রাণী, মনের মধ্যে ভেসে ওঠা ছবির সাথে এর কোন অমিল থাকতে পারে না।
ঠোঁটটা মিত্রার মুখের কাছে নিয়ে গেলাম থিরথির করে কাঁপছে ঠোঁটটা। আমার উষ্ণ নিঃশ্বাসের স্পর্শে চোখ খুললো সে আমার চোখের দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে ঠোঁট ঈষৎ খুলে মুখটা সামনে এগিয়ে দিলো। আর অপেক্ষা করলাম না ঠোঁটটা এগিয়ে দিয়ে মিত্রার ঠোঁটে চেপে ধরলাম। দুই ওষ্ঠ মিলেমিশে একাকার সাথে দুই মনও।
একটু পরে ঠোঁট ছেড়ে দিলাম। দুহাত দিয়ে আমায় জড়িয়ে ধরলো মিত্রা। মুখটা তুলে আবার ঠোঁট এগিয়ে দিলো। এ ভালোবাসার টানকে উপেক্ষা করা আমার সাধ্যি নেই। বাঁ হাতে মিত্রার মাথা ধরে ডান হাতে আরো শরীরের সাথে চেপে ধরে তীব্র ভাবে ঠোঁটে ঠোঁট চেপে ধরলাম। উপর্যপরি চুষতে লাগলাম। একটু ফাঁক পেতেই জিভটা ঢুকিয়ে দিলাম মিত্রার মুখে। দুজনের জিভ খেলায় মেতে উঠলো।
বেশ কিছুক্ষন পরে ঠোঁট ছেড়ে সারা মুখে চুমুতে চুমুতে ভরিয়ে দিলাম। কানের কাছে মুখ নিয়ে কানের নরম লতি মুখে নিয়ে চুষতে লাগলাম। আবার ঠোঁটে ফিরে এলাম তীব্র ভাবে চুষতে শুরু করলাম।
কতক্ষন যে এভাবে ছিলাম জানিনা। আস্তে আস্তে শরীরের সমস্ত পোষাক খুলে গেছে। ভালোবাসার সুখ সাগড়ে ভেসে চলেছি আমরা। শরীরের সর্বজায়গায় জিভের স্পর্শে দুজনের শরীরে আগুন জ্বলে উঠেছে। কখন যে নিজের পৌরষত্বকে উসকে দিয়ে মিত্রার কোমল শরীরকে ধরে আস্তে করে শুইয়ে দিয়েছি খেয়াল নেই। কপালে একটা মৃদু চুমু খেয়ে বুকের কাছে নেমে এসেছি। ভালোবাসার প্রতিদান স্বরুপ যে শরীর মিত্রা আমার হাতে তুলে দিয়েছে তার কোন অমর্যাদা আমি করিনি। বুক থেকে আরো, আরো নীচে নেমে এসেছি। মূল্যবান সে খনির খোঁজ পেতে দেরী হয়নি আমার। রসে টইটুম্বুর সে জায়গায় জিভ দিয়ে ভালোবাসার পরশ এঁকে দিতে দ্বিধা করিনি।
— রাজজজজ আমি যে পাগল হয়ে যাচ্ছি। এভাবে কষ্ট দিয়োনা সোনা। আসো আমার ভিতরে আসোওওওওওওওও।
প্রেয়সীর ডাক উপেক্ষা করার সাহস আমার নেই। মধুভান্ডার থেকে মুখ তুলে নিলাম। পায়ের কাছে বসে হাত দিয়ে নিজের পৌরুষকে একবার রগড়ে নিলাম। এগিয়ে গিয়ে গোপন স্থানে প্রবেশ করালাম। নিজের সতীত্ব বিসর্জন দিয়ে চারহাতে পায়ে শরীরের সর্বশক্তি দিয়ে আমায় জড়িয়ে ধরলো। একবিন্দু জল চোখের কোন থেকে গড়িয়ে পড়েছে মিত্রার। জিভ দিয়ে চেটে নিলাম সেই অশ্রু, কপালে একটা চুমু খেলাম। আবেশে ঠোটে ঠোট চেপে ধরলো মিত্রা। আস্তে আস্তে কোমড় আগুপিছু করতে লাগলাম। পিঠে নোখের আঁচড় দিয়ে মিত্রা নিজের সুখের জানান দিতে লাগলো।
আস্তে আস্তে কোমড় নাড়ানো দ্রুত থেকে দ্রুততড় হতে লাগলো সেইসাথে পৌরুষ রসের দাপাদাপি। আর বেশি বাকি নেই বিস্ফোরণ ঘটতে। মিত্রা চারহাত পায়ে প্রচন্ড জোরে আমায় জড়িয়ে আমার শরীরের নীচে কেঁপে উঠলো। আর থাকতে পারলাম না। প্রচন্ড জোরে একটা চাপ দিয়ে গোড়া পর্যন্ত ঠেসে ধরে নেতিয়ে পড়লাম মিত্রার শরীরে।
বেশ কিছুক্ষন এভাবে আছি। আস্তে করে মুখ তুলে মিত্রার মুখে আলতো করে একটা চুমু খেলাম। চোখ মেললো মিত্রা। ভালোবাসায় পরিপূর্ণ সেই চোখ। মুগ্ধ নয়নে চেয়ে থেকে ছোট একটা প্রশ্ন করলাম — কে তুমি?
জবাব পেলাম না। মৃদু একটু হাসির সাথে একফোটা আনন্দঅশ্রু গড়িয়ে পড়লো শুধু চোখ দিয়ে ।
রাতের আঁধার কেটে ভোর হলো সাথে শুরু হলো আমার জীবনের নতুন অধ্যায় । মিত্রা ………..

গল্পটি কেমন লাগলো ?

ভোট দিতে স্টার এর ওপর ক্লিক করুন!

সার্বিক ফলাফল 3.7 / 5. মোট ভোটঃ 6

এখন পর্যন্ত কোন ভোট নেই! আপনি এই পোস্টটির প্রথম ভোটার হন।

Leave a Comment